রাশেদ রাব্বি ও আয়নাল হোসেন, ঢাকা

এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে সারা দেশ কাঁপছে। প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। এই সংকটময় মুহূর্তে জমে উঠেছে ডেঙ্গু ‘বাণিজ্য’। সরকারি হাসপাতালে যেখানে নিজস্ব দাতার কাছ থেকে এক ব্যাগ প্লাটিলেট নিতে খরচ হয় ২ হাজার টাকার মতো, সেখানে বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় নেওয়া হচ্ছে ২০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা।
এদিকে সুযোগ বুঝে বেড়েছে স্যালাইন, স্যালাইন দেওয়ার অনুষঙ্গ ক্যানুলা ও মাইক্রোপ্রোর (ক্যানুলা স্থাপনে ব্যবহৃত বিশেষ টেপ) দামও।রক্তের ব্যাগের দামও বেড়েছে। এতে চিকিৎসাব্যয় বেড়েছে কয়েকগুণ। ফলে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ।
বেসরকারিতে প্লাটিলেট ‘বাণিজ্য’
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ডেঙ্গু চিকিৎসায় বেসরকারি হাসপাতালগুলো দুভাবে প্লাটিলেট ‘বাণিজ্য’ করছে।প্রথমত, ডেঙ্গু হলেই প্লাটিলেট লাগবে–এমন একটি ধারণা সাধারণ মানুষের মধ্যে জন্মেছে। এই ধারণাকে পুঁজি করে বেসরকারি হাসপাতালগুলো যেসব রোগীর প্লাটিলেট প্রয়োজন না, তাদেরও প্লাটিলেট দিচ্ছে। আবার প্লাটিলেট দিতে সরকারি হাসপাতালের তুলনায় ১০-১৫ গুণ টাকা নিচ্ছে।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের ব্লাড ট্রান্সফিউশন বিভাগে সহকারী অধ্যাপক ডা. আশরাফুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, বেসরকারি হাসপাতালে প্লাটিলেটের অযাচিত ব্যবহার হচ্ছে। অনেকে এটা ভয়ে ব্যবহার করে থাকে, যাতে রোগীর ঝুঁকি তৈরি না হয়। তিনি বলেন, রোগীর ল্যাবরেটরি-নির্ভর চিকিৎসা না করে ক্লিনিক্যাল চিকিৎসার ওপর গুরুত্ব দিলে প্লাটিলেট ও প্লাজমা বা রক্তের ব্যবহার কমিয়ে আনা সম্ভব। তাতে ডেঙ্গু চিকিৎসার ব্যয় অনেক কমে আসবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্লাটিলেট দুভাবে সংগ্রহ করা যায়। সিঙ্গেল ডোনার প্লাটিলেট ও র্যান্ডম ডোনার প্লাটিলেট। সিঙ্গেল ডোনার প্লাটিলেট প্রক্রিয়ায় একজন দাতার শরীর থেকে যন্ত্রের মাধ্যমে প্লাটিলেট সংগ্রহ করা হয়। সরকারি হাসপাতালে এই প্রক্রিয়ায় প্লাটিলেট নিতে একজন রোগীর ব্যয় হয় মাত্র ২ হাজার টাকা। তবে বেসরকারি হাসপাতালগুলো সিঙ্গেল ডোনার প্লাটিলেট ব্যবস্থাপনায় ২০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা ফি নিচ্ছে।
র্যান্ডম ডোনার প্লাটিলেট প্রক্রিয়ায় চারজন দাতার রক্ত নিয়ে এক ব্যাগ প্লাটিলেট তৈরি করা হয়। সরকারি হাসপাতালে এই প্রক্রিয়ায় প্লাটিলেট পেতে শুধু স্ক্রিনিং ও ক্রস ম্যাচিং ফি দিতে হয়। ক্ষেত্রবিশেষে রক্তের ব্যাগ না থাকলে সেই দামটি ফির সঙ্গে যুক্ত হয়। কিন্তু বেসরকারিতে চার দাতার রক্ত পরিসঞ্চালনেই রোগীর ব্যয় হয় প্রায় ৬ হাজার টাকা। এর সঙ্গে যোগ হয় ডোনার স্ক্রিনিং ও ক্রস ম্যাচিং ফি।
আর প্রতি ব্যাগ রক্ত থেকে প্লাটিলেট বের করতে দিতে হয় সাড়ে ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা। অর্থাৎ চার ব্যাগ রক্ত থেকে এক ব্যাগ প্লাটিলেট পেতে রোগীর ব্যয় হয় ১৪ থেকে ২০ হাজার টাকা। আনুষঙ্গিক ব্যয় হিসেবে আরও দিতে হয় ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা। ডেঙ্গু রোগীদের প্লাজমার ক্ষেত্রেও একই ব্যয় হয়ে থাকে। তবে প্লাজমা খুব কমসংখ্যক রোগীর লাগে। যাদের প্লাজমা ক্ষরণ হয়, তাদের চিকিৎসায় ফ্লুইড ম্যানেজমেন্ট ও রক্তদানকে গুরুত্ব দেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা।
সরকারের নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন কর্মসূচি সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীতে জাতীয় হৃদ্রোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল এবং নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে সিঙ্গেল ডোনার প্লাটিলেট পাওয়ার সুবিধা রয়েছে। ঢাকার বাইরে চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, রংপুর ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এই সুবিধা আছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন রক্তরোগ বিশেষজ্ঞ বলেন, জটিল ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসায় এক থেকে চার ব্যাগ পর্যন্ত প্লাটিলেট লাগতে পারে। যেসব রোগীর প্লাজমা লিকেজ দেখা দেয়, তাদের ক্ষেত্রে রক্ত পরিসঞ্চালন এবং ফ্লুইড ম্যানেজমেন্ট করে চিকিৎসা দেওয়া হয়। বেসরকারি হাসপাতালগুলো প্রয়োজন ছাড়াও রোগীদের প্লাটিলেট ও প্লাজমা চিকিৎসা দিয়ে থাকে। কারণ, তাদের জন্য লাভজনক ব্যবসা। যে রোগীকে পাঁচ দিন পরে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া যেত, প্লাজমা বা প্লাটিলেটের কথা বলে তার হাসপাতালে থাকার সময় বাড়ানো হয়। আবার অনেক রোগীকে প্রয়োজন না হলেও আইসিইউ (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) বা এইচডিইউয়ে (উচ্চ নির্ভরশীল কেন্দ্র) রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এতে রোগীর চিকিৎসার ব্যয় কয়েকগুণ বেড়ে যায়।
সরকারি হাসপাতালে কর্মরত কয়েকজন চিকিৎসক আজকের পত্রিকাকে বলেন, বেসরকারি হাসপাতালগুলো ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসার ব্যয় বাড়াতে প্রথম থেকেই অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করে। এ ছাড়া অপ্রয়োজনে অ্যালবুমিন প্রয়োগ করে। এতে রোগীর চিকিৎসার ব্যয় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা বেড়ে যায়। একটি অ্যালবুমিনের দাম ৭ হাজার ৬০০ টাকা। সম্প্রতি এর চাহিদা বাড়ায় ভারত থেকে নিম্নমানের অ্যালবুমিন আনা হচ্ছে, যা ব্যবহারে রোগীর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এমনকি মৃত্যুও ঘটছে। তবে এ নিয়ে সরকারি কর্তৃপক্ষ নীরব। এতে রোগীদের দুর্ভোগ ও ঝুঁকি বাড়ছে।
বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসার ব্যয় প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মো. খুরশীদ আলম বলেন, ‘ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসার ব্যয় ও পরীক্ষার ফি নির্ধারণে আমরা বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেছি। তারা সময় চেয়েছে। চিকিৎসার ব্যয় নির্ধারণে কিছু জটিলতা আছে। এটা করতে হলে হাসপাতালগুলোর গ্রেড নির্ধারণ করতে হবে। তবে অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ডেঙ্গু শনাক্তকরণ পরীক্ষা এনএস-১ ও আইজিজি-আইজিএম ৩০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া সিবিসি পরীক্ষার ফি ৪০০ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য ফি নির্ধারণের বিষয়টি শিগগিরই সম্পন্ন করার চেষ্টা চলেছে।
বেড়েছে স্যালাইন-ক্যানুলার দাম
ডেঙ্গু চিকিৎসার অন্যতম অনুষঙ্গ স্যালাইন। স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. আবু আজহার বলেন, ডেঙ্গু রোগীদের ক্ষুধা কমে যায়। এতে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। রোগীর রক্তের চাপ কমে যায়। একপর্যায়ে রোগী শকে চলে যায়। হেমারেজিকের মতো জটিলতা হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে রোগীর জীবন বাঁচাতে শরীরে স্যালাইন প্রয়োগ করা হয়।
তবে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের মধ্যেই স্যালাইন উৎপাদন ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো স্যালাইনের দাম বাড়িয়েছে, সৃষ্ট হয়েছে সরবরাহের সংকট। আগে যে স্যালাইন বিক্রি হতো ৯০ টাকায়, এখন সেটি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। আবার অনেক জায়গায় স্যালাইন পাওয়াও যাচ্ছে না।
রাজধানীর বাবুবাজারের মেসার্স আলিফ লাম মিম ফার্মার বিক্রয় প্রতিনিধি পলাশ চন্দ্র দাস ও কেরানীগঞ্জের চড়াইলের মেসার্স আসলাম ফার্মেসীর প্রতিনিধি সফিকুল ইসলাম বলেন, আগে প্রতিটি ১ হাজার মিলিলিটারের নরমাল স্যালাইন ৯০ টাকায় বিক্রি করতেন তাঁরা। এখন তার দাম ১৫০-১৬০ টাকা। সরবরাহের সংকটে কোথাও কোথাও ৩০০-৩৫০ টাকায়ও স্যালাইন বিক্রি হচ্ছে।
সরকারি হাসপাতালে কর্মরত কয়েকজন চিকিৎসক বলেন, রোগীর শরীরে স্যালাইন ঢোকানোর জন্য ক্যানুলা ব্যবহার করা হয়। ডেঙ্গুর সংক্রমণ বাড়ায় উৎপাদক ও সরবরাহকারীরা ক্যানুলার দাম বাড়িয়েছে। আগে ক্যানুলার যে সেটের দাম ছিল ৪০ টাকা, এখন সেটি ১৫০ টাকা। এর সঙ্গে দাম বেড়েছে মাইক্রোপ্রোরও (ক্যানুলা স্থাপনে ব্যবহৃত বিশেষ টেপ)। আগে এক বাক্স মাইক্রোপ্রোর দাম ছিল ৬০০ টাকা।এখন তা ৮০০ টাকা।
স্যালাইনের সংকটের বিষয়ে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের উপপরিচালক নূরুল আলম বলেন, বাজারে প্রতিযোগিতা রয়েছে। কেউ চাইলে কৃত্রিম সংকট করতে পারবে না। এরপরও যদি কেউ করে থাকে, তাহলে অভিযান চালিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে সারা দেশ কাঁপছে। প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। এই সংকটময় মুহূর্তে জমে উঠেছে ডেঙ্গু ‘বাণিজ্য’। সরকারি হাসপাতালে যেখানে নিজস্ব দাতার কাছ থেকে এক ব্যাগ প্লাটিলেট নিতে খরচ হয় ২ হাজার টাকার মতো, সেখানে বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় নেওয়া হচ্ছে ২০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা।
এদিকে সুযোগ বুঝে বেড়েছে স্যালাইন, স্যালাইন দেওয়ার অনুষঙ্গ ক্যানুলা ও মাইক্রোপ্রোর (ক্যানুলা স্থাপনে ব্যবহৃত বিশেষ টেপ) দামও।রক্তের ব্যাগের দামও বেড়েছে। এতে চিকিৎসাব্যয় বেড়েছে কয়েকগুণ। ফলে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ।
বেসরকারিতে প্লাটিলেট ‘বাণিজ্য’
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ডেঙ্গু চিকিৎসায় বেসরকারি হাসপাতালগুলো দুভাবে প্লাটিলেট ‘বাণিজ্য’ করছে।প্রথমত, ডেঙ্গু হলেই প্লাটিলেট লাগবে–এমন একটি ধারণা সাধারণ মানুষের মধ্যে জন্মেছে। এই ধারণাকে পুঁজি করে বেসরকারি হাসপাতালগুলো যেসব রোগীর প্লাটিলেট প্রয়োজন না, তাদেরও প্লাটিলেট দিচ্ছে। আবার প্লাটিলেট দিতে সরকারি হাসপাতালের তুলনায় ১০-১৫ গুণ টাকা নিচ্ছে।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের ব্লাড ট্রান্সফিউশন বিভাগে সহকারী অধ্যাপক ডা. আশরাফুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, বেসরকারি হাসপাতালে প্লাটিলেটের অযাচিত ব্যবহার হচ্ছে। অনেকে এটা ভয়ে ব্যবহার করে থাকে, যাতে রোগীর ঝুঁকি তৈরি না হয়। তিনি বলেন, রোগীর ল্যাবরেটরি-নির্ভর চিকিৎসা না করে ক্লিনিক্যাল চিকিৎসার ওপর গুরুত্ব দিলে প্লাটিলেট ও প্লাজমা বা রক্তের ব্যবহার কমিয়ে আনা সম্ভব। তাতে ডেঙ্গু চিকিৎসার ব্যয় অনেক কমে আসবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্লাটিলেট দুভাবে সংগ্রহ করা যায়। সিঙ্গেল ডোনার প্লাটিলেট ও র্যান্ডম ডোনার প্লাটিলেট। সিঙ্গেল ডোনার প্লাটিলেট প্রক্রিয়ায় একজন দাতার শরীর থেকে যন্ত্রের মাধ্যমে প্লাটিলেট সংগ্রহ করা হয়। সরকারি হাসপাতালে এই প্রক্রিয়ায় প্লাটিলেট নিতে একজন রোগীর ব্যয় হয় মাত্র ২ হাজার টাকা। তবে বেসরকারি হাসপাতালগুলো সিঙ্গেল ডোনার প্লাটিলেট ব্যবস্থাপনায় ২০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা ফি নিচ্ছে।
র্যান্ডম ডোনার প্লাটিলেট প্রক্রিয়ায় চারজন দাতার রক্ত নিয়ে এক ব্যাগ প্লাটিলেট তৈরি করা হয়। সরকারি হাসপাতালে এই প্রক্রিয়ায় প্লাটিলেট পেতে শুধু স্ক্রিনিং ও ক্রস ম্যাচিং ফি দিতে হয়। ক্ষেত্রবিশেষে রক্তের ব্যাগ না থাকলে সেই দামটি ফির সঙ্গে যুক্ত হয়। কিন্তু বেসরকারিতে চার দাতার রক্ত পরিসঞ্চালনেই রোগীর ব্যয় হয় প্রায় ৬ হাজার টাকা। এর সঙ্গে যোগ হয় ডোনার স্ক্রিনিং ও ক্রস ম্যাচিং ফি।
আর প্রতি ব্যাগ রক্ত থেকে প্লাটিলেট বের করতে দিতে হয় সাড়ে ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা। অর্থাৎ চার ব্যাগ রক্ত থেকে এক ব্যাগ প্লাটিলেট পেতে রোগীর ব্যয় হয় ১৪ থেকে ২০ হাজার টাকা। আনুষঙ্গিক ব্যয় হিসেবে আরও দিতে হয় ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা। ডেঙ্গু রোগীদের প্লাজমার ক্ষেত্রেও একই ব্যয় হয়ে থাকে। তবে প্লাজমা খুব কমসংখ্যক রোগীর লাগে। যাদের প্লাজমা ক্ষরণ হয়, তাদের চিকিৎসায় ফ্লুইড ম্যানেজমেন্ট ও রক্তদানকে গুরুত্ব দেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা।
সরকারের নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন কর্মসূচি সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীতে জাতীয় হৃদ্রোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল এবং নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে সিঙ্গেল ডোনার প্লাটিলেট পাওয়ার সুবিধা রয়েছে। ঢাকার বাইরে চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, রংপুর ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এই সুবিধা আছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন রক্তরোগ বিশেষজ্ঞ বলেন, জটিল ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসায় এক থেকে চার ব্যাগ পর্যন্ত প্লাটিলেট লাগতে পারে। যেসব রোগীর প্লাজমা লিকেজ দেখা দেয়, তাদের ক্ষেত্রে রক্ত পরিসঞ্চালন এবং ফ্লুইড ম্যানেজমেন্ট করে চিকিৎসা দেওয়া হয়। বেসরকারি হাসপাতালগুলো প্রয়োজন ছাড়াও রোগীদের প্লাটিলেট ও প্লাজমা চিকিৎসা দিয়ে থাকে। কারণ, তাদের জন্য লাভজনক ব্যবসা। যে রোগীকে পাঁচ দিন পরে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া যেত, প্লাজমা বা প্লাটিলেটের কথা বলে তার হাসপাতালে থাকার সময় বাড়ানো হয়। আবার অনেক রোগীকে প্রয়োজন না হলেও আইসিইউ (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) বা এইচডিইউয়ে (উচ্চ নির্ভরশীল কেন্দ্র) রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এতে রোগীর চিকিৎসার ব্যয় কয়েকগুণ বেড়ে যায়।
সরকারি হাসপাতালে কর্মরত কয়েকজন চিকিৎসক আজকের পত্রিকাকে বলেন, বেসরকারি হাসপাতালগুলো ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসার ব্যয় বাড়াতে প্রথম থেকেই অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করে। এ ছাড়া অপ্রয়োজনে অ্যালবুমিন প্রয়োগ করে। এতে রোগীর চিকিৎসার ব্যয় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা বেড়ে যায়। একটি অ্যালবুমিনের দাম ৭ হাজার ৬০০ টাকা। সম্প্রতি এর চাহিদা বাড়ায় ভারত থেকে নিম্নমানের অ্যালবুমিন আনা হচ্ছে, যা ব্যবহারে রোগীর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এমনকি মৃত্যুও ঘটছে। তবে এ নিয়ে সরকারি কর্তৃপক্ষ নীরব। এতে রোগীদের দুর্ভোগ ও ঝুঁকি বাড়ছে।
বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসার ব্যয় প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মো. খুরশীদ আলম বলেন, ‘ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসার ব্যয় ও পরীক্ষার ফি নির্ধারণে আমরা বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেছি। তারা সময় চেয়েছে। চিকিৎসার ব্যয় নির্ধারণে কিছু জটিলতা আছে। এটা করতে হলে হাসপাতালগুলোর গ্রেড নির্ধারণ করতে হবে। তবে অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ডেঙ্গু শনাক্তকরণ পরীক্ষা এনএস-১ ও আইজিজি-আইজিএম ৩০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া সিবিসি পরীক্ষার ফি ৪০০ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য ফি নির্ধারণের বিষয়টি শিগগিরই সম্পন্ন করার চেষ্টা চলেছে।
বেড়েছে স্যালাইন-ক্যানুলার দাম
ডেঙ্গু চিকিৎসার অন্যতম অনুষঙ্গ স্যালাইন। স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. আবু আজহার বলেন, ডেঙ্গু রোগীদের ক্ষুধা কমে যায়। এতে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। রোগীর রক্তের চাপ কমে যায়। একপর্যায়ে রোগী শকে চলে যায়। হেমারেজিকের মতো জটিলতা হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে রোগীর জীবন বাঁচাতে শরীরে স্যালাইন প্রয়োগ করা হয়।
তবে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের মধ্যেই স্যালাইন উৎপাদন ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো স্যালাইনের দাম বাড়িয়েছে, সৃষ্ট হয়েছে সরবরাহের সংকট। আগে যে স্যালাইন বিক্রি হতো ৯০ টাকায়, এখন সেটি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। আবার অনেক জায়গায় স্যালাইন পাওয়াও যাচ্ছে না।
রাজধানীর বাবুবাজারের মেসার্স আলিফ লাম মিম ফার্মার বিক্রয় প্রতিনিধি পলাশ চন্দ্র দাস ও কেরানীগঞ্জের চড়াইলের মেসার্স আসলাম ফার্মেসীর প্রতিনিধি সফিকুল ইসলাম বলেন, আগে প্রতিটি ১ হাজার মিলিলিটারের নরমাল স্যালাইন ৯০ টাকায় বিক্রি করতেন তাঁরা। এখন তার দাম ১৫০-১৬০ টাকা। সরবরাহের সংকটে কোথাও কোথাও ৩০০-৩৫০ টাকায়ও স্যালাইন বিক্রি হচ্ছে।
সরকারি হাসপাতালে কর্মরত কয়েকজন চিকিৎসক বলেন, রোগীর শরীরে স্যালাইন ঢোকানোর জন্য ক্যানুলা ব্যবহার করা হয়। ডেঙ্গুর সংক্রমণ বাড়ায় উৎপাদক ও সরবরাহকারীরা ক্যানুলার দাম বাড়িয়েছে। আগে ক্যানুলার যে সেটের দাম ছিল ৪০ টাকা, এখন সেটি ১৫০ টাকা। এর সঙ্গে দাম বেড়েছে মাইক্রোপ্রোরও (ক্যানুলা স্থাপনে ব্যবহৃত বিশেষ টেপ)। আগে এক বাক্স মাইক্রোপ্রোর দাম ছিল ৬০০ টাকা।এখন তা ৮০০ টাকা।
স্যালাইনের সংকটের বিষয়ে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের উপপরিচালক নূরুল আলম বলেন, বাজারে প্রতিযোগিতা রয়েছে। কেউ চাইলে কৃত্রিম সংকট করতে পারবে না। এরপরও যদি কেউ করে থাকে, তাহলে অভিযান চালিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাশেদ রাব্বি ও আয়নাল হোসেন, ঢাকা

এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে সারা দেশ কাঁপছে। প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। এই সংকটময় মুহূর্তে জমে উঠেছে ডেঙ্গু ‘বাণিজ্য’। সরকারি হাসপাতালে যেখানে নিজস্ব দাতার কাছ থেকে এক ব্যাগ প্লাটিলেট নিতে খরচ হয় ২ হাজার টাকার মতো, সেখানে বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় নেওয়া হচ্ছে ২০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা।
এদিকে সুযোগ বুঝে বেড়েছে স্যালাইন, স্যালাইন দেওয়ার অনুষঙ্গ ক্যানুলা ও মাইক্রোপ্রোর (ক্যানুলা স্থাপনে ব্যবহৃত বিশেষ টেপ) দামও।রক্তের ব্যাগের দামও বেড়েছে। এতে চিকিৎসাব্যয় বেড়েছে কয়েকগুণ। ফলে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ।
বেসরকারিতে প্লাটিলেট ‘বাণিজ্য’
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ডেঙ্গু চিকিৎসায় বেসরকারি হাসপাতালগুলো দুভাবে প্লাটিলেট ‘বাণিজ্য’ করছে।প্রথমত, ডেঙ্গু হলেই প্লাটিলেট লাগবে–এমন একটি ধারণা সাধারণ মানুষের মধ্যে জন্মেছে। এই ধারণাকে পুঁজি করে বেসরকারি হাসপাতালগুলো যেসব রোগীর প্লাটিলেট প্রয়োজন না, তাদেরও প্লাটিলেট দিচ্ছে। আবার প্লাটিলেট দিতে সরকারি হাসপাতালের তুলনায় ১০-১৫ গুণ টাকা নিচ্ছে।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের ব্লাড ট্রান্সফিউশন বিভাগে সহকারী অধ্যাপক ডা. আশরাফুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, বেসরকারি হাসপাতালে প্লাটিলেটের অযাচিত ব্যবহার হচ্ছে। অনেকে এটা ভয়ে ব্যবহার করে থাকে, যাতে রোগীর ঝুঁকি তৈরি না হয়। তিনি বলেন, রোগীর ল্যাবরেটরি-নির্ভর চিকিৎসা না করে ক্লিনিক্যাল চিকিৎসার ওপর গুরুত্ব দিলে প্লাটিলেট ও প্লাজমা বা রক্তের ব্যবহার কমিয়ে আনা সম্ভব। তাতে ডেঙ্গু চিকিৎসার ব্যয় অনেক কমে আসবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্লাটিলেট দুভাবে সংগ্রহ করা যায়। সিঙ্গেল ডোনার প্লাটিলেট ও র্যান্ডম ডোনার প্লাটিলেট। সিঙ্গেল ডোনার প্লাটিলেট প্রক্রিয়ায় একজন দাতার শরীর থেকে যন্ত্রের মাধ্যমে প্লাটিলেট সংগ্রহ করা হয়। সরকারি হাসপাতালে এই প্রক্রিয়ায় প্লাটিলেট নিতে একজন রোগীর ব্যয় হয় মাত্র ২ হাজার টাকা। তবে বেসরকারি হাসপাতালগুলো সিঙ্গেল ডোনার প্লাটিলেট ব্যবস্থাপনায় ২০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা ফি নিচ্ছে।
র্যান্ডম ডোনার প্লাটিলেট প্রক্রিয়ায় চারজন দাতার রক্ত নিয়ে এক ব্যাগ প্লাটিলেট তৈরি করা হয়। সরকারি হাসপাতালে এই প্রক্রিয়ায় প্লাটিলেট পেতে শুধু স্ক্রিনিং ও ক্রস ম্যাচিং ফি দিতে হয়। ক্ষেত্রবিশেষে রক্তের ব্যাগ না থাকলে সেই দামটি ফির সঙ্গে যুক্ত হয়। কিন্তু বেসরকারিতে চার দাতার রক্ত পরিসঞ্চালনেই রোগীর ব্যয় হয় প্রায় ৬ হাজার টাকা। এর সঙ্গে যোগ হয় ডোনার স্ক্রিনিং ও ক্রস ম্যাচিং ফি।
আর প্রতি ব্যাগ রক্ত থেকে প্লাটিলেট বের করতে দিতে হয় সাড়ে ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা। অর্থাৎ চার ব্যাগ রক্ত থেকে এক ব্যাগ প্লাটিলেট পেতে রোগীর ব্যয় হয় ১৪ থেকে ২০ হাজার টাকা। আনুষঙ্গিক ব্যয় হিসেবে আরও দিতে হয় ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা। ডেঙ্গু রোগীদের প্লাজমার ক্ষেত্রেও একই ব্যয় হয়ে থাকে। তবে প্লাজমা খুব কমসংখ্যক রোগীর লাগে। যাদের প্লাজমা ক্ষরণ হয়, তাদের চিকিৎসায় ফ্লুইড ম্যানেজমেন্ট ও রক্তদানকে গুরুত্ব দেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা।
সরকারের নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন কর্মসূচি সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীতে জাতীয় হৃদ্রোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল এবং নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে সিঙ্গেল ডোনার প্লাটিলেট পাওয়ার সুবিধা রয়েছে। ঢাকার বাইরে চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, রংপুর ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এই সুবিধা আছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন রক্তরোগ বিশেষজ্ঞ বলেন, জটিল ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসায় এক থেকে চার ব্যাগ পর্যন্ত প্লাটিলেট লাগতে পারে। যেসব রোগীর প্লাজমা লিকেজ দেখা দেয়, তাদের ক্ষেত্রে রক্ত পরিসঞ্চালন এবং ফ্লুইড ম্যানেজমেন্ট করে চিকিৎসা দেওয়া হয়। বেসরকারি হাসপাতালগুলো প্রয়োজন ছাড়াও রোগীদের প্লাটিলেট ও প্লাজমা চিকিৎসা দিয়ে থাকে। কারণ, তাদের জন্য লাভজনক ব্যবসা। যে রোগীকে পাঁচ দিন পরে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া যেত, প্লাজমা বা প্লাটিলেটের কথা বলে তার হাসপাতালে থাকার সময় বাড়ানো হয়। আবার অনেক রোগীকে প্রয়োজন না হলেও আইসিইউ (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) বা এইচডিইউয়ে (উচ্চ নির্ভরশীল কেন্দ্র) রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এতে রোগীর চিকিৎসার ব্যয় কয়েকগুণ বেড়ে যায়।
সরকারি হাসপাতালে কর্মরত কয়েকজন চিকিৎসক আজকের পত্রিকাকে বলেন, বেসরকারি হাসপাতালগুলো ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসার ব্যয় বাড়াতে প্রথম থেকেই অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করে। এ ছাড়া অপ্রয়োজনে অ্যালবুমিন প্রয়োগ করে। এতে রোগীর চিকিৎসার ব্যয় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা বেড়ে যায়। একটি অ্যালবুমিনের দাম ৭ হাজার ৬০০ টাকা। সম্প্রতি এর চাহিদা বাড়ায় ভারত থেকে নিম্নমানের অ্যালবুমিন আনা হচ্ছে, যা ব্যবহারে রোগীর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এমনকি মৃত্যুও ঘটছে। তবে এ নিয়ে সরকারি কর্তৃপক্ষ নীরব। এতে রোগীদের দুর্ভোগ ও ঝুঁকি বাড়ছে।
বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসার ব্যয় প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মো. খুরশীদ আলম বলেন, ‘ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসার ব্যয় ও পরীক্ষার ফি নির্ধারণে আমরা বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেছি। তারা সময় চেয়েছে। চিকিৎসার ব্যয় নির্ধারণে কিছু জটিলতা আছে। এটা করতে হলে হাসপাতালগুলোর গ্রেড নির্ধারণ করতে হবে। তবে অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ডেঙ্গু শনাক্তকরণ পরীক্ষা এনএস-১ ও আইজিজি-আইজিএম ৩০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া সিবিসি পরীক্ষার ফি ৪০০ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য ফি নির্ধারণের বিষয়টি শিগগিরই সম্পন্ন করার চেষ্টা চলেছে।
বেড়েছে স্যালাইন-ক্যানুলার দাম
ডেঙ্গু চিকিৎসার অন্যতম অনুষঙ্গ স্যালাইন। স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. আবু আজহার বলেন, ডেঙ্গু রোগীদের ক্ষুধা কমে যায়। এতে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। রোগীর রক্তের চাপ কমে যায়। একপর্যায়ে রোগী শকে চলে যায়। হেমারেজিকের মতো জটিলতা হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে রোগীর জীবন বাঁচাতে শরীরে স্যালাইন প্রয়োগ করা হয়।
তবে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের মধ্যেই স্যালাইন উৎপাদন ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো স্যালাইনের দাম বাড়িয়েছে, সৃষ্ট হয়েছে সরবরাহের সংকট। আগে যে স্যালাইন বিক্রি হতো ৯০ টাকায়, এখন সেটি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। আবার অনেক জায়গায় স্যালাইন পাওয়াও যাচ্ছে না।
রাজধানীর বাবুবাজারের মেসার্স আলিফ লাম মিম ফার্মার বিক্রয় প্রতিনিধি পলাশ চন্দ্র দাস ও কেরানীগঞ্জের চড়াইলের মেসার্স আসলাম ফার্মেসীর প্রতিনিধি সফিকুল ইসলাম বলেন, আগে প্রতিটি ১ হাজার মিলিলিটারের নরমাল স্যালাইন ৯০ টাকায় বিক্রি করতেন তাঁরা। এখন তার দাম ১৫০-১৬০ টাকা। সরবরাহের সংকটে কোথাও কোথাও ৩০০-৩৫০ টাকায়ও স্যালাইন বিক্রি হচ্ছে।
সরকারি হাসপাতালে কর্মরত কয়েকজন চিকিৎসক বলেন, রোগীর শরীরে স্যালাইন ঢোকানোর জন্য ক্যানুলা ব্যবহার করা হয়। ডেঙ্গুর সংক্রমণ বাড়ায় উৎপাদক ও সরবরাহকারীরা ক্যানুলার দাম বাড়িয়েছে। আগে ক্যানুলার যে সেটের দাম ছিল ৪০ টাকা, এখন সেটি ১৫০ টাকা। এর সঙ্গে দাম বেড়েছে মাইক্রোপ্রোরও (ক্যানুলা স্থাপনে ব্যবহৃত বিশেষ টেপ)। আগে এক বাক্স মাইক্রোপ্রোর দাম ছিল ৬০০ টাকা।এখন তা ৮০০ টাকা।
স্যালাইনের সংকটের বিষয়ে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের উপপরিচালক নূরুল আলম বলেন, বাজারে প্রতিযোগিতা রয়েছে। কেউ চাইলে কৃত্রিম সংকট করতে পারবে না। এরপরও যদি কেউ করে থাকে, তাহলে অভিযান চালিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে সারা দেশ কাঁপছে। প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। এই সংকটময় মুহূর্তে জমে উঠেছে ডেঙ্গু ‘বাণিজ্য’। সরকারি হাসপাতালে যেখানে নিজস্ব দাতার কাছ থেকে এক ব্যাগ প্লাটিলেট নিতে খরচ হয় ২ হাজার টাকার মতো, সেখানে বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় নেওয়া হচ্ছে ২০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা।
এদিকে সুযোগ বুঝে বেড়েছে স্যালাইন, স্যালাইন দেওয়ার অনুষঙ্গ ক্যানুলা ও মাইক্রোপ্রোর (ক্যানুলা স্থাপনে ব্যবহৃত বিশেষ টেপ) দামও।রক্তের ব্যাগের দামও বেড়েছে। এতে চিকিৎসাব্যয় বেড়েছে কয়েকগুণ। ফলে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ।
বেসরকারিতে প্লাটিলেট ‘বাণিজ্য’
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ডেঙ্গু চিকিৎসায় বেসরকারি হাসপাতালগুলো দুভাবে প্লাটিলেট ‘বাণিজ্য’ করছে।প্রথমত, ডেঙ্গু হলেই প্লাটিলেট লাগবে–এমন একটি ধারণা সাধারণ মানুষের মধ্যে জন্মেছে। এই ধারণাকে পুঁজি করে বেসরকারি হাসপাতালগুলো যেসব রোগীর প্লাটিলেট প্রয়োজন না, তাদেরও প্লাটিলেট দিচ্ছে। আবার প্লাটিলেট দিতে সরকারি হাসপাতালের তুলনায় ১০-১৫ গুণ টাকা নিচ্ছে।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের ব্লাড ট্রান্সফিউশন বিভাগে সহকারী অধ্যাপক ডা. আশরাফুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, বেসরকারি হাসপাতালে প্লাটিলেটের অযাচিত ব্যবহার হচ্ছে। অনেকে এটা ভয়ে ব্যবহার করে থাকে, যাতে রোগীর ঝুঁকি তৈরি না হয়। তিনি বলেন, রোগীর ল্যাবরেটরি-নির্ভর চিকিৎসা না করে ক্লিনিক্যাল চিকিৎসার ওপর গুরুত্ব দিলে প্লাটিলেট ও প্লাজমা বা রক্তের ব্যবহার কমিয়ে আনা সম্ভব। তাতে ডেঙ্গু চিকিৎসার ব্যয় অনেক কমে আসবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্লাটিলেট দুভাবে সংগ্রহ করা যায়। সিঙ্গেল ডোনার প্লাটিলেট ও র্যান্ডম ডোনার প্লাটিলেট। সিঙ্গেল ডোনার প্লাটিলেট প্রক্রিয়ায় একজন দাতার শরীর থেকে যন্ত্রের মাধ্যমে প্লাটিলেট সংগ্রহ করা হয়। সরকারি হাসপাতালে এই প্রক্রিয়ায় প্লাটিলেট নিতে একজন রোগীর ব্যয় হয় মাত্র ২ হাজার টাকা। তবে বেসরকারি হাসপাতালগুলো সিঙ্গেল ডোনার প্লাটিলেট ব্যবস্থাপনায় ২০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা ফি নিচ্ছে।
র্যান্ডম ডোনার প্লাটিলেট প্রক্রিয়ায় চারজন দাতার রক্ত নিয়ে এক ব্যাগ প্লাটিলেট তৈরি করা হয়। সরকারি হাসপাতালে এই প্রক্রিয়ায় প্লাটিলেট পেতে শুধু স্ক্রিনিং ও ক্রস ম্যাচিং ফি দিতে হয়। ক্ষেত্রবিশেষে রক্তের ব্যাগ না থাকলে সেই দামটি ফির সঙ্গে যুক্ত হয়। কিন্তু বেসরকারিতে চার দাতার রক্ত পরিসঞ্চালনেই রোগীর ব্যয় হয় প্রায় ৬ হাজার টাকা। এর সঙ্গে যোগ হয় ডোনার স্ক্রিনিং ও ক্রস ম্যাচিং ফি।
আর প্রতি ব্যাগ রক্ত থেকে প্লাটিলেট বের করতে দিতে হয় সাড়ে ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা। অর্থাৎ চার ব্যাগ রক্ত থেকে এক ব্যাগ প্লাটিলেট পেতে রোগীর ব্যয় হয় ১৪ থেকে ২০ হাজার টাকা। আনুষঙ্গিক ব্যয় হিসেবে আরও দিতে হয় ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা। ডেঙ্গু রোগীদের প্লাজমার ক্ষেত্রেও একই ব্যয় হয়ে থাকে। তবে প্লাজমা খুব কমসংখ্যক রোগীর লাগে। যাদের প্লাজমা ক্ষরণ হয়, তাদের চিকিৎসায় ফ্লুইড ম্যানেজমেন্ট ও রক্তদানকে গুরুত্ব দেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা।
সরকারের নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন কর্মসূচি সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীতে জাতীয় হৃদ্রোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল এবং নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে সিঙ্গেল ডোনার প্লাটিলেট পাওয়ার সুবিধা রয়েছে। ঢাকার বাইরে চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, রংপুর ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এই সুবিধা আছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন রক্তরোগ বিশেষজ্ঞ বলেন, জটিল ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসায় এক থেকে চার ব্যাগ পর্যন্ত প্লাটিলেট লাগতে পারে। যেসব রোগীর প্লাজমা লিকেজ দেখা দেয়, তাদের ক্ষেত্রে রক্ত পরিসঞ্চালন এবং ফ্লুইড ম্যানেজমেন্ট করে চিকিৎসা দেওয়া হয়। বেসরকারি হাসপাতালগুলো প্রয়োজন ছাড়াও রোগীদের প্লাটিলেট ও প্লাজমা চিকিৎসা দিয়ে থাকে। কারণ, তাদের জন্য লাভজনক ব্যবসা। যে রোগীকে পাঁচ দিন পরে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া যেত, প্লাজমা বা প্লাটিলেটের কথা বলে তার হাসপাতালে থাকার সময় বাড়ানো হয়। আবার অনেক রোগীকে প্রয়োজন না হলেও আইসিইউ (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) বা এইচডিইউয়ে (উচ্চ নির্ভরশীল কেন্দ্র) রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এতে রোগীর চিকিৎসার ব্যয় কয়েকগুণ বেড়ে যায়।
সরকারি হাসপাতালে কর্মরত কয়েকজন চিকিৎসক আজকের পত্রিকাকে বলেন, বেসরকারি হাসপাতালগুলো ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসার ব্যয় বাড়াতে প্রথম থেকেই অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করে। এ ছাড়া অপ্রয়োজনে অ্যালবুমিন প্রয়োগ করে। এতে রোগীর চিকিৎসার ব্যয় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা বেড়ে যায়। একটি অ্যালবুমিনের দাম ৭ হাজার ৬০০ টাকা। সম্প্রতি এর চাহিদা বাড়ায় ভারত থেকে নিম্নমানের অ্যালবুমিন আনা হচ্ছে, যা ব্যবহারে রোগীর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এমনকি মৃত্যুও ঘটছে। তবে এ নিয়ে সরকারি কর্তৃপক্ষ নীরব। এতে রোগীদের দুর্ভোগ ও ঝুঁকি বাড়ছে।
বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসার ব্যয় প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মো. খুরশীদ আলম বলেন, ‘ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসার ব্যয় ও পরীক্ষার ফি নির্ধারণে আমরা বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেছি। তারা সময় চেয়েছে। চিকিৎসার ব্যয় নির্ধারণে কিছু জটিলতা আছে। এটা করতে হলে হাসপাতালগুলোর গ্রেড নির্ধারণ করতে হবে। তবে অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ডেঙ্গু শনাক্তকরণ পরীক্ষা এনএস-১ ও আইজিজি-আইজিএম ৩০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া সিবিসি পরীক্ষার ফি ৪০০ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য ফি নির্ধারণের বিষয়টি শিগগিরই সম্পন্ন করার চেষ্টা চলেছে।
বেড়েছে স্যালাইন-ক্যানুলার দাম
ডেঙ্গু চিকিৎসার অন্যতম অনুষঙ্গ স্যালাইন। স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. আবু আজহার বলেন, ডেঙ্গু রোগীদের ক্ষুধা কমে যায়। এতে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। রোগীর রক্তের চাপ কমে যায়। একপর্যায়ে রোগী শকে চলে যায়। হেমারেজিকের মতো জটিলতা হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে রোগীর জীবন বাঁচাতে শরীরে স্যালাইন প্রয়োগ করা হয়।
তবে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের মধ্যেই স্যালাইন উৎপাদন ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো স্যালাইনের দাম বাড়িয়েছে, সৃষ্ট হয়েছে সরবরাহের সংকট। আগে যে স্যালাইন বিক্রি হতো ৯০ টাকায়, এখন সেটি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। আবার অনেক জায়গায় স্যালাইন পাওয়াও যাচ্ছে না।
রাজধানীর বাবুবাজারের মেসার্স আলিফ লাম মিম ফার্মার বিক্রয় প্রতিনিধি পলাশ চন্দ্র দাস ও কেরানীগঞ্জের চড়াইলের মেসার্স আসলাম ফার্মেসীর প্রতিনিধি সফিকুল ইসলাম বলেন, আগে প্রতিটি ১ হাজার মিলিলিটারের নরমাল স্যালাইন ৯০ টাকায় বিক্রি করতেন তাঁরা। এখন তার দাম ১৫০-১৬০ টাকা। সরবরাহের সংকটে কোথাও কোথাও ৩০০-৩৫০ টাকায়ও স্যালাইন বিক্রি হচ্ছে।
সরকারি হাসপাতালে কর্মরত কয়েকজন চিকিৎসক বলেন, রোগীর শরীরে স্যালাইন ঢোকানোর জন্য ক্যানুলা ব্যবহার করা হয়। ডেঙ্গুর সংক্রমণ বাড়ায় উৎপাদক ও সরবরাহকারীরা ক্যানুলার দাম বাড়িয়েছে। আগে ক্যানুলার যে সেটের দাম ছিল ৪০ টাকা, এখন সেটি ১৫০ টাকা। এর সঙ্গে দাম বেড়েছে মাইক্রোপ্রোরও (ক্যানুলা স্থাপনে ব্যবহৃত বিশেষ টেপ)। আগে এক বাক্স মাইক্রোপ্রোর দাম ছিল ৬০০ টাকা।এখন তা ৮০০ টাকা।
স্যালাইনের সংকটের বিষয়ে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের উপপরিচালক নূরুল আলম বলেন, বাজারে প্রতিযোগিতা রয়েছে। কেউ চাইলে কৃত্রিম সংকট করতে পারবে না। এরপরও যদি কেউ করে থাকে, তাহলে অভিযান চালিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে সারা দেশ কাঁপছে। প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। এই সংকটময় মুহূর্তে জমে উঠেছে ডেঙ্গু ‘বাণিজ্য’। সরকারি হাসপাতালে যেখানে নিজস্ব দাতার কাছ থেকে এক ব্যাগ প্লাটিলেট নিতে খরচ হয় ২ হাজার টাকার মতো, সেখানে বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় নেওয়া হচ্ছে ২০ থেকে ৩৫ হাজার
২১ জুলাই ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে সারা দেশ কাঁপছে। প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। এই সংকটময় মুহূর্তে জমে উঠেছে ডেঙ্গু ‘বাণিজ্য’। সরকারি হাসপাতালে যেখানে নিজস্ব দাতার কাছ থেকে এক ব্যাগ প্লাটিলেট নিতে খরচ হয় ২ হাজার টাকার মতো, সেখানে বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় নেওয়া হচ্ছে ২০ থেকে ৩৫ হাজার
২১ জুলাই ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে সারা দেশ কাঁপছে। প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। এই সংকটময় মুহূর্তে জমে উঠেছে ডেঙ্গু ‘বাণিজ্য’। সরকারি হাসপাতালে যেখানে নিজস্ব দাতার কাছ থেকে এক ব্যাগ প্লাটিলেট নিতে খরচ হয় ২ হাজার টাকার মতো, সেখানে বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় নেওয়া হচ্ছে ২০ থেকে ৩৫ হাজার
২১ জুলাই ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে সারা দেশ কাঁপছে। প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। এই সংকটময় মুহূর্তে জমে উঠেছে ডেঙ্গু ‘বাণিজ্য’। সরকারি হাসপাতালে যেখানে নিজস্ব দাতার কাছ থেকে এক ব্যাগ প্লাটিলেট নিতে খরচ হয় ২ হাজার টাকার মতো, সেখানে বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় নেওয়া হচ্ছে ২০ থেকে ৩৫ হাজার
২১ জুলাই ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫