Ajker Patrika

আলু নিয়ে হাহাকার কৃষকের

শিবগঞ্জ (বগুড়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ জানুয়ারি ২০২২, ১২: ৫৩
আলু নিয়ে হাহাকার কৃষকের

মৌসুমের শুরুতেই আলুর দাম নিয়ে বিপাকে পড়েছেন বগুড়ার শিবগঞ্জের চাষিরা। বাম্পার ফলন পেয়েও চোখমুখে চিন্তার ছাপ তাঁদের। ক্রেতাসংকটে রীতিমতো মাথায় হাত পড়েছে তাঁদের। বাজার পরিস্থিতি ঘুরে না দাঁড়ালে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে বলে মত তাঁদের।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, চলতি মৌসুমে রেকর্ড পরিমাণ আলুর উৎপাদন হলেও আমদানি বেড়ে যাওয়ায় আলুর দাম সামান্য কমেছে। শীতের প্রকোপ কমে গেলে বাইরের পাইকার আসতে শুরু করবে। হিমাগারগুলো সংরক্ষণের জন্য আলু কেনা শুরু করলে বাজার আবার ঘুরে দাঁড়াবে।

গত সোমবার সরেজমিনে বগুড়ার মহাস্থান সবজি বাজারে দেখা যায়, ভোর থেকে ভ্যান, পিকআপ ও ভটভটিতে করে বাজারে আলু বিক্রি করতে নিয়ে আসছেন জেলার বিভিন্ন অঞ্চলের চাষিরা। ক্রেতা কম হওয়ায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে দেখা গেছে তাঁদের। এ ছাড়া খুচরা ব্যবসায়ীরা নামমাত্র দাম বলে চলে যাচ্ছেন অন্য বিক্রেতার কাছে। আর তাই কম দামে আলু বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা।

এই বাজারে প্রতি কেজি আলু পাঁচ থেকে সাড়ে ছয় টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি মণ আলু বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৬০ টাকা মণ দরে। অথচ দুই সপ্তাহ আগেও আলুর বিক্রি হয়েছে ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজিতে। আর এখন পাইকারি বাজারে আলু বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ছয় টাকা কেজিতে। আলুর মোকাম হিসেবে পরিচিত বগুড়াতেই আলুর দাম এখন নিম্নমুখী।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সাদা গ্র্যানুলা প্রতি মণ আলু বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৬০ টাকা, অ্যাস্ট্রারিক বা স্টিক, কার্ডিনাল, ডায়মন্ড ও ক্যারেট জাতের আলু বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে সাড়ে ৩৫০ টাকা এবং লাল পাকড়ি জাতের আলু বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা মণ দরে।

এ সময় কথা হয় শিবগঞ্জের মোকামতলা এলাকার আলুচাষি জাহিদ হাসানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘খুব ভোরে আলু ধুয়ে, বস্তা করে বাজারে এনেছি। এখন কেউ দামই করছে না। দেড় ঘণ্টা আলু নিয়ে বসে থাকার পর ২০০ টাকা মণ বিক্রি করেছি। আড়াই মণ আলু বিক্রির ৫০০ টাকা দিয়ে ১ কেজি মাংস নিয়ে বাড়ি যাব।’

মোকামতলার আমজানি গ্রামের হাফিজুর রহমান রুবেল বলেন, ‘স্ট্রিক আলু নিয়ে এসেছি বাজারে। ক্রেতাই নাই। আলুর ফলন ভালো হলেও এবার দাম না পাওয়ায় খুব হতাশ আমরা।’

আলু নিয়ে আসা তেলিহারা নুরইল জাহাদার পাড়ার আবু মুছা বলেন, ‘সকাল ৮টা থেকে আলু নিয়ে বসে আছি। এখন দুপুর ১২টা বাজে। কেউ নিচ্ছে না। উৎপাদন খরচের অর্ধেক টাকাও উঠছে না আমাদের। মৌসুমের শুরুতেই যদি এমন দশা হয় তবে এরপর আরও যে কী হবে।’

এদিকে আলুর দাম কম হলেও খুব একটা স্বস্তিতে নাই ব্যবসায়ীরাও। তানভীর ইসলাম নামের এক ব্যবসায়ী জানান, ঢাকার মোকামেই আলুর দাম কম। গেল তিন দিনে ৩ লাখ টাকা লোকসান গুনেছি। আমদানি খুব বেশি হওয়ায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ দুলাল হোসেন জানান, চলতি মৌসুমে রেকর্ড পরিমাণ আলু উৎপাদন হয়েছে। কিন্তু হঠাৎ করেই আমদানি বেড়ে যাওয়ায় আলুর দাম সামান্য কমেছে। তা ছাড়া শীতের কারণে বাইরের জেলার পাইকারেরা না আসায় দাম কিছুটা কমে গেছে। তবে শীতের প্রকোপ কমে গেলে বাইরের পাইকার আসতে শুরু করবে। এ ছাড়া বিদেশে যারা আলু রপ্তানি করে তারাও কিনতে শুরু করবে। সেই সঙ্গে সংরক্ষণের জন্য হিমাগারগুলো আলু কেনা শুরু করলে বাজার আবার ঘুরে দাঁড়াবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইরানের ‘দানবীয় ক্ষেপণাস্ত্রের’ সামনে উন্মুক্ত ইসরায়েলের ‘অ্যাকিলিস হিল’

ভারতীয় বিমানবন্দরে ১১ দিন ধরে পড়ে আছে ব্রিটিশ এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান, ঘনাচ্ছে রহস্য

মা-মেয়ের ত্রিভুজ প্রেম, বিয়ে ও একটি খুন

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার ফল আজ, যেভাবে দেখবেন

মামদানি শতভাগ কমিউনিস্ট উন্মাদ, দেখতেও খারাপ: ট্রাম্প

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত