মুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা
দেশের গ্রামাঞ্চলে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান কমিউনিটি ক্লিনিক। তবে শুরুতেই কম বরাদ্দ এবং নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের কারণে বিদ্যমান সাড়ে ১৪ হাজারের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ ক্লিনিকের অবকাঠামোই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ব্যবহার-অনুপযোগী এ বিপুলসংখ্যক অবকাঠামো পুনর্নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
৫ হাজার ৮০টি ক্লিনিককে উচ্চ ও মধ্যম ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে তালিকা তৈরি করেছে সংশ্লিষ্ট কার্যালয়। তালিকাটি সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্তির জন্য ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
গ্রামীণ দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য মানসম্মত প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ১৯৯৬ সালে কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। প্রতি ৬ হাজার মানুষের জন্য একটি করে কেন্দ্র তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। ক্লিনিকগুলো নির্মাণের কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৯৮ সালে, অর্থাৎ আজ থেকে ২৭ বছর আগে। ক্লিনিকগুলো প্রথমদিকে কমিউনিটি-বেস্ড হেলথকেয়ার (সিবিএইচসি) কর্মসূচির মাধ্যমে পরিচালিত হয়। ২০১৮ সালে এর কার্যক্রমকে টেকসই করতে কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট আইন প্রণয়ন করা হয় এবং পরবর্তী সময়ে একটি ট্রাস্ট এই স্থানীয় স্বাস্থ্যসেবা কর্মসূচি পরিচালনার দায়িত্ব নেয়।
‘স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচি’ (এইচপিএনএসপি) নামে অপারেশনাল প্ল্যানের মেয়াদ গত বছর শেষ হওয়া সত্ত্বেও নতুন কর্মসূচি নেওয়া হয়নি। এ কারণে বর্তমানে ট্রাস্টের মাধ্যমেই রাজস্ব খাত থেকে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো পরিচালিত হচ্ছে। প্রসঙ্গত, দেশের স্বাস্থ্য খাতের সিংহভাগ অবকাঠামো ও প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবাসহ ৩০টির বেশি কর্মসূচি পরিচালিত হয় এইচপিএনএসপির আওতায়।
কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট জানায়, ২০২১ সাল পর্যন্ত ১৪ হাজার ১৪১টি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করা হয়েছে। শুরুর দুই বছরে ১০ হাজার ৭২৩টি ক্লিনিক কম ব্যয়ে নির্মিত হওয়ায় এগুলোর আয়ুষ্কাল দ্রুত শেষ হতে থাকে। ২০০৯-১৫ সালে ১ হাজার ৬২০ কোটি টাকা ব্যয়ে এসব ক্লিনিক সংস্কার ও নতুন ক্লিনিক নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রথম পর্যায়ে নির্মিত ১০ হাজার ৭২৩টির মধ্যে ১০ হাজার ৬২৪টিই সংস্কার করা হয় এবং হাওর ও পাহাড়সহ দুর্গম এলাকায় নতুন করে ২ হাজার ৭৩৭টি ক্লিনিক তৈরি করা হয়। ১৯৯৮-২০০১ সাল সময়ে প্রতিটি ক্লিনিক তুলনামূলকভাবে বেশ কম ব্যয়ে (১ থেকে সোয়া ১ লাখ টাকা) নির্মাণ করা হয়েছিল। এ কারণে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করা হয়। পরবর্তী সময়ে এগুলো ৬ থেকে ৭ লাখ টাকায় মেরামত করা হয়েছে। ক্লিনিকগুলো এখন দুই কক্ষের পরিবর্তে চার কক্ষের এবং উন্নত অবকাঠামোয় নির্মাণ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
সরকারের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ১৪ হাজার ৪২৫টি কমিউনিটি ক্লিনিকের মধ্যে সক্রিয় রয়েছে ১৪ হাজার ৩৬৩টি। সচল ক্লিনিকের মধ্যে ৫ হাজার ৮০টিকে উচ্চ ও মধ্যম ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে মন্ত্রণালয়ে তালিকা পাঠানো হয়েছে।
তালিকা অনুযায়ী, ঢাকা বিভাগে ৫৯৩টি উচ্চ ও ২৭২টি মধ্যম, রংপুরে ৪১৪টি উচ্চ ও ৩০৯টি মধ্যম, খুলনায় ৩০৩টি উচ্চ ও ২৯৭টি মধ্যম, সিলেটে ১৬২টি উচ্চ ও ১১৪টি মধ্যম, ময়মনসিংহে ৩৬১টি উচ্চ ও ১১৪টি মধ্যম, রাজশাহীতে ৪১৩টি উচ্চ ও ২৫৫টি মধ্যম, বরিশালে ৩১৭টি উচ্চ ও ১৭৪টি মধ্যম এবং চট্টগ্রামে ৫৭৩টি উচ্চ ও ২৯৮টি মধ্যম ঝুঁকিপূর্ণ ক্লিনিক রয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, পুনর্নির্মাণের পাশাপাশি কমিউনিটি ক্লিনিকের সংখ্যা বাড়ানোরও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। জাপান সরকারের বৈদেশিক সহায়তা সংস্থা জাইকার অর্থায়নে ৫০০টি ক্লিনিক নির্মাণ করা হবে।
প্রথম দুই বছরে নির্মিত ১০ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিকের মধ্যে অধিকাংশকে ২০২২ সালে পুনর্নির্মাণ ও সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছিল সরকার। তখন থেকে বেশ কিছুসংখ্যক ক্লিনিক নতুন করে নির্মাণ করা হয়।
কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের পরিচালক (মাঠ প্রশাসন) ডা. আসিফ মাহমুদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ২০২২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত কিছু ক্লিনিক পুনর্নির্মিত হয়েছে। তবে এখন তালিকা ধরে আরও অনেক ক্লিনিক পুনর্নির্মাণ করা হবে। যেসব ক্লিনিক পুরো নতুন করে নির্মাণ করা প্রয়োজন, তার তালিকা হালনাগাদ করা হচ্ছে। এটা চলমান প্রক্রিয়া। যেসব ক্লিনিকের বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে, সেগুলোর তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
ডা. আসিফ মাহমুদ আরও বলেন, ‘উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ বলতে যেসব ক্লিনিক এখনই নতুন করে নির্মাণ করা দরকার, সেগুলোকে বোঝানো হয়েছে। মধ্যম ঝুঁকিপূর্ণ হলো তার পরের স্তর। তবে উচ্চ বা মধ্যম ঝুঁকি যা-ই হোক, সবই পুনর্নির্মাণ প্রয়োজন। এসব ভবন দিয়ে কাজ চালানো যাবে না।’
জানা গেছে, ঝুঁকিপূর্ণ ক্লিনিকের মধ্যে বেশ কয়েকটিতে কার্যক্রম চালানো যাচ্ছে না। ক্লিনিকের কাজ চলছে স্থানীয় বিদ্যালয়, অন্য কোনো সরকারি স্থাপনা অথবা স্থানীয় লোকজনের বাড়ির উঠানে। এতে স্বাভাবিক সেবা ব্যাহত হচ্ছে।
কিছু ক্লিনিকের কাজ পাশের কোনো স্থাপনায় চলছে স্বীকার করলেও সেবা ব্যাহত হচ্ছে না বলেই দাবি করেছেন ট্রাস্টের পরিচালক আসিফ মাহমুদ।
কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো মাতৃত্বকালীন, গর্ভকালীন ও প্রসূতি সেবা, শিশুরোগের সমন্বিত চিকিৎসা, প্রজনন স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা, টিকাদান, নবদম্পতি নিবন্ধন, জন্ম-মৃত্যু ও প্রসবের সম্ভাব্য তারিখ নিবন্ধন, পুষ্টি শিক্ষা ও পুষ্টিকর খাদ্য সরবরাহ করে। বছরে প্রায় ১৬ কোটি মানুষ এই ক্লিনিকের সেবা গ্রহণ করেন।
পুনর্নির্মাণের মডেল যেমন হবে
ক্লিনিকের পুনর্নির্মাণের জন্য দুটি মডেল তৈরি করা হয়েছে। সমতল জমিতে যেসব ক্লিনিক নির্মাণ করা হবে, সেগুলোর ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৫ লাখ টাকা। উঁচু বা দুর্গম এলাকার ক্লিনিকপ্রতি ব্যয় হবে ৫০ লাখ টাকা।
ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘নতুন পরিকল্পনায় সাধারণ জমি ও উঁচু-দুর্গম এলাকার জন্য আলাদা মডেল তৈরি করা হয়েছে। এতে ভবনগুলো আরও টেকসই হবে। এটি সেবার মান বৃদ্ধিতেও সহায়ক হবে।’
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কমিউনিটি ক্লিনিকের ভবন এমনভাবে নির্মাণ করতে হবে, যেন কয়েক দশক ধরে সেবা দেওয়া সম্ভব হয়। এ ছাড়া সরকার ও ট্রাস্টের দায়িত্ব স্পষ্ট করতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ বলেন, ‘প্রধানত পরিকল্পনার অভাব ও দুর্নীতির কারণে বাংলাদেশে সরকারি খাতের অনেক অবকাঠামো টেকসই হয় না। শুরুতে কমিউনিটি ক্লিনিকের ভবনের মানে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। সংখ্যায় গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল।’
তাঁর মতে, ক্লিনিকগুলো যেভাবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা করা হয়েছিল, তা-ও বাস্তবায়িত হয়নি। রোগ প্রতিরোধমূলক ও স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির কেন্দ্র না হয়ে, এটি মূলত রোগের চিকিৎসাসেবার কেন্দ্র হিসেবে কাজ করছে। মেডিকেল শিক্ষায় প্রশিক্ষিত জনবলের বদলে সাধারণ শিক্ষিত ব্যক্তিদের স্বাস্থ্যসেবাকর্মী নিয়োগ করা হয়েছে।’
ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ বলেন, দুর্বল অবকাঠামো ও সীমিত জায়গা ছাড়াও অনগ্রসর ও দূরবর্তী এলাকায় ক্লিনিকগুলোর অবস্থানও বড় সমস্যা। এটি সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে জটিলতা সৃষ্টি করছে।
দেশের গ্রামাঞ্চলে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান কমিউনিটি ক্লিনিক। তবে শুরুতেই কম বরাদ্দ এবং নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের কারণে বিদ্যমান সাড়ে ১৪ হাজারের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ ক্লিনিকের অবকাঠামোই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ব্যবহার-অনুপযোগী এ বিপুলসংখ্যক অবকাঠামো পুনর্নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
৫ হাজার ৮০টি ক্লিনিককে উচ্চ ও মধ্যম ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে তালিকা তৈরি করেছে সংশ্লিষ্ট কার্যালয়। তালিকাটি সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্তির জন্য ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
গ্রামীণ দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য মানসম্মত প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ১৯৯৬ সালে কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। প্রতি ৬ হাজার মানুষের জন্য একটি করে কেন্দ্র তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। ক্লিনিকগুলো নির্মাণের কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৯৮ সালে, অর্থাৎ আজ থেকে ২৭ বছর আগে। ক্লিনিকগুলো প্রথমদিকে কমিউনিটি-বেস্ড হেলথকেয়ার (সিবিএইচসি) কর্মসূচির মাধ্যমে পরিচালিত হয়। ২০১৮ সালে এর কার্যক্রমকে টেকসই করতে কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট আইন প্রণয়ন করা হয় এবং পরবর্তী সময়ে একটি ট্রাস্ট এই স্থানীয় স্বাস্থ্যসেবা কর্মসূচি পরিচালনার দায়িত্ব নেয়।
‘স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচি’ (এইচপিএনএসপি) নামে অপারেশনাল প্ল্যানের মেয়াদ গত বছর শেষ হওয়া সত্ত্বেও নতুন কর্মসূচি নেওয়া হয়নি। এ কারণে বর্তমানে ট্রাস্টের মাধ্যমেই রাজস্ব খাত থেকে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো পরিচালিত হচ্ছে। প্রসঙ্গত, দেশের স্বাস্থ্য খাতের সিংহভাগ অবকাঠামো ও প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবাসহ ৩০টির বেশি কর্মসূচি পরিচালিত হয় এইচপিএনএসপির আওতায়।
কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট জানায়, ২০২১ সাল পর্যন্ত ১৪ হাজার ১৪১টি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করা হয়েছে। শুরুর দুই বছরে ১০ হাজার ৭২৩টি ক্লিনিক কম ব্যয়ে নির্মিত হওয়ায় এগুলোর আয়ুষ্কাল দ্রুত শেষ হতে থাকে। ২০০৯-১৫ সালে ১ হাজার ৬২০ কোটি টাকা ব্যয়ে এসব ক্লিনিক সংস্কার ও নতুন ক্লিনিক নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রথম পর্যায়ে নির্মিত ১০ হাজার ৭২৩টির মধ্যে ১০ হাজার ৬২৪টিই সংস্কার করা হয় এবং হাওর ও পাহাড়সহ দুর্গম এলাকায় নতুন করে ২ হাজার ৭৩৭টি ক্লিনিক তৈরি করা হয়। ১৯৯৮-২০০১ সাল সময়ে প্রতিটি ক্লিনিক তুলনামূলকভাবে বেশ কম ব্যয়ে (১ থেকে সোয়া ১ লাখ টাকা) নির্মাণ করা হয়েছিল। এ কারণে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করা হয়। পরবর্তী সময়ে এগুলো ৬ থেকে ৭ লাখ টাকায় মেরামত করা হয়েছে। ক্লিনিকগুলো এখন দুই কক্ষের পরিবর্তে চার কক্ষের এবং উন্নত অবকাঠামোয় নির্মাণ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
সরকারের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ১৪ হাজার ৪২৫টি কমিউনিটি ক্লিনিকের মধ্যে সক্রিয় রয়েছে ১৪ হাজার ৩৬৩টি। সচল ক্লিনিকের মধ্যে ৫ হাজার ৮০টিকে উচ্চ ও মধ্যম ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে মন্ত্রণালয়ে তালিকা পাঠানো হয়েছে।
তালিকা অনুযায়ী, ঢাকা বিভাগে ৫৯৩টি উচ্চ ও ২৭২টি মধ্যম, রংপুরে ৪১৪টি উচ্চ ও ৩০৯টি মধ্যম, খুলনায় ৩০৩টি উচ্চ ও ২৯৭টি মধ্যম, সিলেটে ১৬২টি উচ্চ ও ১১৪টি মধ্যম, ময়মনসিংহে ৩৬১টি উচ্চ ও ১১৪টি মধ্যম, রাজশাহীতে ৪১৩টি উচ্চ ও ২৫৫টি মধ্যম, বরিশালে ৩১৭টি উচ্চ ও ১৭৪টি মধ্যম এবং চট্টগ্রামে ৫৭৩টি উচ্চ ও ২৯৮টি মধ্যম ঝুঁকিপূর্ণ ক্লিনিক রয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, পুনর্নির্মাণের পাশাপাশি কমিউনিটি ক্লিনিকের সংখ্যা বাড়ানোরও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। জাপান সরকারের বৈদেশিক সহায়তা সংস্থা জাইকার অর্থায়নে ৫০০টি ক্লিনিক নির্মাণ করা হবে।
প্রথম দুই বছরে নির্মিত ১০ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিকের মধ্যে অধিকাংশকে ২০২২ সালে পুনর্নির্মাণ ও সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছিল সরকার। তখন থেকে বেশ কিছুসংখ্যক ক্লিনিক নতুন করে নির্মাণ করা হয়।
কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের পরিচালক (মাঠ প্রশাসন) ডা. আসিফ মাহমুদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ২০২২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত কিছু ক্লিনিক পুনর্নির্মিত হয়েছে। তবে এখন তালিকা ধরে আরও অনেক ক্লিনিক পুনর্নির্মাণ করা হবে। যেসব ক্লিনিক পুরো নতুন করে নির্মাণ করা প্রয়োজন, তার তালিকা হালনাগাদ করা হচ্ছে। এটা চলমান প্রক্রিয়া। যেসব ক্লিনিকের বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে, সেগুলোর তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
ডা. আসিফ মাহমুদ আরও বলেন, ‘উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ বলতে যেসব ক্লিনিক এখনই নতুন করে নির্মাণ করা দরকার, সেগুলোকে বোঝানো হয়েছে। মধ্যম ঝুঁকিপূর্ণ হলো তার পরের স্তর। তবে উচ্চ বা মধ্যম ঝুঁকি যা-ই হোক, সবই পুনর্নির্মাণ প্রয়োজন। এসব ভবন দিয়ে কাজ চালানো যাবে না।’
জানা গেছে, ঝুঁকিপূর্ণ ক্লিনিকের মধ্যে বেশ কয়েকটিতে কার্যক্রম চালানো যাচ্ছে না। ক্লিনিকের কাজ চলছে স্থানীয় বিদ্যালয়, অন্য কোনো সরকারি স্থাপনা অথবা স্থানীয় লোকজনের বাড়ির উঠানে। এতে স্বাভাবিক সেবা ব্যাহত হচ্ছে।
কিছু ক্লিনিকের কাজ পাশের কোনো স্থাপনায় চলছে স্বীকার করলেও সেবা ব্যাহত হচ্ছে না বলেই দাবি করেছেন ট্রাস্টের পরিচালক আসিফ মাহমুদ।
কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো মাতৃত্বকালীন, গর্ভকালীন ও প্রসূতি সেবা, শিশুরোগের সমন্বিত চিকিৎসা, প্রজনন স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা, টিকাদান, নবদম্পতি নিবন্ধন, জন্ম-মৃত্যু ও প্রসবের সম্ভাব্য তারিখ নিবন্ধন, পুষ্টি শিক্ষা ও পুষ্টিকর খাদ্য সরবরাহ করে। বছরে প্রায় ১৬ কোটি মানুষ এই ক্লিনিকের সেবা গ্রহণ করেন।
পুনর্নির্মাণের মডেল যেমন হবে
ক্লিনিকের পুনর্নির্মাণের জন্য দুটি মডেল তৈরি করা হয়েছে। সমতল জমিতে যেসব ক্লিনিক নির্মাণ করা হবে, সেগুলোর ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৫ লাখ টাকা। উঁচু বা দুর্গম এলাকার ক্লিনিকপ্রতি ব্যয় হবে ৫০ লাখ টাকা।
ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘নতুন পরিকল্পনায় সাধারণ জমি ও উঁচু-দুর্গম এলাকার জন্য আলাদা মডেল তৈরি করা হয়েছে। এতে ভবনগুলো আরও টেকসই হবে। এটি সেবার মান বৃদ্ধিতেও সহায়ক হবে।’
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কমিউনিটি ক্লিনিকের ভবন এমনভাবে নির্মাণ করতে হবে, যেন কয়েক দশক ধরে সেবা দেওয়া সম্ভব হয়। এ ছাড়া সরকার ও ট্রাস্টের দায়িত্ব স্পষ্ট করতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ বলেন, ‘প্রধানত পরিকল্পনার অভাব ও দুর্নীতির কারণে বাংলাদেশে সরকারি খাতের অনেক অবকাঠামো টেকসই হয় না। শুরুতে কমিউনিটি ক্লিনিকের ভবনের মানে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। সংখ্যায় গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল।’
তাঁর মতে, ক্লিনিকগুলো যেভাবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা করা হয়েছিল, তা-ও বাস্তবায়িত হয়নি। রোগ প্রতিরোধমূলক ও স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির কেন্দ্র না হয়ে, এটি মূলত রোগের চিকিৎসাসেবার কেন্দ্র হিসেবে কাজ করছে। মেডিকেল শিক্ষায় প্রশিক্ষিত জনবলের বদলে সাধারণ শিক্ষিত ব্যক্তিদের স্বাস্থ্যসেবাকর্মী নিয়োগ করা হয়েছে।’
ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ বলেন, দুর্বল অবকাঠামো ও সীমিত জায়গা ছাড়াও অনগ্রসর ও দূরবর্তী এলাকায় ক্লিনিকগুলোর অবস্থানও বড় সমস্যা। এটি সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে জটিলতা সৃষ্টি করছে।
তীব্র গরমে আইসক্রিম, ঠান্ডা পানীয় বা হিমায়িত মিষ্টান্ন খাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তাপমাত্রা যত বাড়ছে, আমেরিকানেরা তত বেশি এসব মিষ্টি খাবারের দিকে ঝুঁকছেন—এমনটাই জানাচ্ছে নতুন গবেষণা। তবে বিজ্ঞানীরা সতর্ক করছেন, এর স্বাস্থ্যঝুঁকি মারাত্মক হতে পারে।
১ দিন আগেএখন জ্বরের মৌসুম চলছে; বিশেষ করে শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিদের বিভিন্ন ভাইরাস জ্বর হচ্ছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচিত হলো ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও জিকা ভাইরাস। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৭ আগস্ট পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে ২৯ হাজার ৯৪৪ এবং মারা গেছে ১১৮ জন। চিকিৎসকেরা বলছেন, একটি এডিস
৪ দিন আগেহৃদ্রোগ, স্ট্রোক কিংবা ধমনি বন্ধ হওয়ার অন্যতম কারণ রক্তে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল; বিশেষ করে লো-ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন (এলডিএল) বা খারাপ কোলেস্টেরল রক্তনালিতে জমে ধমনি শক্ত করে। অন্যদিকে হাই-ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন (এইচডিএল) কিংবা ভালো কোলেস্টেরল শরীর থেকে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল সরিয়ে দেয়।
৪ দিন আগেনাক আমাদের মুখের স্পর্শকাতর অঙ্গ। এটি মুখমণ্ডলের সামনের অংশে থাকে বলে পড়ে যাওয়া, খেলাধুলা, দুর্ঘটনা কিংবা কিল-ঘুষি, মারামারির মতো আঘাতের সময় আগে এটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নাকের হাড় ভেঙে গেলে শুধু ব্যথাই হয় না, বরং শ্বাসপ্রশ্বাস, সৌন্দর্য ও স্বাভাবিক কার্যকারিতারও সমস্যা হতে পারে।
৪ দিন আগে