Ajker Patrika

রক্তে গ্লুকোজ স্বাভাবিকের চেয়ে কমলে

অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী
রক্তে গ্লুকোজ স্বাভাবিকের চেয়ে কমলে

রক্তে চিনির পরিমাণ কম থাকলে আমরা বলি ‘হাইপো’ হয়েছে। বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয়, হাইপো গ্লাইসিমিয়া। যার অর্থ হলো ভীষণ অসুস্থ। তবে সাবধান হলে হাইপো গ্লাইসিমিয়ার ঝুঁকি আর জটিলতা এড়ানো যায়।

সাধারণত শরীর রক্তের গ্লুকোজ রাখে স্বাভাবিক আর স্থিতিশীল। গ্লুকোজ বাড়লে অগ্ন্যাশয় নামে শরীরের একটি গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হয় ইনসুলিন হরমোন, যা রক্তের গ্লুকোজ দেহকোষে ঢোকাতে সাহায্য করে। এই গ্লুকোজ জোগায় শক্তি। খালি পেটে রক্তের গ্লুকোজ ৪-৬ মিলিমল পার লিটার আর খাবারের দুই ঘণ্টা পর সর্বোচ্চ ৭ দশমিক ৮ মিলিমল পার লিটার স্ট্যান্ডার্ড।

ডায়াবেটিসের রোগী যদি ইনসুলিন বেশি নেন বা কোনো বেলার খাবার বাদ দেন, কঠোর ব্যায়াম করেন, তবে অনেক সময় হাইপো হয়। রক্তের গ্লুকোজ ৪ মিলিমল পার লিটারের কম হলে বুঝবেন হাইপো হয়েছে।

উপসর্গ

  • দুর্বল, ক্লান্ত বা ক্ষুধা লাগা
  • শরীর কাঁপা, ঘাম হওয়া, ত্বক শীতল হওয়া
  • বিরক্তি ভাব ও মনোযোগের অভাব
  • মাথা ধরা
  • বুক ধড়ফড় করা 
  • চোখে ঝাপসা দেখা

এ ছাড়া হতবিহ্বল, ঘুম ঘুম ভাব, অস্পষ্ট কথা, বেখাপ্পা ব্যবহার ও অচেতন হওয়ার মতো লক্ষণ দেখা দিতে পারে। খুব গুরুতর হলে মৃত্যুও হতে পারে।

প্রতিরোধে করণীয়

  • খাবার বাদ দেওয়া বা দেরিতে খাওয়া যাবে না
  • ইনসুলিন ইনজেকশন নিলে এর সঠিক ডোজ নিতে হবে
  • কঠোর ব্যায়াম করলে ইনসুলিন ডোজের সমন্বয় করতে হবে
  • নিয়মিত গ্লুকোমিটার দিয়ে রক্তের গ্লুকোজ মাপাতে হবে। একবার মাপার ১৫ মিনিট পর রক্তের গ্লুকোজ বেড়েছে কি না, সেটা দেখা
  • গ্লুকোজ ট্যাবলেট, ফলের জুস বা চিনি মিশ্রিত পানি সঙ্গে রাখুন। স্ট্যান্ডার্ড হলো ১৫-২০ গ্রাম শর্করা গ্রহণ করা। এর বাইরেও স্ন্যাক্স বা মিল নিতে হতে পারে চিকিৎসকের পরামর্শে
  • নিয়মিত ডায়াবেটিস চেকআপ করাতে হবে। এ ছাড়া মাপাতে হবে রক্তের গ্লুকোজ আর এইচবিএওয়ানসি (তিন মাসের গড় গ্লুকোজ মান)
  • টাইপ-১ ডায়াবেটিস থাকলে নিয়মিত দিনে চারবার করে রক্তের গ্লুকোজ মাপাতে হবে
  • গ্লুকোজের পরিমাণ ৫ মিলিমলের কম হলে কখনো গাড়ি চালানো যাবে না।

হাইপো হলে রোগীর স্বজনেরা যা করবেন

রোগীর স্বজন বা বন্ধুরা তাঁকে শান্তভাবে বসাবেন। গ্লুকোজ জেল থাকলে খাইয়ে দেবেন। তা না হলে দেবেন মিষ্টি বা ফলের জুস বা ২ চা-চামচ চিনি। সন্দেহ হলে তাঁর হৃৎস্পন্দন আর শ্বাস কেমন হচ্ছে তা দেখতে হবে। রোগী ভালো বোধ করলে রক্তের গ্লুকোজ মাপুন। খারাপ মনে হলে ৯৯৯-এ ফোন করে অ্যাম্বুলেন্স ডাকুন।

লেখক: বিশেষজ্ঞ ল্যাবরেটরি মেডিসিন, সাবেক অধ্যক্ষ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত