Ajker Patrika

আনন্দের নয়, আতঙ্কের কক্ষ

উথান মন্ডল, নাজিরপুর (পিরোজপুর)
আপডেট : ০৭ জুন ২০২২, ১০: ৩৪
আনন্দের নয়, আতঙ্কের কক্ষ

পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার ১২১ নম্বর পশ্চিম কাঠালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঁচটি ঝুঁকিপূর্ণ শ্রেণিকক্ষে পাঠ দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি প্রধান শিক্ষকের কার্যালয় ও শিক্ষকদের অফিস কক্ষও ঝুঁকিপূর্ণ। ফলে স্কুল চলাকালীন বড় দুর্ঘটনার শঙ্কায় আছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। দ্রুত নতুন ভবন তৈরির দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

জানা যায়, বিদ্যালয়টি ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে ২০১৩ সালে জাতীয়করণের ঘোষণা হয়। বর্তমানে এ বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রী প্রায় ১০০। ১৯৯৪ সালে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে বিদ্যালয় ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছিল। এই ভবনের পাঁচটি শ্রেণিকক্ষই এখন ঝুঁকিপূর্ণ। এর মধ্যেই চলছে পাঠদান। এ ছাড়া বিদ্যালয়ের অপর একটি টিনশেডের ছোট আধা পাকা শ্রেণিকক্ষেও পাঠদান করা হয়।

বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করার আবেদন জানানো হয়েছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী ও পিরোজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য শ ম রেজাউল করিমের কাছেও নতুন ভবন নির্মাণের দাবি জানিয়ে একটি আবেদন করা হয়েছে।

বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী ফারহানা আক্তার ও একই শ্রেণির শারিকা আক্তার সাথী বলে, ‘আমাদের ক্লাসরুমের ভবনটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। শ্রেণিকক্ষে আমরা ভয়ে ক্লাস করি, মাঝেমধ্যে প্লাস্টারের গুঁড়া এসে আমাদের গায়ে ও মাথায় পড়ে। এটি ভেঙে ফেলে নতুন ভবন নির্মাণ করলে আমাদের লেখাপড়ার জন্য খুবই ভালো হবে।’

সহকারী শিক্ষক মাহফুজা খাতুন লিপি ও মনিকা মন্ডল বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান করাতে গিয়ে আমাদের ভয়ে থাকতে হয়। কখন আবার ভেঙে পড়ে।’

আরেক শিক্ষক সজিব হালদার বলেন, ‘আমি প্রায়ই দরজার কাছে বসি। কারণ, যেকোনো সময় বিল্ডিং ভেঙে পড়তে পারে। এ ছাড়া শিক্ষকদের বসার রুমটিও ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় আমরা মাঝেমধ্যে বাইরে গিয়ে বসি।’

প্রধান শিক্ষক জান্নাতুন নাঈম বলেন, ‘আমাদের এই বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষ, শিক্ষকদের বসার জায়গা ও প্রধান শিক্ষকের রুমের সংকট। ১৯৯৪ সালে নির্মিত ভবনটি জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ। এই ভবনেই আমাদের পাঠদান চালিয়ে নিতে হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন, যত দ্রুত সম্ভব এখানে নতুন ভবন তৈরি করে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য।’

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল হাই বলেন, ‘বিদ্যালয়ের ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ। এই ভবনে শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করছে। এতে শিক্ষার্থীরা সব সময় আতঙ্কে থাকে। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরকে বিষয়টি সমাধানের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি। ওই বিদ্যালয়টি নির্বাচনী কেন্দ্র ছিল। কিন্তু ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় বিদ্যালয়টির নির্বাচনী কেন্দ্র থেকে বাতিল ঘোষণা করা হয়।’

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবুল বাশার বলেন, ‘বিদ্যালয়টির ভবন খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এখানে শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করছে। এতে শিক্ষার্থীরা আতঙ্কে থাকে। উপজেলা প্রকৌশল অফিসকে আমি বিষয়টি সমাধানের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি।’

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ আব্দুল্লাহ সাদীদ বলেন, ‘বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সব কটি কক্ষ ও ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণার জন্য একটি আবেদন আমরা পেয়েছি। আবেদনটি সরেজমিনে তদন্ত করার জন্য উপজেলা প্রকৌশলীর দপ্তরে পাঠিয়েছি। তাদের প্রতিবেদন পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাকা দিয়ে নারীর চাবুকের ঘা খাচ্ছিলেন পুরুষ, দুজন গ্রেপ্তার

ভারতের সঙ্গে সংঘাতে পাকিস্তানের ভাগ্যনিয়ন্তা সেনাপ্রধান জেনারেল মুনির

প্রবাসীর রেমিট্যান্সের অর্থ আত্মসাৎ, নারী ব্যাংক কর্মকর্তা কারাগারে

পাকিস্তানে কীভাবে হামলা চালাতে পারে ভারত, ইতিহাস যা বলছে

কোটি টাকা ‘ভর্তুকি’র জিম্বাবুয়ে সিরিজে বাংলাদেশ যা পেল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত