Ajker Patrika

পরিবর্তিত সময় বদলে দিচ্ছে আচরণ

ড. আজহারুল ইসলাম
আপডেট : ১২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১২: ৩৯
পরিবর্তিত সময় বদলে দিচ্ছে আচরণ

যাই যাই করেও করোনাভাইরাস শিগগির আমাদের ছেড়ে যাচ্ছে না। এটাই এখন বাস্তবতা। এই বাস্তবতা মেনে নিয়েই হয়তো জীবনযাপন করছেন। বলা যায়, নতুন জীবনযাপনে অভ্যস্ত হতে বাধ্য হচ্ছেন। তবে যাপিত জীবনের সহজাত ঢং থেকে খোলস পরিবর্তন করা চাট্টিখানি কথা নয়। খোলস পরিবর্তন করতে গিয়ে অনেকের মতো হয়তো আপনিও পড়ছেন মানসিক পীড়ায়, যা আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটাচ্ছে।

পরিবর্তিত এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করার শুরুটা ছিল অনেক বেশি কঠিন। এ নিয়ে অসংখ্য গবেষণা হয়েছে এবং হচ্ছে। প্রায় সব গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, বেশিরভাগ মানুষ বলছেন, তাঁরা মনে চাপবোধ করছেন। অধিকাংশ সময় মন ভার হয়ে থাকছেন, ভবিষ্যৎ নিয়ে হতাশাবোধ করছেন অথবা মৃত্যু বা সংক্রমণের আশঙ্কায় ভীত থাকছেন। এসব অস্বাভাবিক উপসর্গ আচরণের মাধ্যমে প্রকাশ পাচ্ছে। করোনার ঝুঁকি বয়স্কদের বেশি। কিন্তু তথ্য-উপাত্ত বলছে, মানসিকভাবে বেশি অসুবিধায় ভুগেছেন এবং ভুগছেন তরুণেরা। শিশু ও নারীদের মধ্যেও এ সমস্যা তুলনামূলকভাবে বেশি। আবার যাঁদের মানসিক সমস্যার পূর্ব-ইতিহাস আছে, তাঁদের কষ্ট আরও বেড়ে গেছে।

আপনি কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হলে আপনার মধ্যে ক্যারিয়ার নিয়ে চরম অনিশ্চয়তা আর হতাশা দেখা দিতে পারে। জীবনের এ ধাপকে বলা হয় নিজেকে আবিষ্কার করা এবং প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সময়। অথচ অতিগুরুত্বপূর্ণ এ সময়ে দেখা যাচ্ছে পরিকল্পনামাফিক কোনো কিছুই হচ্ছে না। কঠিন পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলার সক্ষমতা মানুষের সহজাত। কিছু কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষের এ গুণের কারণে মহামারির শুরুর দিকের মানসিক সমস্যাগুলো ধীরে ধীরে কমে গেছে। এ সময় একে অন্যকে সহযোগিতা করার নজির বেড়েছে। তা ছাড়া, করোনার প্রতিষেধক টিকা মানুষের মনে আশার সঞ্চার করেছে।

শিক্ষা ও গবেষণায়ও করোনা মহামারি অনেক ইতিবাচক দিক নিয়ে এসেছে। পাঠদানে নিত্যনতুন প্রযুক্তির ব্যবহার হচ্ছে। গবেষণার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বেড়েছে বহুলাংশে। আপাতদৃষ্টিতে মানুষে মানুষে সামাজিক দূরত্ব বাড়ছে বলে মনে হলেও সামগ্রিকভাবে এই দূরত্ব অনেক কমেছে। যেটা অনেক আশার একটা খবর।

যা করা দরকার

  • মহামারির প্রভাব পুরোটাই নেতিবাচক নয়। তাই এটা নিয়ে দুশ্চিন্তা না করে এর সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলার চেষ্টা করুন।
  • শরীর ও মনের যত্ন বাড়িয়ে দিন। কায়িক পরিশ্রম বা ব্যায়াম আপনার শরীর ও মন দুটোই সুস্থ রাখবে।
  • কোনো ঘটনাকে বস্তুনিষ্ঠভাবে বিশ্লেষণ করার দক্ষতা উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা দূর করতে দারুণ কার্যকর। একটি বিষয়কে সরলীকরণ না করে সম্ভাব্য সব অবস্থান থেকে বিবেচনা করার চেষ্টা করুন।
  • পরিবারের সদস্যরা কীভাবে একে অন্যের আরও বেশি সহযোগী হবেন, আন্তরিক চেষ্টার মাধ্যমে তার পথ বের করুন।
  • কোনো ধরনের গুজবে কান দেবেন না। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

লেখক: কাউন্সেলিং সাইকোলজিস্ট, সহকারী অধ্যাপক, এডুকেশনাল অ্যান্ড কাউন্সেলিং সাইকোলজি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশ শুল্কমুক্ত আমদানির ঘোষণা দিতেই ভারতে হু হু করে বাড়ছে চালের দাম

‘আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে’, চিরকুটে লেখা

জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে উচ্চপদস্থ বোর্ড গঠন: আইএসপিআর

ফেসবুকে ছাত্রলীগ নেতার ‘হুমকি’, রাবিতে ১৫ আগস্টের কনসার্টে যাচ্ছে না আর্টসেল

যুক্তরাষ্ট্রে পা রাখামাত্র পুতিনকে গ্রেপ্তারের আহ্বান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত