Ajker Patrika

প্রাণিসম্পদ খাতে নারী অবদান বেশি, স্বীকৃতি কম

সাইফুল মাসুম, ঢাকা
আপডেট : ০৮ মার্চ ২০২৪, ০৯: ৩২
প্রাণিসম্পদ খাতে নারী অবদান বেশি, স্বীকৃতি কম

সংসারের আয় বাড়াতে ২০১৫ সালে মাত্র একটা গরু পালতে শুরু করেছিলেন ঢাকার ধামরাই পৌরসভার পূর্ব কায়েতপাড়ার মোসাম্মাত শামীমা। এখন তাঁর পুরোদস্তুর ডেইরি খামার। গরু আছে ১৪টি। এর মধ্যে ৮টি গাভি দৈনিক ৫০-৬০ লিটার দুধ দেয়। খামারের আয়েই চলে পুরো সংসার।

শামীমা বলেন, ‘শুরুটা সহজ ছিল না। স্বামী ধারদেনা করে দুবাই গিয়ে ১৩ মাসের মাথায় খালি হাতে দেশে ফিরেছে। তখন হাঁস, মুরগি, ডিম বিক্রির জমানো ৩৫ হাজার টাকা দিয়ে প্রথম গরুটা কিনেছিলাম। এখন খামারের আয়ে আর্থিক অবস্থা সচ্ছল হয়েছে। ১৪ শতাংশ জমিও কিনেছি।’  

শামীমার মতো আরেক উদ্যোক্তা ঢাকার নবাবগঞ্জের বক্সনগরের পাঠানকান্দা গ্রামের সালমা বেগম। চার বছর আগে ছোট পরিসরে মুরগির ফার্ম গড়ে তুলেছেন। তিনি জানান, তাঁর ফার্মে এখন ১২০টি মুরগি ও ৮টি টাইগার মুরগি (দেশি মুরগির হাইব্রিড সংস্করণ) রয়েছে। প্রতি মাসেই দেশি মুরগির বাচ্চা ফুটিয়ে বিক্রি করেন। তবে স্বামী কুয়েতপ্রবাসী হওয়ায় নিজে বাজারে বিক্রি করতে পারেন না। প্রতিবেশীরাই মূলত তাঁর ফার্মের ক্রেতা।

শুধু শামীমা কিংবা সালমা নয়, দেশের আনাচ-কানাচে অনেক নারী উদ্যোক্তা রয়েছেন, যাঁরা প্রাণিসম্পদ খাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে যাচ্ছেন।

বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনেও প্রাণিসম্পদ খাতে নারীদের অবদানের চিত্র উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রাণিসম্পদ খাতে নারীদের অংশগ্রহণ ধারণার চেয়ে অনেক বেশি। এই খাতে প্রায় ৮৬ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান রয়েছে। এর মধ্যে নারীদের অংশগ্রহণ ৮৮ দশমিক ২ শতাংশ। আর পুরুষের অংশগ্রহণ মাত্র ১১ দশমিক ৮ শতাংশ।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রাণিসম্পদে নারীদের ভূমিকা বেশি থাকলেও তাঁরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে সম্পদের মালিকানা পান না। সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ থেকেও তাঁদের বঞ্চিত করা হয়।

ঢাকা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বাসনা আক্তার বলেন, ‘ঘরে বসেই নারীদের প্রাণিসম্পদে অবদান রাখার যে সুযোগ রয়েছে, তা অন্য পেশায় নেই। ফলে দেশে প্রাণিসম্পদে নারীদের কর্মসংস্থান অনেক বেশি। আমাদের সমাজকে নারীবান্ধব করতে পারলে এই খাতে আরও বেশি সাফল্য পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. ছাদেকা হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, শ্রম-ঘাম-মালিকানা সব থাকা সত্ত্বেও প্রাণিসম্পদ খাতে নারীদের শ্রমিক হিসেবে ধরে নেওয়া হয়। উপজেলা পর্যায়ে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পুরুষ হওয়ায় নারীরা সেবা নিতে অস্বস্তি বোধ করেন।  

এলডিডিপি প্রকল্পের চিফ টেকনিক্যাল কো-অর্ডিনেটর ড. মো. গোলাম রব্বানী বলেন, পারিবারিক পর্যায়ে যে গবাদিপশু পালন হয়, সেখানে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নারীর ভূমিকা বেশি। শুধু শ্রম দিলেই হবে না, সিদ্ধান্ত গ্রহণেও নারীর অংশগ্রহণ থাকতে হবে।

এ বিষয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান বলেন, ‘সমাজে নারীও এগিয়ে যাচ্ছে। প্রাণিসম্পদে নারীরা ভালো ভূমিকা রাখছে। প্রাণিসম্পদ খাতে নারীদের যেসব সংকট রয়েছে, তা নিরসনে আমরা কাজ করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত