আজকের পত্রিকা ডেস্ক
জাপানে বিদেশি-বিরোধী মনোভাব দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এটি এখন রাজনৈতিক অঙ্গনেরও বড় ইস্যু হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি দেশটির ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) নেতৃত্বে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী পাঁচ প্রার্থীই বিদেশিদের প্রতি কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার স্থলাভিষিক্ত হওয়ার জন্য এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
আজ শুক্রবার (৩ অক্টোবর) যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দি ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, টোকিওর একটি স্টেশনের সামনে জাপানের নতুন সানসেইতো দলের নেতা সোহেই কামিয়া জনসভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে জাপানের ক্রমবর্ধমান বিদেশি জনসংখ্যার সমালোচনা করেছেন। বিরোধীদের অভিযোগ, তিনি বর্ণবাদী বক্তব্য দিচ্ছেন। কিন্তু কামিয়া দাবি করেন, তিনি শুধু সাধারণ জাপানিদের মনোভাবটি প্রকাশ করছেন।
সানসেইতো তুলনামূলক ছোট দল হলেও গত জুলাইয়ের নির্বাচনে তারা উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে এবং তাদের ‘জাপানিজ ফার্স্ট’ নীতি এখন জাতীয় রাজনীতিতে প্রভাব ফেলছে।
সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট
জাপানে দীর্ঘদিন মজুরিকাঠামো স্থবির হয়ে থাকলেও জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েই চলেছে এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে তাই হতাশা বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে বিদেশিদের প্রতি ক্ষোভকে অনেক রাজনৈতিক নেতা সহজ হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছেন। জাপানের বার্ধক্যজনিত সংকট মোকাবিলায় বিদেশি শ্রমশক্তি অত্যাবশ্যক হয়ে উঠলেও সামাজিক মাধ্যমে ছড়ানো ভুল তথ্য বিদেশি-বিরোধী আন্দোলনকে উসকে দিচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ—আফ্রিকার কয়েকটি দেশের সঙ্গে জাপানের এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম শুধু গুজবের কারণে বাতিল হয়েছে।
জাপানের সরকার বহু বছর ধরে বিদেশি শ্রমিক ও পর্যটকদের আকর্ষণ করছে। বর্তমানে জাপানে বিদেশিদের সংখ্যা ৩৭ লাখের বেশি, যা মোট জনসংখ্যার মাত্র ৩ শতাংশ। কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে এই সংখ্যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, কৃষি, মৎস্য, উৎপাদন ও খুচরা খাতে দেশটিতে বিপুল শ্রমিকসংকট রয়েছে।
রাজনৈতিক বক্তব্য ও বিতর্ক
সানসেইতো দলের নেতা কামিয়া দাবি করেন, তাঁর বক্তব্য বর্ণবাদের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। তিনি বলেন, ‘আমরা শুধু জাপানিদের শান্তিপূর্ণ জীবন ও নিরাপত্তা রক্ষা করতে চাই।’ তাঁর অভিযোগ, সরকার বিদেশি শ্রমিক আনছে শুধু বড় বড় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের স্বার্থে, অথচ সাধারণ জাপানিরা জীবিকা নিয়ে সংগ্রাম করছে।
অন্য দিকে প্রধানমন্ত্রিত্বের জন্য নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের মধ্যে সাবেক অর্থনৈতিক নিরাপত্তামন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি বিদেশি পর্যটকদের বিরুদ্ধে অযাচিত অভিযোগ তুলেছিলেন। যদিও পরে তিনি তা শুধরে নিয়েছেন। তারপরও এ ঘটনার মাধ্যমে বোঝা যায়, বিদেশিদের ঘিরে আশঙ্কা ও ক্ষোভ জাপানে কতটা তীব্র হয়ে উঠছে।
বৈষম্য ও বাস্তবতা
জাপানে আগে থেকেই কোরীয় ও চীনা বংশোদ্ভূত ব্যক্তিদের প্রতি বৈষম্যের ইতিহাস রয়েছে। বর্তমানেও চীনা বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ীদের লক্ষ্য করে কটূক্তি ও হামলার ঘটনা ঘটছে। দেশটিতে দীর্ঘদিন ধরে বসবাসরত ভিয়েতনামি বা কুর্দি সম্প্রদায়ও বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। বিদেশিরা প্রায় সময়ই কম মজুরি পান, বাসাভাড়া নিতে সমস্যায় পড়েন এবং সামাজিক মাধ্যমে অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত হন।
তবে জাপানের জাতীয় পুলিশ সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বিদেশিদের সংখ্যা বেড়েছে ঠিকই, তবে তাঁদের অপরাধের হার আশঙ্কার তুলনায় অনেক কম। গত বছর মাত্র ১২ হাজার বিদেশি গ্রেপ্তার হয়েছেন।
অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ
বিশেষজ্ঞদের মতে, জাপানের অর্থনীতি টিকিয়ে রাখতে ২০৪০ সালের মধ্যে অন্তত ৬৭ লাখ বিদেশি শ্রমিকের প্রয়োজন হবে, যা বর্তমানে অনুমোদিত সংখ্যার তিন গুণ। বিদেশি শ্রমিকের এই ঘাটতি পূরণ না হলে দেশটির কৃষি, মৎস্য ও সেবা খাত মারাত্মক সংকটে পড়বে। আবার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জাপানের কম বেতন ও বৈচিত্র্যের অভাব বিদেশি শ্রমিক আকর্ষণে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
রাজনৈতিক উত্থান
২০২০ সালে প্রতিষ্ঠিত সানসেইতো দলটি মূলত ইউটিউব ও সামাজিক মাধ্যমে জনপ্রিয়তা পায়। দলের নেতা কামিয়া ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতি থেকে অনুপ্রাণিত বলে জানান এবং ইউরোপের কয়েকটি ডানপন্থী দলের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছেন। তিনি ভবিষ্যতে আরও বড় আকারে নির্বাচনে প্রার্থী দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন।
সব মিলিয়ে বিদেশি-বিরোধী মনোভাব এখন জাপানের রাজনৈতিক বাস্তবতায় গুরুত্বপূর্ণ জায়গা করে নিয়েছে। তবে প্রশ্ন থেকে যায়—বিদেশি শ্রমিক ছাড়া ক্রমহ্রাসমান জনসংখ্যার জাপান অর্থনৈতিকভাবে কীভাবে টিকে থাকবে?
জাপানে বিদেশি-বিরোধী মনোভাব দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এটি এখন রাজনৈতিক অঙ্গনেরও বড় ইস্যু হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি দেশটির ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) নেতৃত্বে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী পাঁচ প্রার্থীই বিদেশিদের প্রতি কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার স্থলাভিষিক্ত হওয়ার জন্য এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
আজ শুক্রবার (৩ অক্টোবর) যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দি ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, টোকিওর একটি স্টেশনের সামনে জাপানের নতুন সানসেইতো দলের নেতা সোহেই কামিয়া জনসভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে জাপানের ক্রমবর্ধমান বিদেশি জনসংখ্যার সমালোচনা করেছেন। বিরোধীদের অভিযোগ, তিনি বর্ণবাদী বক্তব্য দিচ্ছেন। কিন্তু কামিয়া দাবি করেন, তিনি শুধু সাধারণ জাপানিদের মনোভাবটি প্রকাশ করছেন।
সানসেইতো তুলনামূলক ছোট দল হলেও গত জুলাইয়ের নির্বাচনে তারা উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে এবং তাদের ‘জাপানিজ ফার্স্ট’ নীতি এখন জাতীয় রাজনীতিতে প্রভাব ফেলছে।
সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট
জাপানে দীর্ঘদিন মজুরিকাঠামো স্থবির হয়ে থাকলেও জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েই চলেছে এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে তাই হতাশা বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে বিদেশিদের প্রতি ক্ষোভকে অনেক রাজনৈতিক নেতা সহজ হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছেন। জাপানের বার্ধক্যজনিত সংকট মোকাবিলায় বিদেশি শ্রমশক্তি অত্যাবশ্যক হয়ে উঠলেও সামাজিক মাধ্যমে ছড়ানো ভুল তথ্য বিদেশি-বিরোধী আন্দোলনকে উসকে দিচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ—আফ্রিকার কয়েকটি দেশের সঙ্গে জাপানের এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম শুধু গুজবের কারণে বাতিল হয়েছে।
জাপানের সরকার বহু বছর ধরে বিদেশি শ্রমিক ও পর্যটকদের আকর্ষণ করছে। বর্তমানে জাপানে বিদেশিদের সংখ্যা ৩৭ লাখের বেশি, যা মোট জনসংখ্যার মাত্র ৩ শতাংশ। কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে এই সংখ্যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, কৃষি, মৎস্য, উৎপাদন ও খুচরা খাতে দেশটিতে বিপুল শ্রমিকসংকট রয়েছে।
রাজনৈতিক বক্তব্য ও বিতর্ক
সানসেইতো দলের নেতা কামিয়া দাবি করেন, তাঁর বক্তব্য বর্ণবাদের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। তিনি বলেন, ‘আমরা শুধু জাপানিদের শান্তিপূর্ণ জীবন ও নিরাপত্তা রক্ষা করতে চাই।’ তাঁর অভিযোগ, সরকার বিদেশি শ্রমিক আনছে শুধু বড় বড় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের স্বার্থে, অথচ সাধারণ জাপানিরা জীবিকা নিয়ে সংগ্রাম করছে।
অন্য দিকে প্রধানমন্ত্রিত্বের জন্য নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের মধ্যে সাবেক অর্থনৈতিক নিরাপত্তামন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি বিদেশি পর্যটকদের বিরুদ্ধে অযাচিত অভিযোগ তুলেছিলেন। যদিও পরে তিনি তা শুধরে নিয়েছেন। তারপরও এ ঘটনার মাধ্যমে বোঝা যায়, বিদেশিদের ঘিরে আশঙ্কা ও ক্ষোভ জাপানে কতটা তীব্র হয়ে উঠছে।
বৈষম্য ও বাস্তবতা
জাপানে আগে থেকেই কোরীয় ও চীনা বংশোদ্ভূত ব্যক্তিদের প্রতি বৈষম্যের ইতিহাস রয়েছে। বর্তমানেও চীনা বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ীদের লক্ষ্য করে কটূক্তি ও হামলার ঘটনা ঘটছে। দেশটিতে দীর্ঘদিন ধরে বসবাসরত ভিয়েতনামি বা কুর্দি সম্প্রদায়ও বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। বিদেশিরা প্রায় সময়ই কম মজুরি পান, বাসাভাড়া নিতে সমস্যায় পড়েন এবং সামাজিক মাধ্যমে অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত হন।
তবে জাপানের জাতীয় পুলিশ সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বিদেশিদের সংখ্যা বেড়েছে ঠিকই, তবে তাঁদের অপরাধের হার আশঙ্কার তুলনায় অনেক কম। গত বছর মাত্র ১২ হাজার বিদেশি গ্রেপ্তার হয়েছেন।
অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ
বিশেষজ্ঞদের মতে, জাপানের অর্থনীতি টিকিয়ে রাখতে ২০৪০ সালের মধ্যে অন্তত ৬৭ লাখ বিদেশি শ্রমিকের প্রয়োজন হবে, যা বর্তমানে অনুমোদিত সংখ্যার তিন গুণ। বিদেশি শ্রমিকের এই ঘাটতি পূরণ না হলে দেশটির কৃষি, মৎস্য ও সেবা খাত মারাত্মক সংকটে পড়বে। আবার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জাপানের কম বেতন ও বৈচিত্র্যের অভাব বিদেশি শ্রমিক আকর্ষণে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
রাজনৈতিক উত্থান
২০২০ সালে প্রতিষ্ঠিত সানসেইতো দলটি মূলত ইউটিউব ও সামাজিক মাধ্যমে জনপ্রিয়তা পায়। দলের নেতা কামিয়া ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতি থেকে অনুপ্রাণিত বলে জানান এবং ইউরোপের কয়েকটি ডানপন্থী দলের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছেন। তিনি ভবিষ্যতে আরও বড় আকারে নির্বাচনে প্রার্থী দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন।
সব মিলিয়ে বিদেশি-বিরোধী মনোভাব এখন জাপানের রাজনৈতিক বাস্তবতায় গুরুত্বপূর্ণ জায়গা করে নিয়েছে। তবে প্রশ্ন থেকে যায়—বিদেশি শ্রমিক ছাড়া ক্রমহ্রাসমান জনসংখ্যার জাপান অর্থনৈতিকভাবে কীভাবে টিকে থাকবে?
ইসরায়েলে আটক গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার অভিযাত্রীরা অনির্দিষ্টকালের জন্য অনশন শুরু করেছেন। আজ শুক্রবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি) কমিটি।
৬ মিনিট আগেযুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসের উপকণ্ঠে এল সেগুন্দোতে অবস্থিত শেভরন তেল শোধনাগারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে শেভরনের একটি জেট ফুয়েল উৎপাদন ইউনিটে বিস্ফোরণের পর আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
১ ঘণ্টা আগে১১ বছর আগে প্রবর্তিত সংস্কারের ফলেই একজন নারীর পক্ষে আজ ক্যান্টারবেরির আর্চবিশপ হওয়া সম্ভব হয়েছে। ১৪০০ বছরের বেশি পুরোনো এ পদটি এত দিন পর্যন্ত কেবল পুরুষদের দ্বারা পরিচালিত হওয়া শেষ ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল।
১ ঘণ্টা আগেএক প্রতিবেদনে এনডিটিভি জানিয়েছে, বিহারে পুরুষ ভোটার কমেছে ৩ দশমিক ৮ শতাংশ (১৫ দশমিক ৫ লাখ) আর নারী ভোটার কমেছে ৬ দশমিক ১ শতাংশ (২২ দশমিক ৭ লাখ)। এই বৈষম্য রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। কারণ, রাজ্যে নারী ভোটারদের প্রধান দুই জোটের জন্যই প্রধান ভোটব্যাংক হিসেবে ধরা হয়।
২ ঘণ্টা আগে