Ajker Patrika

১২৮ কিলোমিটার নির্মাণের খরচ ৪ হাজার ১৩০ কোটি ডলার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ৩০ মার্চ ২০২২, ১০: ২৯
১২৮ কিলোমিটার নির্মাণের খরচ ৪ হাজার ১৩০ কোটি ডলার

ঢাকার যানজট নিরসনে মেট্রোরেল ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ চলছে। এ ছাড়া পাতালরেল নির্মাণের উদ্যোগ এগিয়ে চলেছে দ্রুতগতিতে। প্রথম ধাপে ১২৮ কিলোমিটার পাতালরেল নির্মাণের সম্ভাব্যতা সমীক্ষার খসড়া চূড়ান্ত হয়েছে।

রাজধানীর একটি হোটেলে গতকাল পাতালরেলের প্রথম ধাপের অংশ নির্মাণের সম্ভাব্যতা সমীক্ষার চূড়ান্ত খসড়া উপস্থাপন করা হয়। একই সঙ্গে এ বিষয়ে অংশীজনদের মতামত নেওয়া হয়েছে।

স্পেনের প্রতিষ্ঠান টিপসার নেতৃত্বে জাপানের পাডেকো, বিসিএল অ্যাসোসিয়েটস, কেএসসি এবং বেটস যৌথভাবে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য পরামর্শক হিসেবে কাজ করছে। আগামী জুন মাসে সমীক্ষার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে।

সম্ভাব্যতা সমীক্ষার খসড়া থেকে জানা যায়, ঢাকা ও এর আশপাশে মোট ২৩৮ কিলোমিটার পাতালরেল নির্মাণের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এর আওতায় মোট ১১টি রুট থাকবে। তিন ধাপে পর্যায়ক্রমে ২০৪৯ সাল নাগাদ পাতালরেল নির্মাণ শেষ করার সময়সীমা ধরা হয়েছে।

১১ রুটের মধ্যে চারটি রুটকে অগ্রাধিকার দিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে প্রথম ধাপ। এই ধাপের সম্ভাব্যতা সমীক্ষার খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে, এ জন্য খরচ ধরা হয়েছে ৩২১ কোটি টাকা। এই চারটি রুটের দৈর্ঘ্য হবে ১২৮ কিলোমিটার। এই কাজ ২০৩০ সালের মধ্যে শেষ করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। অগ্রাধিকারের চারটি রুট হলো ২৪টি স্টেশন বিশিষ্ট ৩৪ দশমিক ৯২ কিলোমিটার দীর্ঘ ঝিলমিল থেকে টঙ্গী জংশন রুট, যেখানে প্রতি কিলোমিটারে সম্ভাব্য ব্যয় প্রায় ২ হাজার ৩৮৮ কোটি টাকা। ১৪টি স্টেশন বিশিষ্ট ২২ দশমিক ৮৯ কিলোমিটার দীর্ঘ গাবতলী থেকে ভোলাব ইউনিয়ন রুট, যেখানে প্রতি কিলোমিটারে সম্ভাব্য ব্যয় প্রায় ২ হাজার ১৫৮ কোটি টাকা। ১৫টি স্টেশন বিশিষ্ট ২৫ দশমিক ২২ কিলোমিটার দীর্ঘ কেরানীগঞ্জ থেকে সোনাপুর ইউনিয়ন রুট, যেখানে প্রতি কিলোমিটারে সম্ভাব্য ব্যয় প্রায় ২ হাজার ২১৭ কোটি টাকা এবং ৩২টি স্টেশন বিশিষ্ট ৪৫ দশমিক ১১ কিলোমিটার দীর্ঘ জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নারায়ণগঞ্জ রুট যেখানে প্রতি কিলোমিটারে সম্ভাব্য ব্যয় প্রায় ২ হাজার ৩১২ কোটি টাকা।

প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা বলছেন, পাতালরেলের জন্য নির্মিত টানেল ভূপৃষ্ঠের আনুমানিক ২৫ থেকে ৭০ মিটার নিচ দিয়ে যাবে। এ জন্য জমি অধিগ্রহণ ও নির্মাণজনিত কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হবে না।

পাতালরেল নির্মাণের বড় অংশীজন সিটি করপোরেশন। গতকালের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘বলা হচ্ছে পাতালরেল মাটির নিচ দিয়ে যাবে, তাই জমি অধিগ্রহণ করা লাগবে না। কিন্তু ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সব ভূমিই আমাদের। ফলে পাতালরেল ঢাকা শহরের যে দিক দিয়েই যাক, আমাদের কাছ থেকে ভূমি অধিগ্রহণ করতে হবে। এ জন্য আমাদের কিছু ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।’

আর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঢাকা শহরে অনেক প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে আমাদের জানানো হয় না। মেয়রদের সঙ্গে সমন্বয় করা হয় না, যার জন্য পরে অনেক সমস্যা হয়। মিরপুর এলাকায় ফুটপাতের ওপর মেট্রোরেলের সিঁড়ি নামানো হচ্ছে। আমরা সেটা করতে দেব না। দরকার হলে তাদের নকশার পরিবর্তন করতে হবে। আমাদের সঙ্গে আগে আলোচনা করলে এ ধরনের সমস্যা হতো না।’

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দুই মেয়রের উদ্দেশে বলেন, এই শহরের (ঢাকা) অবস্থা দেখে খারাপ লাগে, লজ্জাও লাগে। বাংলাদেশ আজ বিশ্বের অর্থনৈতিকভাবে অগ্রসর ১১টি দেশের তালিকায় রয়েছে। সেই বাংলাদেশের সঙ্গে এটা মানায় না। ঢাকা শহর বসবাসের অযোগ্য এবং দূষিত নগরী। সবচেয়ে অপরিকল্পিত একটি শহর প্ল্যান ছাড়াই চলছে।

সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, ‘পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, কর্ণফুলী টানেলের স্বপ্নগুলো দেখিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এই পাতালরেলের স্বপ্ন দেখেছেন শেখ হাসিনা। তাই পাতালরেল আমাদের করতেই হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত