ডা. তাহমিদা খানম
ঋতুচক্রের আবর্তনে প্রকৃতিতে শরৎ সমাগত। অন্যদিকে দেশব্যাপী ডেঙ্গু আক্রান্তের হার ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে চলতি আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে আক্রান্তের সংখ্যা হতে পারে সর্বোচ্চ। বিগত কয়েক বছরের তুলনায় সংখ্যাগত হিসাবে এ বছর আক্রান্ত ও মৃতের হিসাব রেকর্ড ছাড়াতে পারে। মশাবাহিত ভাইরাসজনিত জ্বর হওয়ায় ডেঙ্গু জ্বরের নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা বা প্রতিষেধক এখনো সর্বজনীন নয়। এ ক্ষেত্রে ডেঙ্গুর সাধারণ চিকিৎসার পাশাপাশি ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদ্রোগ, ক্যানসার ও করোনার মতো দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে ডেঙ্গুর চিকিৎসা ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। এ ধরনের রোগীদের সচেতনতার সঙ্গে চিকিৎসা করা প্রয়োজন। শিশু, বয়স্ক এবং গর্ভবতীদেরও উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ রোগীর তালিকাভুক্ত করে অধিক মনোযোগ দিতে বলা হয়েছে। তারা ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে অবশ্যই হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হবে।
ডায়াবেটিস ও কিডনি রোগীর চিকিৎসা
যাঁরা দীর্ঘদিন ডায়বেটিসে ভুগছেন, তাঁদের অনেকেরই ডায়াবেটিসজনিত কিডনির সমস্যা থাকতে পারে। এসব রোগীর ক্ষেত্রে ডেঙ্গু চিকিৎসায় মূলত দুটি বিষয় খুব ভালো করে খেয়াল রাখা প্রয়োজন। প্রথমত, তাঁদের রক্তে চিনির মাত্রা। কারণ, ডেঙ্গু রোগীদের রক্তে চিনির মাত্রা কমেও যেতে পারে। আবার যথাসময়ে সঠিক চিকিৎসা না পেলে ডেঙ্গু রোগীর ডায়াবেটিস বেড়ে গিয়ে ডায়াবেটিক কিটো অ্যাসিডোসিস নামক জটিলতা তৈরি হয় এবং সেটি রোগীর পানিশূন্যতা আরও বাড়িয়ে দেয়। তাই রক্তে চিনির মাত্রা অন্তত ছয় ঘণ্টা পরপর মাপা উচিত। দ্বিতীয়ত, তাঁরা আগে থেকেই যে ওষুধগুলো খাচ্ছেন, সেগুলোর দিকে খেয়াল করতে হবে। সম্ভব হলে মেটফরমিন ওষুধটি বন্ধ করা যেতে পারে। কারণ, এটি রোগীর রক্তের অম্ল ও ক্ষারের ভারসাম্য নষ্ট ত্বরান্বিত করতে পারে। পরিশেষে এ ধরনের রোগীদের খুব সতর্কতার সঙ্গে স্যালাইন দিতে হবে, যেন কিডনি আক্রান্ত থাকলেও তা মোকাবিলা করা যায়।
ক্রনিক কিডনি ডিজিস বা দীর্ঘমেয়াদি কিডনিজনিত সমস্যায় যাঁরা ভুগছেন, তাঁদের শরীর অনেক সময় ফোলা থাকে। এসব রোগীর দৈনন্দিন সব পানি গ্রহণ সাধারণ এক থেকে দেড় লিটারের বেশি নির্ধারিত থাকে না। তাই এ ধরনের রোগী যখন ডেঙ্গু আক্রান্ত হন, তখন মূলত ফ্লুইড বা তরলের পরিমাপ মুখে বা শিরাপথে খুব সতর্কতার সঙ্গে হিসাব করে দিতে হয়। প্রতিনিয়ত লক্ষ রাখতে হয়, অতিরিক্ত তরল গ্রহণজনিত কোনো জটিলতা হয় কি না। এ ছাড়া তাঁদের রক্তে লবণ-পানি ও অম্ল-ক্ষারের ভারসাম্য খুব দ্রুত পরিবর্তন হয়। তাই চিকিৎসার ক্ষেত্রে এসব বিষয়ে গভীর মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন।
হার্টের রোগীর চিকিৎসা
যাঁরা দীর্ঘদিনের হার্ট ফেইলিওর বা হার্ট ব্লকজনিত সমস্যায় আক্রান্ত, ডেঙ্গু চিকিৎসায় তাঁদের ক্ষেত্রে নজরদারি প্রয়োজন। এসব ভেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রে কতটুকু তরল মুখে খাবেন বা শিরাপথে নেবেন; কোন ধরনের তরল ব্যবহার করতে হবে—এ ব্যাপারে সচেতনতার সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। অন্য যেসব ওষুধ পূর্ব থেকে চলছে, সেগুলোর ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ মতামত নিতে হবে। যদি রক্তচাপ কমে যায়, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ খাওয়া বন্ধ রাখতে হবে।
ক্যানসার রোগীর চিকিৎসা
ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীদের বিভিন্ন ধরনের জটিলতা থাকে। তাই তাঁদের ডেঙ্গু হলে অবশ্যই হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অধীনে চিকিৎসা নিতে হবে। তবে পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ, নির্দেশিত পরিমাণ তরল খাবার খাওয়া (দৈনিক কমপক্ষে আড়াই লিটার) তাঁদের অনেকটাই ভালো রাখতে পারে।
করোনা রোগীর চিকিৎসা
বাংলাদেশের জনগণের একটি বড় অংশ করোনায় আক্রান্ত হয়েছিল। তাদের অনেকে এখনো করোনার দীর্ঘমেয়াদি জটিলতায় ভুগছে। এসব রোগীকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা প্রয়োজন, যাতে কোনো ধরনের জটিলতা হলে দ্রুত চিকিৎসা দেওয়া যায়। বাড়িতে এ ধরনের রোগীর নিয়মিত রক্তচাপ, রক্তে চিনির মাত্রা, অক্সিজেনের পরিমাণ মাপা যেতে পারে। কোনো ধরনের ঝুঁকি মনে হলে হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে।
মূলত সচেতনতা এবং নিয়মিত পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ডেঙ্গু রোগের তীব্রতা ও জটিলতাগুলো থেকে দূরে রাখা সম্ভব। এসব রোগীকে ‘উচ্চ ঝুঁকিসম্পন্ন ডেঙ্গু রোগীর’ আওতায় এনে সর্বোচ্চ মনোযোগ দিয়ে ঘরে ও হাসপাতালে ডেঙ্গুর যত্ন ও চিকিৎসা দিতে হবে।
ডা. তাহমিদা খানম, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
ঋতুচক্রের আবর্তনে প্রকৃতিতে শরৎ সমাগত। অন্যদিকে দেশব্যাপী ডেঙ্গু আক্রান্তের হার ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে চলতি আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে আক্রান্তের সংখ্যা হতে পারে সর্বোচ্চ। বিগত কয়েক বছরের তুলনায় সংখ্যাগত হিসাবে এ বছর আক্রান্ত ও মৃতের হিসাব রেকর্ড ছাড়াতে পারে। মশাবাহিত ভাইরাসজনিত জ্বর হওয়ায় ডেঙ্গু জ্বরের নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা বা প্রতিষেধক এখনো সর্বজনীন নয়। এ ক্ষেত্রে ডেঙ্গুর সাধারণ চিকিৎসার পাশাপাশি ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদ্রোগ, ক্যানসার ও করোনার মতো দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে ডেঙ্গুর চিকিৎসা ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। এ ধরনের রোগীদের সচেতনতার সঙ্গে চিকিৎসা করা প্রয়োজন। শিশু, বয়স্ক এবং গর্ভবতীদেরও উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ রোগীর তালিকাভুক্ত করে অধিক মনোযোগ দিতে বলা হয়েছে। তারা ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে অবশ্যই হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হবে।
ডায়াবেটিস ও কিডনি রোগীর চিকিৎসা
যাঁরা দীর্ঘদিন ডায়বেটিসে ভুগছেন, তাঁদের অনেকেরই ডায়াবেটিসজনিত কিডনির সমস্যা থাকতে পারে। এসব রোগীর ক্ষেত্রে ডেঙ্গু চিকিৎসায় মূলত দুটি বিষয় খুব ভালো করে খেয়াল রাখা প্রয়োজন। প্রথমত, তাঁদের রক্তে চিনির মাত্রা। কারণ, ডেঙ্গু রোগীদের রক্তে চিনির মাত্রা কমেও যেতে পারে। আবার যথাসময়ে সঠিক চিকিৎসা না পেলে ডেঙ্গু রোগীর ডায়াবেটিস বেড়ে গিয়ে ডায়াবেটিক কিটো অ্যাসিডোসিস নামক জটিলতা তৈরি হয় এবং সেটি রোগীর পানিশূন্যতা আরও বাড়িয়ে দেয়। তাই রক্তে চিনির মাত্রা অন্তত ছয় ঘণ্টা পরপর মাপা উচিত। দ্বিতীয়ত, তাঁরা আগে থেকেই যে ওষুধগুলো খাচ্ছেন, সেগুলোর দিকে খেয়াল করতে হবে। সম্ভব হলে মেটফরমিন ওষুধটি বন্ধ করা যেতে পারে। কারণ, এটি রোগীর রক্তের অম্ল ও ক্ষারের ভারসাম্য নষ্ট ত্বরান্বিত করতে পারে। পরিশেষে এ ধরনের রোগীদের খুব সতর্কতার সঙ্গে স্যালাইন দিতে হবে, যেন কিডনি আক্রান্ত থাকলেও তা মোকাবিলা করা যায়।
ক্রনিক কিডনি ডিজিস বা দীর্ঘমেয়াদি কিডনিজনিত সমস্যায় যাঁরা ভুগছেন, তাঁদের শরীর অনেক সময় ফোলা থাকে। এসব রোগীর দৈনন্দিন সব পানি গ্রহণ সাধারণ এক থেকে দেড় লিটারের বেশি নির্ধারিত থাকে না। তাই এ ধরনের রোগী যখন ডেঙ্গু আক্রান্ত হন, তখন মূলত ফ্লুইড বা তরলের পরিমাপ মুখে বা শিরাপথে খুব সতর্কতার সঙ্গে হিসাব করে দিতে হয়। প্রতিনিয়ত লক্ষ রাখতে হয়, অতিরিক্ত তরল গ্রহণজনিত কোনো জটিলতা হয় কি না। এ ছাড়া তাঁদের রক্তে লবণ-পানি ও অম্ল-ক্ষারের ভারসাম্য খুব দ্রুত পরিবর্তন হয়। তাই চিকিৎসার ক্ষেত্রে এসব বিষয়ে গভীর মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন।
হার্টের রোগীর চিকিৎসা
যাঁরা দীর্ঘদিনের হার্ট ফেইলিওর বা হার্ট ব্লকজনিত সমস্যায় আক্রান্ত, ডেঙ্গু চিকিৎসায় তাঁদের ক্ষেত্রে নজরদারি প্রয়োজন। এসব ভেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রে কতটুকু তরল মুখে খাবেন বা শিরাপথে নেবেন; কোন ধরনের তরল ব্যবহার করতে হবে—এ ব্যাপারে সচেতনতার সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। অন্য যেসব ওষুধ পূর্ব থেকে চলছে, সেগুলোর ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ মতামত নিতে হবে। যদি রক্তচাপ কমে যায়, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ খাওয়া বন্ধ রাখতে হবে।
ক্যানসার রোগীর চিকিৎসা
ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীদের বিভিন্ন ধরনের জটিলতা থাকে। তাই তাঁদের ডেঙ্গু হলে অবশ্যই হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অধীনে চিকিৎসা নিতে হবে। তবে পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ, নির্দেশিত পরিমাণ তরল খাবার খাওয়া (দৈনিক কমপক্ষে আড়াই লিটার) তাঁদের অনেকটাই ভালো রাখতে পারে।
করোনা রোগীর চিকিৎসা
বাংলাদেশের জনগণের একটি বড় অংশ করোনায় আক্রান্ত হয়েছিল। তাদের অনেকে এখনো করোনার দীর্ঘমেয়াদি জটিলতায় ভুগছে। এসব রোগীকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা প্রয়োজন, যাতে কোনো ধরনের জটিলতা হলে দ্রুত চিকিৎসা দেওয়া যায়। বাড়িতে এ ধরনের রোগীর নিয়মিত রক্তচাপ, রক্তে চিনির মাত্রা, অক্সিজেনের পরিমাণ মাপা যেতে পারে। কোনো ধরনের ঝুঁকি মনে হলে হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে।
মূলত সচেতনতা এবং নিয়মিত পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ডেঙ্গু রোগের তীব্রতা ও জটিলতাগুলো থেকে দূরে রাখা সম্ভব। এসব রোগীকে ‘উচ্চ ঝুঁকিসম্পন্ন ডেঙ্গু রোগীর’ আওতায় এনে সর্বোচ্চ মনোযোগ দিয়ে ঘরে ও হাসপাতালে ডেঙ্গুর যত্ন ও চিকিৎসা দিতে হবে।
ডা. তাহমিদা খানম, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল শনিবার সকাল ৮টা থেকে আজ রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত) ৩৬ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। একই সময়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।
২১ ঘণ্টা আগেদেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে এক দিনে আরও ৩২৯ রোগী দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ সময়ে ডেঙ্গুতে এক পুরুষের মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল শনিবার সকাল ৮টা থেকে আজ রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত) এই হিসাব পাওয়া গেছে।
১ দিন আগেমানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার মধ্যে অন্যতম হলো বিষণ্নতা। এই সমস্যার জন্য জিনগত ও পরিবেশগত বিভিন্ন বিষয়কে দায়ী করা হয়। তবে নতুন এক গবেষণায় মুখের অণুজীব বৈচিত্র্য এবং বিষণ্নতার লক্ষণের মধ্যে গভীর সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছেন। আর ঘন ঘন বা অতিরিক্ত মুখ পরিষ্কারের অভ্যাস এই অণুজীব বৈচিত্র্য নষ্ট করতে পারে।
১ দিন আগেদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে আজ শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) ৪ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। একই সময়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
২ দিন আগে