অরুণ কর্মকার

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দল এবং জোটের মধ্যে সংলাপের প্রয়োজনীয়তা এখন একটি বহু চর্চিত বিষয়। অবশ্য এই সংলাপের প্রয়োজনীয়তা সবচেয়ে বেশি উপলব্ধি হচ্ছে সক্রিয় রাজনৈতিক পরিমণ্ডলের বাইরে; অর্থাৎ অচলাবস্থার অবসানের জন্য যাদের মধ্যে সংলাপ হওয়া দরকার, সেই আওয়ামী লীগ ও বিএনপি এবং তাদের নেতৃত্বাধীন জোটগুলোর তুলনায় দেশের সুশীল সমাজ এবং বিশেষ করে আমাদের উন্নয়ন সহযোগী বিদেশি বন্ধু দেশগুলো বিষয়টি নিয়ে অনেকটাই বেশি উচ্চকিত।
তবে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি যে সংলাপে বসতেই চায় না কিংবা সংলাপের দরকার নেই বলে মনে করে, তেমনটা বলা যায় না। কিন্তু সংলাপের প্রশ্নে এই দুই দলেরই অবস্থান হুবহু ‘সালিস মানি, তবে তালগাছটি আমার’ প্রবচনের মতো। আওয়ামী লীগ বলে রেখেছে যে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন মেনে নিলেই কেবল বিএনপির সঙ্গে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে করণীয় বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। অন্যথায় কোনো আলোচনা বা সংলাপ নয়। একইভাবে বিএনপিও বলে দিয়েছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি মানলেই শুধু তারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারে। অন্যথায় এক দফার আন্দোলনই হবে তাদের পথ।
এই প্রধান দুটি দলের মতোই তাদের নেতৃত্বাধীন জোটভুক্ত দলগুলোর প্রকাশ্য অবস্থানও অভিন্ন।যদিও রাজনীতিতে অনেক বিষয়েই প্রকাশ্য অবস্থানের বাইরে অন্তরালে কিছু কৌশলগত আলোচনা ও তৎপরতা থাকে, যা উপযুক্ত সময় না আসা পর্যন্ত অপ্রকাশিতই রাখা হয়। তবে আওয়ামী লীগ কিংবা বিএনপির মধ্যে অন্তরালেও কোনো কৌশলগত আলোচনার সামান্যতম আভাসও এখন পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে না; অর্থাৎ কারও অবস্থান থেকেই সামান্যতম নড়াচড়ার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
প্রধান দুই দল ও জোটের বাইরে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হচ্ছে আমাদের উন্নয়ন সহযোগী বিদেশি বন্ধুদের অবস্থান। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি ঘোষণাসহ নির্বাচনের এই বছরে তাদের এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতদের বিভিন্ন তৎপরতা এবং বক্তব্য-বিবৃতিতে প্রকাশিত তাঁদের অবস্থান দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে যথেষ্ট উষ্মা ও অস্বস্তি সৃষ্টি করেছে। এত দিন এই উষ্মা ও অস্বস্তির প্রায় সবটাই ছিল সরকার, সরকারি দল, তাদের নেতৃত্বাধীন জোট ও সমর্থকদের মধ্যে। কিন্তু সম্প্রতি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ-সংক্রান্ত একটি ইউরোপীয় প্রতিনিধিদল এসে নির্বাচন কমিশনসহ কিছু প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির সঙ্গে সাক্ষাৎকারের পর যখন গণমাধ্যমের কাছে বলল যে বিদ্যমান আইনি কাঠামোর মধ্যে নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবে, তখন তা বিরোধী শিবিরকেও সমানভাবে উদ্বিগ্ন করেছে। বিএনপি তো ওই প্রতিনিধিদলকে সাক্ষাতেরই অনুমতি দেয়নি। এরপর থেকে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা কিংবা উষ্মা আর একতরফা নেই।
এই সময়ের মধ্যে উন্নয়ন সহযোগী বিদেশি বন্ধুদের অবস্থানের আরেকটি দিক স্পষ্ট হয়েছে। সেটি হলো—তারা সংবিধানের বাইরে গিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা কখনোই বলবে না বলে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পর্যায়ে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। সংবিধানের কাঠামোর মধ্যেই সুষ্ঠু নির্বাচন তাদের একমাত্র চাওয়া, যেখানে এ দেশের মানুষ ইচ্ছামতো তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে সরকার গঠন করতে পারবে। বিদেশিদের এই অবস্থানও বিরোধী শিবিরের জন্য উদ্বেগের। কারণ তাদের একমাত্র দাবি নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন, যা সংবিধান অনুমোদন করে না। বিদেশি বন্ধুদের এই অবস্থান প্রকারান্তরে বিরোধী শিবিরের প্রধান ও একমাত্র দাবির অনুকূল নয়। অন্যদিকে সরকার, সরকারি দল ও জোটের নীতিসহায়ক।
এই পরিস্থিতিতে বিএনপি এবং তার নেতৃ্ত্বাধীন জোটের এক দফা দাবি আদায়ের একমাত্র পথ গণ-অভ্যুত্থান। এক দফা দাবি ঘোষণা করার পর থেকে তারা সেই লক্ষ্যেই অগ্রসর হচ্ছে। কিন্তু ইতিমধ্যে এক দফা আদায়ের জন্য আন্দোলনের কী কর্মসূচি ঘোষণা করা যায়, কোন কর্মসূচি কার্যকর হবে তা নিয়ে তারা কিছুটা দ্বিধাদ্বন্দ্বেই পড়েছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকে ধারণা করছেন, রাজপথের আন্দোলন এমন পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া বিএনপির জন্য দুরূহ হবে যাতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি মেনে নিয়ে বর্তমান সরকার পদত্যাগ করে।
বিরোধী শিবিরের নীতিনির্ধারকদের কারও কারও মধ্যে এই ধারণাও থাকতে পারে বলে অনুমান করা যায় যে গণ-আন্দোলন সংঘাতময় (মিলিট্যান্ট) করে তোলা গেলে এবং তা এমনকি প্রাণঘাতী হয়ে উঠলে এক দফা দাবি আদায় সহজ হতে পারে। সার্বিক বিবেচনায় এই ধারণাও অলীক। দেশে সরকার, বেসরকারি এবং বিদেশি বন্ধুদের কারোরই সমর্থন এই ধারণার প্রতি মিলবে না। এই পথের সাফল্যের সম্ভাবনাও অতিশয় ক্ষীণ। কারণ সরকার এমনকি প্রয়োজনের তুলনায়ও বেশি কঠোরহস্তে তা দমন করার সুযোগ নিতে পারে। তাহলে কী হতে পারে? বিকল্প কী?
ধরা যাক বিএনপিসহ বিরোধী শিবির তত্ত্বাধায়ক সরকারের অধীনে ছাড়া নির্বাচনে অংশ নিল না। সে ক্ষেত্রে সরকারের জন্য সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং সরকারি দলের বিজয় অনেকটাই সহজ হবে। কারণ তখন তার প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী কেউ নির্বাচনে থাকবে না। এমনকি আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো দলের ৩০০ আসনে প্রার্থীও না থাকতে পারে। সুতরাং সবচেয়ে সুষ্ঠু এবং জনঅংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হলেও আওয়ামী লীগই যে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করবে—এমন সম্ভাবনাই প্রায় শতভাগ। সে ক্ষেত্রে বিএনপিসহ বিরোধী শিবির কি নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করতে পারে? সে চেষ্টার সাফল্যও কী সহজ কিছু হবে? মনে হয় না।
তাদের জন্য তৃতীয় বিকল্প হতে পারে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায় ছাড়াই নির্বাচনে অংশগ্রহণ। সে ক্ষেত্রে শুরুতেই তাদের একধাপ পিছিয়ে থাকতে হবে। দীর্ঘদিন আন্দোলন করে, সরকারের পদত্যাগের জন্য এক দফা পর্যন্ত ঘোষণা করে শেষে দাবি আদায় ছাড়াই শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ জনমানসে বিএনপি এবং তার জোটভুক্তদের ভাবমূর্তির জন্য নিঃসন্দেহে ইতিবাচক হবে না।
অবশ্য উন্নয়ন সহযোগীদের তরফে ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন সব দলের অংশগ্রহণে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের বার্তা নিয়ে। আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে ইতিমধ্যে এ বিষয়ে তাঁর আলোচনা হয়েছে। বিএনপি এবং হয়তো অন্য অনেক দলের সঙ্গেও তিনি আলোচনা করবেন। তবে তার ফলাফল কী হবে, তা বলা কিংবা দেখার জন্য আরও বেশ কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। রাজনীতিতে কোনো অচলাবস্থা সৃষ্টি হলে প্রকাশ্য আলাপ-আলোচনা ছাড়া অন্তরালেও কিছু তৎপরতা চলে। সেদিকেও সবার নজর রাখতে হবে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দল এবং জোটের মধ্যে সংলাপের প্রয়োজনীয়তা এখন একটি বহু চর্চিত বিষয়। অবশ্য এই সংলাপের প্রয়োজনীয়তা সবচেয়ে বেশি উপলব্ধি হচ্ছে সক্রিয় রাজনৈতিক পরিমণ্ডলের বাইরে; অর্থাৎ অচলাবস্থার অবসানের জন্য যাদের মধ্যে সংলাপ হওয়া দরকার, সেই আওয়ামী লীগ ও বিএনপি এবং তাদের নেতৃত্বাধীন জোটগুলোর তুলনায় দেশের সুশীল সমাজ এবং বিশেষ করে আমাদের উন্নয়ন সহযোগী বিদেশি বন্ধু দেশগুলো বিষয়টি নিয়ে অনেকটাই বেশি উচ্চকিত।
তবে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি যে সংলাপে বসতেই চায় না কিংবা সংলাপের দরকার নেই বলে মনে করে, তেমনটা বলা যায় না। কিন্তু সংলাপের প্রশ্নে এই দুই দলেরই অবস্থান হুবহু ‘সালিস মানি, তবে তালগাছটি আমার’ প্রবচনের মতো। আওয়ামী লীগ বলে রেখেছে যে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন মেনে নিলেই কেবল বিএনপির সঙ্গে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে করণীয় বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। অন্যথায় কোনো আলোচনা বা সংলাপ নয়। একইভাবে বিএনপিও বলে দিয়েছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি মানলেই শুধু তারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারে। অন্যথায় এক দফার আন্দোলনই হবে তাদের পথ।
এই প্রধান দুটি দলের মতোই তাদের নেতৃত্বাধীন জোটভুক্ত দলগুলোর প্রকাশ্য অবস্থানও অভিন্ন।যদিও রাজনীতিতে অনেক বিষয়েই প্রকাশ্য অবস্থানের বাইরে অন্তরালে কিছু কৌশলগত আলোচনা ও তৎপরতা থাকে, যা উপযুক্ত সময় না আসা পর্যন্ত অপ্রকাশিতই রাখা হয়। তবে আওয়ামী লীগ কিংবা বিএনপির মধ্যে অন্তরালেও কোনো কৌশলগত আলোচনার সামান্যতম আভাসও এখন পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে না; অর্থাৎ কারও অবস্থান থেকেই সামান্যতম নড়াচড়ার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
প্রধান দুই দল ও জোটের বাইরে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হচ্ছে আমাদের উন্নয়ন সহযোগী বিদেশি বন্ধুদের অবস্থান। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি ঘোষণাসহ নির্বাচনের এই বছরে তাদের এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতদের বিভিন্ন তৎপরতা এবং বক্তব্য-বিবৃতিতে প্রকাশিত তাঁদের অবস্থান দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে যথেষ্ট উষ্মা ও অস্বস্তি সৃষ্টি করেছে। এত দিন এই উষ্মা ও অস্বস্তির প্রায় সবটাই ছিল সরকার, সরকারি দল, তাদের নেতৃত্বাধীন জোট ও সমর্থকদের মধ্যে। কিন্তু সম্প্রতি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ-সংক্রান্ত একটি ইউরোপীয় প্রতিনিধিদল এসে নির্বাচন কমিশনসহ কিছু প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির সঙ্গে সাক্ষাৎকারের পর যখন গণমাধ্যমের কাছে বলল যে বিদ্যমান আইনি কাঠামোর মধ্যে নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবে, তখন তা বিরোধী শিবিরকেও সমানভাবে উদ্বিগ্ন করেছে। বিএনপি তো ওই প্রতিনিধিদলকে সাক্ষাতেরই অনুমতি দেয়নি। এরপর থেকে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা কিংবা উষ্মা আর একতরফা নেই।
এই সময়ের মধ্যে উন্নয়ন সহযোগী বিদেশি বন্ধুদের অবস্থানের আরেকটি দিক স্পষ্ট হয়েছে। সেটি হলো—তারা সংবিধানের বাইরে গিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা কখনোই বলবে না বলে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পর্যায়ে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। সংবিধানের কাঠামোর মধ্যেই সুষ্ঠু নির্বাচন তাদের একমাত্র চাওয়া, যেখানে এ দেশের মানুষ ইচ্ছামতো তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে সরকার গঠন করতে পারবে। বিদেশিদের এই অবস্থানও বিরোধী শিবিরের জন্য উদ্বেগের। কারণ তাদের একমাত্র দাবি নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন, যা সংবিধান অনুমোদন করে না। বিদেশি বন্ধুদের এই অবস্থান প্রকারান্তরে বিরোধী শিবিরের প্রধান ও একমাত্র দাবির অনুকূল নয়। অন্যদিকে সরকার, সরকারি দল ও জোটের নীতিসহায়ক।
এই পরিস্থিতিতে বিএনপি এবং তার নেতৃ্ত্বাধীন জোটের এক দফা দাবি আদায়ের একমাত্র পথ গণ-অভ্যুত্থান। এক দফা দাবি ঘোষণা করার পর থেকে তারা সেই লক্ষ্যেই অগ্রসর হচ্ছে। কিন্তু ইতিমধ্যে এক দফা আদায়ের জন্য আন্দোলনের কী কর্মসূচি ঘোষণা করা যায়, কোন কর্মসূচি কার্যকর হবে তা নিয়ে তারা কিছুটা দ্বিধাদ্বন্দ্বেই পড়েছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকে ধারণা করছেন, রাজপথের আন্দোলন এমন পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া বিএনপির জন্য দুরূহ হবে যাতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি মেনে নিয়ে বর্তমান সরকার পদত্যাগ করে।
বিরোধী শিবিরের নীতিনির্ধারকদের কারও কারও মধ্যে এই ধারণাও থাকতে পারে বলে অনুমান করা যায় যে গণ-আন্দোলন সংঘাতময় (মিলিট্যান্ট) করে তোলা গেলে এবং তা এমনকি প্রাণঘাতী হয়ে উঠলে এক দফা দাবি আদায় সহজ হতে পারে। সার্বিক বিবেচনায় এই ধারণাও অলীক। দেশে সরকার, বেসরকারি এবং বিদেশি বন্ধুদের কারোরই সমর্থন এই ধারণার প্রতি মিলবে না। এই পথের সাফল্যের সম্ভাবনাও অতিশয় ক্ষীণ। কারণ সরকার এমনকি প্রয়োজনের তুলনায়ও বেশি কঠোরহস্তে তা দমন করার সুযোগ নিতে পারে। তাহলে কী হতে পারে? বিকল্প কী?
ধরা যাক বিএনপিসহ বিরোধী শিবির তত্ত্বাধায়ক সরকারের অধীনে ছাড়া নির্বাচনে অংশ নিল না। সে ক্ষেত্রে সরকারের জন্য সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং সরকারি দলের বিজয় অনেকটাই সহজ হবে। কারণ তখন তার প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী কেউ নির্বাচনে থাকবে না। এমনকি আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো দলের ৩০০ আসনে প্রার্থীও না থাকতে পারে। সুতরাং সবচেয়ে সুষ্ঠু এবং জনঅংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হলেও আওয়ামী লীগই যে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করবে—এমন সম্ভাবনাই প্রায় শতভাগ। সে ক্ষেত্রে বিএনপিসহ বিরোধী শিবির কি নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করতে পারে? সে চেষ্টার সাফল্যও কী সহজ কিছু হবে? মনে হয় না।
তাদের জন্য তৃতীয় বিকল্প হতে পারে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায় ছাড়াই নির্বাচনে অংশগ্রহণ। সে ক্ষেত্রে শুরুতেই তাদের একধাপ পিছিয়ে থাকতে হবে। দীর্ঘদিন আন্দোলন করে, সরকারের পদত্যাগের জন্য এক দফা পর্যন্ত ঘোষণা করে শেষে দাবি আদায় ছাড়াই শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ জনমানসে বিএনপি এবং তার জোটভুক্তদের ভাবমূর্তির জন্য নিঃসন্দেহে ইতিবাচক হবে না।
অবশ্য উন্নয়ন সহযোগীদের তরফে ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন সব দলের অংশগ্রহণে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের বার্তা নিয়ে। আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে ইতিমধ্যে এ বিষয়ে তাঁর আলোচনা হয়েছে। বিএনপি এবং হয়তো অন্য অনেক দলের সঙ্গেও তিনি আলোচনা করবেন। তবে তার ফলাফল কী হবে, তা বলা কিংবা দেখার জন্য আরও বেশ কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। রাজনীতিতে কোনো অচলাবস্থা সৃষ্টি হলে প্রকাশ্য আলাপ-আলোচনা ছাড়া অন্তরালেও কিছু তৎপরতা চলে। সেদিকেও সবার নজর রাখতে হবে।
অরুণ কর্মকার

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দল এবং জোটের মধ্যে সংলাপের প্রয়োজনীয়তা এখন একটি বহু চর্চিত বিষয়। অবশ্য এই সংলাপের প্রয়োজনীয়তা সবচেয়ে বেশি উপলব্ধি হচ্ছে সক্রিয় রাজনৈতিক পরিমণ্ডলের বাইরে; অর্থাৎ অচলাবস্থার অবসানের জন্য যাদের মধ্যে সংলাপ হওয়া দরকার, সেই আওয়ামী লীগ ও বিএনপি এবং তাদের নেতৃত্বাধীন জোটগুলোর তুলনায় দেশের সুশীল সমাজ এবং বিশেষ করে আমাদের উন্নয়ন সহযোগী বিদেশি বন্ধু দেশগুলো বিষয়টি নিয়ে অনেকটাই বেশি উচ্চকিত।
তবে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি যে সংলাপে বসতেই চায় না কিংবা সংলাপের দরকার নেই বলে মনে করে, তেমনটা বলা যায় না। কিন্তু সংলাপের প্রশ্নে এই দুই দলেরই অবস্থান হুবহু ‘সালিস মানি, তবে তালগাছটি আমার’ প্রবচনের মতো। আওয়ামী লীগ বলে রেখেছে যে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন মেনে নিলেই কেবল বিএনপির সঙ্গে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে করণীয় বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। অন্যথায় কোনো আলোচনা বা সংলাপ নয়। একইভাবে বিএনপিও বলে দিয়েছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি মানলেই শুধু তারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারে। অন্যথায় এক দফার আন্দোলনই হবে তাদের পথ।
এই প্রধান দুটি দলের মতোই তাদের নেতৃত্বাধীন জোটভুক্ত দলগুলোর প্রকাশ্য অবস্থানও অভিন্ন।যদিও রাজনীতিতে অনেক বিষয়েই প্রকাশ্য অবস্থানের বাইরে অন্তরালে কিছু কৌশলগত আলোচনা ও তৎপরতা থাকে, যা উপযুক্ত সময় না আসা পর্যন্ত অপ্রকাশিতই রাখা হয়। তবে আওয়ামী লীগ কিংবা বিএনপির মধ্যে অন্তরালেও কোনো কৌশলগত আলোচনার সামান্যতম আভাসও এখন পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে না; অর্থাৎ কারও অবস্থান থেকেই সামান্যতম নড়াচড়ার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
প্রধান দুই দল ও জোটের বাইরে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হচ্ছে আমাদের উন্নয়ন সহযোগী বিদেশি বন্ধুদের অবস্থান। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি ঘোষণাসহ নির্বাচনের এই বছরে তাদের এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতদের বিভিন্ন তৎপরতা এবং বক্তব্য-বিবৃতিতে প্রকাশিত তাঁদের অবস্থান দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে যথেষ্ট উষ্মা ও অস্বস্তি সৃষ্টি করেছে। এত দিন এই উষ্মা ও অস্বস্তির প্রায় সবটাই ছিল সরকার, সরকারি দল, তাদের নেতৃত্বাধীন জোট ও সমর্থকদের মধ্যে। কিন্তু সম্প্রতি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ-সংক্রান্ত একটি ইউরোপীয় প্রতিনিধিদল এসে নির্বাচন কমিশনসহ কিছু প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির সঙ্গে সাক্ষাৎকারের পর যখন গণমাধ্যমের কাছে বলল যে বিদ্যমান আইনি কাঠামোর মধ্যে নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবে, তখন তা বিরোধী শিবিরকেও সমানভাবে উদ্বিগ্ন করেছে। বিএনপি তো ওই প্রতিনিধিদলকে সাক্ষাতেরই অনুমতি দেয়নি। এরপর থেকে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা কিংবা উষ্মা আর একতরফা নেই।
এই সময়ের মধ্যে উন্নয়ন সহযোগী বিদেশি বন্ধুদের অবস্থানের আরেকটি দিক স্পষ্ট হয়েছে। সেটি হলো—তারা সংবিধানের বাইরে গিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা কখনোই বলবে না বলে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পর্যায়ে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। সংবিধানের কাঠামোর মধ্যেই সুষ্ঠু নির্বাচন তাদের একমাত্র চাওয়া, যেখানে এ দেশের মানুষ ইচ্ছামতো তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে সরকার গঠন করতে পারবে। বিদেশিদের এই অবস্থানও বিরোধী শিবিরের জন্য উদ্বেগের। কারণ তাদের একমাত্র দাবি নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন, যা সংবিধান অনুমোদন করে না। বিদেশি বন্ধুদের এই অবস্থান প্রকারান্তরে বিরোধী শিবিরের প্রধান ও একমাত্র দাবির অনুকূল নয়। অন্যদিকে সরকার, সরকারি দল ও জোটের নীতিসহায়ক।
এই পরিস্থিতিতে বিএনপি এবং তার নেতৃ্ত্বাধীন জোটের এক দফা দাবি আদায়ের একমাত্র পথ গণ-অভ্যুত্থান। এক দফা দাবি ঘোষণা করার পর থেকে তারা সেই লক্ষ্যেই অগ্রসর হচ্ছে। কিন্তু ইতিমধ্যে এক দফা আদায়ের জন্য আন্দোলনের কী কর্মসূচি ঘোষণা করা যায়, কোন কর্মসূচি কার্যকর হবে তা নিয়ে তারা কিছুটা দ্বিধাদ্বন্দ্বেই পড়েছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকে ধারণা করছেন, রাজপথের আন্দোলন এমন পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া বিএনপির জন্য দুরূহ হবে যাতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি মেনে নিয়ে বর্তমান সরকার পদত্যাগ করে।
বিরোধী শিবিরের নীতিনির্ধারকদের কারও কারও মধ্যে এই ধারণাও থাকতে পারে বলে অনুমান করা যায় যে গণ-আন্দোলন সংঘাতময় (মিলিট্যান্ট) করে তোলা গেলে এবং তা এমনকি প্রাণঘাতী হয়ে উঠলে এক দফা দাবি আদায় সহজ হতে পারে। সার্বিক বিবেচনায় এই ধারণাও অলীক। দেশে সরকার, বেসরকারি এবং বিদেশি বন্ধুদের কারোরই সমর্থন এই ধারণার প্রতি মিলবে না। এই পথের সাফল্যের সম্ভাবনাও অতিশয় ক্ষীণ। কারণ সরকার এমনকি প্রয়োজনের তুলনায়ও বেশি কঠোরহস্তে তা দমন করার সুযোগ নিতে পারে। তাহলে কী হতে পারে? বিকল্প কী?
ধরা যাক বিএনপিসহ বিরোধী শিবির তত্ত্বাধায়ক সরকারের অধীনে ছাড়া নির্বাচনে অংশ নিল না। সে ক্ষেত্রে সরকারের জন্য সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং সরকারি দলের বিজয় অনেকটাই সহজ হবে। কারণ তখন তার প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী কেউ নির্বাচনে থাকবে না। এমনকি আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো দলের ৩০০ আসনে প্রার্থীও না থাকতে পারে। সুতরাং সবচেয়ে সুষ্ঠু এবং জনঅংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হলেও আওয়ামী লীগই যে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করবে—এমন সম্ভাবনাই প্রায় শতভাগ। সে ক্ষেত্রে বিএনপিসহ বিরোধী শিবির কি নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করতে পারে? সে চেষ্টার সাফল্যও কী সহজ কিছু হবে? মনে হয় না।
তাদের জন্য তৃতীয় বিকল্প হতে পারে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায় ছাড়াই নির্বাচনে অংশগ্রহণ। সে ক্ষেত্রে শুরুতেই তাদের একধাপ পিছিয়ে থাকতে হবে। দীর্ঘদিন আন্দোলন করে, সরকারের পদত্যাগের জন্য এক দফা পর্যন্ত ঘোষণা করে শেষে দাবি আদায় ছাড়াই শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ জনমানসে বিএনপি এবং তার জোটভুক্তদের ভাবমূর্তির জন্য নিঃসন্দেহে ইতিবাচক হবে না।
অবশ্য উন্নয়ন সহযোগীদের তরফে ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন সব দলের অংশগ্রহণে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের বার্তা নিয়ে। আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে ইতিমধ্যে এ বিষয়ে তাঁর আলোচনা হয়েছে। বিএনপি এবং হয়তো অন্য অনেক দলের সঙ্গেও তিনি আলোচনা করবেন। তবে তার ফলাফল কী হবে, তা বলা কিংবা দেখার জন্য আরও বেশ কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। রাজনীতিতে কোনো অচলাবস্থা সৃষ্টি হলে প্রকাশ্য আলাপ-আলোচনা ছাড়া অন্তরালেও কিছু তৎপরতা চলে। সেদিকেও সবার নজর রাখতে হবে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দল এবং জোটের মধ্যে সংলাপের প্রয়োজনীয়তা এখন একটি বহু চর্চিত বিষয়। অবশ্য এই সংলাপের প্রয়োজনীয়তা সবচেয়ে বেশি উপলব্ধি হচ্ছে সক্রিয় রাজনৈতিক পরিমণ্ডলের বাইরে; অর্থাৎ অচলাবস্থার অবসানের জন্য যাদের মধ্যে সংলাপ হওয়া দরকার, সেই আওয়ামী লীগ ও বিএনপি এবং তাদের নেতৃত্বাধীন জোটগুলোর তুলনায় দেশের সুশীল সমাজ এবং বিশেষ করে আমাদের উন্নয়ন সহযোগী বিদেশি বন্ধু দেশগুলো বিষয়টি নিয়ে অনেকটাই বেশি উচ্চকিত।
তবে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি যে সংলাপে বসতেই চায় না কিংবা সংলাপের দরকার নেই বলে মনে করে, তেমনটা বলা যায় না। কিন্তু সংলাপের প্রশ্নে এই দুই দলেরই অবস্থান হুবহু ‘সালিস মানি, তবে তালগাছটি আমার’ প্রবচনের মতো। আওয়ামী লীগ বলে রেখেছে যে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন মেনে নিলেই কেবল বিএনপির সঙ্গে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে করণীয় বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। অন্যথায় কোনো আলোচনা বা সংলাপ নয়। একইভাবে বিএনপিও বলে দিয়েছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি মানলেই শুধু তারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারে। অন্যথায় এক দফার আন্দোলনই হবে তাদের পথ।
এই প্রধান দুটি দলের মতোই তাদের নেতৃত্বাধীন জোটভুক্ত দলগুলোর প্রকাশ্য অবস্থানও অভিন্ন।যদিও রাজনীতিতে অনেক বিষয়েই প্রকাশ্য অবস্থানের বাইরে অন্তরালে কিছু কৌশলগত আলোচনা ও তৎপরতা থাকে, যা উপযুক্ত সময় না আসা পর্যন্ত অপ্রকাশিতই রাখা হয়। তবে আওয়ামী লীগ কিংবা বিএনপির মধ্যে অন্তরালেও কোনো কৌশলগত আলোচনার সামান্যতম আভাসও এখন পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে না; অর্থাৎ কারও অবস্থান থেকেই সামান্যতম নড়াচড়ার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
প্রধান দুই দল ও জোটের বাইরে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হচ্ছে আমাদের উন্নয়ন সহযোগী বিদেশি বন্ধুদের অবস্থান। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি ঘোষণাসহ নির্বাচনের এই বছরে তাদের এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতদের বিভিন্ন তৎপরতা এবং বক্তব্য-বিবৃতিতে প্রকাশিত তাঁদের অবস্থান দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে যথেষ্ট উষ্মা ও অস্বস্তি সৃষ্টি করেছে। এত দিন এই উষ্মা ও অস্বস্তির প্রায় সবটাই ছিল সরকার, সরকারি দল, তাদের নেতৃত্বাধীন জোট ও সমর্থকদের মধ্যে। কিন্তু সম্প্রতি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ-সংক্রান্ত একটি ইউরোপীয় প্রতিনিধিদল এসে নির্বাচন কমিশনসহ কিছু প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির সঙ্গে সাক্ষাৎকারের পর যখন গণমাধ্যমের কাছে বলল যে বিদ্যমান আইনি কাঠামোর মধ্যে নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবে, তখন তা বিরোধী শিবিরকেও সমানভাবে উদ্বিগ্ন করেছে। বিএনপি তো ওই প্রতিনিধিদলকে সাক্ষাতেরই অনুমতি দেয়নি। এরপর থেকে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা কিংবা উষ্মা আর একতরফা নেই।
এই সময়ের মধ্যে উন্নয়ন সহযোগী বিদেশি বন্ধুদের অবস্থানের আরেকটি দিক স্পষ্ট হয়েছে। সেটি হলো—তারা সংবিধানের বাইরে গিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা কখনোই বলবে না বলে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পর্যায়ে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। সংবিধানের কাঠামোর মধ্যেই সুষ্ঠু নির্বাচন তাদের একমাত্র চাওয়া, যেখানে এ দেশের মানুষ ইচ্ছামতো তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে সরকার গঠন করতে পারবে। বিদেশিদের এই অবস্থানও বিরোধী শিবিরের জন্য উদ্বেগের। কারণ তাদের একমাত্র দাবি নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন, যা সংবিধান অনুমোদন করে না। বিদেশি বন্ধুদের এই অবস্থান প্রকারান্তরে বিরোধী শিবিরের প্রধান ও একমাত্র দাবির অনুকূল নয়। অন্যদিকে সরকার, সরকারি দল ও জোটের নীতিসহায়ক।
এই পরিস্থিতিতে বিএনপি এবং তার নেতৃ্ত্বাধীন জোটের এক দফা দাবি আদায়ের একমাত্র পথ গণ-অভ্যুত্থান। এক দফা দাবি ঘোষণা করার পর থেকে তারা সেই লক্ষ্যেই অগ্রসর হচ্ছে। কিন্তু ইতিমধ্যে এক দফা আদায়ের জন্য আন্দোলনের কী কর্মসূচি ঘোষণা করা যায়, কোন কর্মসূচি কার্যকর হবে তা নিয়ে তারা কিছুটা দ্বিধাদ্বন্দ্বেই পড়েছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকে ধারণা করছেন, রাজপথের আন্দোলন এমন পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া বিএনপির জন্য দুরূহ হবে যাতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি মেনে নিয়ে বর্তমান সরকার পদত্যাগ করে।
বিরোধী শিবিরের নীতিনির্ধারকদের কারও কারও মধ্যে এই ধারণাও থাকতে পারে বলে অনুমান করা যায় যে গণ-আন্দোলন সংঘাতময় (মিলিট্যান্ট) করে তোলা গেলে এবং তা এমনকি প্রাণঘাতী হয়ে উঠলে এক দফা দাবি আদায় সহজ হতে পারে। সার্বিক বিবেচনায় এই ধারণাও অলীক। দেশে সরকার, বেসরকারি এবং বিদেশি বন্ধুদের কারোরই সমর্থন এই ধারণার প্রতি মিলবে না। এই পথের সাফল্যের সম্ভাবনাও অতিশয় ক্ষীণ। কারণ সরকার এমনকি প্রয়োজনের তুলনায়ও বেশি কঠোরহস্তে তা দমন করার সুযোগ নিতে পারে। তাহলে কী হতে পারে? বিকল্প কী?
ধরা যাক বিএনপিসহ বিরোধী শিবির তত্ত্বাধায়ক সরকারের অধীনে ছাড়া নির্বাচনে অংশ নিল না। সে ক্ষেত্রে সরকারের জন্য সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং সরকারি দলের বিজয় অনেকটাই সহজ হবে। কারণ তখন তার প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী কেউ নির্বাচনে থাকবে না। এমনকি আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো দলের ৩০০ আসনে প্রার্থীও না থাকতে পারে। সুতরাং সবচেয়ে সুষ্ঠু এবং জনঅংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হলেও আওয়ামী লীগই যে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করবে—এমন সম্ভাবনাই প্রায় শতভাগ। সে ক্ষেত্রে বিএনপিসহ বিরোধী শিবির কি নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করতে পারে? সে চেষ্টার সাফল্যও কী সহজ কিছু হবে? মনে হয় না।
তাদের জন্য তৃতীয় বিকল্প হতে পারে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায় ছাড়াই নির্বাচনে অংশগ্রহণ। সে ক্ষেত্রে শুরুতেই তাদের একধাপ পিছিয়ে থাকতে হবে। দীর্ঘদিন আন্দোলন করে, সরকারের পদত্যাগের জন্য এক দফা পর্যন্ত ঘোষণা করে শেষে দাবি আদায় ছাড়াই শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ জনমানসে বিএনপি এবং তার জোটভুক্তদের ভাবমূর্তির জন্য নিঃসন্দেহে ইতিবাচক হবে না।
অবশ্য উন্নয়ন সহযোগীদের তরফে ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন সব দলের অংশগ্রহণে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের বার্তা নিয়ে। আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে ইতিমধ্যে এ বিষয়ে তাঁর আলোচনা হয়েছে। বিএনপি এবং হয়তো অন্য অনেক দলের সঙ্গেও তিনি আলোচনা করবেন। তবে তার ফলাফল কী হবে, তা বলা কিংবা দেখার জন্য আরও বেশ কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। রাজনীতিতে কোনো অচলাবস্থা সৃষ্টি হলে প্রকাশ্য আলাপ-আলোচনা ছাড়া অন্তরালেও কিছু তৎপরতা চলে। সেদিকেও সবার নজর রাখতে হবে।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দল এবং জোটের মধ্যে সংলাপের প্রয়োজনীয়তা এখন একটি বহু চর্চিত বিষয়। অবশ্য এই সংলাপের প্রয়োজনীয়তা সবচেয়ে বেশি উপলব্ধি হচ্ছে সক্রিয় রাজনৈতিক পরিমণ্ডলের বাইরে; অর্থাৎ অচলাবস্থার অবসানের জন্য যাদের মধ্যে সংলাপ হওয়া দরকার
০৫ আগস্ট ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দল এবং জোটের মধ্যে সংলাপের প্রয়োজনীয়তা এখন একটি বহু চর্চিত বিষয়। অবশ্য এই সংলাপের প্রয়োজনীয়তা সবচেয়ে বেশি উপলব্ধি হচ্ছে সক্রিয় রাজনৈতিক পরিমণ্ডলের বাইরে; অর্থাৎ অচলাবস্থার অবসানের জন্য যাদের মধ্যে সংলাপ হওয়া দরকার
০৫ আগস্ট ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দল এবং জোটের মধ্যে সংলাপের প্রয়োজনীয়তা এখন একটি বহু চর্চিত বিষয়। অবশ্য এই সংলাপের প্রয়োজনীয়তা সবচেয়ে বেশি উপলব্ধি হচ্ছে সক্রিয় রাজনৈতিক পরিমণ্ডলের বাইরে; অর্থাৎ অচলাবস্থার অবসানের জন্য যাদের মধ্যে সংলাপ হওয়া দরকার
০৫ আগস্ট ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দল এবং জোটের মধ্যে সংলাপের প্রয়োজনীয়তা এখন একটি বহু চর্চিত বিষয়। অবশ্য এই সংলাপের প্রয়োজনীয়তা সবচেয়ে বেশি উপলব্ধি হচ্ছে সক্রিয় রাজনৈতিক পরিমণ্ডলের বাইরে; অর্থাৎ অচলাবস্থার অবসানের জন্য যাদের মধ্যে সংলাপ হওয়া দরকার
০৫ আগস্ট ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫