Ajker Patrika

স্বাস্থ্যের আঙিনায় অস্বাস্থ্যের বাস

ফারুক হোসাইন রাজ, কলারোয়া (সাতক্ষীরা)
আপডেট : ২৪ জানুয়ারি ২০২২, ১৪: ৫৪
স্বাস্থ্যের আঙিনায় অস্বাস্থ্যের বাস

সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সীমানাপ্রাচীরের চারপাশে দীর্ঘদিন ধরে পানি জমে থাকা ময়লা-আবর্জনায় ভনভন করছে মাছি। এ ছাড়া নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রশাসনিক নজরদারির অভাবে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স আঙিনায় মিলছে পরিত্যক্ত মাদকদ্রব্যের চিহ্ন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মতো জায়গার এমন পরিবেশে চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবার মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সচেতন মহল। দ্রুত সময়ের মধ্যে আবর্জনা পরিষ্কার এবং চিকিৎসার সুন্দর পরিবেশ নিশ্চিতের দাবি তাদের।

গতকাল রোববার সরেজমিন দেখা গেছে, কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চারপাশে রয়েছে হলুদ রঙের পুরোনো নড়বড়ে প্রাচীর, যার চারদিকে ময়লা-আবর্জনায় জমে থাকা পানিতে মশা-মাছি ভনভন করছে। সেই সঙ্গে রয়েছে দুর্গন্ধ। হাসপাতালের সামনে পুকুরপাড়ে পরিত্যক্ত ফেনসিডিলের বোতলসহ ময়লা-আবর্জনায় ঘেরা। উপজেলার তিন লাখের মানুষের চিকিৎসাসেবা চলছে এখানে। অন্যদিকে হাসপাতালের সামনের ফটকের প্রাচীরসংলগ্ন ফার্মেসি, আশপাশে পরিত্যক্ত ইনজেকশন, কাটাছেঁড়াসহ বিভিন্ন চিকিৎসার কাজে ব্যবহৃত গজ কাপড় এবং ময়লা-আবর্জনা ফেলে রাখা হয়েছে।

পাশের যশোর জেলার চাকলা এলাকা থেকে চিকিৎসা নিতে আসা আজহারুল গাজী বলেন, হাসপাতালের চারপাশ আবর্জনায় ভরে গেছে। হাসপাতালের নির্দিষ্ট কিছু জায়গা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকলেও চারপাশে যে অবস্থা, তা সাধারণ রোগীদের আরও অসুস্থ করে ফেলবে।

তিনি বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নিয়মিত নজরদারি না থাকায় চারপাশের বাগান আবর্জনায় ভরে গেছে এবং নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা না ফেলে পার্শ্ববর্তী ফার্মেসিগুলোও হাসপাতালের চারপাশে ময়লা ফেলছে। প্রশাসন যদি বিষয়টি আমলে না নেয়, তাহলে হাসপাতাল একসময় ময়লা-আবর্জনার স্তূপে পরিণত হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান বলেন, ‘হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে চারপাশে পানি জমে থাকা জায়গাটি অনেক নিচু। পৌরসভা কর্তৃপক্ষকে মাটি ভরাটের জন্য অনেকবার বলা হলেও এর কোনো সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। যে কারণে পানিতে তলিয়ে থাকে হাসপাতালে চারপাশ। সেখানে ময়লা-আবর্জনা পানির ওপরে ভাসে। পানিতে জমা আবর্জনা থেকে বিষাক্ত জীবাণু এমনকি মশামাছি জন্মাতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘পৌরসভার তত্ত্বাবধানে নিয়মিত ময়লা-আবর্জনা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন না করার ফলেই অবস্থা এমন। তবে মাটি ভরাটের বরাদ্দ পেলে হয়তো এই দুর্দশা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। সে জন্য পৌরসভার মেয়র ও প্রশাসনিক কর্মকর্তার সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।

এ বিষয়ে পৌরসভার মেয়র মনিরুজ্জামান বুলবুল বলেন, ‘স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আঙিনায় ইতিমধ্যে পরিদর্শন করা হয়েছে। তবে পৌরসভার নির্দিষ্ট যে স্থানে ময়লা ফেলার কথা, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সেখানে না ফেলে চারপাশে ফেলেন, যেটি পরিষ্কার করতে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের পক্ষে অনেক কষ্টসাধ্য। তবে হাসপাতালের নিচু জায়গা ভরাটের জন্য প্রজেক্ট বরাদ্দ পেলে ব্যবস্থা করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জুবায়ের হোসেন চৌধুরী বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে, যাতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আঙিনা, চত্বর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে সুন্দর মনোরম পরিবেশ সৃষ্টি করা যায়। সে বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। হাসপাতালের সামনে যারা ময়লা-আবর্জনা ফেলে পরিবেশ নষ্ট করছে, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ না করার প্রস্তাব

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

‘ঘুষের জন্য’ ৯১টি ফাইল আটকে রাখেন মাউশির ডিডি: দুদক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত