Ajker Patrika

প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানে তরুণীর ওপর নৃশংস হামলা

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ২৭ এপ্রিল ২০২২, ১৪: ৫৮
প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানে তরুণীর ওপর নৃশংস হামলা

প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় এক তরুণীর ওপর নৃশংস হামলা চালিয়েছে বখাটেরা। হামলায় ওই তরুণীর কবজি, বুকসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ গুরুতর জখম হয়েছে। এ ঘটনা ঘটে ১৯ এপ্রিল ভোররাতে হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায়।

গত সোমবার সন্ধ্যায় ছয়জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন তরুণীর বাবা। এদিক বিকেলে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক সপ্তাহ চিকিৎসার পর তরুণীকে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়।

তরুণীর বাবা বলেন, ‘১৭ এপ্রিল ভোর রাতে সাহরি খাওয়ার জন্য ঘুম থেকে উঠে হাত-মুখ ধোয়ার জন্য টিউবওয়েলের কাছে যায়। এ সময় গ্রামের সুমনসহ কয়েকজন আমার মেয়েকে জাপটে ধরে। একপর্যায়ে তাঁরা ধারালো ছুরি দিয়ে স্তনসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে।’

তিনি আরও বলেন, ‘মেয়ের চিৎকারে পরিবারের সদস্য ও আশপাশের লোকজন এগিয়ে গেলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থা গুরুত্বর হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।

মঙ্গলবার ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, গুরুতর অসুস্থ তরুণী বিছানায় শুয়ে আছেন। তাঁর পরিবারের সদস্যরা জানান, তরুণীর বাবা হবিগঞ্জ গ্যাসফিল্ড এলাকার এক কেমিক্যাল কোম্পানির শ্রমিক। মা পোশাক কারখানার শ্রমিক। তিন ভাইবোনের মধ্যে ওই তরুণী সবার বড়। ৬ষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করার পর আর্থিক দুরবস্থার কারণে তা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে সে সংসার সামলাচ্ছে।

আক্রমণের শিকার তরুণী বলেন, ‘ফেব্রুয়ারি মাস থেকে সে আমাকে বিরক্ত করত। প্রথমে সে নাম পরিচয় না দিয়া আমার দরজার সামনে চিঠি রাখত। পরে সে তার নম্বর দিয়ে চিঠি রাখত। আমি মোবাইল ফোন ব্যবহার করি না। কয়েক দিন পর আমাকে সরাসরি প্রেমের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু আমি তাকে না করে দেই। তখন সে আমাকে বলেছে আমার জীবন নষ্ট করে দেবে। কিন্তু লজ্জায় আমি কাউকে কিছু বলি না।’

মা বলেন, ‘ঘটনার দিন আমার নাইট ডিউটি ছিল। সকালে আমি বাড়িতে এসে ঘটনা জানার পর হাসপাতালে যাই। ‘চিকিৎসকেরা বলছিলেন আরও কয়েক দিন হাসপাতালে থাকার জন্য। কিন্তু টাকার অভাবে তাকে নিয়ে এসেছি।’

এদিকে মামলায় উল্লেখ করা হয়, তরুণীর শরীরে ৬০টি সেলাই লেগেছে। তবে পুলিশ বলছে, সেলাইয়ের সংখ্যা ২০০ টিরও বেশি।

ভুক্তভোগীর বন্ধু বলেন, ‘দুই বছর আগে সুমন আমাকে বলেছিল সে মেয়েটিকে পছন্দ করে। আমার মাধ্যমে সে প্রেমের প্রস্তাব দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আমি সেটা পারব না বলে জানিয়ে দিই।’

অভিযুক্ত সুমন ও তার পরিবারের লোকজন কোথায় গেছেন কেউ জানেন না। সুমনের মামি তাসলিমা বেগম বলেন, ‘মামলার ভয়ে তাঁরা পালিয়েছেন।’

তাসলিমা বেগম আরও বলেন, সুমন অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করে। সে বাড়ির সামনে ছোট একটি পাকা ঘর নির্মাণ করে কম্পিউটার ও ভ্যারাইটিজের দোকান খোলে। মঙ্গলবার সেই দোকানটিও বন্ধ ছিল।

দ্বিতীয় অভিযুক্ত নাইমের বাড়িতে গেলে তাঁর বাবা-মাকে পাওয়া গেলেও নাইমকে পাওয়া যায়নি। নাইমের বাবা ফেরদৌস মিয়া বলেন, ‘আমার ছেলের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হয়েছে।’

মাধবপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘আমাদের প্রাথমিক তদন্ত বলছে ঘটনার সঙ্গে সুমন ও নাইম জড়িত। তাঁদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ না করার প্রস্তাব

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

‘ঘুষের জন্য’ ৯১টি ফাইল আটকে রাখেন মাউশির ডিডি: দুদক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত