Ajker Patrika

তিন মাসে কবর খুঁড়ে তিনটি লাশ উত্তোলন

মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৩ জানুয়ারি ২০২২, ১৫: ১৮
তিন মাসে কবর খুঁড়ে তিনটি লাশ উত্তোলন

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় অক্টোবর, নভেম্বর ও ডিসেম্বর—এই তিন মাসে আদালতের নির্দেশে কবর খুঁড়ে তিনটি মরদেহ তোলা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে আ. বারেক গাজী ও রহিমা খাতুনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য এবং ইমরান গাজীর মরদেহ পুনরায় ময়নাতদন্তের জন্য তোলা হয়।

পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) দুটি এবং মঠবাড়িয়া থানা-পুলিশ একটি মরদেহ উত্তোলন করে। গত ২৭ অক্টোবর পিরোজপুরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ খাইরুল ইসলাম চৌধুরীর উপস্থিতিতে পিবিআই উপজেলার ভাইজোড়া গ্রামের কৃষক আ. বারেক গাজীর (৬০) মরদেহ, ২৫ নভেম্বর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. নাহিদ হাসানের উপস্থিতিতে পৌর শহরের সবুজ নগর এলাকার ইমরান গাজীর (২৬) মরদেহ এবং সর্বশেষ ২৩ ডিসেম্বর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রুমানা আফরোজের উপস্থিতিতে মঠবাড়িয়া থানা-পুলিশ উপজেলার চড়কখালী গ্রাম থেকে রহিমা খাতুনের (৬০) মরদেহ উত্তোলন করে। এ সময় মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. প্রীতম কুমার পাইক ও পিরোজপুর পিবিআই’র পরিদর্শক আহসান কবির ও মঠবাড়িয়া থানার সাব-ইন্সপেক্টর মো. রায়হান আহমেদ সোহেল উপস্থিত ছিলেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৯ আগস্ট বেলা ১১টার দিকে উপজেলার ভাইজোড়া গ্রামের কৃষক আবদুল বারেক গাজী নিজ জমিতে ইরি ধানের বীজ রোপণ করেন। ওই দিন বিকেলে প্রতিবেশী ইউনুস হাওলাদারের বীজতলা থেকে বীজ চুরি হয়। ইউনুস সন্দেহ করেন বারেককে সন্ধ্যায় বাড়িতে ডেকে মারধর করেন। এতে ঘটনাস্থলেই বারেক গাজী মারা যান। বারেক স্ট্রোক করে মারা গেছেন বলে প্রচার করেন ইউনুস। ময়নাতদন্ত ছাড়াই কৃষক বারেকের মরদেহ দাফন করতে বাধ্য করেন ইউনুস।

এ ঘটনায় কৃষক বারেক গাজীর ভাই আ. হালিম গাজী বাদী হয়ে ৬ সেপ্টেম্বর মঠবাড়িয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হত্যার অভিযোগ এনে ইউনুস হাওলাদারকে (৫৫) আসামি করে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন।

এদিকে গত ১১ অক্টোবর দুপুরে মঠবাড়িয়া থানা-পুলিশ পৌর শহরের সবুজ নগর এলাকার আউয়াল শরীফের নির্মাণাধীন ভবনের তৃতীয় তলায় একটি কক্ষে ফ্যান লাগানোর রডের সঙ্গে ইলেকট্রিক মিস্ত্রি ইমরান গাজীর গলায় ফাঁস লাগানো মৃতদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনা তাঁর ভাই আব্দুল্লাহ গাজী বাদী হয়ে ১৮ অক্টোবর ৫ জনের বিরুদ্ধে মঠবাড়িয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন। আদালতের বিচারিক হাকিম মো. কামরুল আজাদ মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তের আদেশ দেন।

এ ছাড়া উপজেলার চড়কখালীতে রহিমা খাতুনকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগে তার ছেলে রুহুল আমিন বাদী হয়ে ২৪ নভেম্বর মঠবাড়িয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তিনজনকে আসামি করে মামলা করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে মঠবাড়িয়া থানাকে এফআইআরের নির্দেশ দেন।

মামলায় একই বাড়ির আ. খালেক খাঁ (৬০), তাঁর স্ত্রী রোকেয়া বেগম ও মেয়ে নোছেফা বেগমের নাম উল্লেখসহ ৩-৪ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।

অপরদিকে উপজেলার চড়কখালী গ্রামের আবুল হাসেম হাওলাদারের স্ত্রী রহিমা খাতুন ৬ নভেম্বর রাতে নিজের রান্নাঘরে আগুনে দগ্ধ হন। এ সময় তার ডাকচিৎকারে ছেলে ও স্বজনেরা তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। দুই দিন পর রহিমা খাতুনের অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসক। কিন্তু রহিমার ছেলেরা অসহায় হওয়ায় তাঁরা তাঁকে বাড়ি নিয়ে যান। এরপর বাড়িতে রহিমার মৃত্যু হয়।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক আহসান কবির ও মঠবাড়িয়া থানার উপপরিদর্শক মো. রায়হান আহমেদ সোহেল বলেন, আদালতের নির্দেশে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ডাক্তারের উপস্থিতিতে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ তোলা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর প্রকৃত রহস্য জানা যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

‘ঘুষের জন্য’ ৯১টি ফাইল আটকে রাখেন মাউশির ডিডি: দুদক

রাখাইনে মানবিক করিডর কি প্রক্সি যুদ্ধের ফাঁদ হবে, ভারত-চীন কীভাবে দেখবে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত