Ajker Patrika

নারীর জটিল রোগ প্রসবজনিত ফিস্টুলা

ডা. বিলকিস বেগম চৌধুরী
নারীর জটিল রোগ প্রসবজনিত ফিস্টুলা

নারীর জন্য গর্ভধারণ একটি স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া। কিন্তু গর্ভ অথবা প্রসবকাল কম-বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। প্রসবকালে একজন নারীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এই সময়ের অন্য অনেক জটিলতা ও সমস্যার মধ্যে ভয়াবহ একটি হচ্ছে প্রসবজনিত ফিস্টুলা।

জেনিটাল ফিস্টুলা হলো নারীর জননপথের সঙ্গে মূত্রথলি বা মূত্রনালি বা মলদ্বার অথবা উভয়ের একটি অস্বাভাবিক সংযোগ স্থাপিত 
হওয়া। ফলে জননপথ দিয়ে অনবরত নিয়ন্ত্রণহীন প্রস্রাব বা পায়খানা বা উভয়ই ঝরতে থাকে।

এর প্রধান কারণ হচ্ছে বাধাগ্রস্ত প্রসব। তবে অপারেশন অথবা আঘাতের কারণেও এটা হতে পারে। যখন এটা প্রসবের কারণে হয়, তখন 
তাকে বলে প্রসবজনিত ফিস্টুলা। বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল ও দরিদ্র দেশসমূহে প্রসবজনিত ফিস্টুলা রোগী বেশি দেখা যায়। 

যেভাবে হয়
মানবদেহের তলপেট ও কোমরের নিচে যে হাড়গুলো থাকে, সেগুলোকে একত্রে শ্রোণিচক্র বা বস্তিকোটর অথবা ইংরেজিতে পেলভিস বলে। শ্রোণিচক্রের হাড় দিয়ে তৈরি গহ্বরে থাকে নারী-পুরুষের প্রজনন অঙ্গ, মূত্রথলি, মলাশয় ও মলদ্বার। প্রসবকালে জরায়ুর নিচের অংশ স্ফীত হয়ে জননপথের সঙ্গে মিলিত হয়ে পূর্ণাঙ্গ প্রসবপথ তৈরি হয়। প্রাকৃতিক নিয়মে এই পথেই একজন মানবশিশু মাতৃগর্ভ থেকে বের হয়ে পৃথিবীর আলো দেখে। কিন্তু প্রাকৃতিক নিয়মে, অর্থাৎ জননপথে প্রসব হওয়ার বেশ কিছু শর্ত থাকে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম প্রধান শর্ত হলো, গর্ভস্থ শিশুর ওজন বা মাথার আকৃতির সঙ্গে মায়ের শ্রোণিচক্রের সমতা থাকতে হবে। অর্থাৎ, মায়ের শ্রোণিচক্রের তুলনায় গর্ভস্থ শিশুর মাথা বা শরীর বড় হলে অথবা মায়ের শ্রোণিচক্র প্রয়োজনের তুলনায় ছোট হলে সেই পথে শিশু বের হয়ে আসতে পারে না। এটাকেই বলে বাধাগ্রস্ত প্রসব।

প্রসব যখন বিলম্বিত ও বাধাগ্রস্ত হয়, তখন শিশুর মাথা দীর্ঘক্ষণ প্রসবপথে আটকে থাকে। ফলে মায়ের প্রসবপথের আশপাশের নরম অঙ্গগুলো মায়ের শ্রোণিচক্রের হাড় এবং শিশুর মাথা দিয়ে ক্রমাগত আঘাতপ্রাপ্ত হতে থাকে। অনবরত এই চাপের ফলে মায়ের অঙ্গের পিষ্ট অংশে রক্ত চলাচল ব্যাহত হয় অথবা একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। এ অবস্থায় অঙ্গের পিষ্ট অংশে পচন ধরে এবং পরবর্তী সময়ে সাধারণত পাঁচ থেকে সাত দিনের মধ্যে খসে পড়ে। এর ফলে জননপথ এবং প্রস্রাব বা পায়খানার রাস্তা অথবা উভয়ের মধ্যে ছিদ্র তৈরি হয়। আর এই অস্বাভাবিক ছিদ্রপথে অনবরত প্রস্রাব বা পায়খানা বা উভয়ই ঝরতে থাকে। এ রকম অবস্থায় মা সাধারণত মৃত বা মৃতপ্রায় সন্তান প্রসব করে থাকে। 

প্রসবজনিত ফিস্টুলার ঝুঁকি যাদের বেশি

  • বাল্যবিবাহ এবং কম বয়সে গর্ভধারণ করলে: ১৮ বছর বা তার চেয়ে কম বয়সী নারীর প্রসবপথ অপূর্ণাঙ্গ থাকে, যা স্বাভাবিকভাবে সন্তান জন্মদানের জন্য উপযুক্ত নয়।
  • বহু সন্তানের জননী: পূর্বে দুই বা তিনের বেশি সন্তান প্রসব করেছেন এমন নারী। সাধারণত প্রথম শিশুর চেয়ে দ্বিতীয়, দ্বিতীয় শিশুর চেয়ে তৃতীয়—এভাবে ক্রমান্বয়ে গর্ভস্থ শিশুর ওজন বাড়তে থাকে। পাশাপাশি মায়ের শ্রোণিচক্রের প্রসারণক্ষমতা কমতে থাকে। ফলে প্রথম বা দ্বিতীয় সন্তান জন্মদানের সময় প্রসবপথে ঝামেলা না হলেও তৃতীয় অথবা চতুর্থ সন্তানের ক্ষেত্রে বাধাগ্রস্ত প্রসব হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়।
  • মায়ের উচ্চতা কম হলে: তার শ্রোণিচক্র দিয়ে স্বাভাবিক ওজনের শিশুর প্রসব ব্যাহত হতে পারে। সাধারণত বিত্তহীন নারীদের মধ্যে প্রসবজনিত ফিস্টুলা বেশি দেখা যায়। গর্ভবতী নারী অথবা তাঁর পরিবারের সদস্যদের গর্ভকালীন, প্রসবকালীন মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা সম্পর্কে সঠিক তথ্য এবং জ্ঞানের অপ্রতুলতাও এই রোগের জন্য দায়ী। 

রোগের জটিলতা শারীরিক সমস্যা
এই রোগীদের শরীরে প্রস্রাব বা পায়খানা অথবা উভয়ের তীব্র দুর্গন্ধ থাকে। ফিস্টুলা রোগীরা প্রস্রাব হওয়ার ভয়ে কম পানি পান করে বলে প্রস্রাবের ঘনত্ব বেড়ে যায়। ফলে মূত্রথলিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। অনবরত এই প্রস্রাব ঝরার কারণে জননপথের আশপাশে চুলকানি, এমনকি ঘা পর্যন্ত হতে পারে।

রোগ নির্ণয়
পজিটিভ ডাই টেস্ট: মিথিলিন ব্লু নামক একধরনের রঙিন ওষুধ নল বা ক্যাথেটারের মাধ্যমে মূত্রথলিতে প্রবেশ করানো হয়। যদি ফিস্টুলা থাকে, তাহলে এই রং জননপথে বের হয়ে আসে। এতে বোঝা যায় রোগীর ফিস্টুলা আছে। এই পরীক্ষায় সময় লাগে এক থেকে 
দুই মিনিট। এই টেস্টের পর কেউ পজিটিভ নির্ণীত হলে তাঁদের উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। 

রোগের চিকিৎসা
নিরাময়যোগ্য ও প্রতিরোধযোগ্য, প্রসবজনিত ফিস্টুলার দুই ধরনের চিকিৎসা আছে। 

নিরাময়যোগ্য
ফিস্টুলা রোগের একমাত্র চিকিৎসা হচ্ছে অপারেশন। বাংলাদেশে ১১টি সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং সাতটি বেসরকারি হাসপাতালে সম্পূর্ণ বিনা খরচে এই রোগীদের অপারেশন করা হয়। 

প্রতিরোধযোগ্য

  • ১৮ বছরের আগে নারীদের বিয়ে নয়, ২০ বছরের আগে গর্ভধারণ নয়।
  • গর্ভাবস্থায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মী দিয়ে কমপক্ষে নিয়মিত চারবার মায়ের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে হবে।
  • প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের সংখ্যা বাড়াতে হবে।
  • বাড়িতে প্রসবের সময় অবশ্যই প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মী থাকতে হবে।
  • বিলম্বিত ও বাধাগ্রস্ত প্রসবের ক্ষেত্রে রোগীকে প্রস্রাবের থলিতে নল বা ক্যাথেটার পরিয়ে চার সপ্তাহ নলসমেত রাখতে হবে। এর ফলে মূত্রথলির রক্ত চলাচল প্রক্রিয়া ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসবে। এতে করে ছোট্ট ফিস্টুলা থাকলে সেটা ভালো হয়ে যেতে পারে। আর বড় ফিস্টুলা থাকলে আকারে ছোট হয়ে যেতে পারে। ফলে অপারেশন সফল হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা তৈরি হবে। এই সময়ে মা পর্যাপ্ত পানি ও তরল খাবার খাবেন। 

ডা. বিলকিস বেগম চৌধুরী, সহযোগী অধ্যাপক, প্রসূতিবিদ্যা ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ এবং ফিস্টুলা সার্জন, কুমুদিনী উইমেন্স মেডিকেল কলেজ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২০২৬ বিশ্বকাপের ভেন্যুর তালিকা চূড়ান্ত করল আইসিসি, পাকিস্তান খেলবে কোথায়

সিএইচসিপি কারাগারে: ৫ দিন ধরে কমিউনিটি ক্লিনিক তালাবদ্ধ, স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত এলাকাবাসী

সবচেয়ে বেশি বেতন-ভাতা পাওয়া সিইও এখন মাস্ক, পরিমাণ ১ ট্রিলিয়ন ডলার

পোড়া কার্গো ভিলেজ থেকে মোবাইল ফোন চুরি, আনসার সদস্য বরখাস্ত

ডিজিটাল জাকাত ক্যালকুলেটর ব্যবহারের বিধান

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অননুমোদিত ওষুধ লিখলে শাস্তির নীতিমালার প্রস্তাব

  • চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্রে অনিবন্ধিত ওষুধ ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
  • চিকিৎসকদের সচেতন করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে।
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
অননুমোদিত ওষুধ লিখলে শাস্তির নীতিমালার প্রস্তাব

বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্রে অনিবন্ধিত ও অননুমোদিত ওষুধ লেখা হলে শাস্তির বিধান রেখে নীতিমালা প্রণয়নের সুপারিশ করেছে সংশ্লিষ্ট কমিটি। গতকাল বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলমের কাছে এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের কয়েকজন চিকিৎসক তাঁদের ব্যবস্থাপত্রে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের (ডিজিডিএ) অনুমোদিত ও নিবন্ধিত নয় এমন ওষুধ লিখে আসছেন। এতে রোগীদের স্বাস্থ্য বড় ধরনের ঝুঁকির মুখে পড়ছে। বিষয়টি তদন্তে মেডিকেল টেকনোলজি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আবু হেনা চৌধুরীকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কমিটির সদস্য হিসেবে রয়েছেন ফার্মাকোলজি বিভাগের সভাপতি ডা. ইলোরা শারমিন এবং উপ-রেজিস্ট্রার (আইন) ডা. আবু হেনা হেলাল উদ্দিন আহমেদ। সদস্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সহকারী পরিচালক (আইন) অ্যাডভোকেট তানিয়া আক্তার।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিএমইউর চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্রে অনিবন্ধিত ওষুধ ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেছে। কোনো ওষুধ, ভিটামিন, মিনারেল বা সাপ্লিমেন্টের নাম প্রেসক্রিপশনে লেখা হলে তা আইনভঙ্গের শামিল কি না এবং হলে কী ধরনের আইনি প্রতিকার বা শাস্তি প্রযোজ্য হতে পারে, তা নির্ধারণ করে প্রচলিত আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নীতিমালা প্রণয়নের সুপারিশ করেছে কমিটি। এ ক্ষেত্রে প্রামাণ্য আইন হিসেবে ‘ঔষধ ও কসমেটিকস আইন-২০২৩’ এবং ‘বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল আইন-২০১০’ উল্লেখ করা হয়েছে।

অন্য সুপারিশের মধ্যে রয়েছে—যেসব ভিটামিন, মিনারেল সাপ্লিমেন্ট ও হেলথ কেয়ার প্রোডাক্ট বিদেশ থেকে আমদানি হয়, সেগুলো ডিজিডিএ ও বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) কীভাবে যাচাই-বাছাই করে, কিংবা এসব পণ্য ব্যবহারের অনুমোদন দেয় কি না, তা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ নেওয়া। প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, ডিজিডিএর ওয়েবসাইটে নিবন্ধিত ওষুধের তালিকা সহজেই পাওয়া যায়। এই বিষয়ে চিকিৎসকদের সচেতন করতে আইটি সেকশনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে।

প্রতিকার হিসেবে বিএমইউর চিকিৎসকেরা যেন অননুমোদিত ওষুধ প্রেসক্রিপশনে না লেখেন সে বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে লিফলেট ছাপানো এবং সেমিনার ও সিম্পোজিয়াম আয়োজন করার সুপারিশ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২০২৬ বিশ্বকাপের ভেন্যুর তালিকা চূড়ান্ত করল আইসিসি, পাকিস্তান খেলবে কোথায়

সিএইচসিপি কারাগারে: ৫ দিন ধরে কমিউনিটি ক্লিনিক তালাবদ্ধ, স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত এলাকাবাসী

সবচেয়ে বেশি বেতন-ভাতা পাওয়া সিইও এখন মাস্ক, পরিমাণ ১ ট্রিলিয়ন ডলার

পোড়া কার্গো ভিলেজ থেকে মোবাইল ফোন চুরি, আনসার সদস্য বরখাস্ত

ডিজিটাল জাকাত ক্যালকুলেটর ব্যবহারের বিধান

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘জাতীয় জরুরি প্রয়োজন’ ছাড়া চিকিৎসকদের বদলি-পদায়ন বন্ধ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ১১: ০৫
‘জাতীয় জরুরি প্রয়োজন’ ছাড়া চিকিৎসকদের বদলি-পদায়ন বন্ধ

জাতীয় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া দেশের সব সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত চিকিৎসকদের বদলি ও পদায়ন আপাতত বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। বদলি-পদায়ন কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে অটোমেশন পদ্ধতি চালুর প্রস্তুতি চলমান থাকায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের আওতাধীন বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ, বিশেষায়িত ইনস্টিটিউট, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেলা ও উপজেলা হাসপাতালসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে কর্মরত অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সিনিয়র ও জুনিয়র কনসালট্যান্ট, সহকারী অধ্যাপক এবং প্রশাসনিক পদে থাকা চিকিৎসকেরা প্রায়ই উচ্চতর পদে চলতি দায়িত্ব বা পছন্দের কর্মস্থলে বদলি ও পদায়নের জন্য আবেদন করে থাকেন। বর্তমানে চিকিৎসকদের পদোন্নতি কার্যক্রম চলমান থাকায় এসব আবেদন নিষ্পত্তি করা সম্ভব হচ্ছে না।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, শিগগির পদোন্নতি কার্যক্রম সম্পন্ন করে পদোন্নতিপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের পছন্দ, বিসিএস ও মেধাক্রমসহ অন্যান্য বিষয় বিবেচনায় নিয়ে অটোমেশন পদ্ধতিতে বদলি-পদায়ন কার্যক্রম সম্পন্ন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে জাতীয় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কোনো আবেদনের ভিত্তিতে বদলি-পদায়ন কার্যক্রম আপাতত বন্ধ রাখা জরুরি।

বিজ্ঞপ্তিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়, বদলি-পদায়ন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা, গতি ও কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে ম্যানুয়াল পদ্ধতির পরিবর্তে অটোমেশন ব্যবস্থা চালু না হওয়া পর্যন্ত জাতীয় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কোনো আবেদন বিবেচনা করা হবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২০২৬ বিশ্বকাপের ভেন্যুর তালিকা চূড়ান্ত করল আইসিসি, পাকিস্তান খেলবে কোথায়

সিএইচসিপি কারাগারে: ৫ দিন ধরে কমিউনিটি ক্লিনিক তালাবদ্ধ, স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত এলাকাবাসী

সবচেয়ে বেশি বেতন-ভাতা পাওয়া সিইও এখন মাস্ক, পরিমাণ ১ ট্রিলিয়ন ডলার

পোড়া কার্গো ভিলেজ থেকে মোবাইল ফোন চুরি, আনসার সদস্য বরখাস্ত

ডিজিটাল জাকাত ক্যালকুলেটর ব্যবহারের বিধান

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জনস্বাস্থ্যে গুরুত্ব পাচ্ছে না সাপে কাটার চিকিৎসা

  • শুধু বিষধর সাপে দংশনের শিকার বছরে ১ লাখ মানুষ।
  • এর মধ্যে মারা যায় সাড়ে ৭ হাজার জন।
  • প্রান্তিক পর্যায়ে অপ্রতুল চিকিৎসা।
  • ব্যবহৃত প্রতিষেধক সব সাপের বিষে কার্যকর নয়।
মুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা
আপডেট : ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ০৯: ৫৯
জনস্বাস্থ্যে গুরুত্ব পাচ্ছে না সাপে কাটার চিকিৎসা

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে বছরে ৪ লাখের বেশি মানুষ সাপের দংশনের শিকার হয়। এর মধ্যে ২৪ শতাংশই, অর্থাৎ প্রায় ১ লাখ মানুষ বিষধর সাপের দংশনের শিকার হয়। আর এই দংশনের কারণে বছরে মৃত্যু হয় ৭ হাজার ৫১১ জনের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এরপরও জনস্বাস্থ্যে সাপের দংশনের সমস্যাটি উপেক্ষিত। প্রাথমিক চিকিৎসার সুযোগ সীমিত। জীবন বাঁচাতে অপরিহার্য অ্যান্টিভেনমের প্রাপ্যতা নিয়ে সমস্যা লেগেই থাকে। খোদ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) সাপের দংশনকে বৈশ্বিকভাবে অবহেলিত জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, দেশে প্রতি লাখ মানুষের মধ্যে ২৪৪ জন সাপের দংশনের শিকার হয় এবং এতে ৫ জনের মৃত্যু ঘটে। মৃত্যু না হলেও সাপের দংশনের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের ১১ শতাংশ বিষক্রিয়াজনিত পক্ষাঘাতে ভোগে। বছরে আড়াই হাজার গরুরও মৃত্যু হয় সাপের দংশনে, যা গ্রামীণ অর্থনীতির ওপর তুলনামূলকভাবে ছোট হলেও একটি চাপ।

পেশাভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সাপের দংশনের সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী হচ্ছেন গৃহবধূরা। তাঁরা মোট আক্রান্তের ৩২ শতাংশ। এরপর রয়েছে কৃষিশ্রমিক ২৬ শতাংশ ও শিক্ষার্থী ১৯ শতাংশ। বিভিন্ন মাধ্যমে দীর্ঘদিনের নানা প্রচারণার পরও চিকিৎসা গ্রহণের ক্ষেত্রে ৬১ শতাংশ ভুক্তভোগী এখনো ওঝার কাছে যায়। মাত্র ৩৫ শতাংশ যায় প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যসেবাদাতার কাছে। ওঝার অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতি প্রায়ই কাজে আসে না। এটি মৃত্যুহার ও স্বাস্থ্যের জটিলতা বাড়িয়ে দেয়।

ডব্লিউএইচওর হিসাবে, বছরে বিশ্বে প্রায় ৫৮ লাখ মানুষ সাপের দংশনের শিকার হয়। এর মধ্যে প্রায় দেড় লাখ মারা যায়। এশিয়ায় আক্রান্ত হয় প্রতিবছর প্রায় ২০ লাখ মানুষ। মৃত্যুর সংখ্যার প্রায় তিন গুণ মানুষ স্থায়ী শারীরিক অক্ষমতা বা অঙ্গচ্ছেদের শিকার হয়। সময়মতো সুচিকিৎসা না পেলে বিষধর সাপের দংশন পক্ষাঘাত (প্যারালাইসিস), রক্তপাতজনিত জটিলতা এবং কিডনি ও টিস্যুর ক্ষতি করতে পারে।

দেশজুড়ে সাপের দংশন ও চিকিৎসার চিত্র

উত্তরাঞ্চলের সবচেয়ে বড় বিশেষায়িত সরকারি চিকিৎসাপ্রতিষ্ঠান রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চলতি বছরের শুরু থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত সাপের দংশনের শিকার হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে ১ হাজার ২০৫ জন। তাদের মধ্যে ২৬০ জন বিষধর সাপের দংশনে আক্রান্ত হয়েছিল। আর এতে মারা গেছে ৩০ জন। এর মধ্যে ১০ জন চন্দ্রবোড়া (রাসেলস ভাইপার) এবং বাকিরা কালাচ, কেউটে ও গোখরা সাপের দংশনের শিকার হয়েছে।

দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিশেষায়িত সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত সাপের দংশনের শিকার রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৪১৪ জন। মারা গেছে ৭ জন।

দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সাপের দংশনের ঘটনা ঘটে খুলনা বিভাগে; প্রতি লাখে ৬১৬ জন। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বরিশাল বিভাগ, যেখানে প্রতি লাখে ৪২৯ জন সাপের দংশনের শিকার হয়। সারা দেশের ২৬টি জেলার সরকারি হাসপাতাল ও সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের শুরু থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ওই সব এলাকায় সাড়ে ৯ হাজার সাপে কাটা রোগী চিকিৎসা নিয়েছে। এর মধ্যে ৯৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে একটা বড় অংশ বিষধর সাপের দংশনের শিকার। গত মাস পর্যন্ত ২ হাজার ৫২৭ রোগীর শরীরে সাপের বিষের প্রতিষেধক (অ্যান্টিভেনম) প্রয়োগ করা হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সাপে কাটা রোগীর শরীরে অ্যান্টিভেনম প্রয়োগের সময় তাঁর শ্বাসকষ্ট, কিডনি বিকল হওয়া, রক্ত সঞ্চালনে সমস্যা, হৃদ্‌যন্ত্রের জটিলতা এবং অ্যালার্জি দেখা দিতে পারে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট চিকিৎসাকেন্দ্রে আইসিইউ, অক্সিজেন এবং ডায়ালাইসিস সুবিধা থাকা প্রয়োজন।

প্রতিষেধক ও তার কার্যকারিতা

বাংলাদেশের একজন মেডিসিন বিশেষজ্ঞের গবেষণায় দেখা গেছে, দেশের ৮২ প্রজাতির সাপের মধ্যে ২৮টি বিষধর। যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানভিত্তিক তথ্যসেবা প্রতিষ্ঠান প্রকুইস্টে প্রকাশিত হয়েছে গবেষণাটি। এতে বলা হয়েছে, সাপের ধরনভেদে অ্যান্টিভেনমের পরিমাণ ও প্রয়োগও ভিন্ন। যেমন গোখরার কামড়ে ১০০-২০০ মিলিলিটার এবং চন্দ্রবোড়ার ক্ষেত্রে ১০০-৮০০ মিলিলিটার।

গবেষকেরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশে প্রয়োগ করা অ্যান্টিভেনম কার্যকর হচ্ছে শুধু চন্দ্রবোড়া, গোখরা ও ক্রেইটজাতীয় সাপের বিষের বিরুদ্ধে। সামুদ্রিক সাপ, গ্রিন পিট ভাইপার, বিরলজাতের ক্রেইটসহ অন্য কিছু বিষধর সাপের দংশনে এটি অকার্যকর। বাংলাদেশে গোখরার তিনটি এবং ক্রেইটের পাঁচটি প্রজাতি রয়েছে। বর্তমানে দেশে গ্রিন পিট ভাইপারের বিষের প্রতিষেধক খুবই জরুরি। এটা কাছাকাছি দেশের মধ্যে থাইল্যান্ডে তৈরি হয়। তবে সেটা আমদানির অনুমতি নেই। অন্যদিকে সামুদ্রিক সব সাপের বিষ মারাত্মক ক্ষতিকর হলেও দেশে এর প্রতিষেধক পাওয়া যায় না।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সাপের একক প্রজাতির জন্য মনোভ্যালেন্ট এবং দুই বা ততোধিক প্রজাতির জন্য পলিভ্যালেন্ট অ্যান্টিভেনম ব্যবহৃত হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাংলাদেশে ব্যবহৃত পলিভ্যালেন্ট অ্যান্টিভেনম সব বিষধর সাপের ক্ষেত্রে শতভাগ কার্যকর নয়। এ জন্য স্থানীয় সাপের বিষের ভিত্তিতে অ্যান্টিভেনম তৈরি করা অপরিহার্য। সার্বিকভাবে দেশের চিকিৎসাব্যবস্থায় সাপের দংশনের বিষক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ বর্তমানে অপর্যাপ্ত বলে মূল্যায়ন করেছে ডব্লিউএইচও।

অ্যান্টিভেনমের প্রাপ্যতার সংকট

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত বছর অ্যান্টিভেনমের দাম ৪০ শতাংশ বেড়েছে। দেশে এ প্রতিষেধক বাজারজাত করে একটিমাত্র ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান। তাদের আমদানি করা অ্যান্টিভেনম ভারতের তামিলনাড়ুতে উৎপাদিত। ভারত থেকে বাল্ক পরিমাণে তরল আমদানি করে দেশীয় প্রতিষ্ঠানটি ভায়ালে ভরে বাজারজাত করে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, স্বাস্থ্যবিষয়ক সরকারি কার্যক্রমের কৌশলগত পরিকল্পনা বা অপারেশনাল প্ল্যান (ওপি) বিদ্যমান না থাকায় এখন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে হাসপাতালগুলোতে অ্যান্টিভেনম সরবরাহ করা হচ্ছে না। হাসপাতালগুলোকে নিজ উদ্যোগে কিনতে বলা হয়েছে। বিষধর সাপের দংশনে আহত রোগীদের চিকিৎসায় বছরে ১০ থেকে ২০ লাখ ভায়াল অ্যান্টিভেনমের প্রয়োজন।

মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এবং বাংলাদেশ টক্সিকোলজি সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম এ ফায়েজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, স্বাধীনতার আগে ১৯৬৭ সালে পাকিস্তানের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ অ্যান্টিভেনম উৎপাদন করেছিল। বাংলাদেশে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের উদ্যোগ নেওয়ার কথা থাকলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়েছে। মুন্সিগঞ্জে সরকারি প্রতিষ্ঠান এসেনশিয়াল ড্রাগ কোম্পানি লিমিটেডের (ইডিসিএল) নতুন কারখানায় অ্যান্টিভেনম উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে।

অ্যান্টিভেনমের অসম প্রাপ্যতা প্রসঙ্গে ডা. ফায়েজ বলেন, চিকিৎসা খাতে সাপের দংশনকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। হাসপাতালভিত্তিক তথ্যও আংশিক। কোথায় কত মানুষ সাপের দংশনে মারা যাচ্ছে, তা পূর্ণাঙ্গভাবে জানা নেই। ফলে অ্যান্টিভেনম সমানভাবে বিতরণ করা হয় না। আর আমদানিনির্ভরতা, বরাদ্দ ও দামে সংকট সৃষ্টি হয়।

বর্তমানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অ্যান্টিভেনমের ঘাটতি রয়েছে। উচ্চ আদালত গত আগস্টে উপজেলা পর্যায়ে অ্যান্টিভেনম সরবরাহের জন্য সরকারের প্রতি নির্দেশনা দেন। ২৮ অক্টোবরের মধ্যে অগ্রগতি প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। ওই নির্দেশনার পর দুই মাস পেরোলেও অনেক এলাকায় এখনো অ্যান্টিভেনম পাওয়া যাচ্ছে না বা খুব কম মজুত রয়েছে বলে জানা গেছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল) আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান বলেন, ‘অ্যান্টিভেনমের সংকট একেবারে নেই, তা বলা ঠিক হবে না। যেখানে ঘাটতি আছে, সেখানকার হাসপাতালকে পাশের উপজেলা থেকে সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে। যে ওষুধ প্রতিষ্ঠান এটি তৈরি করছে, তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা উৎপাদন বাড়াচ্ছে। দু-তিন মাসের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।’

এদিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসে অবস্থিত গবেষণা প্রতিষ্ঠান ভেনম রিসার্চ সেন্টারে দেশীয় অ্যান্টিভেনম তৈরির লক্ষ্যে কাজ চলছে। সেখানে ইতিমধ্যে রাসেলস ভাইপারের অ্যান্টিভেনম তৈরির পর ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শেষ হয়েছে। এতে সাফল্যও পাওয়া গেছে বলে সংশ্লিষ্ট গবেষকেরা জানিয়েছেন।

প্রতিষ্ঠানটির প্রধান সমন্বয়ক ডা. আবদুল্লাহ আবু সাঈদ বলেন, ‘সেন্টারের কার্যক্রম চলমান রাখার জন্য একটি প্রকল্প প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এটি অনুমোদিত হলে আগামী তিন বছর অ্যান্টিভেনম উৎপাদনের লক্ষ্যে গবেষণা চালিয়ে একটা ফল পাওয়া যাবে। এরপর উৎপাদনে যেতে ইডিসিএলের হয়তো আরও কয়েক বছর সময় লাগবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২০২৬ বিশ্বকাপের ভেন্যুর তালিকা চূড়ান্ত করল আইসিসি, পাকিস্তান খেলবে কোথায়

সিএইচসিপি কারাগারে: ৫ দিন ধরে কমিউনিটি ক্লিনিক তালাবদ্ধ, স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত এলাকাবাসী

সবচেয়ে বেশি বেতন-ভাতা পাওয়া সিইও এখন মাস্ক, পরিমাণ ১ ট্রিলিয়ন ডলার

পোড়া কার্গো ভিলেজ থেকে মোবাইল ফোন চুরি, আনসার সদস্য বরখাস্ত

ডিজিটাল জাকাত ক্যালকুলেটর ব্যবহারের বিধান

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ডেঙ্গুতে শিশুসহ ৫ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ১০৩৪

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ১৮: ১৪
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় এক শিশুসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে সারা দেশে ১ হাজার ৩৪ জন ডেঙ্গু রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল বুধবার সকাল ৮টা থেকে আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৩৪ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১০৩, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৮৮, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২০০, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৭১, খুলনা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৫৫, ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৬৬, রাজশাহী বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৭৯, রংপুর বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৩৩ ও সিলেট বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) পাঁচজন রয়েছে।

২৪ ঘণ্টায় ৯০১ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে। চলতি বছরে এ পর্যন্ত ৭২ হাজার ৩৮৮ জন রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে।

চলতি বছরের ৬ নভেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে ৭৬ হাজার ২৬ জন। এর মধ্যে ৬২ দশমিক ৩ শতাংশ পুরুষ ও ৩৭ দশমিক ৭ শতাংশ নারী রয়েছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে ছয় বছরের এক ছেলেশিশু রয়েছে। অন্যরা সবাই নারী। তাঁদের বয়স যথাক্রমে ৫০, ৪৫, ৩৮ ও ৩০ বছর। চলতি বছরে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ৩০৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২০২৬ বিশ্বকাপের ভেন্যুর তালিকা চূড়ান্ত করল আইসিসি, পাকিস্তান খেলবে কোথায়

সিএইচসিপি কারাগারে: ৫ দিন ধরে কমিউনিটি ক্লিনিক তালাবদ্ধ, স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত এলাকাবাসী

সবচেয়ে বেশি বেতন-ভাতা পাওয়া সিইও এখন মাস্ক, পরিমাণ ১ ট্রিলিয়ন ডলার

পোড়া কার্গো ভিলেজ থেকে মোবাইল ফোন চুরি, আনসার সদস্য বরখাস্ত

ডিজিটাল জাকাত ক্যালকুলেটর ব্যবহারের বিধান

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত