Ajker Patrika

আন্তর্জাতিক অপরাধী চক্রের নিশানায় অস্ট্রেলিয়ার মেয়েরা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১৯: ২৭
ছবি: বিবিসি
ছবি: বিবিসি

অস্ট্রেলিয়ার কিশোরী মেয়েদের লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে ভয়াবহ সহিংস কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে ফেলছে অনলাইন অপরাধী চক্র—এমন সতর্কতা দিয়েছে দেশটির পুলিশ। এসব মেয়েকে কখনো নিজেদের ওপর, কখনো ভাইবোন বা পোষা প্রাণীর ওপর সহিংসতা চালাতে বাধ্য করা হচ্ছে একধরনের ‘বিকৃত গেমিফিকেশন’-এর অংশ হিসেবে।

বুধবার (২৯ অক্টোবর) অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল পুলিশের কমিশনার ক্রিসি ব্যারেট এই নতুন ও উদ্বেগজনক প্রবণতাকে ‘লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার এক বিকৃত নতুন রূপ’ হিসেবে আখ্যা দেন এবং জানান, এমনটি বিশ্বজুড়েই দেখা দিচ্ছে। বিষয়টি মোকাবিলায় একটি বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে এবং এখন পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ায় তিনজন এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আরও ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

তবে এসব ঘটনায় কিশোরীরা কী ধরনের সহিংস কাজে যুক্ত হয়েছে তা বিস্তারিত জানানো হয়নি। কমিশনার ব্যারেট জানান—অভিযুক্তদের অনেকেই সহিংস চরমপন্থী মতাদর্শে বিশ্বাসী এবং মানুষকে আঘাত করা তাদের কাছে একধরনের ‘বিনোদন’।

এই অপরাধীদের বেশির ভাগই কিশোর বয়সের শেষভাগে বা বিশের কোঠায় থাকা পশ্চিমা দেশগুলোর তরুণ। তারা অনলাইন গেমিং প্ল্যাটফর্ম রোবলক্স কিংবা মেসেজিং অ্যাপ ডিসকর্ড ও টেলগ্রাম-এর মাধ্যমে কিশোরী ও নাবালিকা মেয়েদের টার্গেট করে।

ব্যারেট জানান, এরা নিজেদের ‘ক্রাইমফ্লুয়েন্সার’ হিসেবে পরিচয় দেয়। তাদের মতাদর্শের মধ্যে নিহিলিজম, স্যাডিজম, নাৎসিবাদ ও শয়তানবাদ পর্যন্ত রয়েছে। তারা সাধারণত মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভোগা, আত্মসম্মানবোধ কম এমন মেয়েদের শিকার বানায়।

ব্যারেট বলেন, ‘এই দলগুলোর সংস্কৃতি অনলাইন মাল্টিপ্লেয়ার গেমিংয়ের মতো। তারা শিকার খোঁজে, অনুসরণ করে এবং বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে তাদের জালে টেনে আনে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই কর্মকাণ্ডের পেছনে আর্থিক লাভ বা যৌন উদ্দেশ্য নেই—এটা নিছক মজা, আমোদ বা অনলাইনে জনপ্রিয় হওয়ার আকাঙ্ক্ষা।’

বুধবার বিবিসি জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ায় প্রায় ৬০ জন সম্ভাব্য অপরাধীকে চিহ্নিত করা হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল পুলিশ নেটওয়ার্ক ধ্বংস করতে এখন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, নিউজিল্যান্ড ও কানাডার (ফাইভ আইজ জোট) সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে। পাশাপাশি প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর সহায়তায় একটি এআই টুল তৈরি হচ্ছে, যা এনক্রিপ্টেড বার্তায় ব্যবহৃত ইমোজি বা গোপন স্ল্যাং বিশ্লেষণ করে এই ধরনের অপরাধ শনাক্ত করতে পারবে।

উল্লেখ্য, ১৬ বছরের নিচের শিশুদের জন্য বিশ্বে প্রথমবারের মতো আইন করে সোশ্যাল মিডিয়া নিষিদ্ধ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। তবে নতুন আইন অনুযায়ী, গেমিং ও মেসেজিং প্ল্যাটফর্মগুলো এখনই এই নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে থাকবে। আইনটি কার্যকর হবে আগামী ডিসেম্বর থেকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৫ আগস্টে আমরা পুলিশ মেরে ঝুলিয়ে রেখেছি—সিগন্যাল দেওয়ায় ট্রাফিক সার্জেন্টকে হুমকি

ছুটিতে গেলেন সেই বিচারক

‘শত শত কোটি ডলারের’ ক্ষতি: অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাংকের সালিস আদালতে এস আলম

ফেসবুক বন্ধুর সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রী

পুরো সময়ে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারে বিএনপি বিরোধিতা করেছে: নাহিদ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নতুন করে ‘কার্যকর’ যুদ্ধবিরতি ভেঙে গাজায় ফের ইসরায়েলের প্রাণঘাতী হামলা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফাইল ছবি। ছবি: এএফপি
ফাইল ছবি। ছবি: এএফপি

একদিন আগেই গাজায় যুদ্ধবিরতি ভেঙে হামলা চালিয়ে প্রায় ১০০ জনকে হত্যা করে ইসরায়েল। তারপর তারাই আবার নিজেরাই যুদ্ধবিরতি ‘কার্যকর’ করার ঘোষণা দেয়। এবার সেই যুদ্ধবিরতি ভেঙে গাজায় আবারও হামলা চালিয়েছে। এতে দুইজন নিহত হয়েছেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

আল–জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, উত্তর গাজায় নতুন করে প্রাণঘাতী হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী, যদিও তারা দাবি করেছে—সংবেদনশীল যুদ্ধবিরতি ‘আবারও কার্যকর’ হয়েছে। এর আগে, গত মঙ্গলবার রাতে গাজায় ইসরায়েলের ভয়াবহ বোমাবর্ষণের পর থেকেই এই যুদ্ধবিরতি ভঙ্গুর অবস্থায় ছিল। সেই হামলায় অন্তত ১০৪ জন নিহত হয়।

এদিকে, মঙ্গলবারের হামলার পর ইসরায়েলের দাবি করা ‘কার্যকর হওয়া’ যুদ্ধবিরতি ভেঙে স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় গাজার বাইত লাহিয়ায় ইসরায়েল বিমান হামলা চালিয়েছে। এতে অন্তত দুজন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে আল-শিফা হাসপাতাল। ইসরায়েল দাবি করেছে, তাদের হামলার লক্ষ্য ছিল একটি অস্ত্রভান্ডার, যা সেনাদের জন্য ‘তাৎক্ষণিক হুমকি’ হয়ে উঠেছিল।

এই হামলায় গাজার নাজুক যুদ্ধবিরতি আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। মঙ্গলবার রাতের ভয়াবহ বোমাবর্ষণ ছিল ১০ অক্টোবর থেকে কার্যকর এই যুদ্ধবিরতির পর সবচেয়ে তীব্র হামলা। দক্ষিণ গাজার রাফাহ এলাকায় মঙ্গলবার এক ইসরায়েলি সেনা নিহত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজায় ‘প্রচণ্ড প্রতিশোধমূলক হামলা’ চালানোর নির্দেশ দেন।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ওই হামলায় ১০৪ জন নিহত হন, যাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। ইসরায়েল দাবি করেছে, তাদের হামলায় বহু সিনিয়র হামাস যোদ্ধা নিহত হয়েছে। পরে তারা ঘোষণা দেয়, বুধবার মধ্যাহ্ন থেকে আবারও যুদ্ধবিরতি কার্যকর করবে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক হামলার পরও যুদ্ধবিরতি ‘বিপদের মুখে নেই।’ আঞ্চলিক মধ্যস্থতাকারী কাতার এই সহিংসতায় হতাশা প্রকাশ করে জানিয়েছে, তারা এখনো যুদ্ধবিরতির পরবর্তী ধাপ, বিশেষ করে হামাসের নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

গাজা শহর থেকে আল–জাজিরার প্রতিবেদক হানি মাহমুদ জানিয়েছেন, নতুন করে হামলা শুরু হওয়ায় দুই বছরের যুদ্ধের ক্লান্ত জনগণের মনে আবারও ভয় ফিরে এসেছে। তিনি বলেন, ‘এক মুহূর্তের জন্য শান্তির যে আশা দেখা দিয়েছিল, তা এখন হতাশায় পরিণত হয়েছে। অনেকের জন্য এটা গণহত্যার শুরুর দিকের সেই ভয়ংকর দিনগুলোর কথা মনে করিয়ে দিয়েছে—যখন বিশাল বোমার আঘাতে গাজা শহর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল।’

শাতি শরণার্থীশিবিরের একটি স্কুলে সন্তানদের নিয়ে আশ্রয় নেওয়া বাস্তুচ্যুত মা খাদিজা আল-হুসনি বলেন, ‘মানুষ একটু করে শ্বাস নিচ্ছিল, আবার জীবন গুছিয়ে নিতে চাইছিল, ঠিক তখনই এই হামলা শুরু হলো।’ তিনি বলেন, ‘এটা অপরাধ। হয় যুদ্ধবিরতি থাকবে, নয় যুদ্ধ—দুটো একসঙ্গে হতে পারে না। শিশুরা রাতভর ঘুমাতে পারেনি; তারা ভেবেছিল যুদ্ধ শেষ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৫ আগস্টে আমরা পুলিশ মেরে ঝুলিয়ে রেখেছি—সিগন্যাল দেওয়ায় ট্রাফিক সার্জেন্টকে হুমকি

ছুটিতে গেলেন সেই বিচারক

‘শত শত কোটি ডলারের’ ক্ষতি: অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাংকের সালিস আদালতে এস আলম

ফেসবুক বন্ধুর সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রী

পুরো সময়ে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারে বিএনপি বিরোধিতা করেছে: নাহিদ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পারমাণবিক শক্তিচালিত সুপার টর্পেডো পসাইডনের সফল পরীক্ষা চালাল রাশিয়া

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
প্রাচীন গ্রিক পুরাণের সমুদ্র দেবতা পসাইডনের নামে এই টর্পেডোর নামকরণ করা হয়েছে। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে
প্রাচীন গ্রিক পুরাণের সমুদ্র দেবতা পসাইডনের নামে এই টর্পেডোর নামকরণ করা হয়েছে। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে

রাশিয়া সফলভাবে ‘পসাইডন’ নামের একটি পারমাণবিক শক্তিচালিত সুপার টর্পেডোর পরীক্ষা চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সামরিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই অস্ত্র বিশাল তেজস্ক্রিয় সমুদ্রঢেউ তৈরি করে উপকূলীয় অঞ্চলকে ধ্বংস করার ক্ষমতা রাখে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন রাশিয়ার প্রতি তাঁর কঠোর অবস্থান ব্যক্ত করেছেন, ঠিক তখনই পুতিন প্রকাশ্যে এমন পারমাণবিক শক্তির প্রদর্শন করলেন।

প্রাচীন গ্রিক পুরাণের সমুদ্র দেবতা পসাইডনের নামে নামকরণ করা এই টর্পেডো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি। তবে এটি মূলত একটি পারমাণবিক সক্ষমতাসম্পন্ন টর্পেডো এবং ড্রোনের সংমিশ্রণ।

আজ বুধবার (২৯ অক্টোবর) মস্কোর একটি হাসপাতালে ইউক্রেন যুদ্ধে আহত রুশ সৈন্যদের দেখতে গিয়েছিলেন পুতিন। এ সময় তিনি জানান, গতকাল মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) পারমাণবিক শক্তিচালিত এই সুপার টর্পেডোর পরীক্ষা চালানো হয়।

পুতিন বলেন, ‘প্রথমবারের মতো আমরা এটিকে সাবমেরিন থেকে উৎক্ষেপণ করতে সক্ষম হয়েছি। পাশাপাশি এর পারমাণবিক শক্তি ইউনিটটিও চালু করেছি, যার ওপর নির্ভর করে এই ডিভাইস নির্দিষ্ট সময় ধরে কাজ করেছে।’ তিনি আরও বলেন, এটিকে বাধা দেওয়ার কোনো উপায় নেই।

সামরিক বিশ্লেষকেরা মনে করেন, এই টর্পেডোর পাল্লা ১০ হাজার কিলোমিটার (৬ হাজার ২০০ মাইল) এবং এটি ঘণ্টায় প্রায় ১৮৫ কিলোমিটার বেগে চলতে পারে। রুশ সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুসারে, ন্যাটোতে ‘ক্যানিয়ন’ নামে পরিচিত পসাইডন ২০ মিটার লম্বা, ১ দশমিক ৮ মিটার ব্যাস এবং এর ওজন ১০০ টন।

অনেকে বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে বুরেভেস্তনিক ও পসাইডনের পরীক্ষা পশ্চিমাদের একটি স্পষ্ট বার্তা দেওয়ার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে। পুতিনের কথায়, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে পশ্চিমাদের চাপের কাছে রাশিয়া কখনোই মাথা নত করবে না।

এর আগে ২১ অক্টোবর বুরেভেস্তনিক নামে নতুন ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালায় রাশিয়া। দেশটির দাবি, এটি বিশ্বের যেকোনো প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ভেদ করতে সক্ষম। রাশিয়ার বর্ণনা অনুযায়ী, ৯এম-৭৩০ বুরেভেস্তনিক (ন্যাটো নাম এসএসসি-এক্স-৯ স্কাইফল) হলো এমন একটি ক্ষেপণাস্ত্র, যাকে বর্তমান কিংবা ভবিষ্যতের কোনো প্রতিরক্ষাব্যবস্থাই আটকাতে পারবে না।

২০১৮ সালে পসাইডন ও বুরেভেস্তনিকের প্রথম ঘোষণা দিয়েছিলেন পুতিন। তিনি একে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থার প্রতিরোধ হিসেবে বর্ণনা করেন। কারণ, ওয়াশিংটন ২০০১ সালে একতরফাভাবে ১৯৭২ সালের অ্যান্টি ব্যালিস্টিক মিসাইল চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ায় এবং পরে ন্যাটো জোটের সম্প্রসারণ শুরু করে।

এদিকে রাশিয়ার বুরেভেস্তনিক পরীক্ষার পর ট্রাম্প বলেছেন, পুতিনের উচিত পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা না করে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৫ আগস্টে আমরা পুলিশ মেরে ঝুলিয়ে রেখেছি—সিগন্যাল দেওয়ায় ট্রাফিক সার্জেন্টকে হুমকি

ছুটিতে গেলেন সেই বিচারক

‘শত শত কোটি ডলারের’ ক্ষতি: অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাংকের সালিস আদালতে এস আলম

ফেসবুক বন্ধুর সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রী

পুরো সময়ে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারে বিএনপি বিরোধিতা করেছে: নাহিদ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শান্তি আলোচনা ব্যর্থ, তালেবানকে ‘নিশ্চিহ্ন’ করার হুমকি দিলেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ। ছবি: সংগৃহীত
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ। ছবি: সংগৃহীত

আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন তালেবান সরকারকে ‘নিশ্চিহ্ন’ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী। ইস্তাম্বুলে চলমান শান্তি আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার পর আজ বুধবার এই হুমকি দেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ, যা প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যকার উত্তেজনাকে আরও চরম পর্যায়ে নিয়ে গেছে।

এর আগে আজ বুধবার সকালে পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী জানান, ইস্তাম্বুলে হওয়া যুদ্ধবিরতি আলোচনা কোনো ‘কার্যকর সমাধান’ ছাড়াই শেষ হয়েছে। অনেকে বলছেন, চলতি মাসের প্রাণঘাতী সংঘর্ষের পর এটি আঞ্চলিক শান্তির জন্য একটি বড় ধাক্কা।

এদিকে, আলোচনা ব্যর্থ হওয়ায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছে পাকিস্তান। এই আলোচনা-সংশ্লিষ্ট একটি কূটনৈতিক সূত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, আফগানিস্তানের ভূখণ্ড ব্যবহার করে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো সীমান্ত এলাকায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ওপর হামলা চালাচ্ছে, বিষয়টি নিয়ে মতবিরোধের জেরেই আলোচনা ভেস্তে যায়।

খাজা আসিফ এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেন, তালেবানি শাসন ‘সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিহ্ন’ করতে আমাদের অতি সামান্য সামরিক শক্তিই যথেষ্ট। আমরা তাদের আবারও গুহায় ফিরে যেতে বাধ্য করব।

তবে পাকিস্তানের এই মন্তব্যের বিষয়ে তালেবান ও আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।

২০২১ সালে তালেবান কাবুলের ক্ষমতা দখলের পর গত শনিবার (১১ অক্টোবর) রাতে আফগানিস্তান ও পাকিস্তান সীমান্তে ভয়াবহ সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। উভয় দেশই দাবি করে, তারা একে অপরের সীমান্তচৌকি দখল ও ধ্বংস করেছে। তালেবান সরকারের অভিযোগ, গত বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) কাবুল ও পাকটিকা প্রদেশে বিমান হামলা চালায় পাকিস্তান। এ হামলার প্রতিশোধ নিতে শনিবার পাল্টা আক্রমণ করে আফগানিস্তান। এতে অন্তত ৫৮ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয় বলে দাবি করে কাবুল।

অন্যদিকে পাকিস্তান সেনাবাহিনী দাবি করে, তাদের ২৩ জন সেনা শহীদ হয়েছে। তবে পাল্টা হামলায় ২০০ জন তালেবান ও সহযোগী যোদ্ধা নিহত হয়। প্রায় চার দিনের সংঘর্ষের পর গত বুধবার (১৫ অক্টোবর) ৪৮ ঘণ্টার একটি সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় পাকিস্তান ও তালেবান সরকার। এরপর উভয় দেশ গত রোববার (১৯ অক্টোবর) দোহায় কাতার ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় সর্বসম্মতভাবে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় দুই দেশ।

পরবর্তী সময়ে গত শনিবার (২৫ অক্টোবর) দ্বিতীয় দফায় তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সীমান্তে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিতে যৌথ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে বৈঠক শুরু করে আফগানিস্তান ও পাকিস্তান। কিন্তু তিন দিনের বৈঠক শেষেও কোনো সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেনি দুই দেশ। আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার জন্য উভয় দেশ একে অপরের ওপর দোষ চাপিয়েছে।

পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার আজ বুধবার অভিযোগ করে বলেন, ‘যে কারণে আলোচনা শুরু হয়েছিল, আফগানিস্তান সেই মূল বিষয় থেকে ক্রমাগত সরে যাচ্ছিল।’ তিনি আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে বৈঠকে মূল বিষয় এড়িয়ে যাওয়া, সূক্ষ্ম কৌশল অবলম্বন করা এবং ‘দোষারোপের খেলায়’ লিপ্ত হওয়ার অভিযোগ করেন। তিনি আরও বলেন, ‘এভাবে আলোচনা করলে কোনো কার্যকর সমাধান সম্ভব হয়।’

পাকিস্তানের একটি নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে, ইস্তাম্বুলের বৈঠকে তালেবান প্রতিনিধিদল তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) বিষয়ে লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে অনিচ্ছুক ছিল। বিশেষত পাকিস্তানবিরোধী কর্মকাণ্ডে টিটিপিকে সমর্থন বন্ধে নিশ্চয়তা দেওয়ার প্রশ্নে তালেবান প্রতিনিধিদল ছিল নিরুত্তর। আলোচনা সম্পর্কে অবগত আফগান একটি সূত্র জানায়, বিষয়টি নিয়ে ‘উত্তেজনাপূর্ণ বাক্য বিনিময়ের’ পরপরই আলোচনা শেষ হয়ে যায়।

সীমান্তে নিরাপত্তা ইস্যুই দুই দেশের সম্পর্কের মূল টানাপোড়েনের কারণ। পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে, আফগানিস্তান তাদের মাটিতে পাকিস্তান তালেবান (টিটিপি) সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে আশ্রয় দিচ্ছে। কিন্তু কাবুল বারবার বিষয়টি অস্বীকার করে এসেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৫ আগস্টে আমরা পুলিশ মেরে ঝুলিয়ে রেখেছি—সিগন্যাল দেওয়ায় ট্রাফিক সার্জেন্টকে হুমকি

ছুটিতে গেলেন সেই বিচারক

‘শত শত কোটি ডলারের’ ক্ষতি: অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাংকের সালিস আদালতে এস আলম

ফেসবুক বন্ধুর সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রী

পুরো সময়ে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারে বিএনপি বিরোধিতা করেছে: নাহিদ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আফ্রিকার প্রথম নোবেলজয়ী লেখক ওলে সোয়িঙ্কার মার্কিন ভিসা বাতিল

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ০০: ০৬
নাইজেরিয়ার লেখক ওলে সোয়েঙ্কা। ছবি: সংগৃহীত
নাইজেরিয়ার লেখক ওলে সোয়েঙ্কা। ছবি: সংগৃহীত

সাহিত্যে আফ্রিকার প্রথম নোবেলজয়ী নাইজেরিয়ার লেখক ওলে সোয়িঙ্কার মার্কিন ভিসা বাতিল করা হয়েছে। এর ফলে তিনি কার্যত যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষিদ্ধ হয়েছেন। মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) নাইজেরিয়ার লাগোসে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে ৯১ বছর বয়সী এই লেখক বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

সোয়িঙ্কা জানান, যুক্তরাষ্ট্রের নাইজেরিয়া কনস্যুলেট থেকে ২৩ অক্টোবর এক চিঠিতে তাঁকে ভিসা বাতিলের বিষয়টি জানানো হয়। চিঠিটিকে তিনি হাস্যরসের সঙ্গে ‘একটি কৌতূহলপূর্ণ প্রেমপত্র’ বলে বর্ণনা করেছেন। কনস্যুলেটের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ভিসা প্রদানের পর ‘অতিরিক্ত কিছু তথ্য’ পাওয়ার পর তা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সোয়িঙ্কা দীর্ঘদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কঠোর অভিবাসন নীতির সমালোচক হিসেবে পরিচিত। ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে ট্রাম্প দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় ফেরার পর দেশটির অভিবাসন নীতিতে নতুন করে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। গত জুলাইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর নাইজেরিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশের নাগরিকদের ভিসার মেয়াদ কমিয়ে দেয় এবং প্রবেশের শর্ত কঠোর করে।

সাহিত্যিক ও নাট্যকার ওলে সোয়িঙ্কা ১৯৮৬ সালে নোবেল পুরস্কার পান। তিনি হার্ভার্ড, ইয়েলসহ যুক্তরাষ্ট্রের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিথি অধ্যাপক হিসেবে কাজ করেছেন। তাঁর বিখ্যাত বইয়ের মধ্যে রয়েছে ‘ক্রনিকলস ফ্রম দ্য ল্যান্ড অব হ্যাপিয়েস্ট পিপল অন আর্থ’ এবং ‘দ্য ম্যান ডাইড’। দ্বিতীয় বইটি তিনি নাইজেরিয়ার গৃহযুদ্ধের সময় কারাবন্দী অবস্থায় লেখেন।

২০১৬ সালে ট্রাম্পের নির্বাচনের পর প্রতিবাদ হিসেবে সোয়িঙ্কা নিজের গ্রিন কার্ড ছিঁড়ে ফেলেছিলেন। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি ট্রাম্পকে ‘সাদা চামড়ার ইদি আমিন’ বলে আখ্যা দেন, যা তাঁর ভিসা বাতিলের কারণ হতে পারে বলে তিনি মনে করছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৫ আগস্টে আমরা পুলিশ মেরে ঝুলিয়ে রেখেছি—সিগন্যাল দেওয়ায় ট্রাফিক সার্জেন্টকে হুমকি

ছুটিতে গেলেন সেই বিচারক

‘শত শত কোটি ডলারের’ ক্ষতি: অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাংকের সালিস আদালতে এস আলম

ফেসবুক বন্ধুর সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রী

পুরো সময়ে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারে বিএনপি বিরোধিতা করেছে: নাহিদ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত