আলমগীর আলম
চলছে আমের মৌসুম। সুস্বাদু সব আম এখন হাতের নাগালে। কিন্তু আম দেখলেই অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে, আম খেলে কি ওজন বাড়বে? স্বাস্থ্যসচেতন মানুষ ফল খাবেন, ওজন-সচেতন মানুষ ওজন নিয়ে চিন্তা করবেন, এটিই স্বাভাবিক। এই আমের মৌসুমে আরও যে প্রশ্নগুলো মাথায় ঘোরে, সেগুলো হলো, আম খেলে কি সুগার বাড়বে? ডায়াবেটিসের রোগীরা কি আম খেতে পারবেন? আম খেলে ওজন বাড়ার পেছনে বৈজ্ঞানিক কারণগুলো মূলত আমের পুষ্টিগুণ, ক্যালরি এবং শরীরের বিপাক প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত।
উচ্চ ক্যালরি উপাদান
আমে প্রচুর প্রাকৃতিক চিনি (ফ্রুকটোজ ও গ্লুকোজ) থাকে, যা ক্যালরির উৎস। গড়ে ২০০-২৫০ গ্রামের একটি মাঝারি আকারের আমে ১৫০-২০০ ক্যালরি থাকে। যদি আপনি দৈনন্দিন প্রয়োজনের তুলনায় বেশি ক্যালরি গ্রহণ করেন, তাহলে অতিরিক্ত ক্যালরি শরীরে চর্বি হিসেবে জমা হয়, যা ওজন বাড়ায়। আম বেশি খেলে এই ক্যালরি গ্রহণ বেড়ে যেতে পারে।
কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ
আমে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ বেশি, প্রায় প্রতি আমে ৩৫-৪০ গ্রাম। এই কার্বোহাইড্রেট দ্রুত শক্তি সরবরাহ করে। কিন্তু যদি শরীর তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবহার না করে তবে এটি গ্লাইকোজেন বা চর্বি হিসেবে জমা হয়। ফ্রুকটোজ লিভারে প্রক্রিয়াজাত হয়। অতিরিক্ত ফ্রুকটোজ চর্বিতে রূপান্তরিত হতে পারে। বিশেষ করে যদি নিয়মিত বেশি পরিমাণে আম খাওয়া হয়।
গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (জিআই)
আমের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স মাঝারি থেকে উচ্চ, অর্থাৎ ৫১ থেকে ৬০। এর মানে, এটি রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়াতে পারে। ফলে ইনসুলিন নিঃসরণ বাড়ে, যা চর্বি সঞ্চয়কে উৎসাহিত করতে পারে। ইনসুলিন বেশি নিঃসৃত হলে শরীর ক্যালরি বার্ন করার পরিবর্তে সেগুলো সঞ্চয় করার দিকে মনোযোগ দেয়। এতে ওজন বাড়তে পারে।
অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা
আম সুস্বাদু এবং মিষ্টি হওয়ায় অনেকে এটি অতিরিক্ত খেয়ে ফেলেন। যদি আপনি আমের সঙ্গে চিনি, দুধ বা প্রক্রিয়াজাত খাবারের মতো উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার খান, তবে মোট ক্যালরি গ্রহণ আরও বেড়ে যায়। আমের মিল্কশেক বা আম দিয়ে তৈরি মিষ্টি খাবারে ক্যালরি অনেক বেশি থাকে।
আঁশ এবং তৃপ্তি
আমে আঁশ থাকলেও এটি তুলনামূলকভাবে কম তৃপ্তি দেয়। ফলে আম খাওয়ার পরও ক্ষুধা থাকতে পারে, যা অন্য খাবার খাওয়ার প্রবণতা বাড়ায়।
আঁশ কম হওয়ায় আমের কার্বোহাইড্রেট দ্রুত হজম হয়, যা রক্তে শর্করার ওঠানামা ঘটাতে পারে এবং ক্ষুধা বাড়াতে পারে।
শরীরের বিপাকীয় প্রক্রিয়া
যদি আপনার বিপাকীয় হার কম থাকে বা আপনি কম শারীরিক কার্যকলাপ করেন, তবে আমের ক্যালরি দ্রুত চর্বিতে রূপান্তরিত হতে পারে। এ ছাড়া কিছু মানুষের শরীর ফ্রুকটোজকে দ্রুত চর্বিতে রূপান্তর করে, যা জেনেটিক বা জীবনযাত্রার ওপর নির্ভর করে।
আম খেয়েও ওজন নিয়ন্ত্রণ
পরিমিত খান: দিনে ১ থেকে ২টি আম খাওয়া যাবে। অতিরিক্ত খাওয়া এড়িয়ে চলুন। আমের সঙ্গে আঁশসমৃদ্ধ খাবার (যেমন শাকসবজি) খান, যাতে তৃপ্তি বাড়ে। আম খাওয়ার পর শরীরের ক্যালরি বার্ন করতে ব্যায়াম করুন। আমের সঙ্গে চিনি বা উচ্চ ক্যালরিযুক্ত উপাদান মেশানো এড়িয়ে চলুন।
আম নিজে থেকে ওজন বাড়ায় না। এটি নির্ভর করে আপনি কী পরিমাণ আম খাচ্ছেন, কীভাবে খাচ্ছেন এবং আপনার সামগ্রিক জীবনযাত্রা কেমন, তার ওপর। পরিমাণে বেশি খেলে এবং শারীরিক কর্মকাণ্ড কম করলে আমের উচ্চ ক্যালরি এবং ফ্রুকটোজ শরীরে চর্বি জমার আশঙ্কা বাড়ায়। আম পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যকর ফল; তাই পরিমিতভাবে তা খাওয়া ভালো।
পরামর্শ দিয়েছেন: আলমগীর আলম, খাদ্যপথ্য ও আকুপ্রেশার বিশেষজ্ঞ, প্রধান নির্বাহী, প্রাকৃতিক নিরাময় কেন্দ্র
চলছে আমের মৌসুম। সুস্বাদু সব আম এখন হাতের নাগালে। কিন্তু আম দেখলেই অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে, আম খেলে কি ওজন বাড়বে? স্বাস্থ্যসচেতন মানুষ ফল খাবেন, ওজন-সচেতন মানুষ ওজন নিয়ে চিন্তা করবেন, এটিই স্বাভাবিক। এই আমের মৌসুমে আরও যে প্রশ্নগুলো মাথায় ঘোরে, সেগুলো হলো, আম খেলে কি সুগার বাড়বে? ডায়াবেটিসের রোগীরা কি আম খেতে পারবেন? আম খেলে ওজন বাড়ার পেছনে বৈজ্ঞানিক কারণগুলো মূলত আমের পুষ্টিগুণ, ক্যালরি এবং শরীরের বিপাক প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত।
উচ্চ ক্যালরি উপাদান
আমে প্রচুর প্রাকৃতিক চিনি (ফ্রুকটোজ ও গ্লুকোজ) থাকে, যা ক্যালরির উৎস। গড়ে ২০০-২৫০ গ্রামের একটি মাঝারি আকারের আমে ১৫০-২০০ ক্যালরি থাকে। যদি আপনি দৈনন্দিন প্রয়োজনের তুলনায় বেশি ক্যালরি গ্রহণ করেন, তাহলে অতিরিক্ত ক্যালরি শরীরে চর্বি হিসেবে জমা হয়, যা ওজন বাড়ায়। আম বেশি খেলে এই ক্যালরি গ্রহণ বেড়ে যেতে পারে।
কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ
আমে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ বেশি, প্রায় প্রতি আমে ৩৫-৪০ গ্রাম। এই কার্বোহাইড্রেট দ্রুত শক্তি সরবরাহ করে। কিন্তু যদি শরীর তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবহার না করে তবে এটি গ্লাইকোজেন বা চর্বি হিসেবে জমা হয়। ফ্রুকটোজ লিভারে প্রক্রিয়াজাত হয়। অতিরিক্ত ফ্রুকটোজ চর্বিতে রূপান্তরিত হতে পারে। বিশেষ করে যদি নিয়মিত বেশি পরিমাণে আম খাওয়া হয়।
গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (জিআই)
আমের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স মাঝারি থেকে উচ্চ, অর্থাৎ ৫১ থেকে ৬০। এর মানে, এটি রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়াতে পারে। ফলে ইনসুলিন নিঃসরণ বাড়ে, যা চর্বি সঞ্চয়কে উৎসাহিত করতে পারে। ইনসুলিন বেশি নিঃসৃত হলে শরীর ক্যালরি বার্ন করার পরিবর্তে সেগুলো সঞ্চয় করার দিকে মনোযোগ দেয়। এতে ওজন বাড়তে পারে।
অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা
আম সুস্বাদু এবং মিষ্টি হওয়ায় অনেকে এটি অতিরিক্ত খেয়ে ফেলেন। যদি আপনি আমের সঙ্গে চিনি, দুধ বা প্রক্রিয়াজাত খাবারের মতো উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার খান, তবে মোট ক্যালরি গ্রহণ আরও বেড়ে যায়। আমের মিল্কশেক বা আম দিয়ে তৈরি মিষ্টি খাবারে ক্যালরি অনেক বেশি থাকে।
আঁশ এবং তৃপ্তি
আমে আঁশ থাকলেও এটি তুলনামূলকভাবে কম তৃপ্তি দেয়। ফলে আম খাওয়ার পরও ক্ষুধা থাকতে পারে, যা অন্য খাবার খাওয়ার প্রবণতা বাড়ায়।
আঁশ কম হওয়ায় আমের কার্বোহাইড্রেট দ্রুত হজম হয়, যা রক্তে শর্করার ওঠানামা ঘটাতে পারে এবং ক্ষুধা বাড়াতে পারে।
শরীরের বিপাকীয় প্রক্রিয়া
যদি আপনার বিপাকীয় হার কম থাকে বা আপনি কম শারীরিক কার্যকলাপ করেন, তবে আমের ক্যালরি দ্রুত চর্বিতে রূপান্তরিত হতে পারে। এ ছাড়া কিছু মানুষের শরীর ফ্রুকটোজকে দ্রুত চর্বিতে রূপান্তর করে, যা জেনেটিক বা জীবনযাত্রার ওপর নির্ভর করে।
আম খেয়েও ওজন নিয়ন্ত্রণ
পরিমিত খান: দিনে ১ থেকে ২টি আম খাওয়া যাবে। অতিরিক্ত খাওয়া এড়িয়ে চলুন। আমের সঙ্গে আঁশসমৃদ্ধ খাবার (যেমন শাকসবজি) খান, যাতে তৃপ্তি বাড়ে। আম খাওয়ার পর শরীরের ক্যালরি বার্ন করতে ব্যায়াম করুন। আমের সঙ্গে চিনি বা উচ্চ ক্যালরিযুক্ত উপাদান মেশানো এড়িয়ে চলুন।
আম নিজে থেকে ওজন বাড়ায় না। এটি নির্ভর করে আপনি কী পরিমাণ আম খাচ্ছেন, কীভাবে খাচ্ছেন এবং আপনার সামগ্রিক জীবনযাত্রা কেমন, তার ওপর। পরিমাণে বেশি খেলে এবং শারীরিক কর্মকাণ্ড কম করলে আমের উচ্চ ক্যালরি এবং ফ্রুকটোজ শরীরে চর্বি জমার আশঙ্কা বাড়ায়। আম পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যকর ফল; তাই পরিমিতভাবে তা খাওয়া ভালো।
পরামর্শ দিয়েছেন: আলমগীর আলম, খাদ্যপথ্য ও আকুপ্রেশার বিশেষজ্ঞ, প্রধান নির্বাহী, প্রাকৃতিক নিরাময় কেন্দ্র
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে আজ শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) ৪ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। একই সময়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
৫ ঘণ্টা আগেদেশে এক দিনে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও ৩৫২ রোগী দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ সময়ে ডেঙ্গুতে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে আজ শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) এই হিসাব পাওয়া গেছে।
৬ ঘণ্টা আগেবিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সম্প্রতি তাদের ভ্যারিয়েন্ট আন্ডার মনিটরিং বা ভিইউএম তালিকায় এনবি ১.৮.১ যুক্ত করেছে। এটি মূলত ওমিক্রন উপধরন, যা ইউরোপ, আমেরিকা, এশিয়া এবং বাংলাদেশেও শনাক্ত হয়েছে। এনবি ১.৮.১ বেশ দ্রুত সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। তবে এই ভ্যারিয়েন্ট সংক্রমণে গুরুতর অসুস্থতা, হাসপাতালে ভর্তি বৃদ্ধির...
১৯ ঘণ্টা আগেদেখা দিয়েছে নতুন করোনা ভ্যারিয়েন্ট। এই সময়ে ওষুধের পাশাপাশি সঠিক ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। একমাত্র পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবারই পারে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে।
১৯ ঘণ্টা আগে