ডা. মৌসুমী আফরিন
করোনাকালে কিডনি রোগীদের সুষম খাবার খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিডনি ফাংশন ও ফেইলরের ধাপ, বিভিন্ন অঙ্গের কার্যক্ষমতা, রক্তের রিপোর্ট, রোগীর বয়স, ওজন, উচ্চতা, রোগীর কাজের ধরনসহ নানা বিষয় বিবেচনা করে একটি ব্যালেন্স ডায়েট চার্ট তৈরি করা হয়। সঠিক একটি ডায়েট রক্তের ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা বেড়ে যাওয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে।
প্রোটিন
কিডনি রোগীদের প্রয়োজনের তুলনায় প্রোটিন বেশি খাওয়া হলে তা ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। রোগের মাত্রা বিবেচনা করে প্রোটিন গ্রহণ করতে হবে। ক্যালোরির মাত্রা সঠিক না হলে অতিরিক্ত প্রোটিন শরীরে জমা হয়ে ইউরিয়া ও নাইট্রোজেন তৈরি করে। যা দু্র্বল কিডনির পক্ষে অপসারণ করা দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে।
প্রতিদিনের খাবারে প্রথম শ্রেণির প্রোটিন যেমন মাছ, মুরগীর মাংস, ডিমের সাদা অংশ, দুধ ও দুধের তৈরি খাবার ৩০-৪০ গ্রাম গ্রহণ করা যাবে।
কার্বোহাইড্রেড
ডায়াবেটিস না থাকলে শর্করা জাতীয় খাবারে বিশেষ কোনো বাধা নেই। তবে যতটা সম্ভব জটিল কার্বোহাইড্রেড গ্রহণ বাঞ্ছনীয়। যেমন গমের আটা, চিড়া, ওটস, মিস্কড গ্রেইন, সাগু ইত্যাদি। কিডনি রোগীর ক্যালোরির চাহিদার বেশির ভাগই কার্বোহাইড্রেটের মাধ্যমে পুরণ হয়।
পানি
যেহেতু কিডনি রোগীর কিডনির ফিলট্রেশনের (ছাঁকনি) কার্যকারিতা কমে যায়, তাই পানির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা অতি জরুরি। রোগীর পরবর্তী তৃতীয়, চতুর্থ বা পঞ্চম স্টেজ-জি এফ আর অনুযায়ী চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পানির পরিমাণ নির্ধারিত হবে। এ ক্ষেত্রে রোগের পর্যায় অনুযায়ী ২৪ ঘণ্টায় ৮০০-১২০০ সিসি তরল খাবার (চা, ডালের পানি, স্যুপ) খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
তেল বা চর্বি
বেশির ভাগ কিডনি রোগীই উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভোগেন। সাধারণত স্যাচুরেটেড বা সম্পৃক্ত চর্বিজাতীয় খাবার, ভাজাপোড়া, ফাস্টফুড এড়িয়ে চলতে হবে। রক্তের কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইড নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
পটাশিয়াম
কিডনি রোগীর পটাশিয়ামযুক্ত খাবারে সীমাবদ্ধতা রাখতে হবে। ডাবের পানি, কলা, শুকনো ফল, টমেটো, টক জাতীয় খাবার লেবু-মালটা-কমলা-আমড়া ইত্যাদি খাবারে পটাশিয়ামের মাত্রা বেশি থাকে। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে রক্তে পটাশিয়ামের মাত্রা যেন অধিক মাত্রায় কমে না যায়।
ফসফরাস ও মিনারেলস
দীর্ঘমেয়াদি কিডনি রোগীদের শরীরে ফসফরাসের মাত্রা খুব বেশি হলে তারা হৃদ্রোগের ঝুঁকিতে পড়তে পারে। ক্যালশিয়ামের মাত্রা কমে গেলেও পেশির অবস্থান দুর্বল হতে পারে। প্রোটিন ও ফসফরাস সমৃদ্ধ খাবার সীমিত করার কারণেও ক্যালশিয়াম কমে যায়।
কিডনি রোগ ভিটামিন ডি–এর বিপাক ক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটে। তাই ফসফরাস পরীক্ষার পাশাপাশি সিরাম ক্যালসিয়াম ও সিরাম ডি৩ লেভেল চেক করে প্রয়োজনীয় সাপ্লিমেন্ট দিতে হবে। পাশাপাশি ভিটামিন সি, জিংক, বি কমপ্লেক্সের ডেফিশিয়েন্সি বা ঘাটতি থেকে থাকলেও সাপ্লিমেন্ট হিসেবে যোগ করা যেতে পারে।
যেসব খাবার খাওয়া যাবে না—
• অতিরিক্ত লবণ ও লবণযুক্ত খাবার; যেমন—আচার, চিপস, শুঁটকি মাছ, সল্টেড বিস্কিট, মুড়ি, চানাচুর, সয়া সস ইত্যাদি।
• সব ধরনের কোমল পানীয়।
• সম্পৃক্ত বা স্যাচুরেটেড ফ্যাট; যেমন—ঘি, মাখন, ডালডা, পনির, নারকেল তেল ইত্যাদি।
• শুকনো ফল; যেমন—খেজুর, কিশমিশ, কাজুবাদাম ইত্যাদি।
• চকলেট, আইসক্রিম ও কেক।
• মাটির নিচের শাকশবজি; যেমন—আলু, মিষ্টি আলু, কচু ইত্যাদি।
• পুঁই শাক, পালং শাক এবং সব ধরনের ডাল ও বিচি।
• যেসব খাবারে পটাশিয়াম বেশি থাকে; যেমন—ডাবের পানি, কলা, আঙুর, নারকেলের তৈরি খাবার, কামরাঙা ইত্যাদি।
যেসব খাবার খেতে পারবেন—
• লাউ, জালি পটল, ঝিঙা, চিচিঙ্গা, কাঁচা পেঁপে, করলা, শালগম, মূলা, মাশরুম ইত্যাদি সবজি বিচি বাদে খাওয়া যাবে। সবজি ভালো করে সিদ্ধ করে রান্না করতে হবে।
• কালো জাম, আপেল, নাশপাতি, বেদানা, পেয়ারা, পাকা পেঁপে, বড়ই, আনারস, চেরি ইত্যাদি খেতে পারবেন।
• কিডনি রোগীরা রসুন (সালফার), অলিভ অয়েল (মনো আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট) খেতে পারবেন।
• প্রতিদিনের খাবারে পটাশিয়াম, ফসফরাস, সোডিয়াম ও প্রোটিনের পরিমাণ সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।
লেখক: কনসালট্যান্ট, ডায়াবেটোলজিস্ট, ফ্যামিলি ফিজিশিয়ান অ্যান্ড ক্লিনিক্যাল ডায়েটেশিয়ান।
করোনাকালে কিডনি রোগীদের সুষম খাবার খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিডনি ফাংশন ও ফেইলরের ধাপ, বিভিন্ন অঙ্গের কার্যক্ষমতা, রক্তের রিপোর্ট, রোগীর বয়স, ওজন, উচ্চতা, রোগীর কাজের ধরনসহ নানা বিষয় বিবেচনা করে একটি ব্যালেন্স ডায়েট চার্ট তৈরি করা হয়। সঠিক একটি ডায়েট রক্তের ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা বেড়ে যাওয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে।
প্রোটিন
কিডনি রোগীদের প্রয়োজনের তুলনায় প্রোটিন বেশি খাওয়া হলে তা ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। রোগের মাত্রা বিবেচনা করে প্রোটিন গ্রহণ করতে হবে। ক্যালোরির মাত্রা সঠিক না হলে অতিরিক্ত প্রোটিন শরীরে জমা হয়ে ইউরিয়া ও নাইট্রোজেন তৈরি করে। যা দু্র্বল কিডনির পক্ষে অপসারণ করা দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে।
প্রতিদিনের খাবারে প্রথম শ্রেণির প্রোটিন যেমন মাছ, মুরগীর মাংস, ডিমের সাদা অংশ, দুধ ও দুধের তৈরি খাবার ৩০-৪০ গ্রাম গ্রহণ করা যাবে।
কার্বোহাইড্রেড
ডায়াবেটিস না থাকলে শর্করা জাতীয় খাবারে বিশেষ কোনো বাধা নেই। তবে যতটা সম্ভব জটিল কার্বোহাইড্রেড গ্রহণ বাঞ্ছনীয়। যেমন গমের আটা, চিড়া, ওটস, মিস্কড গ্রেইন, সাগু ইত্যাদি। কিডনি রোগীর ক্যালোরির চাহিদার বেশির ভাগই কার্বোহাইড্রেটের মাধ্যমে পুরণ হয়।
পানি
যেহেতু কিডনি রোগীর কিডনির ফিলট্রেশনের (ছাঁকনি) কার্যকারিতা কমে যায়, তাই পানির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা অতি জরুরি। রোগীর পরবর্তী তৃতীয়, চতুর্থ বা পঞ্চম স্টেজ-জি এফ আর অনুযায়ী চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পানির পরিমাণ নির্ধারিত হবে। এ ক্ষেত্রে রোগের পর্যায় অনুযায়ী ২৪ ঘণ্টায় ৮০০-১২০০ সিসি তরল খাবার (চা, ডালের পানি, স্যুপ) খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
তেল বা চর্বি
বেশির ভাগ কিডনি রোগীই উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভোগেন। সাধারণত স্যাচুরেটেড বা সম্পৃক্ত চর্বিজাতীয় খাবার, ভাজাপোড়া, ফাস্টফুড এড়িয়ে চলতে হবে। রক্তের কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইড নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
পটাশিয়াম
কিডনি রোগীর পটাশিয়ামযুক্ত খাবারে সীমাবদ্ধতা রাখতে হবে। ডাবের পানি, কলা, শুকনো ফল, টমেটো, টক জাতীয় খাবার লেবু-মালটা-কমলা-আমড়া ইত্যাদি খাবারে পটাশিয়ামের মাত্রা বেশি থাকে। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে রক্তে পটাশিয়ামের মাত্রা যেন অধিক মাত্রায় কমে না যায়।
ফসফরাস ও মিনারেলস
দীর্ঘমেয়াদি কিডনি রোগীদের শরীরে ফসফরাসের মাত্রা খুব বেশি হলে তারা হৃদ্রোগের ঝুঁকিতে পড়তে পারে। ক্যালশিয়ামের মাত্রা কমে গেলেও পেশির অবস্থান দুর্বল হতে পারে। প্রোটিন ও ফসফরাস সমৃদ্ধ খাবার সীমিত করার কারণেও ক্যালশিয়াম কমে যায়।
কিডনি রোগ ভিটামিন ডি–এর বিপাক ক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটে। তাই ফসফরাস পরীক্ষার পাশাপাশি সিরাম ক্যালসিয়াম ও সিরাম ডি৩ লেভেল চেক করে প্রয়োজনীয় সাপ্লিমেন্ট দিতে হবে। পাশাপাশি ভিটামিন সি, জিংক, বি কমপ্লেক্সের ডেফিশিয়েন্সি বা ঘাটতি থেকে থাকলেও সাপ্লিমেন্ট হিসেবে যোগ করা যেতে পারে।
যেসব খাবার খাওয়া যাবে না—
• অতিরিক্ত লবণ ও লবণযুক্ত খাবার; যেমন—আচার, চিপস, শুঁটকি মাছ, সল্টেড বিস্কিট, মুড়ি, চানাচুর, সয়া সস ইত্যাদি।
• সব ধরনের কোমল পানীয়।
• সম্পৃক্ত বা স্যাচুরেটেড ফ্যাট; যেমন—ঘি, মাখন, ডালডা, পনির, নারকেল তেল ইত্যাদি।
• শুকনো ফল; যেমন—খেজুর, কিশমিশ, কাজুবাদাম ইত্যাদি।
• চকলেট, আইসক্রিম ও কেক।
• মাটির নিচের শাকশবজি; যেমন—আলু, মিষ্টি আলু, কচু ইত্যাদি।
• পুঁই শাক, পালং শাক এবং সব ধরনের ডাল ও বিচি।
• যেসব খাবারে পটাশিয়াম বেশি থাকে; যেমন—ডাবের পানি, কলা, আঙুর, নারকেলের তৈরি খাবার, কামরাঙা ইত্যাদি।
যেসব খাবার খেতে পারবেন—
• লাউ, জালি পটল, ঝিঙা, চিচিঙ্গা, কাঁচা পেঁপে, করলা, শালগম, মূলা, মাশরুম ইত্যাদি সবজি বিচি বাদে খাওয়া যাবে। সবজি ভালো করে সিদ্ধ করে রান্না করতে হবে।
• কালো জাম, আপেল, নাশপাতি, বেদানা, পেয়ারা, পাকা পেঁপে, বড়ই, আনারস, চেরি ইত্যাদি খেতে পারবেন।
• কিডনি রোগীরা রসুন (সালফার), অলিভ অয়েল (মনো আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট) খেতে পারবেন।
• প্রতিদিনের খাবারে পটাশিয়াম, ফসফরাস, সোডিয়াম ও প্রোটিনের পরিমাণ সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।
লেখক: কনসালট্যান্ট, ডায়াবেটোলজিস্ট, ফ্যামিলি ফিজিশিয়ান অ্যান্ড ক্লিনিক্যাল ডায়েটেশিয়ান।
আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে সারা দেশে শিশুদের জন্য বিনা মূল্যে টাইফয়েডের টিকা দেওয়া হবে। শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এই কর্মসূচি নিয়েছে। এই টিকাদান কার্যক্রমের জন্য ১ আগস্ট থেকে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন শুরু হয়েছে।
১৩ ঘণ্টা আগেঅনেক বছর ধরে স্থূলতাকে একক রোগ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি উঠেছে। কারণ এটি শুধু ডায়াবেটিস, হৃদ্রোগ, স্ট্রোক কিংবা কিছু ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায় না, স্থূলতা নিজেও এমন একটি স্বতন্ত্র স্বাস্থ্য সমস্যা, যার আলাদাভাবে চিকিৎসা প্রয়োজন।
১ দিন আগেদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু নিয়ে আরও ৩৮০ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ সময়ে চিকিৎসাধীন কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। আজ সোমবার (১৮ আগস্ট) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
২ দিন আগেপিতৃত্বকালীন ছুটির প্রয়োজন নেই বলে মনে করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। তিনি বলেছেন, ‘আমার মনে হয় না আলাদা পিতৃত্বকালীন ছুটি দরকার আছে। ছুটি যদি দিতে হয়, তাহলে বাবারও শিশুকে সময় দিতে হবে।’ আজ সোমবার (১৮ আগস্ট) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ উপলক্ষে
২ দিন আগে