Ajker Patrika

সাড়া ফেলেছে ‘পথপাঠাগার’

পাবনা ও বেড়া প্রতিনিধি
আপডেট : ১৩ মার্চ ২০২২, ১২: ১৭
সাড়া ফেলেছে ‘পথপাঠাগার’

পাবনার বেড়া উপজেলার কাশিনাথপুরে প্রধান সড়কের পাশে গড়ে উঠেছে একটি ভিন্নধর্মী পাঠাগার। নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্কাইলার্ক পথপাঠাগার’। স্কাইলার্ক ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের প্রধান ফটকের বাইরে রাস্তার পাশে পুরোপুরি খোলামেলা পরিবেশে পাঠাগারটির অবস্থান। এখানে রেজিস্টার খাতায় নিজের নাম, ঠিকানা আর ফোন নম্বর লিখে পথচারীরা ইচ্ছেমতো বিনা মূল্যে পছন্দের বই বাসায় নিয়ে যেতে পারেন। বই নিলে সেটি পড়ে ফেরত দিতে হয়। কাশিনাথপুরের স্থানীয় সাংবাদিক ও কলেজশিক্ষক আলাউল হোসেন পথপাঠাগারটি গড়ে তুলেছেন।

চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে এই পথপাঠাগারের যাত্রা শুরু হয়। উদ্যোক্তা আলাউল হোসেনের নেওয়া এ উদ্যোগে পূর্ণ সহায়তা দিয়ে এগিয়ে আসেন স্কাইলার্ক স্কুলের দুই পরিচালক সালাহউদ্দিন আহমেদ ও ফজলুর রহমান। আলাউল হোসেন তাঁর ব্যক্তিগত সংগ্রহের নতুন-পুরোনো দুই শতাধিক বই দিয়ে পাঠাগারটি শুরু করেন। পরে স্থানীয় কলি প্রকাশনীর কর্ণধার জহুরুল হক শতাধিক বই এই পথপাঠাগারে দান করেন। এর পর থেকে এলাকার অনেক সচেতন মানুষ বই কিনে দিয়ে পাঠাগারটি সমৃদ্ধ করে তুলেছেন। প্রতিষ্ঠার দুই মাসের মধ্যে এখন হাজারের বেশি বই রয়েছে পাঠাগারে। প্রতিদিন ৫০-৬০ জন করে পথচারী নিজেদের পছন্দের বই পাঠাগার থেকে নিয়ে যাচ্ছেন এবং পড়া শেষে আবার ফেরতও দিয়ে যাচ্ছেন।

স্কাইলার্ক পথপাঠাগারের বানানো শেলফে দুই হাজারের বেশি বই রাখা যাবে। প্রায় ৩০ হাজার টাকা ব্যয়ে শেলফটি তৈরি করা হয়েছে। বৃষ্টি হলে যাতে পানি না ঢোকে সে জন্য মোটা থাই গ্লাস দেওয়া হয়েছে।

উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে জানা গেছে, পথচারী পাঠকদের অধিকাংশই স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী। স্বেচ্ছাসেবক হয়ে পথপাঠাগারটি সার্বক্ষণিক দেখাশোনার দায়িত্ব পালন করছেন পাঠাগারের পাশে অবস্থিত শিরিন স্টোরের স্বত্বাধিকারী সুরুজ আলী ও আস্থা মেগাশপের ম্যানেজার আবির মাহমুদ সম্রাট। এ ছাড়া আশপাশে স্কুল-কলেজের কিছু শিক্ষার্থী স্বেচ্ছাসেবকের কাজ করছেন। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পাঠাগারটি সবার জন্য উন্মুক্ত থাকে। পাঠাগারের আশপাশের দোকানমালিকেরাও অবসরে পাঠাগার থেকে বই নিয়ে পড়াশোনা করেন।

স্কাইলার্ক স্কুলের সভাপতি সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, মানুষকে আলোকিত করার স্বপ্ন দেখাতেই এই পথপাঠাগারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

আরেক উদ্যোক্তা ফজলুর রহমান বলেন, স্কাইলার্ক পথপাঠাগার এলাকার বেশ কিছু তরুণের মধ্যে ইতিমধ্যে সাড়া ফেলেছে। প্রতিষ্ঠার সঙ্গে সঙ্গেই যেভাবে পাঠকেরা আগ্রহ দেখাচ্ছেন, তা সত্যিই অবিশ্বাস্য।

পথপাঠাগারের উদ্যোক্তা আলাউল হোসেন বলেন, ‘আমাদের সময় একাডেমিক লেখাপড়ার পাশাপাশি সৃজনশীল বই (গল্পের বই) পড়ে অথবা খেলাধুলা করে সময় কাটত অধিকাংশ শিক্ষার্থীর। এখন সেই জায়গা দখল করেছে ফেসবুক, স্মার্টফোন, ইন্টারনেট, ইউটিউব। এতে শিক্ষার্থীদের মননশীল চর্চা একেবারেই কমে গেছে। নতুন প্রজন্মকে এই পথ থেকে ফেরানোর একটাই উপায়—বই পড়ানো। এই দিক বিবেচনায় আমি পথপাঠাগারের উদ্যোগ নিয়েছি।’

আলাউল হোসেন আরও বলেন, পাঠাগারটি শুরুর পরে দুই মাসে পাঁচ শতাধিক পাঠক বই নিয়ে গেছেন। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের মাঝে সাড়া জাগাতেই কাশিনাথপুরের সবচেয়ে ব্যস্ততম রাস্তার ধারে পাঠাগারটি স্থাপন করেছেন তিনি। ভবিষ্যতে এর পরিসর আরও বাড়ানো হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ না করার প্রস্তাব

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত