Ajker Patrika

ঈদযাত্রায় পথে পথে ভোগান্তি

ইলিয়াস আহমেদ, ময়মনসিংহ
ঈদযাত্রায় পথে পথে ভোগান্তি

দুই বছর করোনা মহামারির কারণে ঈদযাত্রায় ছিল কড়াকড়ি। তবে এ বছর করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকায় ঈদে ঘরমুখো মানুষের চাপ বেড়েছে। সঙ্গে বেড়েছে পথে পথে ভোগান্তিও। ঢাকা থেকে ময়মনসিংহগামী যাত্রীদের যানজটে ভোগান্তির পাশাপাশি অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন স্থানে তৈরি হয়েছে অসহনীয় যানজট।

ঢাকা থেকে নেত্রকোনার মোহনগঞ্জের উদ্দেশে যাওয়া মোস্তাকিম হোসেন বলেন, ‘ঢাকা থেকে ট্রেনে ময়মনসিংহে এসেছি স্বাভাবিক ভাড়া দিয়ে। কিন্তু এখন ময়মনসিংহ থেকে মোহনগঞ্জ যাওয়ার জন্য ৫০০ টাকা ভাড়া চাচ্ছে। আমরা গার্মেন্টসে কাজ করি, এত টাকা ভাড়া দিয়ে যাতায়াত করলে ঈদ করব কীভাবে?’

গত কয়েক দিন ধরেই ঢাকাফেরত ঘরমুখো যাত্রীদের চাপ বেড়েছে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে। ধীরগতির যান চলাচলের জন্য সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হয় যাত্রী ও চালকদের। ভালুকা বাসস্ট্যান্ড, ত্রিশাল বাসস্ট্যান্ড, বৈলর সিএনজিচালিত অটোরিকশা স্ট্যান্ড, শিকারীকান্দা বাইপাস মোড়, পাটগুদাম ব্রিজ মোড়, শম্ভুগঞ্জ মোড়ে সবচেয়ে বেশি যানজট দেখা যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ তৎপর থাকলেও ভোগান্তি কমেনি।

অভিযোগ রয়েছে, চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় যাত্রীদের কাছ থেকে তিন থেকে চার গুণ বেশি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। তবে চালকেরা বলছেন, ঈদে যানজটে বেশি সময় রাস্তায় গাড়ি নিয়ে বসে থাকতে হয়। তাই তাঁরা ভাড়া একটু বেশি নিচ্ছেন।

গার্মেন্টসকর্মী রকি হাসান বলেন, ‘বেতন-বোনাসসহ যে টাকা পেয়েছি, তা দেখছি গাড়ি ভাড়ায় চলে যাবে। ঈদে কোনো আনন্দ করতে পারব না। ভাড়া বেশি নেওয়ার ক্ষেত্রে সরকার কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এ জন্য যাত্রীদের পথে পথে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।’

ময়মনসিংহ থেকে শ্যামগঞ্জগামী আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘বরাবর সিএনজিচালিত অটোরিকশা দিয়ে শ্যামগঞ্জ যেতে ভাড়া লাগে ৫০ টাকা। ঈদযাত্রা ঘিরে ভাড়া নিচ্ছে ২০০ টাকা। প্রতিবাদ করেও কোনো লাভ হচ্ছে না। উল্টো ঝামেলায় পড়তে হচ্ছে। প্রশাসনের এদিকে একটু নজর দেওয়া প্রয়োজন।’ 
এদিকে সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক আলমগীর হোসেন বলেন, ‘ময়মনসিংহ থেকে শেরপুর যাত্রী নিয়ে গেলেও আসতে হচ্ছে যাত্রী ছাড়া। সিএনজি স্টেশনে গ্যাস নিতে দুই থেকে তিন ঘণ্টা চলে যাচ্ছে। এ কারণে ভাড়া একটু বেশি নেওয়া হচ্ছে।’

আরেক চালক আব্দুল কাদির বলেন, ‘যানজটের কারণে সারা দিনে একবার যাত্রী নিয়ে ময়মনসিংহ থেকে কেন্দুয়া যেতে পারছি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় বসে থাকতে হয়। ঈদের আগে যদি কয়েকটা টাকা বেশি আয় না করি, তাহলে কীভাবে বাচ্চাদের নিয়ে চলব।’

সড়কের পরিস্থিতি নিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফজলে রাব্বি মিয়া বলেন, ‘ঈদ সামনে রেখে যানজট নিরসনে ও যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে আমরা মাঠে থেকে কাজ করছি। চালকদের বারবার সতর্ক করা হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া না নেওয়ার জন্য। আমরা আশা করছি, এবারের ঈদে মানুষের খুব একটা ভোগান্তি হবে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত