Ajker Patrika

বেপরোয়া এক চেয়ারম্যান

 নাইমুর রহমান, নাটোর
বেপরোয়া এক চেয়ারম্যান

আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ধূমকেতুর মতো আবির্ভূত হন নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ। দলের প্রাথমিক সদস্যপদ পাওয়ার আগেই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পান আওয়ামী লীগের মনোনয়ন। উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার আগে মামলাবাজি ও পরে সালিস-বাণিজ্যে ফুলেফেঁপে ওঠেন।

জাতীয় ছাত্র সমাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার মধ্যে দিয়ে রাজনীতি শুরু করা আসাদ এখন আওয়ামী লীগে এসে ভিড়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে আছে চরমপন্থী নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ। কথায় কথায় স্থানীয়দের হুমকি, মারধর ও মামলার ভয় দেখিয়ে একসময় দুলুর রাজ্য হিসেবে পরিচিত নলডাঙ্গায় ভীতি ও ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেন আসাদ। সর্বশেষ নলডাঙ্গা উপজেলা ছাত্রলীগের সহসম্পাদক জামিউল আলীম জীবনকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় প্রথমবারের মতো মামলা হয়েছে চেয়ারম্যান আসাদের নামে। এ হত্যাকাণ্ডের পর থেকে আসাদের নানা অপকর্ম আলোচনায় এসেছে।

আসাদ বর্তমানে নলডাঙ্গা উপজেলার আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য। একসময় নাটোর সদর আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা থাকলেও আসাদ বর্তমানে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সম্পাদকের অনুসারী।

গত শনিবার দুপুরে জীবনের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। প্রকাশ্যে পিটিয়ে এই ছাত্রলীগ নেতাকে হত্যার পর মামলা হলেও এখনো অধরা চেয়ারম্যান আসাদ। নলডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগ সূত্রে ও আসাদের এলাকা আমতলী গ্রামবাসী সূত্রে জানা যায়, নলডাঙ্গা আলোচিত শাহ পরিবারের সঙ্গে বিএনপির সাবেক উপমন্ত্রী রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর পরিবারের রাজনৈতিক বিরোধ ছিল। ২০০৪ সালে দুলুর ভাতিজা সাব্বির আহমেদ তালুকদার গামা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দুলুর অনুসারীরা শাহ পরিবারের ১৮টি বাড়ি আগুনে পুড়িয়ে দেয় এবং তাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করে। এ ঘটনায় শাহ পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা না নিয়ে উল্টো তাদের হয়রানি শুরু করে। এদিকে দুলু পরিবারের মামলায় শাহ পরিবারের আসামিরা ফেরার হওয়ায় ২০০৭ সালে তৎকালীন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হানিফ আলী শেখের সহযোগিতায় ওই পরিবারের সদস্য আসাদ দুলুকে আসামি করে মামলা করেন। দুলুর বিরুদ্ধে মামলা করার পর থেকেই আলোচনায় আসেন তিনি।

২০০৯ সালে তৎকালীন সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আসাদ ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০১২ সালে বিস্ফোরক ও অগ্নিসংযোগের পৃথক মামলায় দুলুর ১৭ বছরের দণ্ডাদেশ হলে ২০১৪ সালের নির্বাচনে দুলু অংশ নিতে পারেননি। তখন থেকে জেলার নেতাদের নেক নজরে আসেন আসাদ।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সদস্যপদ না থাকলেও ২০১৯ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নলডাঙ্গা থেকে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করে চেয়ারম্যান হন আসাদ।  
চলতি বছর রমজান সাধারণ সম্পাদক হলে আসাদ আরও বেশি বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। আসন্ন নলডাঙ্গা উপজেলার আওয়ামী লীগের সম্মেলনে আসাদ সভাপতি প্রার্থী ছিলেন।

নাটোর-২ আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল বলেন, ‘আসাদ শিবির করতেন। আমি এমপি হওয়ার পর তাঁর ব্যাপারে অনেক অভিযোগ পেয়েছি।’ 
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান জানান, জীবন হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের হওয়ায় আসাদকে দলের সব ধরনের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

নলডাঙ্গা থানার ওসি শফিকুল ইসলাম বলেন, জীবনের মায়ের দায়ের করা মামলায় আসামি চেয়ারম্যান আসাদের ভাই আলীমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। চেয়ারম্যান আসাদ ও অপর আসামি পলাতক রয়েছেন। তাঁদের ধরতে অভিযান চালানো হচ্ছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তোরা যারা রাজাকার, সময় থাকতে বাংলা ছাড়: ফেসবুকে বাকের মজুমদার

সমাবেশে দলীয় স্লোগান ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনে বাধা দেওয়া প্রসঙ্গে এনসিপির বিবৃতি

যুক্তরাষ্ট্র-চীন সমঝোতায় এক দিনে ১০০ ডলার কমল সোনার দাম

যুদ্ধ বলিউডের সিনেমা নয়: ভারতের সাবেক সেনাপ্রধান

কঠোর হচ্ছে যুক্তরাজ্যের অভিবাসন নীতি, স্থায়ী বসবাসের আবেদনে অপেক্ষা ১০ বছর

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত