ডা. শাফেয়ী আলম তুলতুল
আজ ১১ সেপ্টেম্বর, পালিত হচ্ছে ‘বিশ্ব প্রাথমিক চিকিৎসা দিবস'। আন্তর্জাতিক রেডক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির উদ্যোগে ২০০০ সাল থেকে প্রতিবছর সেপ্টেম্বর মাসের দ্বিতীয় শনিবার দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। অন্যান্য যেকোনো দিবসের মতোই এর মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য প্রাথমিক চিকিৎসা ও এর গুরুত্ব সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরি করা। কেন্দ্র থেকে প্রান্ত পর্যন্ত প্রত্যেক মানুষের জন্য প্রাথমিক চিকিৎসা নিশ্চিত করা।
প্রাথমিক চিকিৎসার অর্থ একজন অসুস্থ বা আঘাতপ্রাপ্ত ব্যক্তির সর্বপ্রথম যে সহায়তার প্রয়োজন হয়। তাৎক্ষণিক পদক্ষেপে মানুষের জীবন বাঁচানোর চেষ্টাই প্রাথমিক চিকিৎসার লক্ষ্য। সম্ভব হলে অবস্থার উন্নয়ন, নিদেনপক্ষে গুরুতর অবনতি রোধ করা।
জরুরি নয় যে, প্রাথমিক চিকিৎসা সব সময় হাসপাতাল ব্যবস্থাপনায় চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে হতে হবে। বরং হাসপাতাল পর্যন্ত পৌঁছানোর সময়টুকুতে করণীয় নির্ধারণ এবং আত্মবিশ্বাস ও দক্ষতার সঙ্গে সেটি সামাল দেওয়াও প্রাথমিক চিকিৎসার অন্তর্ভুক্ত। এভাবে জরুরি মুহূর্তে যেকোনো সাধারণ মানুষই আরেকজনের প্রাণ বাঁচাতে পারেন। তবে শুধু উৎসাহ নয়, জীবন বাঁচাতে গিয়ে উল্টো ক্ষতি করে ফেলতে না চাইলে, সঠিক জ্ঞান এবং দক্ষতারও প্রয়োজন। এ জন্য ফার্স্ট এইড বক্সের কিছু উপকরণের পাশাপাশি প্রাথমিক চিকিৎসার প্রশিক্ষণও প্রয়োজন। আমাদের দেশে ফার্স্ট এইড বক্স পরিচিত হলেও প্রশিক্ষণ বা সেই জরুরি মুহূর্তে করণীয় বিষয়গুলো খুব একটা পরিচিত নয়। তবে আগ্রহী ব্যক্তিদের এবং এ রকম বিশেষ দিন সামনে রেখে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আয়োজন ও তত্ত্বাবধানে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। স্কুলের শিশুদের জরুরি নম্বরে ফোন করে সাহায্য প্রার্থনা থেকে শুরু করে প্রাথমিক চিকিৎসার একদম মৌলিক বিষয়গুলো শেখানো হলে এটি অনেক বেশি ফলপ্রসূ হবে।
প্রাথমিক চিকিৎসার পরিধি বিস্তর। রান্নাঘরের আগুনের আঁচে হাত পুড়ে ফোসকা পড়া বা ছুরিতে হাত কেটে যাওয়া থেকে অনেক বড় সড়ক দুর্ঘটনা, পানিতে যাত্রীবাহী লঞ্চডুবি, বন্যা থেকে সুনামি, যেকোনো সংকটপূর্ণ মুহূর্তে, যেকোনো অসুস্থতায় প্রথম ও তাৎক্ষণিক পদক্ষেপই প্রাথমিক চিকিৎসার অন্তর্গত।
যেকোনো দুর্ঘটনায় আমরা আমাদের অভিজ্ঞতা ও উপস্থিত বুদ্ধি খাঁটিয়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে থাকি। উপযুক্ত জ্ঞান ও প্রশিক্ষণে পদক্ষেপটি বহুলাংশে কার্যকর হতে পারে এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে এটি জীবন রক্ষা করতে সহায়তা করবে।
বাড়িতে একটি ফার্স্ট এইড বক্স থাকলে তা কাজে লাগবেই। এমনকি আমরা ট্রাভেল বা ভ্রমণ করার সময়ও একটি ফার্স্ট এইড বক্স সঙ্গে রাখতে পারি। এতে অনেক কিছুই থাকতে পারে। যেমন—গজ, ব্যান্ডেজ, সিজার, ডেটল, স্যাভলনের মতো অ্যান্টিসেপ্টিক, কিছু জরুরি ওষুধ, খাওয়ার স্যালাইন, ডায়াবেটিক রোগীর জন্য চিনি ইত্যাদি। এগুলো দিয়ে প্রাথমিকভাবে ছোটখাটো দুর্ঘটনা মোকাবিলা করা যাবে, যাতে একজন মানুষ কোনোভাবে আহত বা হঠাৎ করে অসুস্থ হলে তাঁকে জরুরি প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া যায়। কিছু সরঞ্জাম ব্যবহার করে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে, যেমন—ব্লাডপ্রেশার মাপার মেশিন, ডায়াবেটিস রোগীর সুগার চেক করার জন্য গ্লুকোমিটার। এসব সরঞ্জামের সাহায্যে প্রাথমিকভাবে অবস্থা সামাল দিয়ে কিছু সময় পাওয়া যায়, যাতে দুর্ঘটনায় পড়া মানুষকে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাওয়া যায়।
দুর্ঘটনার প্রকারভেদ নানা রকম হলেও আজকের দিনে সবচেয়ে সাধারণ কিন্তু সবচেয়ে প্রাণঘাতী হলো সড়ক দুর্ঘটনা। অথচ আঘাতের এক ঘণ্টার মধ্যে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হলে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার শতকরা ৫০ ভাগ কমিয়ে আনা সম্ভব। এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিতে নজর দিতে এ বছর বিশ্ব প্রাথমিক চিকিৎসা দিবসের স্লোগান নির্বাচন করা হয়েছে ‘ফার্স্ট এইড অ্যান্ড রোড সেফটি’—প্রাথমিক চিকিৎসা ও নিরাপদ সড়ক।
গাড়িচালক, পথচারী ও সাধারণ মানুষ আমরা সবাই মিলে ট্রাফিক আইন মেনে চলে দুর্ঘটনা থেকে বাঁচতে পারি। আমাদের সতর্কতা ও সচেতনতাই হতে পারে জীবন ও মৃত্যুর মাঝখানের পর্দা।
লেখক: মেডিকেল অফিসার, কুয়েত–বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতাল, ঢাকা
আজ ১১ সেপ্টেম্বর, পালিত হচ্ছে ‘বিশ্ব প্রাথমিক চিকিৎসা দিবস'। আন্তর্জাতিক রেডক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির উদ্যোগে ২০০০ সাল থেকে প্রতিবছর সেপ্টেম্বর মাসের দ্বিতীয় শনিবার দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। অন্যান্য যেকোনো দিবসের মতোই এর মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য প্রাথমিক চিকিৎসা ও এর গুরুত্ব সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরি করা। কেন্দ্র থেকে প্রান্ত পর্যন্ত প্রত্যেক মানুষের জন্য প্রাথমিক চিকিৎসা নিশ্চিত করা।
প্রাথমিক চিকিৎসার অর্থ একজন অসুস্থ বা আঘাতপ্রাপ্ত ব্যক্তির সর্বপ্রথম যে সহায়তার প্রয়োজন হয়। তাৎক্ষণিক পদক্ষেপে মানুষের জীবন বাঁচানোর চেষ্টাই প্রাথমিক চিকিৎসার লক্ষ্য। সম্ভব হলে অবস্থার উন্নয়ন, নিদেনপক্ষে গুরুতর অবনতি রোধ করা।
জরুরি নয় যে, প্রাথমিক চিকিৎসা সব সময় হাসপাতাল ব্যবস্থাপনায় চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে হতে হবে। বরং হাসপাতাল পর্যন্ত পৌঁছানোর সময়টুকুতে করণীয় নির্ধারণ এবং আত্মবিশ্বাস ও দক্ষতার সঙ্গে সেটি সামাল দেওয়াও প্রাথমিক চিকিৎসার অন্তর্ভুক্ত। এভাবে জরুরি মুহূর্তে যেকোনো সাধারণ মানুষই আরেকজনের প্রাণ বাঁচাতে পারেন। তবে শুধু উৎসাহ নয়, জীবন বাঁচাতে গিয়ে উল্টো ক্ষতি করে ফেলতে না চাইলে, সঠিক জ্ঞান এবং দক্ষতারও প্রয়োজন। এ জন্য ফার্স্ট এইড বক্সের কিছু উপকরণের পাশাপাশি প্রাথমিক চিকিৎসার প্রশিক্ষণও প্রয়োজন। আমাদের দেশে ফার্স্ট এইড বক্স পরিচিত হলেও প্রশিক্ষণ বা সেই জরুরি মুহূর্তে করণীয় বিষয়গুলো খুব একটা পরিচিত নয়। তবে আগ্রহী ব্যক্তিদের এবং এ রকম বিশেষ দিন সামনে রেখে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আয়োজন ও তত্ত্বাবধানে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। স্কুলের শিশুদের জরুরি নম্বরে ফোন করে সাহায্য প্রার্থনা থেকে শুরু করে প্রাথমিক চিকিৎসার একদম মৌলিক বিষয়গুলো শেখানো হলে এটি অনেক বেশি ফলপ্রসূ হবে।
প্রাথমিক চিকিৎসার পরিধি বিস্তর। রান্নাঘরের আগুনের আঁচে হাত পুড়ে ফোসকা পড়া বা ছুরিতে হাত কেটে যাওয়া থেকে অনেক বড় সড়ক দুর্ঘটনা, পানিতে যাত্রীবাহী লঞ্চডুবি, বন্যা থেকে সুনামি, যেকোনো সংকটপূর্ণ মুহূর্তে, যেকোনো অসুস্থতায় প্রথম ও তাৎক্ষণিক পদক্ষেপই প্রাথমিক চিকিৎসার অন্তর্গত।
যেকোনো দুর্ঘটনায় আমরা আমাদের অভিজ্ঞতা ও উপস্থিত বুদ্ধি খাঁটিয়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে থাকি। উপযুক্ত জ্ঞান ও প্রশিক্ষণে পদক্ষেপটি বহুলাংশে কার্যকর হতে পারে এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে এটি জীবন রক্ষা করতে সহায়তা করবে।
বাড়িতে একটি ফার্স্ট এইড বক্স থাকলে তা কাজে লাগবেই। এমনকি আমরা ট্রাভেল বা ভ্রমণ করার সময়ও একটি ফার্স্ট এইড বক্স সঙ্গে রাখতে পারি। এতে অনেক কিছুই থাকতে পারে। যেমন—গজ, ব্যান্ডেজ, সিজার, ডেটল, স্যাভলনের মতো অ্যান্টিসেপ্টিক, কিছু জরুরি ওষুধ, খাওয়ার স্যালাইন, ডায়াবেটিক রোগীর জন্য চিনি ইত্যাদি। এগুলো দিয়ে প্রাথমিকভাবে ছোটখাটো দুর্ঘটনা মোকাবিলা করা যাবে, যাতে একজন মানুষ কোনোভাবে আহত বা হঠাৎ করে অসুস্থ হলে তাঁকে জরুরি প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া যায়। কিছু সরঞ্জাম ব্যবহার করে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে, যেমন—ব্লাডপ্রেশার মাপার মেশিন, ডায়াবেটিস রোগীর সুগার চেক করার জন্য গ্লুকোমিটার। এসব সরঞ্জামের সাহায্যে প্রাথমিকভাবে অবস্থা সামাল দিয়ে কিছু সময় পাওয়া যায়, যাতে দুর্ঘটনায় পড়া মানুষকে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাওয়া যায়।
দুর্ঘটনার প্রকারভেদ নানা রকম হলেও আজকের দিনে সবচেয়ে সাধারণ কিন্তু সবচেয়ে প্রাণঘাতী হলো সড়ক দুর্ঘটনা। অথচ আঘাতের এক ঘণ্টার মধ্যে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হলে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার শতকরা ৫০ ভাগ কমিয়ে আনা সম্ভব। এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিতে নজর দিতে এ বছর বিশ্ব প্রাথমিক চিকিৎসা দিবসের স্লোগান নির্বাচন করা হয়েছে ‘ফার্স্ট এইড অ্যান্ড রোড সেফটি’—প্রাথমিক চিকিৎসা ও নিরাপদ সড়ক।
গাড়িচালক, পথচারী ও সাধারণ মানুষ আমরা সবাই মিলে ট্রাফিক আইন মেনে চলে দুর্ঘটনা থেকে বাঁচতে পারি। আমাদের সতর্কতা ও সচেতনতাই হতে পারে জীবন ও মৃত্যুর মাঝখানের পর্দা।
লেখক: মেডিকেল অফিসার, কুয়েত–বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতাল, ঢাকা
পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালের রেডিওলজি ও ইমেজিং বিভাগের সিটি স্ক্যান মেশিনের ফিল্মসংকট দেখা দিয়েছে। এতে সিটি স্ক্যান করার প্রয়োজন এমন রোগী ও তাঁদের স্বজনদের দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। বিশেষ করে যাঁদের জরুরি ভিত্তিতে সিটি স্ক্যান করা প্রয়োজন, তাঁরা পড়ছেন সবচেয়ে বেশি...
১১ ঘণ্টা আগেআশার কথা হলো, পরিবর্তন আসছে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক যুগান্তকারী পরীক্ষায় দেখা গেছে, তীব্রভাবে চিনাবাদামের অ্যালার্জিতে আক্রান্ত দুই-তৃতীয়াংশ প্রাপ্তবয়স্ককে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে প্রতিদিন অল্প পরিমাণে চিনাবাদাম খাইয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় আনা সম্ভব হয়েছে।
২১ ঘণ্টা আগেঅতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার বা ‘আল্ট্রা প্রসেসড ফুড’ (ইউপিএফ) বেশি খাওয়ার কারণে শুধু স্থূলতা, হতাশা, ডায়াবেটিস কিংবা হৃদরোগই নয়, বাড়ছে অকালমৃত্যুর ঝুঁকিও। নতুন এক গবেষণায় বলা হয়েছে, এই ধরনের খাবার খাওয়ার কারণে শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই প্রতিবছর প্রায় ১ লাখ ২৪ হাজার মানুষের অকালমৃত্যু ঘটছে।
১ দিন আগেদেশের প্রায় পাঁচ লাখ শিশু সময়মতো টিকার সব ডোজ পাচ্ছে না। তাদের মধ্যে ৭০ হাজার শিশু কোনো টিকাই পায় না। টিকা না পাওয়ার হার শহরাঞ্চলে বেশি। টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করলেও এসব তথ্য উঠে এসেছে জাতিসংঘের শিশু তহবিল (ইউনিসেফ), বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)...
১ দিন আগে