জাহীদ রেজা নূর, ঢাকা
‘আমি মনে হয় আর কয়েক মাস পরেই মারা যাব।’ বললেন রাজেশ কুমার দাস।
পাশে বসে ছিলেন তাঁর স্ত্রী। ফুলের নামে তাঁর নাম। ডালিয়া। ডালিয়া রাণী রায়। ডালিয়ার চোখে ক্লান্তি আর ভয়।
‘ডা. জাফরুল্লাহ স্যার যদি একটু কাজের ব্যবস্থা করে দিতেন, তাহলে হয়তো আরও কিছুদিন বাঁচতাম।’ আবার বললেন রাজেশ।
কেন হঠাৎ ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর কথা এল, সেটা বুঝতে আরও কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হলো আমাদের। গুলশানের এক অফিসে হঠাৎ দেখা হয়ে গেল এই দম্পতির সঙ্গে। তাঁদের দেহভাষাই বলে দিচ্ছিল, তাঁরা ভালো নেই।
মাত্র আড়াই বছর আগে যখন বিয়ে হলো তাঁদের, তখন চোখজোড়া স্বপ্ন নিয়ে সংসার শুরু করেছিলেন তাঁরা। সিলেটের বানিয়াচং থানার কাঁঠালিয়া গ্রামে ভালোই কাটছিল দিন। কিন্তু রাজেশের কিডনিটা সমস্যা শুরু করল। সিলেটের ডাক্তার বললেন, ‘ও কিছু না, ওষুধ খাও, ঠিক হয়ে যাবে।’
ওষুধ খেলেন রাজেশ। ঠিক হলো না। বরং কয়েক মাস পরে যখন ডাক্তারের কাছে গেলেন, তখন ডা. শুভার্থী কর বললেন, ‘ঢাকায় গিয়ে চিকিৎসা করাও। ডায়ালাইসিস লাগতে পারে।’
বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে টাকাপয়সা ধার করে নিয়ে ঢাকায় চলে এল এই দম্পতি। তারপর দেখা গেল, কিডনির অবস্থা এতই খারাপ যে সপ্তাহে দুবার ডায়ালাইসিস করাতে হবে।
ঢাকায় বড় ডাক্তার দেখালেন। মোহাম্মদপুরে শ্যামলীর কাছে একটি হাসপাতালে শুরু হলো ডায়ালাইসিস। প্রথমবার ২ হাজার ৮০০ টাকা, দ্বিতীয়বার ১ হাজার ৫০০ টাকা করে লাগছিল। এ ছাড়া এই পরীক্ষা, সেই পরীক্ষা, কিডনি প্রতিস্থাপনের পরামর্শ। কিডনি দিতে পারেন মা-বাবা, ভাই-বোন। মা নেই, তাই অন্য তিনজন দেবেন কি না, জানতে গিয়ে বুঝতে পারলেন, সেটা হবে না। নিকটাত্মীয়রা কিডনি দেবেন না।
বাকি রইল বউ। ডালিয়া বললেন, ‘যদি রক্তের গ্রুপ মিলে যায়, আমি দেব কিডনি।’
কিন্তু তাতে আরও ২ লাখ টাকা বাড়তি লাগবে।
কোথায় পাবেন টাকা? অগত্যা চালিয়ে যেতে লাগলেন ডায়ালাইসিস। হাতের টাকা গুনে দেখলেন ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা আছে। এ অবস্থায় এখানে ডায়ালাইসিস করানো যাবে না। গণস্বাস্থ্য হাসপাতালের খবর পেলেন। সেখানে ১ হাজার ১০০ টাকায় ডায়ালাইসিস করানো যায়। একটু স্বস্তি হলো।
এইটুকু বলার পর রাজেশের কণ্ঠ একটু কাঁপে। তিনি বলেন, ‘আমি এমএ করেছি, এলএলবি করেছি। আমি দেখেছি, জাফরুল্লাহ স্যার অনেক গরিব মানুষকেই ছোটখাটো চাকরির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। তার বিনিময়ে ফ্রিতে ডায়ালাইসিস করান। আমি আমার যোগ্যতা অনুযায়ী যেকোনো চাকরি করব। আমি আরও একটু বেশি সময় বাঁচতে চাই।’
এতক্ষণে কথাগুলো মনে হয় ডালিয়ার মাথায় ঢোকে। তিনি ক্রন্দনরত স্বামীর দিকে তাকান। সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য হাতটা একটু সামনে এগিয়ে যায়। তাতে দমকে দমকে কাঁদতে থাকেন রাজেশ। আর বলতে থাকেন, ‘আর কিছুদিন পৃথিবীর আলো-বাতাস দেখতে চাই স্যার। কাজ করেই বেঁচে থাকতে চাই। ভিক্ষা করে নয়। আপনি কি একটু জাফরুল্লাহ স্যারকে বলে দেবেন?’
ডা. জাফরুল্লাহর কাছে আমি পৌঁছুতে পারব না। তবে পাঠকের কাছে পৌঁছুতে পারব, তাঁদের মধ্যে এমন কেউ নিশ্চয়ই আছেন, যিনি হাতের টাকা শেষ হয়ে যাওয়ার পর এই মানুষটিকে আরও কয়েক দিন বাঁচার পথ বাতলে দেবেন।
আমার মন বলছে, রাজেশকে তেমন কেউ ঠিকই খুঁজে নেবেন।
‘আমি মনে হয় আর কয়েক মাস পরেই মারা যাব।’ বললেন রাজেশ কুমার দাস।
পাশে বসে ছিলেন তাঁর স্ত্রী। ফুলের নামে তাঁর নাম। ডালিয়া। ডালিয়া রাণী রায়। ডালিয়ার চোখে ক্লান্তি আর ভয়।
‘ডা. জাফরুল্লাহ স্যার যদি একটু কাজের ব্যবস্থা করে দিতেন, তাহলে হয়তো আরও কিছুদিন বাঁচতাম।’ আবার বললেন রাজেশ।
কেন হঠাৎ ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর কথা এল, সেটা বুঝতে আরও কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হলো আমাদের। গুলশানের এক অফিসে হঠাৎ দেখা হয়ে গেল এই দম্পতির সঙ্গে। তাঁদের দেহভাষাই বলে দিচ্ছিল, তাঁরা ভালো নেই।
মাত্র আড়াই বছর আগে যখন বিয়ে হলো তাঁদের, তখন চোখজোড়া স্বপ্ন নিয়ে সংসার শুরু করেছিলেন তাঁরা। সিলেটের বানিয়াচং থানার কাঁঠালিয়া গ্রামে ভালোই কাটছিল দিন। কিন্তু রাজেশের কিডনিটা সমস্যা শুরু করল। সিলেটের ডাক্তার বললেন, ‘ও কিছু না, ওষুধ খাও, ঠিক হয়ে যাবে।’
ওষুধ খেলেন রাজেশ। ঠিক হলো না। বরং কয়েক মাস পরে যখন ডাক্তারের কাছে গেলেন, তখন ডা. শুভার্থী কর বললেন, ‘ঢাকায় গিয়ে চিকিৎসা করাও। ডায়ালাইসিস লাগতে পারে।’
বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে টাকাপয়সা ধার করে নিয়ে ঢাকায় চলে এল এই দম্পতি। তারপর দেখা গেল, কিডনির অবস্থা এতই খারাপ যে সপ্তাহে দুবার ডায়ালাইসিস করাতে হবে।
ঢাকায় বড় ডাক্তার দেখালেন। মোহাম্মদপুরে শ্যামলীর কাছে একটি হাসপাতালে শুরু হলো ডায়ালাইসিস। প্রথমবার ২ হাজার ৮০০ টাকা, দ্বিতীয়বার ১ হাজার ৫০০ টাকা করে লাগছিল। এ ছাড়া এই পরীক্ষা, সেই পরীক্ষা, কিডনি প্রতিস্থাপনের পরামর্শ। কিডনি দিতে পারেন মা-বাবা, ভাই-বোন। মা নেই, তাই অন্য তিনজন দেবেন কি না, জানতে গিয়ে বুঝতে পারলেন, সেটা হবে না। নিকটাত্মীয়রা কিডনি দেবেন না।
বাকি রইল বউ। ডালিয়া বললেন, ‘যদি রক্তের গ্রুপ মিলে যায়, আমি দেব কিডনি।’
কিন্তু তাতে আরও ২ লাখ টাকা বাড়তি লাগবে।
কোথায় পাবেন টাকা? অগত্যা চালিয়ে যেতে লাগলেন ডায়ালাইসিস। হাতের টাকা গুনে দেখলেন ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা আছে। এ অবস্থায় এখানে ডায়ালাইসিস করানো যাবে না। গণস্বাস্থ্য হাসপাতালের খবর পেলেন। সেখানে ১ হাজার ১০০ টাকায় ডায়ালাইসিস করানো যায়। একটু স্বস্তি হলো।
এইটুকু বলার পর রাজেশের কণ্ঠ একটু কাঁপে। তিনি বলেন, ‘আমি এমএ করেছি, এলএলবি করেছি। আমি দেখেছি, জাফরুল্লাহ স্যার অনেক গরিব মানুষকেই ছোটখাটো চাকরির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। তার বিনিময়ে ফ্রিতে ডায়ালাইসিস করান। আমি আমার যোগ্যতা অনুযায়ী যেকোনো চাকরি করব। আমি আরও একটু বেশি সময় বাঁচতে চাই।’
এতক্ষণে কথাগুলো মনে হয় ডালিয়ার মাথায় ঢোকে। তিনি ক্রন্দনরত স্বামীর দিকে তাকান। সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য হাতটা একটু সামনে এগিয়ে যায়। তাতে দমকে দমকে কাঁদতে থাকেন রাজেশ। আর বলতে থাকেন, ‘আর কিছুদিন পৃথিবীর আলো-বাতাস দেখতে চাই স্যার। কাজ করেই বেঁচে থাকতে চাই। ভিক্ষা করে নয়। আপনি কি একটু জাফরুল্লাহ স্যারকে বলে দেবেন?’
ডা. জাফরুল্লাহর কাছে আমি পৌঁছুতে পারব না। তবে পাঠকের কাছে পৌঁছুতে পারব, তাঁদের মধ্যে এমন কেউ নিশ্চয়ই আছেন, যিনি হাতের টাকা শেষ হয়ে যাওয়ার পর এই মানুষটিকে আরও কয়েক দিন বাঁচার পথ বাতলে দেবেন।
আমার মন বলছে, রাজেশকে তেমন কেউ ঠিকই খুঁজে নেবেন।
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১১ দিন আগেভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫পাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
০৮ মে ২০২৫