মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী

বিশ্ব এখন চরম এক অর্থনৈতিক সংকটে নিপতিত। এই সংকটের তিনটি কারণ সবারই জানা। এক. বৈশ্বিক করোনা মহামারি, দুই. ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এবং তিন. রাশিয়ার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা। রাশিয়ার বিরুদ্ধে মার্কিন এবং ইউরোপীয়দের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা এখন পুরো বিশ্বের জন্যই বুমেরাং হয়ে উঠেছে। রাশিয়াকে এই নিষেধাজ্ঞা যতটা না সমস্যায় ফেলেছে, তার চেয়ে বেশি কাবু করেছে আমাদের মতো রাষ্ট্রগুলোকে। আমরা এখন মার্কিন নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে স্বাধীনভাবে বিশ্ববাণিজ্যের সুবিধা নিতে পারছি না। সে কারণে তেল-গ্যাসসহ বেশ কিছু পণ্য আমদানি করা বেশ দুরূহ হয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় আমাদের তেল ও গ্যাসনির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। আমদানিজাত অনেকগুলো কাঁচামাল বা পণ্য আগের মতো আমদানি করা যাচ্ছে না। বিশ্বে ডলার-সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। এ অবস্থায় প্রায় সব দেশই এখন চরম বিপাকে। ইউরোপের দেশগুলোও রাশিয়ার তেল-গ্যাস এবং খনিজ কাঁচামালের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল ছিল। তারাও এখন চরম বেকায়দায়। এমন একটি ক্রান্তিকাল বিশ্ব অতিক্রম করবে, এটি বছরের শুরুতেও ভাবা যায়নি।
আমাদের সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনে যে সক্ষমতা অর্জন করেছে, তা আমাদের অর্থনীতি ও সামাজিক পরিবেশে একটি বড় ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে এসেছিল। কিন্তু বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষমতার একটি অংশ বিদেশ থেকে আমদানিনির্ভর তরল গ্যাস, পেট্রোলিয়াম ও কয়লার ওপর নির্ভরশীল। আমাদের অভ্যন্তরীণ গ্যাসের মজুত পর্যাপ্ত নয়। ফলে বর্তমান বিশ্ববাজার থেকে তেল-গ্যাস আমদানির সক্ষমতা যেখানে উন্নত অনেক দেশের জন্যই ব্যয়সাপেক্ষ, আমাদের জন্য তা মোটের ওপর অসম্ভব। সে কারণে সরকার তরল গ্যাস ও জ্বালানি তেল আমদানি বন্ধ রেখেছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন তার ফলে দেড়-দুই হাজার মেগাওয়াট কম করতে হচ্ছে। এর ফলে লোডশেডিং করতে হচ্ছে। লোডশেডিং দেশ থেকে বিদায় নিয়েছিল। কিন্তু এখন বৈশ্বিক এই পরিস্থিতিতে লোডশেডিং যেমন করতে হচ্ছে, একইভাবে সরকারি ব্যয় সাশ্রয়ে একটি দৃঢ় অবস্থান কার্যকর করা হচ্ছে। মূলত দেশের মোট রিজার্ভ যাতে বড় ধরনের পতনের দিকে না চলে যায়, সে জন্যই এই ব্যবস্থা নিতে হচ্ছে। পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই এখন আপৎকাল চলছে। চরম অর্থনৈতিক সংকটে এখন অনেকগুলো রাষ্ট্রই দিশেহারা। সে তুলনায় আমাদের পরিস্থিতি আইএমএফ এবং বিশ্বব্যাংকসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো ভালো বলছে।
সরকার যেসব ব্যবস্থা নিয়েছে, তা কয়েক মাস পর হয়তো একটি স্বস্তিদায়ক অবস্থানে যেতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং রাশিয়ার ওপর অর্থনৈতিক অবরোধ শিথিল হলেই কেবল পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে, এমনটি সবারই আশা। এই মুহূর্তে বৈশ্বিক এক সংকটে সবাই। অপেক্ষা পরিস্থিতি উন্নতি ঘটার। কিন্তু সে পর্যন্ত আমাদের সাশ্রয়ী হওয়া এবং চলমান অর্থনৈতিক সমস্যার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার বিকল্প নেই।
কিন্তু বাংলাদেশে বৈশ্বিক এই সংকটকে রাজনৈতিকভাবে পুঁজি করার একটি প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। বিএনপি লোডশেডিংয়ের কারণ সম্পর্কে সরকারের দুর্নীতি, অদক্ষতা এবং ব্যর্থতাকে দায়ী করছে। দুর্নীতি কোন খাতে কতটা হয়েছে কি হয়নি, তার তথ্য কেবল তদন্ত সাপেক্ষেই বলা যেতে পারে। দুর্নীতি কিছু হয়ে থাকলেও বিদ্যুৎ খাতে যে উন্নতি লক্ষ করা গিয়েছিল, সেটা অস্বীকারের উপায় নেই। লোডশেডিং নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছিল। জ্বালানি তেল ও তরল গ্যাস আমদানি করা এই মুহূর্তে সম্ভব হচ্ছে না বলে উৎপাদনশীল কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ রাখতে হচ্ছে। এই সত্যটি অস্বীকারের উপায় নেই। কিন্তু বিএনপি সেই যুক্তি ও তথ্য এড়িয়ে গিয়ে শুধু দুর্নীতিকেই লোডশেডিংয়ের কারণ হিসেবে দায়ী করছে। তা ছাড়া ২০০৯-১০ সালে কুইক রেন্টাল যেসব বিদ্যুৎকেন্দ্র আনা হয়েছিল, সেগুলোর ব্যাপারে তাদের ঘোরতর আপত্তি যেমন লক্ষ করা যাচ্ছে, একইভাবে বিদ্যুতের মেগা প্রকল্প নিয়েও তাদের অভিযোগের শেষ নেই।

বিএনপি এখন তেল-গ্যাস, জ্বালানি, খাদ্যদ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করছে। দেশে উন্নয়ন, মেগা প্রকল্প, রিজার্ভ ইত্যাদি নিয়েও নানা ধরনের মনগড়া তথ্য সভা-সমাবেশে বলছে। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতেও নানা ধরনের ছবি এবং কল্পকাহিনি ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। বন্দরে ছাড়ের অপেক্ষায় থাকা পেট্রল-অকটেনের তথ্য গোপন করে দেশে ১৩ দিনের পেট্রল মজুত আছে আর অকটেনের ১১ দিন—এমন বানোয়াট ও মনগড়া তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। প্রবাসে বসে কেউ কেউ জ্বালানি তেল, ভোজ্যতেল, চাল, গ্যাস, বিদ্যুৎ ইত্যাদি বিষয়ে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াতে নানা ধরনের টক শো, ভিডিও ছড়িয়ে দিচ্ছে। বিভিন্ন বেসরকারি চ্যানেলে বিএনপি এবং বিএনপির নেতা, সমর্থক ও আলোচকেরা এসব বিষয়ে সরকারের ব্যর্থতা, দুর্নীতি, অপচয় ইত্যাদি থেকেই বর্তমান পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটেছে বলে দাবি করছেন। সহ-আলোচক হিসেবে এসব টক শোতে আওয়ামী লীগের যেসব নেতা থাকেন তাঁদের অনেককেই তথ্য-উপাত্ত ঘেঁটে অনেক সময় কথা বলতে দেখা যায় না। সে কারণে মিডিয়ায় বিশেষজ্ঞহীন টক শো অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ, বিভ্রান্তি ও হতাশা ছড়ানো ছাড়া বেশি কিছু দিতে পারে না। সচেতন মানুষকে এসব টক শো তেমন আকর্ষণ করতে পারে না। তবে রাজনৈতিকভাবে যাঁরা অতটা সচেতন নন, তাঁদের অনেকেই কারও কারও আলোচনায় বিভ্রান্ত হন।
সামাজিকভাবে বর্তমান পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে নীরবে প্রচার-অপপ্রচার তৃণমূল পর্যন্ত বিস্তৃত হচ্ছে। সেখানে বৈশ্বিক পরিস্থিতির কোনো বিবেচনা থাকে না। প্রচার করা হচ্ছে, বিএনপির আমলে লোডশেডিং ছিল। এখন তার চেয়েও নাকি বেশি। তরুণেরা এসব অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হচ্ছে। গ্যাস, বিদ্যুৎ, খাদ্যদ্রব্য ইত্যাদির দাম নিয়েও রমরমা অপপ্রচার ছড়ানো হচ্ছে। দাবি করা হচ্ছে, পদ্মা সেতুর কারণেই এই সংকট। আবার কেউ কেউ মেগা প্রকল্পের মেগা দুর্নীতির কল্পকাহিনিও ছড়িয়ে বেড়াচ্ছে। মন্ত্রী, এমপি, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের দুর্নীতির নানা কাহিনিও এর সঙ্গে জড়িয়ে দিচ্ছে। মুন্সিগঞ্জের ইউপি চেয়ারম্যান আজিজের মাদকসম্রাট ও আওয়ামী লীগের নেতা হয়ে ওঠার গল্পকাহিনি এই প্রচারণার নতুন সংযোজন। এর আগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নাম যৌন হয়রানিতে যুক্ত হয়েছে। এখন শাবির ছাত্রহত্যা বিষয়টিও আলোচনায়। আওয়ামী লীগের অনেক নেতাই তাঁদের আচার-আচরণে সংযত যে নন, সেটি অস্বীকারের উপায় নেই। রাজশাহীর এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী কিংবা কুমিল্লার রাজী মোহাম্মদ ফখরুল এখন আলোচনায়।
বিভিন্ন জায়গায় ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে কিছু কিছু নেতা যা করছেন, তাতে তো মনে হয় না দেশে একটা বিশেষ পরিস্থিতি এখন বিরাজ করছে, যখন তাদের সংযত আচরণ করা প্রয়োজন। কিছুদিন আগে নড়াইলে যে দুটি ঘটনা ঘটে গেছে তার পেছনে কারা ইন্ধন জুগিয়েছিল, ফেসবুকে কেউ স্ট্যাটাস দিলে অমনিতেই গেল গেল ধর্ম গেল রব তুলে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর, মন্দির ভাঙচুর, পুড়িয়ে ফেলা, তাদের মারধর, জুতার মালা গলায় পরানো, এসব ঘটনা কারা ঘটাচ্ছে, কেন ঘটাচ্ছে–এর কোনো সদুত্তর কেন যেন জানা হচ্ছে না। দেখা যাচ্ছে, সাম্প্রদায়িক এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে অনেক কিশোর, তরুণ, যারা দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তোয়াক্কা করছে না। অনেকেই লুটপাটে অংশ নিচ্ছে, ধর্মের পবিত্রতা রক্ষা করতে গিয়ে হিংস্রতা প্রদর্শন, লুটপাট এমনকি নিজের পবিত্র ধর্মগ্রন্থকে অসম্মানিত করার মতো হীনমনোবৃত্তিও অনেকেই প্রদর্শন করছে। এগুলো পরিকল্পিতভাবে করা হচ্ছে নাকি যারা এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে, তারা নিজেদের স্বার্থ উদ্ধার ছাড়া আর কিছুই বোঝে না নাকি তারাও এমন একটি পরিস্থিতি তৈরির জন্য ওত পেতে ছিল, এখন এমন বৈশ্বিক সংকট, জাতীয় জীবনের চ্যালেঞ্জ এবং নির্বাচনের প্রাক্কালে দেশে একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরির জন্য এত দিন অপেক্ষায় ছিল, এখন সেটি ধীরে ধীরে সংগঠিত করছে!
মনে পড়ে, ১৯৭৪ সালের কথা। তেল এবং খাদ্যের দাম বাড়িয়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে উগ্র হঠকারী রাজনীতির ধারকবাহকদের অনেকেই পাটের গুদামে আগুন লাগানো, ব্যাংক লুট, শ্রেণিশত্রু খতমের নামে রাজনৈতিক নেতা ও ধনী ব্যক্তিদের হত্যা করে বঙ্গবন্ধু সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণে উঠেপড়ে লেগেছিল। নানা অপপ্রচারে তখন দেশ ছেয়ে গিয়েছিল। একদিকে দুর্ভিক্ষ, অন্যদিকে এসব অঘটন, অপপ্রচার মিলিয়ে সাধারণ মানুষের কান ভারী করা হলো, জন্ম দেওয়া হয় নতুন রাজনৈতিক সংকট। আমরা সে রকম কিছু আলামত এখন দেখছি। কিন্তু বিশ্বাস করতে চাই যে সরকার এবং দলীয়ভাবে আওয়ামী লীগ চোখকান খোলা রেখে বর্তমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।
বিশেষত আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গসংগঠনগুলোর তৃণমূল থেকে ওপর স্তর পর্যন্ত যেভাবে এখন গা ভাসিয়ে দিয়ে চলছে, ইউপি চেয়ারম্যান আজিজদের মতো লোকদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে এত ওপরে উঠিয়েছে, তাঁদের হাতকে অঘটন ঘটানোর আগেই অকার্যকর করে দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো বিকল্প দেখি না।

বিশ্ব এখন চরম এক অর্থনৈতিক সংকটে নিপতিত। এই সংকটের তিনটি কারণ সবারই জানা। এক. বৈশ্বিক করোনা মহামারি, দুই. ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এবং তিন. রাশিয়ার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা। রাশিয়ার বিরুদ্ধে মার্কিন এবং ইউরোপীয়দের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা এখন পুরো বিশ্বের জন্যই বুমেরাং হয়ে উঠেছে। রাশিয়াকে এই নিষেধাজ্ঞা যতটা না সমস্যায় ফেলেছে, তার চেয়ে বেশি কাবু করেছে আমাদের মতো রাষ্ট্রগুলোকে। আমরা এখন মার্কিন নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে স্বাধীনভাবে বিশ্ববাণিজ্যের সুবিধা নিতে পারছি না। সে কারণে তেল-গ্যাসসহ বেশ কিছু পণ্য আমদানি করা বেশ দুরূহ হয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় আমাদের তেল ও গ্যাসনির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। আমদানিজাত অনেকগুলো কাঁচামাল বা পণ্য আগের মতো আমদানি করা যাচ্ছে না। বিশ্বে ডলার-সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। এ অবস্থায় প্রায় সব দেশই এখন চরম বিপাকে। ইউরোপের দেশগুলোও রাশিয়ার তেল-গ্যাস এবং খনিজ কাঁচামালের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল ছিল। তারাও এখন চরম বেকায়দায়। এমন একটি ক্রান্তিকাল বিশ্ব অতিক্রম করবে, এটি বছরের শুরুতেও ভাবা যায়নি।
আমাদের সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনে যে সক্ষমতা অর্জন করেছে, তা আমাদের অর্থনীতি ও সামাজিক পরিবেশে একটি বড় ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে এসেছিল। কিন্তু বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষমতার একটি অংশ বিদেশ থেকে আমদানিনির্ভর তরল গ্যাস, পেট্রোলিয়াম ও কয়লার ওপর নির্ভরশীল। আমাদের অভ্যন্তরীণ গ্যাসের মজুত পর্যাপ্ত নয়। ফলে বর্তমান বিশ্ববাজার থেকে তেল-গ্যাস আমদানির সক্ষমতা যেখানে উন্নত অনেক দেশের জন্যই ব্যয়সাপেক্ষ, আমাদের জন্য তা মোটের ওপর অসম্ভব। সে কারণে সরকার তরল গ্যাস ও জ্বালানি তেল আমদানি বন্ধ রেখেছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন তার ফলে দেড়-দুই হাজার মেগাওয়াট কম করতে হচ্ছে। এর ফলে লোডশেডিং করতে হচ্ছে। লোডশেডিং দেশ থেকে বিদায় নিয়েছিল। কিন্তু এখন বৈশ্বিক এই পরিস্থিতিতে লোডশেডিং যেমন করতে হচ্ছে, একইভাবে সরকারি ব্যয় সাশ্রয়ে একটি দৃঢ় অবস্থান কার্যকর করা হচ্ছে। মূলত দেশের মোট রিজার্ভ যাতে বড় ধরনের পতনের দিকে না চলে যায়, সে জন্যই এই ব্যবস্থা নিতে হচ্ছে। পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই এখন আপৎকাল চলছে। চরম অর্থনৈতিক সংকটে এখন অনেকগুলো রাষ্ট্রই দিশেহারা। সে তুলনায় আমাদের পরিস্থিতি আইএমএফ এবং বিশ্বব্যাংকসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো ভালো বলছে।
সরকার যেসব ব্যবস্থা নিয়েছে, তা কয়েক মাস পর হয়তো একটি স্বস্তিদায়ক অবস্থানে যেতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং রাশিয়ার ওপর অর্থনৈতিক অবরোধ শিথিল হলেই কেবল পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে, এমনটি সবারই আশা। এই মুহূর্তে বৈশ্বিক এক সংকটে সবাই। অপেক্ষা পরিস্থিতি উন্নতি ঘটার। কিন্তু সে পর্যন্ত আমাদের সাশ্রয়ী হওয়া এবং চলমান অর্থনৈতিক সমস্যার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার বিকল্প নেই।
কিন্তু বাংলাদেশে বৈশ্বিক এই সংকটকে রাজনৈতিকভাবে পুঁজি করার একটি প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। বিএনপি লোডশেডিংয়ের কারণ সম্পর্কে সরকারের দুর্নীতি, অদক্ষতা এবং ব্যর্থতাকে দায়ী করছে। দুর্নীতি কোন খাতে কতটা হয়েছে কি হয়নি, তার তথ্য কেবল তদন্ত সাপেক্ষেই বলা যেতে পারে। দুর্নীতি কিছু হয়ে থাকলেও বিদ্যুৎ খাতে যে উন্নতি লক্ষ করা গিয়েছিল, সেটা অস্বীকারের উপায় নেই। লোডশেডিং নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছিল। জ্বালানি তেল ও তরল গ্যাস আমদানি করা এই মুহূর্তে সম্ভব হচ্ছে না বলে উৎপাদনশীল কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ রাখতে হচ্ছে। এই সত্যটি অস্বীকারের উপায় নেই। কিন্তু বিএনপি সেই যুক্তি ও তথ্য এড়িয়ে গিয়ে শুধু দুর্নীতিকেই লোডশেডিংয়ের কারণ হিসেবে দায়ী করছে। তা ছাড়া ২০০৯-১০ সালে কুইক রেন্টাল যেসব বিদ্যুৎকেন্দ্র আনা হয়েছিল, সেগুলোর ব্যাপারে তাদের ঘোরতর আপত্তি যেমন লক্ষ করা যাচ্ছে, একইভাবে বিদ্যুতের মেগা প্রকল্প নিয়েও তাদের অভিযোগের শেষ নেই।

বিএনপি এখন তেল-গ্যাস, জ্বালানি, খাদ্যদ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করছে। দেশে উন্নয়ন, মেগা প্রকল্প, রিজার্ভ ইত্যাদি নিয়েও নানা ধরনের মনগড়া তথ্য সভা-সমাবেশে বলছে। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতেও নানা ধরনের ছবি এবং কল্পকাহিনি ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। বন্দরে ছাড়ের অপেক্ষায় থাকা পেট্রল-অকটেনের তথ্য গোপন করে দেশে ১৩ দিনের পেট্রল মজুত আছে আর অকটেনের ১১ দিন—এমন বানোয়াট ও মনগড়া তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। প্রবাসে বসে কেউ কেউ জ্বালানি তেল, ভোজ্যতেল, চাল, গ্যাস, বিদ্যুৎ ইত্যাদি বিষয়ে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াতে নানা ধরনের টক শো, ভিডিও ছড়িয়ে দিচ্ছে। বিভিন্ন বেসরকারি চ্যানেলে বিএনপি এবং বিএনপির নেতা, সমর্থক ও আলোচকেরা এসব বিষয়ে সরকারের ব্যর্থতা, দুর্নীতি, অপচয় ইত্যাদি থেকেই বর্তমান পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটেছে বলে দাবি করছেন। সহ-আলোচক হিসেবে এসব টক শোতে আওয়ামী লীগের যেসব নেতা থাকেন তাঁদের অনেককেই তথ্য-উপাত্ত ঘেঁটে অনেক সময় কথা বলতে দেখা যায় না। সে কারণে মিডিয়ায় বিশেষজ্ঞহীন টক শো অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ, বিভ্রান্তি ও হতাশা ছড়ানো ছাড়া বেশি কিছু দিতে পারে না। সচেতন মানুষকে এসব টক শো তেমন আকর্ষণ করতে পারে না। তবে রাজনৈতিকভাবে যাঁরা অতটা সচেতন নন, তাঁদের অনেকেই কারও কারও আলোচনায় বিভ্রান্ত হন।
সামাজিকভাবে বর্তমান পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে নীরবে প্রচার-অপপ্রচার তৃণমূল পর্যন্ত বিস্তৃত হচ্ছে। সেখানে বৈশ্বিক পরিস্থিতির কোনো বিবেচনা থাকে না। প্রচার করা হচ্ছে, বিএনপির আমলে লোডশেডিং ছিল। এখন তার চেয়েও নাকি বেশি। তরুণেরা এসব অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হচ্ছে। গ্যাস, বিদ্যুৎ, খাদ্যদ্রব্য ইত্যাদির দাম নিয়েও রমরমা অপপ্রচার ছড়ানো হচ্ছে। দাবি করা হচ্ছে, পদ্মা সেতুর কারণেই এই সংকট। আবার কেউ কেউ মেগা প্রকল্পের মেগা দুর্নীতির কল্পকাহিনিও ছড়িয়ে বেড়াচ্ছে। মন্ত্রী, এমপি, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের দুর্নীতির নানা কাহিনিও এর সঙ্গে জড়িয়ে দিচ্ছে। মুন্সিগঞ্জের ইউপি চেয়ারম্যান আজিজের মাদকসম্রাট ও আওয়ামী লীগের নেতা হয়ে ওঠার গল্পকাহিনি এই প্রচারণার নতুন সংযোজন। এর আগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নাম যৌন হয়রানিতে যুক্ত হয়েছে। এখন শাবির ছাত্রহত্যা বিষয়টিও আলোচনায়। আওয়ামী লীগের অনেক নেতাই তাঁদের আচার-আচরণে সংযত যে নন, সেটি অস্বীকারের উপায় নেই। রাজশাহীর এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী কিংবা কুমিল্লার রাজী মোহাম্মদ ফখরুল এখন আলোচনায়।
বিভিন্ন জায়গায় ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে কিছু কিছু নেতা যা করছেন, তাতে তো মনে হয় না দেশে একটা বিশেষ পরিস্থিতি এখন বিরাজ করছে, যখন তাদের সংযত আচরণ করা প্রয়োজন। কিছুদিন আগে নড়াইলে যে দুটি ঘটনা ঘটে গেছে তার পেছনে কারা ইন্ধন জুগিয়েছিল, ফেসবুকে কেউ স্ট্যাটাস দিলে অমনিতেই গেল গেল ধর্ম গেল রব তুলে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর, মন্দির ভাঙচুর, পুড়িয়ে ফেলা, তাদের মারধর, জুতার মালা গলায় পরানো, এসব ঘটনা কারা ঘটাচ্ছে, কেন ঘটাচ্ছে–এর কোনো সদুত্তর কেন যেন জানা হচ্ছে না। দেখা যাচ্ছে, সাম্প্রদায়িক এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে অনেক কিশোর, তরুণ, যারা দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তোয়াক্কা করছে না। অনেকেই লুটপাটে অংশ নিচ্ছে, ধর্মের পবিত্রতা রক্ষা করতে গিয়ে হিংস্রতা প্রদর্শন, লুটপাট এমনকি নিজের পবিত্র ধর্মগ্রন্থকে অসম্মানিত করার মতো হীনমনোবৃত্তিও অনেকেই প্রদর্শন করছে। এগুলো পরিকল্পিতভাবে করা হচ্ছে নাকি যারা এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে, তারা নিজেদের স্বার্থ উদ্ধার ছাড়া আর কিছুই বোঝে না নাকি তারাও এমন একটি পরিস্থিতি তৈরির জন্য ওত পেতে ছিল, এখন এমন বৈশ্বিক সংকট, জাতীয় জীবনের চ্যালেঞ্জ এবং নির্বাচনের প্রাক্কালে দেশে একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরির জন্য এত দিন অপেক্ষায় ছিল, এখন সেটি ধীরে ধীরে সংগঠিত করছে!
মনে পড়ে, ১৯৭৪ সালের কথা। তেল এবং খাদ্যের দাম বাড়িয়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে উগ্র হঠকারী রাজনীতির ধারকবাহকদের অনেকেই পাটের গুদামে আগুন লাগানো, ব্যাংক লুট, শ্রেণিশত্রু খতমের নামে রাজনৈতিক নেতা ও ধনী ব্যক্তিদের হত্যা করে বঙ্গবন্ধু সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণে উঠেপড়ে লেগেছিল। নানা অপপ্রচারে তখন দেশ ছেয়ে গিয়েছিল। একদিকে দুর্ভিক্ষ, অন্যদিকে এসব অঘটন, অপপ্রচার মিলিয়ে সাধারণ মানুষের কান ভারী করা হলো, জন্ম দেওয়া হয় নতুন রাজনৈতিক সংকট। আমরা সে রকম কিছু আলামত এখন দেখছি। কিন্তু বিশ্বাস করতে চাই যে সরকার এবং দলীয়ভাবে আওয়ামী লীগ চোখকান খোলা রেখে বর্তমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।
বিশেষত আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গসংগঠনগুলোর তৃণমূল থেকে ওপর স্তর পর্যন্ত যেভাবে এখন গা ভাসিয়ে দিয়ে চলছে, ইউপি চেয়ারম্যান আজিজদের মতো লোকদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে এত ওপরে উঠিয়েছে, তাঁদের হাতকে অঘটন ঘটানোর আগেই অকার্যকর করে দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো বিকল্প দেখি না।
মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী

বিশ্ব এখন চরম এক অর্থনৈতিক সংকটে নিপতিত। এই সংকটের তিনটি কারণ সবারই জানা। এক. বৈশ্বিক করোনা মহামারি, দুই. ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এবং তিন. রাশিয়ার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা। রাশিয়ার বিরুদ্ধে মার্কিন এবং ইউরোপীয়দের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা এখন পুরো বিশ্বের জন্যই বুমেরাং হয়ে উঠেছে। রাশিয়াকে এই নিষেধাজ্ঞা যতটা না সমস্যায় ফেলেছে, তার চেয়ে বেশি কাবু করেছে আমাদের মতো রাষ্ট্রগুলোকে। আমরা এখন মার্কিন নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে স্বাধীনভাবে বিশ্ববাণিজ্যের সুবিধা নিতে পারছি না। সে কারণে তেল-গ্যাসসহ বেশ কিছু পণ্য আমদানি করা বেশ দুরূহ হয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় আমাদের তেল ও গ্যাসনির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। আমদানিজাত অনেকগুলো কাঁচামাল বা পণ্য আগের মতো আমদানি করা যাচ্ছে না। বিশ্বে ডলার-সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। এ অবস্থায় প্রায় সব দেশই এখন চরম বিপাকে। ইউরোপের দেশগুলোও রাশিয়ার তেল-গ্যাস এবং খনিজ কাঁচামালের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল ছিল। তারাও এখন চরম বেকায়দায়। এমন একটি ক্রান্তিকাল বিশ্ব অতিক্রম করবে, এটি বছরের শুরুতেও ভাবা যায়নি।
আমাদের সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনে যে সক্ষমতা অর্জন করেছে, তা আমাদের অর্থনীতি ও সামাজিক পরিবেশে একটি বড় ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে এসেছিল। কিন্তু বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষমতার একটি অংশ বিদেশ থেকে আমদানিনির্ভর তরল গ্যাস, পেট্রোলিয়াম ও কয়লার ওপর নির্ভরশীল। আমাদের অভ্যন্তরীণ গ্যাসের মজুত পর্যাপ্ত নয়। ফলে বর্তমান বিশ্ববাজার থেকে তেল-গ্যাস আমদানির সক্ষমতা যেখানে উন্নত অনেক দেশের জন্যই ব্যয়সাপেক্ষ, আমাদের জন্য তা মোটের ওপর অসম্ভব। সে কারণে সরকার তরল গ্যাস ও জ্বালানি তেল আমদানি বন্ধ রেখেছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন তার ফলে দেড়-দুই হাজার মেগাওয়াট কম করতে হচ্ছে। এর ফলে লোডশেডিং করতে হচ্ছে। লোডশেডিং দেশ থেকে বিদায় নিয়েছিল। কিন্তু এখন বৈশ্বিক এই পরিস্থিতিতে লোডশেডিং যেমন করতে হচ্ছে, একইভাবে সরকারি ব্যয় সাশ্রয়ে একটি দৃঢ় অবস্থান কার্যকর করা হচ্ছে। মূলত দেশের মোট রিজার্ভ যাতে বড় ধরনের পতনের দিকে না চলে যায়, সে জন্যই এই ব্যবস্থা নিতে হচ্ছে। পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই এখন আপৎকাল চলছে। চরম অর্থনৈতিক সংকটে এখন অনেকগুলো রাষ্ট্রই দিশেহারা। সে তুলনায় আমাদের পরিস্থিতি আইএমএফ এবং বিশ্বব্যাংকসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো ভালো বলছে।
সরকার যেসব ব্যবস্থা নিয়েছে, তা কয়েক মাস পর হয়তো একটি স্বস্তিদায়ক অবস্থানে যেতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং রাশিয়ার ওপর অর্থনৈতিক অবরোধ শিথিল হলেই কেবল পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে, এমনটি সবারই আশা। এই মুহূর্তে বৈশ্বিক এক সংকটে সবাই। অপেক্ষা পরিস্থিতি উন্নতি ঘটার। কিন্তু সে পর্যন্ত আমাদের সাশ্রয়ী হওয়া এবং চলমান অর্থনৈতিক সমস্যার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার বিকল্প নেই।
কিন্তু বাংলাদেশে বৈশ্বিক এই সংকটকে রাজনৈতিকভাবে পুঁজি করার একটি প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। বিএনপি লোডশেডিংয়ের কারণ সম্পর্কে সরকারের দুর্নীতি, অদক্ষতা এবং ব্যর্থতাকে দায়ী করছে। দুর্নীতি কোন খাতে কতটা হয়েছে কি হয়নি, তার তথ্য কেবল তদন্ত সাপেক্ষেই বলা যেতে পারে। দুর্নীতি কিছু হয়ে থাকলেও বিদ্যুৎ খাতে যে উন্নতি লক্ষ করা গিয়েছিল, সেটা অস্বীকারের উপায় নেই। লোডশেডিং নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছিল। জ্বালানি তেল ও তরল গ্যাস আমদানি করা এই মুহূর্তে সম্ভব হচ্ছে না বলে উৎপাদনশীল কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ রাখতে হচ্ছে। এই সত্যটি অস্বীকারের উপায় নেই। কিন্তু বিএনপি সেই যুক্তি ও তথ্য এড়িয়ে গিয়ে শুধু দুর্নীতিকেই লোডশেডিংয়ের কারণ হিসেবে দায়ী করছে। তা ছাড়া ২০০৯-১০ সালে কুইক রেন্টাল যেসব বিদ্যুৎকেন্দ্র আনা হয়েছিল, সেগুলোর ব্যাপারে তাদের ঘোরতর আপত্তি যেমন লক্ষ করা যাচ্ছে, একইভাবে বিদ্যুতের মেগা প্রকল্প নিয়েও তাদের অভিযোগের শেষ নেই।

বিএনপি এখন তেল-গ্যাস, জ্বালানি, খাদ্যদ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করছে। দেশে উন্নয়ন, মেগা প্রকল্প, রিজার্ভ ইত্যাদি নিয়েও নানা ধরনের মনগড়া তথ্য সভা-সমাবেশে বলছে। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতেও নানা ধরনের ছবি এবং কল্পকাহিনি ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। বন্দরে ছাড়ের অপেক্ষায় থাকা পেট্রল-অকটেনের তথ্য গোপন করে দেশে ১৩ দিনের পেট্রল মজুত আছে আর অকটেনের ১১ দিন—এমন বানোয়াট ও মনগড়া তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। প্রবাসে বসে কেউ কেউ জ্বালানি তেল, ভোজ্যতেল, চাল, গ্যাস, বিদ্যুৎ ইত্যাদি বিষয়ে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াতে নানা ধরনের টক শো, ভিডিও ছড়িয়ে দিচ্ছে। বিভিন্ন বেসরকারি চ্যানেলে বিএনপি এবং বিএনপির নেতা, সমর্থক ও আলোচকেরা এসব বিষয়ে সরকারের ব্যর্থতা, দুর্নীতি, অপচয় ইত্যাদি থেকেই বর্তমান পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটেছে বলে দাবি করছেন। সহ-আলোচক হিসেবে এসব টক শোতে আওয়ামী লীগের যেসব নেতা থাকেন তাঁদের অনেককেই তথ্য-উপাত্ত ঘেঁটে অনেক সময় কথা বলতে দেখা যায় না। সে কারণে মিডিয়ায় বিশেষজ্ঞহীন টক শো অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ, বিভ্রান্তি ও হতাশা ছড়ানো ছাড়া বেশি কিছু দিতে পারে না। সচেতন মানুষকে এসব টক শো তেমন আকর্ষণ করতে পারে না। তবে রাজনৈতিকভাবে যাঁরা অতটা সচেতন নন, তাঁদের অনেকেই কারও কারও আলোচনায় বিভ্রান্ত হন।
সামাজিকভাবে বর্তমান পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে নীরবে প্রচার-অপপ্রচার তৃণমূল পর্যন্ত বিস্তৃত হচ্ছে। সেখানে বৈশ্বিক পরিস্থিতির কোনো বিবেচনা থাকে না। প্রচার করা হচ্ছে, বিএনপির আমলে লোডশেডিং ছিল। এখন তার চেয়েও নাকি বেশি। তরুণেরা এসব অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হচ্ছে। গ্যাস, বিদ্যুৎ, খাদ্যদ্রব্য ইত্যাদির দাম নিয়েও রমরমা অপপ্রচার ছড়ানো হচ্ছে। দাবি করা হচ্ছে, পদ্মা সেতুর কারণেই এই সংকট। আবার কেউ কেউ মেগা প্রকল্পের মেগা দুর্নীতির কল্পকাহিনিও ছড়িয়ে বেড়াচ্ছে। মন্ত্রী, এমপি, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের দুর্নীতির নানা কাহিনিও এর সঙ্গে জড়িয়ে দিচ্ছে। মুন্সিগঞ্জের ইউপি চেয়ারম্যান আজিজের মাদকসম্রাট ও আওয়ামী লীগের নেতা হয়ে ওঠার গল্পকাহিনি এই প্রচারণার নতুন সংযোজন। এর আগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নাম যৌন হয়রানিতে যুক্ত হয়েছে। এখন শাবির ছাত্রহত্যা বিষয়টিও আলোচনায়। আওয়ামী লীগের অনেক নেতাই তাঁদের আচার-আচরণে সংযত যে নন, সেটি অস্বীকারের উপায় নেই। রাজশাহীর এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী কিংবা কুমিল্লার রাজী মোহাম্মদ ফখরুল এখন আলোচনায়।
বিভিন্ন জায়গায় ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে কিছু কিছু নেতা যা করছেন, তাতে তো মনে হয় না দেশে একটা বিশেষ পরিস্থিতি এখন বিরাজ করছে, যখন তাদের সংযত আচরণ করা প্রয়োজন। কিছুদিন আগে নড়াইলে যে দুটি ঘটনা ঘটে গেছে তার পেছনে কারা ইন্ধন জুগিয়েছিল, ফেসবুকে কেউ স্ট্যাটাস দিলে অমনিতেই গেল গেল ধর্ম গেল রব তুলে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর, মন্দির ভাঙচুর, পুড়িয়ে ফেলা, তাদের মারধর, জুতার মালা গলায় পরানো, এসব ঘটনা কারা ঘটাচ্ছে, কেন ঘটাচ্ছে–এর কোনো সদুত্তর কেন যেন জানা হচ্ছে না। দেখা যাচ্ছে, সাম্প্রদায়িক এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে অনেক কিশোর, তরুণ, যারা দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তোয়াক্কা করছে না। অনেকেই লুটপাটে অংশ নিচ্ছে, ধর্মের পবিত্রতা রক্ষা করতে গিয়ে হিংস্রতা প্রদর্শন, লুটপাট এমনকি নিজের পবিত্র ধর্মগ্রন্থকে অসম্মানিত করার মতো হীনমনোবৃত্তিও অনেকেই প্রদর্শন করছে। এগুলো পরিকল্পিতভাবে করা হচ্ছে নাকি যারা এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে, তারা নিজেদের স্বার্থ উদ্ধার ছাড়া আর কিছুই বোঝে না নাকি তারাও এমন একটি পরিস্থিতি তৈরির জন্য ওত পেতে ছিল, এখন এমন বৈশ্বিক সংকট, জাতীয় জীবনের চ্যালেঞ্জ এবং নির্বাচনের প্রাক্কালে দেশে একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরির জন্য এত দিন অপেক্ষায় ছিল, এখন সেটি ধীরে ধীরে সংগঠিত করছে!
মনে পড়ে, ১৯৭৪ সালের কথা। তেল এবং খাদ্যের দাম বাড়িয়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে উগ্র হঠকারী রাজনীতির ধারকবাহকদের অনেকেই পাটের গুদামে আগুন লাগানো, ব্যাংক লুট, শ্রেণিশত্রু খতমের নামে রাজনৈতিক নেতা ও ধনী ব্যক্তিদের হত্যা করে বঙ্গবন্ধু সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণে উঠেপড়ে লেগেছিল। নানা অপপ্রচারে তখন দেশ ছেয়ে গিয়েছিল। একদিকে দুর্ভিক্ষ, অন্যদিকে এসব অঘটন, অপপ্রচার মিলিয়ে সাধারণ মানুষের কান ভারী করা হলো, জন্ম দেওয়া হয় নতুন রাজনৈতিক সংকট। আমরা সে রকম কিছু আলামত এখন দেখছি। কিন্তু বিশ্বাস করতে চাই যে সরকার এবং দলীয়ভাবে আওয়ামী লীগ চোখকান খোলা রেখে বর্তমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।
বিশেষত আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গসংগঠনগুলোর তৃণমূল থেকে ওপর স্তর পর্যন্ত যেভাবে এখন গা ভাসিয়ে দিয়ে চলছে, ইউপি চেয়ারম্যান আজিজদের মতো লোকদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে এত ওপরে উঠিয়েছে, তাঁদের হাতকে অঘটন ঘটানোর আগেই অকার্যকর করে দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো বিকল্প দেখি না।

বিশ্ব এখন চরম এক অর্থনৈতিক সংকটে নিপতিত। এই সংকটের তিনটি কারণ সবারই জানা। এক. বৈশ্বিক করোনা মহামারি, দুই. ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এবং তিন. রাশিয়ার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা। রাশিয়ার বিরুদ্ধে মার্কিন এবং ইউরোপীয়দের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা এখন পুরো বিশ্বের জন্যই বুমেরাং হয়ে উঠেছে। রাশিয়াকে এই নিষেধাজ্ঞা যতটা না সমস্যায় ফেলেছে, তার চেয়ে বেশি কাবু করেছে আমাদের মতো রাষ্ট্রগুলোকে। আমরা এখন মার্কিন নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে স্বাধীনভাবে বিশ্ববাণিজ্যের সুবিধা নিতে পারছি না। সে কারণে তেল-গ্যাসসহ বেশ কিছু পণ্য আমদানি করা বেশ দুরূহ হয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় আমাদের তেল ও গ্যাসনির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। আমদানিজাত অনেকগুলো কাঁচামাল বা পণ্য আগের মতো আমদানি করা যাচ্ছে না। বিশ্বে ডলার-সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। এ অবস্থায় প্রায় সব দেশই এখন চরম বিপাকে। ইউরোপের দেশগুলোও রাশিয়ার তেল-গ্যাস এবং খনিজ কাঁচামালের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল ছিল। তারাও এখন চরম বেকায়দায়। এমন একটি ক্রান্তিকাল বিশ্ব অতিক্রম করবে, এটি বছরের শুরুতেও ভাবা যায়নি।
আমাদের সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনে যে সক্ষমতা অর্জন করেছে, তা আমাদের অর্থনীতি ও সামাজিক পরিবেশে একটি বড় ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে এসেছিল। কিন্তু বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষমতার একটি অংশ বিদেশ থেকে আমদানিনির্ভর তরল গ্যাস, পেট্রোলিয়াম ও কয়লার ওপর নির্ভরশীল। আমাদের অভ্যন্তরীণ গ্যাসের মজুত পর্যাপ্ত নয়। ফলে বর্তমান বিশ্ববাজার থেকে তেল-গ্যাস আমদানির সক্ষমতা যেখানে উন্নত অনেক দেশের জন্যই ব্যয়সাপেক্ষ, আমাদের জন্য তা মোটের ওপর অসম্ভব। সে কারণে সরকার তরল গ্যাস ও জ্বালানি তেল আমদানি বন্ধ রেখেছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন তার ফলে দেড়-দুই হাজার মেগাওয়াট কম করতে হচ্ছে। এর ফলে লোডশেডিং করতে হচ্ছে। লোডশেডিং দেশ থেকে বিদায় নিয়েছিল। কিন্তু এখন বৈশ্বিক এই পরিস্থিতিতে লোডশেডিং যেমন করতে হচ্ছে, একইভাবে সরকারি ব্যয় সাশ্রয়ে একটি দৃঢ় অবস্থান কার্যকর করা হচ্ছে। মূলত দেশের মোট রিজার্ভ যাতে বড় ধরনের পতনের দিকে না চলে যায়, সে জন্যই এই ব্যবস্থা নিতে হচ্ছে। পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই এখন আপৎকাল চলছে। চরম অর্থনৈতিক সংকটে এখন অনেকগুলো রাষ্ট্রই দিশেহারা। সে তুলনায় আমাদের পরিস্থিতি আইএমএফ এবং বিশ্বব্যাংকসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো ভালো বলছে।
সরকার যেসব ব্যবস্থা নিয়েছে, তা কয়েক মাস পর হয়তো একটি স্বস্তিদায়ক অবস্থানে যেতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং রাশিয়ার ওপর অর্থনৈতিক অবরোধ শিথিল হলেই কেবল পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে, এমনটি সবারই আশা। এই মুহূর্তে বৈশ্বিক এক সংকটে সবাই। অপেক্ষা পরিস্থিতি উন্নতি ঘটার। কিন্তু সে পর্যন্ত আমাদের সাশ্রয়ী হওয়া এবং চলমান অর্থনৈতিক সমস্যার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার বিকল্প নেই।
কিন্তু বাংলাদেশে বৈশ্বিক এই সংকটকে রাজনৈতিকভাবে পুঁজি করার একটি প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। বিএনপি লোডশেডিংয়ের কারণ সম্পর্কে সরকারের দুর্নীতি, অদক্ষতা এবং ব্যর্থতাকে দায়ী করছে। দুর্নীতি কোন খাতে কতটা হয়েছে কি হয়নি, তার তথ্য কেবল তদন্ত সাপেক্ষেই বলা যেতে পারে। দুর্নীতি কিছু হয়ে থাকলেও বিদ্যুৎ খাতে যে উন্নতি লক্ষ করা গিয়েছিল, সেটা অস্বীকারের উপায় নেই। লোডশেডিং নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছিল। জ্বালানি তেল ও তরল গ্যাস আমদানি করা এই মুহূর্তে সম্ভব হচ্ছে না বলে উৎপাদনশীল কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ রাখতে হচ্ছে। এই সত্যটি অস্বীকারের উপায় নেই। কিন্তু বিএনপি সেই যুক্তি ও তথ্য এড়িয়ে গিয়ে শুধু দুর্নীতিকেই লোডশেডিংয়ের কারণ হিসেবে দায়ী করছে। তা ছাড়া ২০০৯-১০ সালে কুইক রেন্টাল যেসব বিদ্যুৎকেন্দ্র আনা হয়েছিল, সেগুলোর ব্যাপারে তাদের ঘোরতর আপত্তি যেমন লক্ষ করা যাচ্ছে, একইভাবে বিদ্যুতের মেগা প্রকল্প নিয়েও তাদের অভিযোগের শেষ নেই।

বিএনপি এখন তেল-গ্যাস, জ্বালানি, খাদ্যদ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করছে। দেশে উন্নয়ন, মেগা প্রকল্প, রিজার্ভ ইত্যাদি নিয়েও নানা ধরনের মনগড়া তথ্য সভা-সমাবেশে বলছে। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতেও নানা ধরনের ছবি এবং কল্পকাহিনি ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। বন্দরে ছাড়ের অপেক্ষায় থাকা পেট্রল-অকটেনের তথ্য গোপন করে দেশে ১৩ দিনের পেট্রল মজুত আছে আর অকটেনের ১১ দিন—এমন বানোয়াট ও মনগড়া তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। প্রবাসে বসে কেউ কেউ জ্বালানি তেল, ভোজ্যতেল, চাল, গ্যাস, বিদ্যুৎ ইত্যাদি বিষয়ে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াতে নানা ধরনের টক শো, ভিডিও ছড়িয়ে দিচ্ছে। বিভিন্ন বেসরকারি চ্যানেলে বিএনপি এবং বিএনপির নেতা, সমর্থক ও আলোচকেরা এসব বিষয়ে সরকারের ব্যর্থতা, দুর্নীতি, অপচয় ইত্যাদি থেকেই বর্তমান পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটেছে বলে দাবি করছেন। সহ-আলোচক হিসেবে এসব টক শোতে আওয়ামী লীগের যেসব নেতা থাকেন তাঁদের অনেককেই তথ্য-উপাত্ত ঘেঁটে অনেক সময় কথা বলতে দেখা যায় না। সে কারণে মিডিয়ায় বিশেষজ্ঞহীন টক শো অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ, বিভ্রান্তি ও হতাশা ছড়ানো ছাড়া বেশি কিছু দিতে পারে না। সচেতন মানুষকে এসব টক শো তেমন আকর্ষণ করতে পারে না। তবে রাজনৈতিকভাবে যাঁরা অতটা সচেতন নন, তাঁদের অনেকেই কারও কারও আলোচনায় বিভ্রান্ত হন।
সামাজিকভাবে বর্তমান পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে নীরবে প্রচার-অপপ্রচার তৃণমূল পর্যন্ত বিস্তৃত হচ্ছে। সেখানে বৈশ্বিক পরিস্থিতির কোনো বিবেচনা থাকে না। প্রচার করা হচ্ছে, বিএনপির আমলে লোডশেডিং ছিল। এখন তার চেয়েও নাকি বেশি। তরুণেরা এসব অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হচ্ছে। গ্যাস, বিদ্যুৎ, খাদ্যদ্রব্য ইত্যাদির দাম নিয়েও রমরমা অপপ্রচার ছড়ানো হচ্ছে। দাবি করা হচ্ছে, পদ্মা সেতুর কারণেই এই সংকট। আবার কেউ কেউ মেগা প্রকল্পের মেগা দুর্নীতির কল্পকাহিনিও ছড়িয়ে বেড়াচ্ছে। মন্ত্রী, এমপি, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের দুর্নীতির নানা কাহিনিও এর সঙ্গে জড়িয়ে দিচ্ছে। মুন্সিগঞ্জের ইউপি চেয়ারম্যান আজিজের মাদকসম্রাট ও আওয়ামী লীগের নেতা হয়ে ওঠার গল্পকাহিনি এই প্রচারণার নতুন সংযোজন। এর আগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নাম যৌন হয়রানিতে যুক্ত হয়েছে। এখন শাবির ছাত্রহত্যা বিষয়টিও আলোচনায়। আওয়ামী লীগের অনেক নেতাই তাঁদের আচার-আচরণে সংযত যে নন, সেটি অস্বীকারের উপায় নেই। রাজশাহীর এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী কিংবা কুমিল্লার রাজী মোহাম্মদ ফখরুল এখন আলোচনায়।
বিভিন্ন জায়গায় ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে কিছু কিছু নেতা যা করছেন, তাতে তো মনে হয় না দেশে একটা বিশেষ পরিস্থিতি এখন বিরাজ করছে, যখন তাদের সংযত আচরণ করা প্রয়োজন। কিছুদিন আগে নড়াইলে যে দুটি ঘটনা ঘটে গেছে তার পেছনে কারা ইন্ধন জুগিয়েছিল, ফেসবুকে কেউ স্ট্যাটাস দিলে অমনিতেই গেল গেল ধর্ম গেল রব তুলে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর, মন্দির ভাঙচুর, পুড়িয়ে ফেলা, তাদের মারধর, জুতার মালা গলায় পরানো, এসব ঘটনা কারা ঘটাচ্ছে, কেন ঘটাচ্ছে–এর কোনো সদুত্তর কেন যেন জানা হচ্ছে না। দেখা যাচ্ছে, সাম্প্রদায়িক এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে অনেক কিশোর, তরুণ, যারা দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তোয়াক্কা করছে না। অনেকেই লুটপাটে অংশ নিচ্ছে, ধর্মের পবিত্রতা রক্ষা করতে গিয়ে হিংস্রতা প্রদর্শন, লুটপাট এমনকি নিজের পবিত্র ধর্মগ্রন্থকে অসম্মানিত করার মতো হীনমনোবৃত্তিও অনেকেই প্রদর্শন করছে। এগুলো পরিকল্পিতভাবে করা হচ্ছে নাকি যারা এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে, তারা নিজেদের স্বার্থ উদ্ধার ছাড়া আর কিছুই বোঝে না নাকি তারাও এমন একটি পরিস্থিতি তৈরির জন্য ওত পেতে ছিল, এখন এমন বৈশ্বিক সংকট, জাতীয় জীবনের চ্যালেঞ্জ এবং নির্বাচনের প্রাক্কালে দেশে একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরির জন্য এত দিন অপেক্ষায় ছিল, এখন সেটি ধীরে ধীরে সংগঠিত করছে!
মনে পড়ে, ১৯৭৪ সালের কথা। তেল এবং খাদ্যের দাম বাড়িয়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে উগ্র হঠকারী রাজনীতির ধারকবাহকদের অনেকেই পাটের গুদামে আগুন লাগানো, ব্যাংক লুট, শ্রেণিশত্রু খতমের নামে রাজনৈতিক নেতা ও ধনী ব্যক্তিদের হত্যা করে বঙ্গবন্ধু সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণে উঠেপড়ে লেগেছিল। নানা অপপ্রচারে তখন দেশ ছেয়ে গিয়েছিল। একদিকে দুর্ভিক্ষ, অন্যদিকে এসব অঘটন, অপপ্রচার মিলিয়ে সাধারণ মানুষের কান ভারী করা হলো, জন্ম দেওয়া হয় নতুন রাজনৈতিক সংকট। আমরা সে রকম কিছু আলামত এখন দেখছি। কিন্তু বিশ্বাস করতে চাই যে সরকার এবং দলীয়ভাবে আওয়ামী লীগ চোখকান খোলা রেখে বর্তমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।
বিশেষত আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গসংগঠনগুলোর তৃণমূল থেকে ওপর স্তর পর্যন্ত যেভাবে এখন গা ভাসিয়ে দিয়ে চলছে, ইউপি চেয়ারম্যান আজিজদের মতো লোকদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে এত ওপরে উঠিয়েছে, তাঁদের হাতকে অঘটন ঘটানোর আগেই অকার্যকর করে দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো বিকল্প দেখি না।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

বিশ্ব এখন চরম এক অর্থনৈতিক সংকটে নিপতিত। এই সংকটের তিনটি কারণ সবারই জানা। এক. বৈশ্বিক করোনা মহামারি, দুই. ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এবং তিন. রাশিয়ার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা। রাশিয়ার বিরুদ্ধে মার্কিন এবং ইউরোপীয়দের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা এখন পুরো বিশ্বের জন্যই বুমেরাং হয়ে উঠেছে। রাশিয়াকে এই নিষেধাজ্ঞা
২৯ জুলাই ২০২২
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

বিশ্ব এখন চরম এক অর্থনৈতিক সংকটে নিপতিত। এই সংকটের তিনটি কারণ সবারই জানা। এক. বৈশ্বিক করোনা মহামারি, দুই. ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এবং তিন. রাশিয়ার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা। রাশিয়ার বিরুদ্ধে মার্কিন এবং ইউরোপীয়দের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা এখন পুরো বিশ্বের জন্যই বুমেরাং হয়ে উঠেছে। রাশিয়াকে এই নিষেধাজ্ঞা
২৯ জুলাই ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

বিশ্ব এখন চরম এক অর্থনৈতিক সংকটে নিপতিত। এই সংকটের তিনটি কারণ সবারই জানা। এক. বৈশ্বিক করোনা মহামারি, দুই. ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এবং তিন. রাশিয়ার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা। রাশিয়ার বিরুদ্ধে মার্কিন এবং ইউরোপীয়দের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা এখন পুরো বিশ্বের জন্যই বুমেরাং হয়ে উঠেছে। রাশিয়াকে এই নিষেধাজ্ঞা
২৯ জুলাই ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

বিশ্ব এখন চরম এক অর্থনৈতিক সংকটে নিপতিত। এই সংকটের তিনটি কারণ সবারই জানা। এক. বৈশ্বিক করোনা মহামারি, দুই. ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এবং তিন. রাশিয়ার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা। রাশিয়ার বিরুদ্ধে মার্কিন এবং ইউরোপীয়দের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা এখন পুরো বিশ্বের জন্যই বুমেরাং হয়ে উঠেছে। রাশিয়াকে এই নিষেধাজ্ঞা
২৯ জুলাই ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫