Ajker Patrika

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রস্তুতি: মস্তিষ্ক ধীর ও স্থির রাখতে হবে

সারওয়ার হোসেন খান
আপডেট : ০৬ জুলাই ২০২২, ১৩: ১৬
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রস্তুতি: মস্তিষ্ক ধীর ও স্থির রাখতে হবে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদভুক্ত গ ইউনিটের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ২৯ হাজার ৯৯৭ জনের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন ৪ হাজার ২৮৯ জন। পাসের হার ছিল ১৪ দশমিক ৩০। এবার গ ইউনিটের পরীক্ষায় প্রথম হয়েছেন রাজধানী ঢাকার নটর ডেম কলেজের ছাত্র সারওয়ার হোসেন খান। তাঁর মোট নম্বর ১১৬ দশমিক ৭৫। এমসিকিউ অংশে ৫৮.৭৫ এবং লিখিত অংশে ৩৮ নম্বর। বাকি ২০ নম্বর পান এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে।

প্রথম স্থান অর্জনের অনুভূতি জানাতে গিয়ে সারওয়ার বলেন, ‘সেই মুহূর্তের অনুভূতি আসলে ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। খুবই খুশি হয়েছি এবং মহান আল্লাহ তায়ালার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছি।’

প্রস্তুতি শুরু করেছি আগেই
করোনার মাঝামাঝি সময় থেকেই বিভিন্ন বই টুকিটাকি দেখার চেষ্টা করেছি। আর এইচএসসি পরীক্ষার তিন-চার মাস আগে থেকেই পরীক্ষার পাশাপাশি ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছিলাম। 

বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতি
বাংলা ও ইংরেজিতে কিছুটা দুর্বলতা থাকায় এই দুটো বিষয়ের ওপর বিশেষ জোর দিয়েছিলাম। বাংলায় তিনটি অংশ আছে: প্রথম পত্র, ব্যাকরণ ও বিরচন অংশ এবং ইংরেজিতে দুটি অংশ আছে: ব্যাকরণ ও বিরচন অংশ। তাই প্রতিটি অংশের প্রতি সমান গুরুত্ব দিয়ে পড়েছিলাম। ব্যবসায় শিক্ষা শাখার বিষয়গুলো, অর্থাৎ হিসাববিজ্ঞান, ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা এবং ফিন্যান্স, ব্যাংকিং ও বিমা এ বিষয়গুলোতে এইচএসসি পর্যায়ে থাকা অবস্থায়ই বেসিক আলহামদুলিল্লাহ বেশ ভালো ছিল ৷ তাই এ বিষয়গুলো এইচএসসি পরীক্ষার পর থেকে পড়ার ক্ষেত্রে নিয়মমাফিক পড়ার চেষ্টা করেছি। 

যেভাবে প্রস্তুতি নেওয়া উচিত
যেহেতু আমাদের লিখিত অংশের নম্বর বণ্টন পরিবর্তন করা হয়েছিল, তাই একটু দ্বিধায় ছিলাম যে কীভাবে প্রস্তুতি নেওয়া উচিত। সে জন্য চেষ্টা করেছি অনুবাদ আয়ত্ত করার, পাশাপাশি ব্যাকরণগত খুঁটিনাটি বিষয়গুলো মাথায় রাখার। কেননা ভুল সংশোধনী ব্যাকরণগত ভুল আসবে বলেই আমার ধারণা ছিল। আর ব্যবসায় শিক্ষা বিষয়ের লিখিত অংশের জন্য বিভিন্ন কনসেপ্ট ভালোভাবে বোঝার চেষ্টা করেছি। বাজারে বিভিন্ন পাবলিকেশনের বই পাওয়া যায়। যে বই একজন শিক্ষার্থীর কাছে উপযুক্ত মনে হয়, সেই বই তার পড়া উচিত। এখন ভিন্ন ভিন্ন শিক্ষার্থীর ভিন্ন ভিন্ন বইয়ের উপস্থাপনার ধরন ভালো লাগতে পারে। তাই সেই অনুযায়ী বই নির্বাচন করা উচিত। 

শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি
শেষ সাত দিন অনেক বেশি পড়া নিজের মাথায় নিয়ে নিজেকে ভারাক্রান্ত করার চেয়ে আমার কাছে মনে হয় শান্ত থেকে এত দিন যা পড়া হয়েছে, সেগুলো সুন্দর করে চোখ বোলানো উচিত। নতুন কিছু পড়ার চেয়ে পুরোনো পড়া গুছিয়ে রিভিশন দেওয়াটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে হয় আমার কাছে। আর পরীক্ষার আগের রাতে বেশি চাপ না নিয়ে সকাল সকাল ঘুমিয়ে পড়া উচিত। যাতে সকালে ঠান্ডা মাথায় ঘুম থেকে উঠে পড়া যায়। পরীক্ষায় ভালো করতে ধীর ও স্থির মস্তিষ্ক রাখতে পারা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে হয়।  

প্রযুক্তির ব্যবহার 
আমি যদি আমার প্রস্তুতি সম্পর্কে কোনো উল্লেখযোগ্য বা ব্যতিক্রম একটি বিষয় উল্লেখ করতে চাই, তবে সেটা হবে প্রযুক্তির ব্যবহার। আমি কখনোই মোবাইল ফোন, সোশ্যাল মিডিয়া বা ইন্টারনেট থেকে দূরে ছিলাম না। আমি আমার প্রয়োজন অনুয়ায়ী মোবাইল ফোন ব্যবহার করার চেষ্টা করেছি। নিজে কিছু না বুঝলে ইন্টারনেট থেকে সেটি বোঝার চেষ্টা করা, সহপাঠীদের কেউ কিছু না বুঝলে তাকে অনলাইনে সেই বিষয়টি বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। একসঙ্গে গ্রুপ করে পড়ালেখার বিষয়ে আলোচনা করা, এ বিষয়গুলো আমাকে বেশ 
সাহায্য করেছে। 

পরীক্ষার হলে করণীয় 
পরীক্ষার হলে প্রথমত মাথা ঠান্ডা রাখা উচিত। পরীক্ষায় কোনোভাবেই উত্তেজিত হওয়া যাবে না। যখন যে প্রশ্নের উত্তর করছি শুধু সেটি নিয়ে ভাবা এবং আগে কোনোটা ভুল দাগিয়েছি কি না, একটা ছেড়ে এসেছি, সেটার উত্তর কী হতে পারে—এসব নিয়ে চিন্তা না করাই ভালো। আবার পরীক্ষায় খারাপ করলে কী হবে, চান্স না পেলে কী হবে, এ ধরনের নেতিবাচক চিন্তা পরীক্ষার হলে মাথা থেকে দূরে রাখা উচিত। যদি সহজে বলি, একসময় একটি প্রশ্ন নিয়ে চিন্তা করতে হবে। একাধিক প্রশ্নের দিকে একসঙ্গে মনোযোগ দেওয়া যাবে না। 

অনুলিখন: মুসাররাত আবির

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...