Ajker Patrika

২০২৪ সালে পারমাণবিক অস্ত্রের পেছনে শত বিলিয়ন ডলার ঢেলেছে ৯ দেশ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৩ জুন ২০২৫, ১৯: ৫৭
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

বিভিন্ন ধরনের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি জন্য ২০২৪ সালে ১০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ ব্যয় করেছে পারমাণবিক শক্তিধর দেশগুলো। আজ শুক্রবার এ তথ্য জানিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল ক্যাম্পেইন টু অ্যাবোলিশ নিউক্লিয়ার উইপনস (আইসিএএন)। অস্ত্র উৎপাদনে এই পরিমাণ অর্থ ব্যয় গণতন্ত্রের পরিপন্থী বলেও অভিমত দিয়েছে পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত পৃথিবী গড়ার লক্ষ্যে কাজ করা নোবেলজয়ী সংগঠনটি।

আইসিএএন জানিয়েছে, চীন, ফ্রান্স, ভারত, ইসরায়েল, উত্তর কোরিয়া, পাকিস্তান, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের কাছে পারমাণবিক অস্ত্র আছে। এই ৯টি দেশ অস্ত্র তৈরির জন্য এ বছর যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় করেছে, তা ২০২৩ সালে চেয়ে ১০ বিলিয়ন ডলার বেশি।

আইসিএএন বার্ষিক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ২০২৪ সালে অস্ত্র উৎপাদনের পেছনে ৫৬ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে। সেই সঙ্গে ১২ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে চীন। থেমে থাকেনি যুক্তরাজ্য, তারাও ২০২৪ সালে অস্ত্র তৈরির জন্য ১০ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার খরচ করেছে।

পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ চুক্তির খসড়া তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার জন্য ২০১৭ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার জেতে জেনেভাভিত্তিক আইসিএএন। ওই চুক্তি ২০২১ সালে কার্যকর হয়। পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ চুক্তি এখন পর্যন্ত প্রায় ৬৯টি দেশ অনুমোদন দিয়েছে। পরে আরও চারটি দেশ সরাসরি এই চুক্তিতে যোগ দেয়। এ ছাড়া ২৫টি দেশ এতে স্বাক্ষর করেছে। যদিও পারমাণবিক অস্ত্রধারী কোনো রাষ্ট্র এতে সম্মতি দেয়নি।

এ বছর আইসিএএনের বার্ষিক প্রতিবেদনে পারমাণবিক অস্ত্রধর দেশের অস্ত্র উৎপাদনের খরচের ওপর নজর দেওয়া হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, এই ধরনের খরচের বিষয় সাধারণ নাগরিক ও আইনপ্রণেতা—উভয়ের কাছেই অজানা। কেন এমন খরচ করা হচ্ছে, তা তাঁদের বোধগম্য নয়।

আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করা হয়নি, তবু বিশেষজ্ঞদের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস ও তুরস্কে মার্কিন পারমাণবিক অস্ত্রের ঘাঁটি ছিল। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এরই মধ্যে রাশিয়া দাবি করেছে, বেলারুশে রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্রের মজুত আছে। কিন্তু অনেকে এ বিষয়ে নিশ্চিত নন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ন্যাটোভুক্ত ইউরোপীয় দেশগুলোতে মার্কিন পারমাণবিক অস্ত্র রাখার খরচ সম্পর্কে জনসাধারণ খুব কমই জানে। কারণ, ন্যাটোভুক্ত প্রতিটি দেশের মধ্যে পরমাণুসংক্রান্ত লেনদেন গোপন চুক্তির মাধ্যমে হয়।

এই প্রতিবেদনের সহলেখক অ্যালিসিয়া স্যান্ডার্স-জাক্রে বলেন, এটা গণতন্ত্রের প্রতি অবমাননা। কারণ, সাধারণ মানুষ ও আইনপ্রণেতাদের জানতে দেওয়া হয় না যে অন্য দেশের পারমাণবিক অস্ত্র তাঁদের মাটিতে তৈরি। অথবা তাঁদের করের কত অংশ এতে ব্যয় করা হচ্ছে।

আটটি দেশের কাছে প্রকাশ্যে পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে—যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ব্রিটেন, ফ্রান্স, চীন, ভারত, পাকিস্তান ও উত্তর কোরিয়া। এদিকে ইসরায়েলের কাছে পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে বলে ধারণা করা হয়, যদিও তারা কখনো আনুষ্ঠানিকভাবে এটি স্বীকার করেনি।

আইসিএএন জানিয়েছে, ২০২৪ সালে ৯টি দেশ পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির জন্য যে ব্যয় করেছে, তার মাত্রা জাতিসংঘের বাজেটের প্রায় ২৮ গুণ বেশি হতে পারে। এদিকে আইসিএএনের প্রোগ্রাম সমন্বয়কারী সুসি স্নাইডার বলেছেন, পারমাণবিক অস্ত্রের যে সমস্যা, তা সমাধান করা যেতে পারে।

আইসিএএন জানিয়েছে, ২০২৪ সালেই বেসরকারি খাত তাদের পারমাণবিক অস্ত্র চুক্তি থেকে কমপক্ষে ৪২ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, কমপক্ষে ৪৬৩ বিলিয়ন ডলারের চলমান পারমাণবিক অস্ত্র চুক্তি রয়েছে। যার মধ্যে কিছু চুক্তি কয়েক দশক ধরে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়নি। গত বছর কমপক্ষে ২০ বিলিয়ন ডলারের নতুন পারমাণবিক অস্ত্র চুক্তি করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কার্গো ভিলেজে আগুন: বিমানবন্দরের ভল্ট ভেঙে চুরি হলো ৭ আগ্নেয়াস্ত্র

বিচার বিভাগ: পদোন্নতির প্যানেলে ১১ শতাধিক কর্মকর্তা

প্রধান উপদেষ্টাকে রেফারির ভূমিকায় চায় জামায়াত

জোটে নিজ দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের বিধান রেখে আরপিও অধ্যাদেশ জারি

আজকের রাশিফল: ছবি পোস্ট করার আগে সাতবার ভাবুন, জ্ঞানের কথা চেপে রাখুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীকে আশ্রয় দেওয়ায় মেক্সিকোর সঙ্গে পেরুর সম্পর্কচ্ছেদ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
পেরুর ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী বেৎসি শ্যাভেজ। ছবি: সংগৃহীত
পেরুর ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী বেৎসি শ্যাভেজ। ছবি: সংগৃহীত

অভিশংসনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীকে আশ্রয় দেওয়ায় মেক্সিকোর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে লাতিন আমেরিকার দেশ পেরু। দেশটির অভিযোগ—মেক্সিকো ২০২২ সালের অভ্যুত্থানচেষ্টার মামলায় বিচারাধীন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেৎসি শ্যাভেজকে আশ্রয় দিয়েছে।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, গত রোববার এই ঘোষণা দেয় পেরু সরকার। এর কয়েক ঘণ্টা আগেই সাবেক প্রধানমন্ত্রী শ্যাভেজ মেক্সিকোর দূতাবাসে পালিয়ে যান।

পেরুর পররাষ্ট্রমন্ত্রী হুগো দে সেলা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আজ আমরা বিস্ময় ও গভীর দুঃখের সঙ্গে জেনেছি যে, সাবেক প্রেসিডেন্ট পেদ্রো কাস্তিয়োর কথিত অভ্যুত্থানচেষ্টার অন্যতম অপরাধী বেৎসি শ্যাভেজকে মেক্সিকোর দূতাবাসে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই অবন্ধুসুলভ পদক্ষেপের কারণে এবং অতীতে ও বর্তমানে মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ও সাবেক প্রেসিডেন্টদের বারবার পেরুর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের পরিপ্রেক্ষিতে পেরু সরকার আজ থেকেই মেক্সিকোর সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’ মেক্সিকো সরকার এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি।

শ্যাভেজের আইনজীবী রাউল নোব্লেসিয়া স্থানীয় রেডিও আরপিপিকে বলেন, তিনি কয়েক দিন ধরে তাঁর মক্কেলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। শ্যাভেজ আশ্রয়ের আবেদন করেছেন কি না, সেটিও তিনি জানেন না। শ্যাভেজ প্রেসিডেন্ট পেদ্রো কাস্তিয়োর সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০২২ সালের নভেম্বরে তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পান। তখন প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্টের মধ্যে টানাপোড়েন চলছিল।

কাস্তিয়ো ছিলেন একসময় গ্রামের স্কুলশিক্ষক ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা। তাঁকে বলা হয় পেরুর ‘প্রথম দরিদ্র প্রেসিডেন্ট।’ কিন্তু তিনি পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করলে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে তাঁকে অভিশংসন করা হয়। এরপর থেকেই লিমা ও মেক্সিকো সিটির সম্পর্ক খারাপ হতে থাকে।

অভিশংসনের পর কাস্তিয়ো মেক্সিকোর লিমা দূতাবাসে আশ্রয়ের চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু দূতাবাসে পৌঁছানোর আগেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়। একই মামলায় বেৎসি শ্যাভেজকেও অভিযুক্ত করা হয়।

এর আগে, ২০২২ সালের ডিসেম্বরেই পেরু মেক্সিকোর রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করে। কারণ, তখন মেক্সিকো কাস্তিয়োর স্ত্রী ও সন্তানদের আশ্রয় দিয়েছিল। এর পরের বছর ফেব্রুয়ারিতে পেরুর তৎকালীন প্রেসিডেন্ট দিনা বলুয়ার্তে মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেস ওব্রাদরের বিরুদ্ধে কাস্তিয়োর পক্ষে কথা বলে পেরুর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের অভিযোগ তোলেন এবং মেক্সিকো সিটিতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতকে সাময়িকভাবে প্রত্যাহার করে নেন।

এই বছরের মার্চে সাবেক প্রেসিডেন্ট কাস্তিয়ো ও শ্যাভেজের বিরুদ্ধে মামলার বিচার শুরু হয়। কাস্তিয়ো অভিশংসনের পর থেকেই কারাগারে আছেন। শ্যাভেজ গত সেপ্টেম্বরে জামিনে মুক্তি পান।

প্রসিকিউটররা শ্যাভেজের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন, তিনি কাস্তিয়োর সঙ্গে মিলে পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিলেন। শ্যাভেজের বিরুদ্ধে ২৫ বছরের কারাদণ্ড এবং কাস্তিয়োর বিরুদ্ধে ৩৪ বছরের কারাদণ্ডের আবেদন করেছে প্রসিকিউশন। তবে দুজনই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কার্গো ভিলেজে আগুন: বিমানবন্দরের ভল্ট ভেঙে চুরি হলো ৭ আগ্নেয়াস্ত্র

বিচার বিভাগ: পদোন্নতির প্যানেলে ১১ শতাধিক কর্মকর্তা

প্রধান উপদেষ্টাকে রেফারির ভূমিকায় চায় জামায়াত

জোটে নিজ দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের বিধান রেখে আরপিও অধ্যাদেশ জারি

আজকের রাশিফল: ছবি পোস্ট করার আগে সাতবার ভাবুন, জ্ঞানের কথা চেপে রাখুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ট্রাম্পের পর এবার সিরিয়ার প্রেসিডেন্টকে জার্মানি সফরের আমন্ত্রণ চ্যান্সেলরের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমদ আল–শারাকে জার্মানি সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ ম্যার্ৎজ। ছবি: সংগৃহীত
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমদ আল–শারাকে জার্মানি সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ ম্যার্ৎজ। ছবি: সংগৃহীত

জার্মানির চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ ম্যার্ৎজ আনুষ্ঠানিকভাবে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমদ আল-শারাকে জার্মানি সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। আলোচনার বিষয় হবে—দেশটিতে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত সিরিয়ার নাগরিকদের দেশে ফেরত পাঠানো। বার্লিন এখন সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ ও অভিবাসন নীতিতে কঠোর অবস্থান নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এর আগে, আহমদ আল–শারাকে যুক্তরাষ্ট্র সফরের আমন্ত্রণ জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

লেবাননের সম্প্রচারমাধ্যম আল–মায়েদিনের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। ম্যার্ৎজ গতকাল সোমবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা অবশ্যই অপরাধীদের সিরিয়ায় ফেরত পাঠাব। এটাই পরিকল্পনা। এখন আমরা সেটি খুব নির্দিষ্টভাবে বাস্তবায়ন করব।’

এই আমন্ত্রণ জার্মানির সিরিয়া সংক্রান্ত নীতির পরিবর্তনের বড় ইঙ্গিত। ম্যার্ৎজ বলেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিকে স্থিতিশীল করতে আল-শারার সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করতে চান তিনি। তিনি বলেন, ‘এটা আমরা একসঙ্গে সমাধান করতে চাই।’

ম্যার্ৎজের এই কঠোর অবস্থান একেবারেই ভিন্ন সাবেক চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা ম্যার্কেলের নীতি থেকে। ২০১৫ সালে মেরকেল ‘ওপেন-ডোর’ শরণার্থী নীতি চালু করেন, যাতে ১০ লাখেরও বেশি অভিবাসী—যাদের বেশির ভাগই সিরিয়ার—জার্মানিতে আশ্রয় পান। এরপর থেকে দেশটিতে ডানপন্থী দলগুলোর জনপ্রিয়তা বেড়ে যায়। সেই চাপের মুখে ম্যার্ৎজের নেতৃত্বে ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন দল দ্রুত প্রত্যাবাসন ও কড়াকড়ি সীমান্ত নিয়ন্ত্রণের পক্ষে অবস্থান নেয়। ম্যার্ৎজ বলেন, ‘আমি আবারও বলছি—সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ শেষ। এখন জার্মানিতে আশ্রয়ের কোনো যৌক্তিকতা নেই।’

এদিকে, সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদ আল-শায়বানি রোববার নিশ্চিত করেছেন, প্রেসিডেন্ট আহমদ আল-শারা নভেম্বরের শুরুর দিকে হোয়াইট হাউস সফর করবেন। আলোচনার মূল বিষয় হবে সিরিয়া পুনর্গঠন। মার্কিন বিশেষ দূত টম বারাক শনিবার প্রথম এ সফরের ঘোষণা দেন। হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা জানান, সফরটি নভেম্বরের ১০ তারিখের কাছাকাছি সময় অনুষ্ঠিত হবে।

আল-শায়বানি বলেন, ‘অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচনায় থাকবে। এর মধ্যে রয়েছে সিরিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নতুন অধ্যায় শুরু করা। আমরা দুই দেশের মধ্যে একটি শক্তিশালী অংশীদারত্ব গড়ে তুলতে চাই।’

সিরিয়ার কোনো প্রেসিডেন্টের যুক্তরাষ্ট্র সফর এই প্রথম। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, এর আগে কোনো সিরিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান আনুষ্ঠানিকভাবে ওয়াশিংটন সফর করেননি। এ সফরটি আরও তাৎপর্যপূর্ণ কারণ, গত সেপ্টেম্বরেই জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে নিউইয়র্কে ভাষণ দেন প্রেসিডেন্ট আল-শারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কার্গো ভিলেজে আগুন: বিমানবন্দরের ভল্ট ভেঙে চুরি হলো ৭ আগ্নেয়াস্ত্র

বিচার বিভাগ: পদোন্নতির প্যানেলে ১১ শতাধিক কর্মকর্তা

প্রধান উপদেষ্টাকে রেফারির ভূমিকায় চায় জামায়াত

জোটে নিজ দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের বিধান রেখে আরপিও অধ্যাদেশ জারি

আজকের রাশিফল: ছবি পোস্ট করার আগে সাতবার ভাবুন, জ্ঞানের কথা চেপে রাখুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আগামী বছরেই পানিতে নামবে চীনের তৈরি পাকিস্তানের ‘হাঙর’ সাবমেরিন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
পাকিস্তান আশা করছে, আগামী বছরেই পানিতে নামবে তাদের হাঙর ক্লাস সাবমেরিন। ছবি: সংগৃহীত
পাকিস্তান আশা করছে, আগামী বছরেই পানিতে নামবে তাদের হাঙর ক্লাস সাবমেরিন। ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তান নৌবাহিনী আশা করছে, চীনের নকশায় তৈরি করা সাবমেরিন আগামী বছরে সক্রিয় কার্যক্রমে যুক্ত হবে। দেশটির শীর্ষ অ্যাডমিরাল চীনা রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন। এই পদক্ষেপের ফলে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের প্রভাব মোকাবিলায় এবং মধ্যপ্রাচ্যের দিকে নিজেদের সামরিক উপস্থিতি জোরদারে বেইজিং আরও এগিয়ে যাবে।

গত রোববার চীনের রাষ্ট্র পরিচালিত সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানের নৌ–প্রধান অ্যাডমিরাল নাভিদ আশরাফ বলেন, ২০২৮ সালের মধ্যে পাকিস্তান আটটি হাঙর ক্লাস সাবমেরিন পাবে চীনের কাছ থেকে। এ সময় তিনি জানান, এই বিষয়ে দেশটির সঙ্গে পাকিস্তানের চুক্তি ‘সফলভাবে এগোচ্ছে।’ তিনি বলেন, এসব সাবমেরিন পাকিস্তানের উত্তর আরব সাগর ও ভারত মহাসাগরে টহল সক্ষমতা বাড়াবে।

চীনা সাবমেরিন নিয়ে এই অগ্রগতির খবর এমন এক সময়ে এল, যার কয়েক আগেই পাকিস্তান বিমানবাহিনী মে মাসে চীনা তৈরি জে-১০ যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে ভারতের ফরাসি তৈরি রাফাল বিমান ভূপাতিত করে। পারমাণবিক শক্তিধর দুই প্রতিবেশীর এই আকাশযুদ্ধ সামরিক বিশ্লেষকদের বিস্মিত করেছে। এতে চীনা প্রযুক্তির বিপরীতে পশ্চিমা অস্ত্র প্রযুক্তির শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলারের সাবমেরিন চুক্তি অনুযায়ী, প্রথম চারটি ডিজেলচালিত অ্যাটাক সাবমেরিন তৈরি হবে চীনে। বাকি চারটি তৈরি হবে পাকিস্তানে, যাতে দেশটির প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। পাকিস্তান এরই মধ্যে চীনের মধ্যাঞ্চলীয় হুবেই প্রদেশের একটি জাহাজঘাঁটি থেকে ইয়াংসি নদীতে তিনটি সাবমেরিন নামিয়েছে।

অ্যাডমিরাল আশরাফ গ্লোবাল টাইমসকে বলেন, ‘চীনা উৎপাদিত প্ল্যাটফর্ম ও সরঞ্জাম নির্ভরযোগ্য, প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত এবং পাকিস্তান নৌবাহিনীর অপারেশনাল প্রয়োজনের সঙ্গে মানানসই।’ তিনি আরও বলেন, ‘আধুনিক যুদ্ধের ধারা বদলাচ্ছে। এখন মানববিহীন ব্যবস্থা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও উন্নত ইলেকট্রনিক যুদ্ধ প্রযুক্তি ক্রমেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। পাকিস্তান নৌবাহিনী এসব প্রযুক্তির দিকে মনোযোগ দিচ্ছে এবং চীনের সঙ্গে এ বিষয়ে সহযোগিতা বাড়ানোর চেষ্টা করছে।’

চীনের অস্ত্রের সবচেয়ে বড় ক্রেতা ইসলামাবাদ। স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের তথ্যমতে, ২০২০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে চীনের মোট অস্ত্র রপ্তানির ৬০ শতাংশের বেশি গেছে পাকিস্তানে। অস্ত্র বিক্রির পাশাপাশি চীন পাকিস্তানে ব্যাপক বিনিয়োগ করছে আরব সাগরে প্রবেশের নিজস্ব পথ গড়ে তুলতে। প্রায় তিন হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ অর্থনৈতিক করিডর তৈরি করা হয়েছে, যা চীনের শিনজিয়াং অঞ্চল থেকে শুরু হয়ে পাকিস্তানের গভীর সমুদ্রবন্দর গোয়াদর পর্যন্ত বিস্তৃত।

চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিনপিংয়ের নেতৃত্বে বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগের অংশ এই চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর। এর লক্ষ্য হলো মধ্যপ্রাচ্য থেকে জ্বালানি আমদানির জন্য বিকল্প পথ নিশ্চিত করা, যাতে মালাক্কা প্রণালি—যা মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার মাঝখানে অবস্থিত এবং যুদ্ধে সহজেই অবরুদ্ধ হতে পারে—এড়িয়ে চলা যায়।

এই উদ্যোগ চীনের প্রভাব বিস্তার করেছে আফগানিস্তান, ইরান এবং মধ্য এশিয়ার দিকে। একই সঙ্গে এটি কার্যত ভারতকে ঘিরে ফেলেছে—কারণ চীনের মিয়ানমারের সামরিক জান্তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এবং বাংলাদেশের সঙ্গেও বন্ধুত্বপূর্ণ যোগাযোগ রয়েছে। বর্তমানে ভারত দেশীয়ভাবে তৈরি পারমাণবিক শক্তি চালিত সাবমেরিন পরিচালনা করছে। এ ছাড়া ফ্রান্স, জার্মানি ও রাশিয়ার সঙ্গে যৌথভাবে তৈরি তিন শ্রেণির ডিজেলচালিত আক্রমণ সাবমেরিনও ভারতের হাতে রয়েছে।

অ্যাডমিরাল আশরাফ বলেন, ‘চীনের সঙ্গে এই সহযোগিতা কেবল সামরিক হার্ডওয়্যারের বিষয় নয়; এটি একটি অভিন্ন কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গি, পারস্পরিক আস্থা এবং দীর্ঘমেয়াদি অংশীদারত্বের প্রতিফলন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আগামী দশকে এই সম্পর্ক আরও গভীর হবে। শুধু জাহাজ নির্মাণ ও প্রশিক্ষণ নয়, বরং যৌথ কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি, গবেষণা, প্রযুক্তি ভাগাভাগি এবং শিল্প সহযোগিতাও এতে যুক্ত হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কার্গো ভিলেজে আগুন: বিমানবন্দরের ভল্ট ভেঙে চুরি হলো ৭ আগ্নেয়াস্ত্র

বিচার বিভাগ: পদোন্নতির প্যানেলে ১১ শতাধিক কর্মকর্তা

প্রধান উপদেষ্টাকে রেফারির ভূমিকায় চায় জামায়াত

জোটে নিজ দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের বিধান রেখে আরপিও অধ্যাদেশ জারি

আজকের রাশিফল: ছবি পোস্ট করার আগে সাতবার ভাবুন, জ্ঞানের কথা চেপে রাখুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচন: মামদানি কি ইতিহাস গড়বেন, জরিপ কী বলছে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৯: ৩৮
জরিপ বলছে, নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে জোহরান মামদানির জয়ের সম্ভাবনাই বেশি। ছবি: সংগৃহীত
জরিপ বলছে, নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে জোহরান মামদানির জয়ের সম্ভাবনাই বেশি। ছবি: সংগৃহীত

নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। আগাম ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। স্থানীয় সময় আজ মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) প্রায় ৫০ লাখ নিবন্ধিত ভোটার শহরের পরবর্তী মেয়র নির্বাচনে ভোট দেবেন। তবে চূড়ান্ত ভোট গ্রহণের আগে বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী জোহরান মামদানি এগিয়ে আছেন।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, নিউইয়র্ক সিটি বোর্ড অব ইলেকশনের তথ্য অনুযায়ী, গত ৯ দিনে ৭ লাখ ৩৪ হাজার ৩১৭টি আগাম ভোট পড়েছে, যা ২০২১ সালের মেয়র নির্বাচনের তুলনায় চার গুণের বেশি।

রিয়েলক্লিয়ারপলিটিকসের সর্বশেষ গড় জরিপে দেখা যাচ্ছে, ডেমোক্রেটিক প্রার্থী জোহরান মামদানি ৪৫ দশমিক ৮ শতাংশ ভোটারের সমর্থন পেয়েছেন। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যান্ড্রু কুমোর চেয়ে ১৪ দশমিক ৭ পয়েন্ট এবং রিপাবলিকান কার্টিস স্লিওয়ার চেয়ে ২৮ দশমিক ৫ পয়েন্টে এগিয়ে। তবে গত সোমবার রাতে কুমোকে সমর্থন দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক। এই সমর্থন ভোটারদের মন বদলাতে পারবে কি না, তা এখনো পরিষ্কার নয়।

মামদানি ডেমোক্রেটিক সোশ্যালিস্ট অব আমেরিকার সদস্য। তাঁর নীতিমালা উদারপন্থী ভোটারদের মধ্যে উচ্ছ্বাস জাগিয়েছে। তিনি সর্বজনীন বিনা মূল্যের শিশু যত্ন, বাসে বিনা মূল্যে যাতায়াত এবং ভাড়া নিয়ন্ত্রিত প্রায় ১০ লাখ অ্যাপার্টমেন্টের ভাড়াটিয়াদের জন্য ভাড়া স্থগিত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

নিউইয়র্ক সিটিতে প্রতি চার বছর অন্তর মেয়র নির্বাচন হয়। একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে মেয়র হতে পারেন। বর্তমান মেয়র এরিক অ্যাডামস। তিনি ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে দায়িত্বে আছেন, এ বছর শুরুর দিকে প্রার্থিতা থেকে সরে দাঁড়ান। তার বিরুদ্ধে ঘুষ ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগে ফেডারেল অপরাধের মামলা হয়েছিল। তবে বিচারক এপ্রিল মাসে মামলা খারিজ করে দেন।

চলতি বছরের নির্বাচনটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এখানে প্রগতিশীল, মূলধারার ও রক্ষণশীল তিন শক্তি মুখোমুখি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় শহরটির নেতৃত্বের প্রতিযোগিতায়। রিয়েলক্লিয়ারপলিটিকসের বিভিন্ন জরিপে মামদানিকে কুমোর চেয়ে ৩ থেকে ২৫ পয়েন্ট পর্যন্ত এগিয়ে দেখানো হয়েছে।

তবে প্রতিটি জরিপে কিছুটা অনিশ্চয়তা থাকে। জরিপকারীরা সাধারণত ভোটারদের প্রতিনিধিত্বমূলক নমুনা নেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু সব জরিপেই ত্রুটির সীমা থাকে। ফলে প্রকৃত সমর্থন জরিপে প্রকাশিত সংখ্যার কয়েক পয়েন্ট ওপরে বা নিচে থাকতে পারে। কেউ কেউ অনির্ধারিত ভোটারদের ভিন্নভাবে ধরেন। তাই বিভিন্ন জরিপের ফল একত্র করলে পক্ষপাত কমে।

তবে এ বছরের শুরুতে অনুষ্ঠিত ডেমোক্রেটিক পার্টির মেয়রাল প্রাইমারিতে বেশির ভাগ জরিপ ভয়ানকভাবে ভুল প্রমাণিত হয়। প্রায় সব জরিপেই কুমোর সহজ জয়ের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মামদানি বিশাল ব্যবধানে জয় পান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কার্গো ভিলেজে আগুন: বিমানবন্দরের ভল্ট ভেঙে চুরি হলো ৭ আগ্নেয়াস্ত্র

বিচার বিভাগ: পদোন্নতির প্যানেলে ১১ শতাধিক কর্মকর্তা

প্রধান উপদেষ্টাকে রেফারির ভূমিকায় চায় জামায়াত

জোটে নিজ দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের বিধান রেখে আরপিও অধ্যাদেশ জারি

আজকের রাশিফল: ছবি পোস্ট করার আগে সাতবার ভাবুন, জ্ঞানের কথা চেপে রাখুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত