Ajker Patrika

সব পরীক্ষা জরুরি বিভাগেই

আজাদুল আদনান, ঢাকা
আপডেট : ০৩ জানুয়ারি ২০২৩, ০৯: ০৩
সব পরীক্ষা জরুরি বিভাগেই

সঠিক সময়ে কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসাসেবা দেওয়ার লক্ষ্যে দেশে প্রথমবারের মতো চালু হয়েছে ওয়ান-স্টপ ইমার্জেন্সি অ্যান্ড ক্যাজুয়ালটি (ওসেক) সার্ভিস। রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে এই সেবার সুফল পাচ্ছেন রোগীরা। তবে পর্যাপ্ত জনবল না দেওয়ায় পূর্ণাঙ্গ সেবা মিলছে না।

হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ঢুকতেই চোখে পড়ে দেয়ালে টাঙানো ওসেক সেবার আওতাধীন পরীক্ষার তালিকা। এ সেবার আওতায় আছে এমআরআই, সিটি স্ক্যান থেকে শুরু করে আল্ট্রাসনোগ্রাম, গর্ভধারণ পরীক্ষাসহ ২৭ ধরনের পরীক্ষা। ফলে রোগীদের অন্য কোথাও যেতে হচ্ছে না। তবে সংকটাপন্ন রোগীর প্রয়োজনে কৃত্রিম শ্বাসযন্ত্রসহ তিন শয্যার নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) লোকবলসংকটে এখনো চালু হয়নি। একই কারণে চালু করা যাচ্ছে না জরুরি অস্ত্রোপচার কার্যক্রম।

গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, নানা সমস্যা নিয়ে কিছুক্ষণ পরপর আসছিলেন রোগীরা। কারও পেটব্যথা, কেউ সড়ক দুর্ঘটনায় আহত আবার কেউ হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত। কিন্তু রোগীর তুলনায় চিকিৎসক ও নার্স কম হওয়ায় হিমশিম অবস্থা। পটুয়াখালী থেকে ঢাকায় আসার পথে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়েন মো. আবু বক্কর (৪৫)। পুলিশের সহায়তায় এ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হয়। সহকর্মী এনতাজুল ইসলাম বলেন, ‘এখানে আনার পর দ্রুত ডাক্তাররা কয়েকটি পরীক্ষা করেছেন। জরুরি বিভাগে যে এত দ্রুত সব পরীক্ষা হবে, ভাবতেই পারিনি।’

পেটব্যথায় ভুগছিলেন গাজীপুরের পোশাকশ্রমিক খাদিজা আক্তার (২২)। স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসায় উন্নতি না হওয়ায় এই হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হয়। আলট্রাসনোগ্রাম ও সিরাম ইলেকট্রোলাইটিস পরীক্ষা দেওয়া হয়। খালি পেটে করতে হয় বলে আলট্রাসনোগ্রাম হবে পরদিন সকালে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে অপর পরীক্ষাটি করা হয়। একাধিক চিকিৎসক জানান, প্রতিদিন ৩০০-৫০০ রোগী আসেন। আগে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বিভিন্ন বিভাগে পাঠানো হতো। এতে সংকটাপন্ন রোগীদের অবস্থা আরও জটিল হতো।

জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মো. মেশকাত বলেন, ‘সংকটাপন্ন রোগী এলে প্রাথমিক চিকিৎসার পাশাপাশি পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা এখানে দেওয়া হচ্ছে। এতে প্রাণহানি কমছে। পরীক্ষার জন্য কোথাও যেতে হচ্ছে না।’ তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন অন্তত ৩০০ রোগী এখানে চিকিৎসা নেয়। জরুরি বিভাগেই ৪৮ ঘণ্টায় চিকিৎসা দেওয়ার সক্ষমতা রয়েছে। অবস্থার উন্নতি না হলে পরে ভর্তি করানো কিংবা অন্যখানে পাঠানো হয়। তবে আইসিইউয়ের সংকট ও সিসিইউ না থাকায় কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। সবচেয়ে বড় সমস্যা জনবল সংকট। এই সমস্যার কারণে অতিরিক্ত চাপ নিয়ে আমাদের চিকিৎসা কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে।’

জানা যায়, ওসেক সেবায় নিয়মিত ১২-১৪ জন নার্স, ২ জন করে চিকিৎসক থাকছেন। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া হয়। হাসপাতালের সহকারী পরিচালক লে. কর্নেল শেখ সাব্বির আহমেদ বলেন, ‘দেশে প্রথম কোনো হাসপাতালে এই উন্নত সেবা চালু হয়েছে। তবে এর জন্য দরকার বিশেষজ্ঞ ফিজিশিয়ান, নার্স, টেকনিশিয়ানসহ অন্যান্য জনবল। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়ার কথা। কিন্তু এখনো পাওয়া যায়নি।’

যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (ইউএসএআইডি), ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেডক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিস (আইএফআরসি) এবং বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সহায়তায় এই সেবা চালু হয়েছে ৫ ডিসেম্বর। প্রক্রিয়াধীন আছে আরও তিন প্রতিষ্ঠান—মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মিটফোর্ড হাসপাতাল এবং সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এক ছাদের নিচে ইমার্জেন্সি রোগীর অত্যাধুনিক সব সেবা প্রদানের উদ্যোগ ওসেক। এই সেবা নির্বিঘ্ন রাখতে চিকিৎসক, নার্সসহ জনবলের তালিকা প্রস্তুত করেছি। দু-এক দিনের মধ্যেই হয়ে যাবে। তবে চাহিদা অনুযায়ী হয়তো দেওয়া যাবে না।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পুলিশের তিন পদে অতিরিক্ত: তিনজনে একজন বাড়তি

ট্রেনের কেবিনের বালিশ, চাদর, কম্বলের ভাড়া দ্বিগুণ করার চিন্তা

ভারতে পোশাকের অর্ডার স্থগিত করছে মার্কিন ক্রেতারা, বাংলাদেশ-ভিয়েতনামে কারখানা স্থানান্তরের পরামর্শ

মোবাইল-টাকা ছিনতাইয়ের পর দুই তরুণীকে তুলে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ৩

ডোপ টেস্টে পজিটিভ, চবিতে শিক্ষকতা থেকে বাদ দুই প্রার্থী

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত