রাহুল শর্মা, ঢাকা

একদিকে ডলার সংকটে আমদানি নিয়ন্ত্রণ, অন্যদিকে কাঁচামাল সংকটে স্থানীয়ভাবে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় বাজারে কাগজের সরবরাহে টান পড়েছে। এতে কাগজের দাম বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। সেই সঙ্গে বেড়েছে প্রকাশনাশিল্পের অন্যান্য উপকরণের দামও। এমনিতেই স্মরণকালের সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতিতে সংসারের খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষ। এর মধ্যে কাগজসহ অন্যান্য উপকরণের দাম বাড়ায় বড় সংকটে পড়েছে প্রকাশনাশিল্প। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে শিক্ষার্থীসহ সব শ্রেণির পাঠক।
প্রকাশনাশিল্প-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, কাগজসহ অন্যান্য উপকরণের বাড়তি দামের প্রভাব পড়েছে পুরো প্রকাশনাশিল্পে। এ অজুহাতে একদিকে বিনা মূল্যের পাঠ্যবই ছাপা হচ্ছে নিম্নমানের কাগজে। অন্যদিকে সৃজনশীল বইয়ের সংখ্যাও কমবে, তবে দাম বাড়বে। এতে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে সব শ্রেণির পাঠক।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতির সম্পাদক জহুরুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, এবার প্রকাশনাশিল্পের অবস্থা খুব খারাপ। কেননা, একদিকে ডলার সংকটে কাগজ আমদানি একরকম বন্ধ, অন্যদিকে কাগজ তৈরির ভার্জিন পাল্প বা মণ্ড সংকটে দেশি পেপার মিলগুলোও চাহিদা অনুযায়ী কাগজ উৎপাদন করতে পারছে না। এতে বাজারে কাগজের ভয়াবহ সংকট সৃষ্টি হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘কাগজের সংকটের অজুহাতে মুদ্রণ ব্যবসায়ীরা বিনা মূল্যের পাঠ্যবই নিম্নমানের কাগজে ছাপছে, যা অনেকটা ওপেন সিক্রেট। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। আর কাগজসহ সব ধরনের উপকরণের দাম বাড়ায় সৃজনশীল বইয়ের প্রকাশনাও ব্যাহত হবে। সংকটের চিত্র পুরোপুরি ফুটে উঠবে আগামী বইমেলায়।’
অসাধু চক্রের কারসাজি
উৎপাদকদের দাবি, ডলার সংকটে এলসি (ঋণপত্র) খুলতে না পারায় বিদেশ থেকে কাগজ ও কাঁচামাল আমদানি করা যাচ্ছে না। এতে একদিকে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে, অন্যদিকে বিদেশি কাগজ আমদানিও বন্ধ। আর এতেই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে কাগজের দাম। যদিও আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের দাম যে পরিমাণ বেড়েছে, সে তুলনায় অনেক বেশি বেড়েছে দেশে কাগজের দাম।
ব্যবসায়ী আহমদুল্লাহ স্বপন বলেন, ‘দেশে উৎপাদিত কাগজের দাম এখন দ্বিগুণের কাছাকাছি। তিন মাসের ব্যবধানে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সংকটের পাশাপাশি অবশ্যই অসাধু মিলমালিকদের সিন্ডিকেটও দায়ী।’ একই অভিযোগ প্রকাশকদেরও। সৃজনশীল প্রকাশক ঐক্য গত ২১ নভেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে, প্রতিনিয়ত নানা ছলচাতুরী করে কাগজের দাম বাড়ানো হচ্ছে।
বর্তমানে নিউজপ্রিন্টের বাজার প্রতিযোগিতাহীন। বেসরকারি কাগজকল মালিকেরা মিলে দাম নির্ধারণ করেন ইচ্ছেমতো। ফলে কাগজ ব্যবহারকারীদের কাছে কোনো বিকল্প থাকে না। একসময় দেশের অধিকাংশ নিউজপ্রিন্ট উৎপাদন ও সরবরাহ হতো খুলনা নিউজপ্রিন্ট মিল থেকে। ২০০২ সালে সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দেওয়া হয় ক্রমাগত লোকসানের অজুহাত দেখিয়ে। অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ীসহ অনেকের অভিযোগ, মিলটি বন্ধ করার পেছনেও বেসরকারি মিলমালিকদের কারসাজি ছিল।
আগামী প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ওসমান গণি বলেন, প্রতিবছরই বইমেলার দুই মাস আগে কাগজের দাম কৃত্রিমভাবে বাড়ানো হয়। কিন্তু এবারের অবস্থা আরও ভয়াবহ।
কাগজের বাজারে আগুন
আরামবাগের পারফেক্ট পেপার হাউসের কর্ণধার মো. মইনুল ইসলাম বলেন, সব ধরনের কাগজের দাম ঊর্ধ্বমুখী। দেশে কাগজ তৈরির কাঁচামাল নেই। আবার ডলার সংকটে বিদেশ থেকে কাগজ আমদানিও করা যাচ্ছে না।
নয়াবাজারের নাদিয়া পেপার হাউসের কর্ণধার আহমদুল্লাহ স্বপন বলেন, দেশে উৎপাদিত কাগজের দাম এখন দ্বিগুণের কাছাকাছি। তিন মাসের ব্যবধানে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তিনি জানান, প্রতি রিম ৫৫ জিএসএম হোয়াইট প্রিন্ট বা সাদা কাগজের দাম এক বছর আগে ছিল ১ হাজার ২০০ টাকা। এখন ২ হাজার ২৫০ টাকা। ধাপে ধাপে বেড়েছে এর দাম। আর ৮০ জিএসএম সাদা কাগজের দাম এক বছর আগে ছিল ১ হাজার ৮০০ টাকা, এখন ৩ হাজার ২০০ টাকা।
আরও একাধিক ব্যবসায়ী জানান, প্রতি রিম নিউজপ্রিন্টের দাম মানভেদে ৯৫০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা। বর্তমানে যে মানের নিউজপ্রিন্টের দাম ১ হাজার ৩০০ টাকা, এক বছর আগে সেটি ছিল ৬০০ টাকা। কয়েক মাস আগেও মানভেদে দাম ছিল ৭০০ থেকে ১ হাজার টাকা। দামের একই অবস্থা ডুপ্লেক্স বোর্ড, আর্ট পেপার, কালি, প্লেটেরও।
জানা যায়, দেশে চার ধরনের কাগজ উৎপাদন ও আমদানি করা হয়। এগুলো হলো লেখার কাগজ, ছাপার কাগজ, নিউজপ্রিন্ট এবং প্যাকেজিং জাতীয় কাগজ। এর মধ্যে ১৫ শতাংশ লেখার কাগজ, ৩৫ শতাংশ ছাপার কাগজ, ৪০ শতাংশ নিউজপ্রিন্ট এবং ১০ শতাংশ প্যাকেজিংয়ের কাগজ।
কাগজ, কালি, ও অন্যান্য উপকরণের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে ছাপাখানা ব্যবসায়ও। কারণ, দাম বাড়ায় মুদ্রণ ব্যবসায়ীরা এখন সব ধরনের ছাপা কমিয়ে দিয়েছেন।
আরামবাগের শাপলা প্রিন্টার্সের মালিক মমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আগের মতো কাজ নেই। অর্ডার নেমে এসেছে অর্ধেকেরও কমে। আগে সাতজন কর্মচারী থাকলেও এখন একজন কর্মচারী দিয়ে নিজেই কাজ চালাচ্ছি। সাধারণত এই মৌসুমে আমাদের কথা বলারও সময় থাকে না। অথচ এখন আমরা প্রায়ই অলস সময় পার করি।’
বাড়বে বইয়ের দাম
কয়েকজন প্রকাশক জানান, কাগজসহ উপকরণের চড়া দামের কারণে বইয়ের দাম বাড়বে প্রায় ৫০ শতাংশ। সংকটের কারণে এবার সৃজনশীল বইয়ের সংখ্যা কমবে। দেশে সৃজনশীল বই সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় অমর একুশে বইমেলায়। মূল্যবৃদ্ধি ও সংখ্যা কমায় ক্ষতিগ্রস্ত হবে সৃজনশীল বইয়ের পাঠকেরা। এ ছাড়া অন্যান্য বইয়ের দাম বাড়ানোরও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
ওসমান গণির মতে, নানা কারণে এবার সবকিছুরই দাম ঊর্ধ্বমুখী। এতে স্বাভাবিকভাবেই বইয়ের দাম বাড়বে, বলা যায় দ্বিগুণ হবে।
উপকরণের দাম বাড়ায় বই ছাপার সংখ্যাও কমবে। তিনি বলেন, ‘সার্বিক পরিস্থিতির কারণে গতবারের চার ভাগের এক ভাগ বই ছাপবে প্রকাশকেরা। এ সংকট থেকে উত্তরণের জন্য সরকারের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। না হলে পাঠক, লেখক, প্রকাশক ও সরকার সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
অন্যপ্রকাশের প্রধান নির্বাহী মাজহারুল ইসলাম বলেন, বৈশ্বিক অস্থিরতার কারণে সবকিছুরই দাম বেড়েছে। প্রকাশনাশিল্পের প্রধান কাঁচামাল কাগজ, কালির দামও প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এতে স্বাভাবিকভাবেই বইয়ের দাম বাড়বে। এতে পাঠক আরও কমার শঙ্কা রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রকাশক জানান, আগে ২৫৬ পাতার ৫০০ কপি বই ছাপাতে খরচ হতো ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা। এখন ৬০ হাজার টাকার নিচে সম্ভব নয়।
বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহসভাপতি শ্যামল পাল বলেন, ‘কাগজ-কালি সবকিছুর দাম বেড়েছে। আমরা সমিতি থেকে প্রতি ফর্মা বইয়ের দাম ২৭ শতাংশ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ ছাড়া আমাদের সামনে আর কোনো উপায় নেই।’
এক পাঠ্যবই যেন একাধিক বছর ব্যবহার করা যায়
লেখক, কম্পিউটার বিজ্ঞানী ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের বেলায় কাগজের মান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমেরিকার পাঠ্যপুস্তক দেখেছি, সেগুলোর ছাপার মান ও কাগজ খুবই উন্নত। দেশে প্রতিবছর বিপুলসংখ্যক পাঠ্যবই ছাপা হয়। আমাদের মতো দেশের জন্য তা উপযুক্ত নয়। এতে বিপুল অর্থ ও কাগজ প্রয়োজন। আমার মনে হয়, এক পাঠ্যবই যেন একাধিক বছর ব্যবহার করা যায়, তার ব্যবস্থা করা উচিত। এতে অর্থ ও পরিবেশ দুটোর জন্যই ভালো। কারণ, কাগজ তৈরিতে প্রচুর মণ্ড প্রয়োজন হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘কাগজ সংকটে সৃজনশীল পাঠ্যবই ছাপা কমবে, এটা জাতির জন্য ভালো খবর নয়। আমার মতে, পাঠক যাতে কম মূল্যে ভালো মানের বই হাতে পায় সে বিষয়ে সরকারের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।’

একদিকে ডলার সংকটে আমদানি নিয়ন্ত্রণ, অন্যদিকে কাঁচামাল সংকটে স্থানীয়ভাবে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় বাজারে কাগজের সরবরাহে টান পড়েছে। এতে কাগজের দাম বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। সেই সঙ্গে বেড়েছে প্রকাশনাশিল্পের অন্যান্য উপকরণের দামও। এমনিতেই স্মরণকালের সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতিতে সংসারের খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষ। এর মধ্যে কাগজসহ অন্যান্য উপকরণের দাম বাড়ায় বড় সংকটে পড়েছে প্রকাশনাশিল্প। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে শিক্ষার্থীসহ সব শ্রেণির পাঠক।
প্রকাশনাশিল্প-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, কাগজসহ অন্যান্য উপকরণের বাড়তি দামের প্রভাব পড়েছে পুরো প্রকাশনাশিল্পে। এ অজুহাতে একদিকে বিনা মূল্যের পাঠ্যবই ছাপা হচ্ছে নিম্নমানের কাগজে। অন্যদিকে সৃজনশীল বইয়ের সংখ্যাও কমবে, তবে দাম বাড়বে। এতে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে সব শ্রেণির পাঠক।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতির সম্পাদক জহুরুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, এবার প্রকাশনাশিল্পের অবস্থা খুব খারাপ। কেননা, একদিকে ডলার সংকটে কাগজ আমদানি একরকম বন্ধ, অন্যদিকে কাগজ তৈরির ভার্জিন পাল্প বা মণ্ড সংকটে দেশি পেপার মিলগুলোও চাহিদা অনুযায়ী কাগজ উৎপাদন করতে পারছে না। এতে বাজারে কাগজের ভয়াবহ সংকট সৃষ্টি হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘কাগজের সংকটের অজুহাতে মুদ্রণ ব্যবসায়ীরা বিনা মূল্যের পাঠ্যবই নিম্নমানের কাগজে ছাপছে, যা অনেকটা ওপেন সিক্রেট। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। আর কাগজসহ সব ধরনের উপকরণের দাম বাড়ায় সৃজনশীল বইয়ের প্রকাশনাও ব্যাহত হবে। সংকটের চিত্র পুরোপুরি ফুটে উঠবে আগামী বইমেলায়।’
অসাধু চক্রের কারসাজি
উৎপাদকদের দাবি, ডলার সংকটে এলসি (ঋণপত্র) খুলতে না পারায় বিদেশ থেকে কাগজ ও কাঁচামাল আমদানি করা যাচ্ছে না। এতে একদিকে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে, অন্যদিকে বিদেশি কাগজ আমদানিও বন্ধ। আর এতেই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে কাগজের দাম। যদিও আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের দাম যে পরিমাণ বেড়েছে, সে তুলনায় অনেক বেশি বেড়েছে দেশে কাগজের দাম।
ব্যবসায়ী আহমদুল্লাহ স্বপন বলেন, ‘দেশে উৎপাদিত কাগজের দাম এখন দ্বিগুণের কাছাকাছি। তিন মাসের ব্যবধানে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সংকটের পাশাপাশি অবশ্যই অসাধু মিলমালিকদের সিন্ডিকেটও দায়ী।’ একই অভিযোগ প্রকাশকদেরও। সৃজনশীল প্রকাশক ঐক্য গত ২১ নভেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে, প্রতিনিয়ত নানা ছলচাতুরী করে কাগজের দাম বাড়ানো হচ্ছে।
বর্তমানে নিউজপ্রিন্টের বাজার প্রতিযোগিতাহীন। বেসরকারি কাগজকল মালিকেরা মিলে দাম নির্ধারণ করেন ইচ্ছেমতো। ফলে কাগজ ব্যবহারকারীদের কাছে কোনো বিকল্প থাকে না। একসময় দেশের অধিকাংশ নিউজপ্রিন্ট উৎপাদন ও সরবরাহ হতো খুলনা নিউজপ্রিন্ট মিল থেকে। ২০০২ সালে সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দেওয়া হয় ক্রমাগত লোকসানের অজুহাত দেখিয়ে। অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ীসহ অনেকের অভিযোগ, মিলটি বন্ধ করার পেছনেও বেসরকারি মিলমালিকদের কারসাজি ছিল।
আগামী প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ওসমান গণি বলেন, প্রতিবছরই বইমেলার দুই মাস আগে কাগজের দাম কৃত্রিমভাবে বাড়ানো হয়। কিন্তু এবারের অবস্থা আরও ভয়াবহ।
কাগজের বাজারে আগুন
আরামবাগের পারফেক্ট পেপার হাউসের কর্ণধার মো. মইনুল ইসলাম বলেন, সব ধরনের কাগজের দাম ঊর্ধ্বমুখী। দেশে কাগজ তৈরির কাঁচামাল নেই। আবার ডলার সংকটে বিদেশ থেকে কাগজ আমদানিও করা যাচ্ছে না।
নয়াবাজারের নাদিয়া পেপার হাউসের কর্ণধার আহমদুল্লাহ স্বপন বলেন, দেশে উৎপাদিত কাগজের দাম এখন দ্বিগুণের কাছাকাছি। তিন মাসের ব্যবধানে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তিনি জানান, প্রতি রিম ৫৫ জিএসএম হোয়াইট প্রিন্ট বা সাদা কাগজের দাম এক বছর আগে ছিল ১ হাজার ২০০ টাকা। এখন ২ হাজার ২৫০ টাকা। ধাপে ধাপে বেড়েছে এর দাম। আর ৮০ জিএসএম সাদা কাগজের দাম এক বছর আগে ছিল ১ হাজার ৮০০ টাকা, এখন ৩ হাজার ২০০ টাকা।
আরও একাধিক ব্যবসায়ী জানান, প্রতি রিম নিউজপ্রিন্টের দাম মানভেদে ৯৫০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা। বর্তমানে যে মানের নিউজপ্রিন্টের দাম ১ হাজার ৩০০ টাকা, এক বছর আগে সেটি ছিল ৬০০ টাকা। কয়েক মাস আগেও মানভেদে দাম ছিল ৭০০ থেকে ১ হাজার টাকা। দামের একই অবস্থা ডুপ্লেক্স বোর্ড, আর্ট পেপার, কালি, প্লেটেরও।
জানা যায়, দেশে চার ধরনের কাগজ উৎপাদন ও আমদানি করা হয়। এগুলো হলো লেখার কাগজ, ছাপার কাগজ, নিউজপ্রিন্ট এবং প্যাকেজিং জাতীয় কাগজ। এর মধ্যে ১৫ শতাংশ লেখার কাগজ, ৩৫ শতাংশ ছাপার কাগজ, ৪০ শতাংশ নিউজপ্রিন্ট এবং ১০ শতাংশ প্যাকেজিংয়ের কাগজ।
কাগজ, কালি, ও অন্যান্য উপকরণের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে ছাপাখানা ব্যবসায়ও। কারণ, দাম বাড়ায় মুদ্রণ ব্যবসায়ীরা এখন সব ধরনের ছাপা কমিয়ে দিয়েছেন।
আরামবাগের শাপলা প্রিন্টার্সের মালিক মমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আগের মতো কাজ নেই। অর্ডার নেমে এসেছে অর্ধেকেরও কমে। আগে সাতজন কর্মচারী থাকলেও এখন একজন কর্মচারী দিয়ে নিজেই কাজ চালাচ্ছি। সাধারণত এই মৌসুমে আমাদের কথা বলারও সময় থাকে না। অথচ এখন আমরা প্রায়ই অলস সময় পার করি।’
বাড়বে বইয়ের দাম
কয়েকজন প্রকাশক জানান, কাগজসহ উপকরণের চড়া দামের কারণে বইয়ের দাম বাড়বে প্রায় ৫০ শতাংশ। সংকটের কারণে এবার সৃজনশীল বইয়ের সংখ্যা কমবে। দেশে সৃজনশীল বই সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় অমর একুশে বইমেলায়। মূল্যবৃদ্ধি ও সংখ্যা কমায় ক্ষতিগ্রস্ত হবে সৃজনশীল বইয়ের পাঠকেরা। এ ছাড়া অন্যান্য বইয়ের দাম বাড়ানোরও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
ওসমান গণির মতে, নানা কারণে এবার সবকিছুরই দাম ঊর্ধ্বমুখী। এতে স্বাভাবিকভাবেই বইয়ের দাম বাড়বে, বলা যায় দ্বিগুণ হবে।
উপকরণের দাম বাড়ায় বই ছাপার সংখ্যাও কমবে। তিনি বলেন, ‘সার্বিক পরিস্থিতির কারণে গতবারের চার ভাগের এক ভাগ বই ছাপবে প্রকাশকেরা। এ সংকট থেকে উত্তরণের জন্য সরকারের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। না হলে পাঠক, লেখক, প্রকাশক ও সরকার সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
অন্যপ্রকাশের প্রধান নির্বাহী মাজহারুল ইসলাম বলেন, বৈশ্বিক অস্থিরতার কারণে সবকিছুরই দাম বেড়েছে। প্রকাশনাশিল্পের প্রধান কাঁচামাল কাগজ, কালির দামও প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এতে স্বাভাবিকভাবেই বইয়ের দাম বাড়বে। এতে পাঠক আরও কমার শঙ্কা রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রকাশক জানান, আগে ২৫৬ পাতার ৫০০ কপি বই ছাপাতে খরচ হতো ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা। এখন ৬০ হাজার টাকার নিচে সম্ভব নয়।
বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহসভাপতি শ্যামল পাল বলেন, ‘কাগজ-কালি সবকিছুর দাম বেড়েছে। আমরা সমিতি থেকে প্রতি ফর্মা বইয়ের দাম ২৭ শতাংশ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ ছাড়া আমাদের সামনে আর কোনো উপায় নেই।’
এক পাঠ্যবই যেন একাধিক বছর ব্যবহার করা যায়
লেখক, কম্পিউটার বিজ্ঞানী ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের বেলায় কাগজের মান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমেরিকার পাঠ্যপুস্তক দেখেছি, সেগুলোর ছাপার মান ও কাগজ খুবই উন্নত। দেশে প্রতিবছর বিপুলসংখ্যক পাঠ্যবই ছাপা হয়। আমাদের মতো দেশের জন্য তা উপযুক্ত নয়। এতে বিপুল অর্থ ও কাগজ প্রয়োজন। আমার মনে হয়, এক পাঠ্যবই যেন একাধিক বছর ব্যবহার করা যায়, তার ব্যবস্থা করা উচিত। এতে অর্থ ও পরিবেশ দুটোর জন্যই ভালো। কারণ, কাগজ তৈরিতে প্রচুর মণ্ড প্রয়োজন হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘কাগজ সংকটে সৃজনশীল পাঠ্যবই ছাপা কমবে, এটা জাতির জন্য ভালো খবর নয়। আমার মতে, পাঠক যাতে কম মূল্যে ভালো মানের বই হাতে পায় সে বিষয়ে সরকারের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।’
রাহুল শর্মা, ঢাকা

একদিকে ডলার সংকটে আমদানি নিয়ন্ত্রণ, অন্যদিকে কাঁচামাল সংকটে স্থানীয়ভাবে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় বাজারে কাগজের সরবরাহে টান পড়েছে। এতে কাগজের দাম বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। সেই সঙ্গে বেড়েছে প্রকাশনাশিল্পের অন্যান্য উপকরণের দামও। এমনিতেই স্মরণকালের সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতিতে সংসারের খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষ। এর মধ্যে কাগজসহ অন্যান্য উপকরণের দাম বাড়ায় বড় সংকটে পড়েছে প্রকাশনাশিল্প। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে শিক্ষার্থীসহ সব শ্রেণির পাঠক।
প্রকাশনাশিল্প-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, কাগজসহ অন্যান্য উপকরণের বাড়তি দামের প্রভাব পড়েছে পুরো প্রকাশনাশিল্পে। এ অজুহাতে একদিকে বিনা মূল্যের পাঠ্যবই ছাপা হচ্ছে নিম্নমানের কাগজে। অন্যদিকে সৃজনশীল বইয়ের সংখ্যাও কমবে, তবে দাম বাড়বে। এতে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে সব শ্রেণির পাঠক।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতির সম্পাদক জহুরুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, এবার প্রকাশনাশিল্পের অবস্থা খুব খারাপ। কেননা, একদিকে ডলার সংকটে কাগজ আমদানি একরকম বন্ধ, অন্যদিকে কাগজ তৈরির ভার্জিন পাল্প বা মণ্ড সংকটে দেশি পেপার মিলগুলোও চাহিদা অনুযায়ী কাগজ উৎপাদন করতে পারছে না। এতে বাজারে কাগজের ভয়াবহ সংকট সৃষ্টি হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘কাগজের সংকটের অজুহাতে মুদ্রণ ব্যবসায়ীরা বিনা মূল্যের পাঠ্যবই নিম্নমানের কাগজে ছাপছে, যা অনেকটা ওপেন সিক্রেট। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। আর কাগজসহ সব ধরনের উপকরণের দাম বাড়ায় সৃজনশীল বইয়ের প্রকাশনাও ব্যাহত হবে। সংকটের চিত্র পুরোপুরি ফুটে উঠবে আগামী বইমেলায়।’
অসাধু চক্রের কারসাজি
উৎপাদকদের দাবি, ডলার সংকটে এলসি (ঋণপত্র) খুলতে না পারায় বিদেশ থেকে কাগজ ও কাঁচামাল আমদানি করা যাচ্ছে না। এতে একদিকে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে, অন্যদিকে বিদেশি কাগজ আমদানিও বন্ধ। আর এতেই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে কাগজের দাম। যদিও আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের দাম যে পরিমাণ বেড়েছে, সে তুলনায় অনেক বেশি বেড়েছে দেশে কাগজের দাম।
ব্যবসায়ী আহমদুল্লাহ স্বপন বলেন, ‘দেশে উৎপাদিত কাগজের দাম এখন দ্বিগুণের কাছাকাছি। তিন মাসের ব্যবধানে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সংকটের পাশাপাশি অবশ্যই অসাধু মিলমালিকদের সিন্ডিকেটও দায়ী।’ একই অভিযোগ প্রকাশকদেরও। সৃজনশীল প্রকাশক ঐক্য গত ২১ নভেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে, প্রতিনিয়ত নানা ছলচাতুরী করে কাগজের দাম বাড়ানো হচ্ছে।
বর্তমানে নিউজপ্রিন্টের বাজার প্রতিযোগিতাহীন। বেসরকারি কাগজকল মালিকেরা মিলে দাম নির্ধারণ করেন ইচ্ছেমতো। ফলে কাগজ ব্যবহারকারীদের কাছে কোনো বিকল্প থাকে না। একসময় দেশের অধিকাংশ নিউজপ্রিন্ট উৎপাদন ও সরবরাহ হতো খুলনা নিউজপ্রিন্ট মিল থেকে। ২০০২ সালে সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দেওয়া হয় ক্রমাগত লোকসানের অজুহাত দেখিয়ে। অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ীসহ অনেকের অভিযোগ, মিলটি বন্ধ করার পেছনেও বেসরকারি মিলমালিকদের কারসাজি ছিল।
আগামী প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ওসমান গণি বলেন, প্রতিবছরই বইমেলার দুই মাস আগে কাগজের দাম কৃত্রিমভাবে বাড়ানো হয়। কিন্তু এবারের অবস্থা আরও ভয়াবহ।
কাগজের বাজারে আগুন
আরামবাগের পারফেক্ট পেপার হাউসের কর্ণধার মো. মইনুল ইসলাম বলেন, সব ধরনের কাগজের দাম ঊর্ধ্বমুখী। দেশে কাগজ তৈরির কাঁচামাল নেই। আবার ডলার সংকটে বিদেশ থেকে কাগজ আমদানিও করা যাচ্ছে না।
নয়াবাজারের নাদিয়া পেপার হাউসের কর্ণধার আহমদুল্লাহ স্বপন বলেন, দেশে উৎপাদিত কাগজের দাম এখন দ্বিগুণের কাছাকাছি। তিন মাসের ব্যবধানে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তিনি জানান, প্রতি রিম ৫৫ জিএসএম হোয়াইট প্রিন্ট বা সাদা কাগজের দাম এক বছর আগে ছিল ১ হাজার ২০০ টাকা। এখন ২ হাজার ২৫০ টাকা। ধাপে ধাপে বেড়েছে এর দাম। আর ৮০ জিএসএম সাদা কাগজের দাম এক বছর আগে ছিল ১ হাজার ৮০০ টাকা, এখন ৩ হাজার ২০০ টাকা।
আরও একাধিক ব্যবসায়ী জানান, প্রতি রিম নিউজপ্রিন্টের দাম মানভেদে ৯৫০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা। বর্তমানে যে মানের নিউজপ্রিন্টের দাম ১ হাজার ৩০০ টাকা, এক বছর আগে সেটি ছিল ৬০০ টাকা। কয়েক মাস আগেও মানভেদে দাম ছিল ৭০০ থেকে ১ হাজার টাকা। দামের একই অবস্থা ডুপ্লেক্স বোর্ড, আর্ট পেপার, কালি, প্লেটেরও।
জানা যায়, দেশে চার ধরনের কাগজ উৎপাদন ও আমদানি করা হয়। এগুলো হলো লেখার কাগজ, ছাপার কাগজ, নিউজপ্রিন্ট এবং প্যাকেজিং জাতীয় কাগজ। এর মধ্যে ১৫ শতাংশ লেখার কাগজ, ৩৫ শতাংশ ছাপার কাগজ, ৪০ শতাংশ নিউজপ্রিন্ট এবং ১০ শতাংশ প্যাকেজিংয়ের কাগজ।
কাগজ, কালি, ও অন্যান্য উপকরণের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে ছাপাখানা ব্যবসায়ও। কারণ, দাম বাড়ায় মুদ্রণ ব্যবসায়ীরা এখন সব ধরনের ছাপা কমিয়ে দিয়েছেন।
আরামবাগের শাপলা প্রিন্টার্সের মালিক মমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আগের মতো কাজ নেই। অর্ডার নেমে এসেছে অর্ধেকেরও কমে। আগে সাতজন কর্মচারী থাকলেও এখন একজন কর্মচারী দিয়ে নিজেই কাজ চালাচ্ছি। সাধারণত এই মৌসুমে আমাদের কথা বলারও সময় থাকে না। অথচ এখন আমরা প্রায়ই অলস সময় পার করি।’
বাড়বে বইয়ের দাম
কয়েকজন প্রকাশক জানান, কাগজসহ উপকরণের চড়া দামের কারণে বইয়ের দাম বাড়বে প্রায় ৫০ শতাংশ। সংকটের কারণে এবার সৃজনশীল বইয়ের সংখ্যা কমবে। দেশে সৃজনশীল বই সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় অমর একুশে বইমেলায়। মূল্যবৃদ্ধি ও সংখ্যা কমায় ক্ষতিগ্রস্ত হবে সৃজনশীল বইয়ের পাঠকেরা। এ ছাড়া অন্যান্য বইয়ের দাম বাড়ানোরও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
ওসমান গণির মতে, নানা কারণে এবার সবকিছুরই দাম ঊর্ধ্বমুখী। এতে স্বাভাবিকভাবেই বইয়ের দাম বাড়বে, বলা যায় দ্বিগুণ হবে।
উপকরণের দাম বাড়ায় বই ছাপার সংখ্যাও কমবে। তিনি বলেন, ‘সার্বিক পরিস্থিতির কারণে গতবারের চার ভাগের এক ভাগ বই ছাপবে প্রকাশকেরা। এ সংকট থেকে উত্তরণের জন্য সরকারের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। না হলে পাঠক, লেখক, প্রকাশক ও সরকার সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
অন্যপ্রকাশের প্রধান নির্বাহী মাজহারুল ইসলাম বলেন, বৈশ্বিক অস্থিরতার কারণে সবকিছুরই দাম বেড়েছে। প্রকাশনাশিল্পের প্রধান কাঁচামাল কাগজ, কালির দামও প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এতে স্বাভাবিকভাবেই বইয়ের দাম বাড়বে। এতে পাঠক আরও কমার শঙ্কা রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রকাশক জানান, আগে ২৫৬ পাতার ৫০০ কপি বই ছাপাতে খরচ হতো ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা। এখন ৬০ হাজার টাকার নিচে সম্ভব নয়।
বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহসভাপতি শ্যামল পাল বলেন, ‘কাগজ-কালি সবকিছুর দাম বেড়েছে। আমরা সমিতি থেকে প্রতি ফর্মা বইয়ের দাম ২৭ শতাংশ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ ছাড়া আমাদের সামনে আর কোনো উপায় নেই।’
এক পাঠ্যবই যেন একাধিক বছর ব্যবহার করা যায়
লেখক, কম্পিউটার বিজ্ঞানী ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের বেলায় কাগজের মান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমেরিকার পাঠ্যপুস্তক দেখেছি, সেগুলোর ছাপার মান ও কাগজ খুবই উন্নত। দেশে প্রতিবছর বিপুলসংখ্যক পাঠ্যবই ছাপা হয়। আমাদের মতো দেশের জন্য তা উপযুক্ত নয়। এতে বিপুল অর্থ ও কাগজ প্রয়োজন। আমার মনে হয়, এক পাঠ্যবই যেন একাধিক বছর ব্যবহার করা যায়, তার ব্যবস্থা করা উচিত। এতে অর্থ ও পরিবেশ দুটোর জন্যই ভালো। কারণ, কাগজ তৈরিতে প্রচুর মণ্ড প্রয়োজন হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘কাগজ সংকটে সৃজনশীল পাঠ্যবই ছাপা কমবে, এটা জাতির জন্য ভালো খবর নয়। আমার মতে, পাঠক যাতে কম মূল্যে ভালো মানের বই হাতে পায় সে বিষয়ে সরকারের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।’

একদিকে ডলার সংকটে আমদানি নিয়ন্ত্রণ, অন্যদিকে কাঁচামাল সংকটে স্থানীয়ভাবে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় বাজারে কাগজের সরবরাহে টান পড়েছে। এতে কাগজের দাম বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। সেই সঙ্গে বেড়েছে প্রকাশনাশিল্পের অন্যান্য উপকরণের দামও। এমনিতেই স্মরণকালের সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতিতে সংসারের খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষ। এর মধ্যে কাগজসহ অন্যান্য উপকরণের দাম বাড়ায় বড় সংকটে পড়েছে প্রকাশনাশিল্প। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে শিক্ষার্থীসহ সব শ্রেণির পাঠক।
প্রকাশনাশিল্প-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, কাগজসহ অন্যান্য উপকরণের বাড়তি দামের প্রভাব পড়েছে পুরো প্রকাশনাশিল্পে। এ অজুহাতে একদিকে বিনা মূল্যের পাঠ্যবই ছাপা হচ্ছে নিম্নমানের কাগজে। অন্যদিকে সৃজনশীল বইয়ের সংখ্যাও কমবে, তবে দাম বাড়বে। এতে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে সব শ্রেণির পাঠক।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতির সম্পাদক জহুরুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, এবার প্রকাশনাশিল্পের অবস্থা খুব খারাপ। কেননা, একদিকে ডলার সংকটে কাগজ আমদানি একরকম বন্ধ, অন্যদিকে কাগজ তৈরির ভার্জিন পাল্প বা মণ্ড সংকটে দেশি পেপার মিলগুলোও চাহিদা অনুযায়ী কাগজ উৎপাদন করতে পারছে না। এতে বাজারে কাগজের ভয়াবহ সংকট সৃষ্টি হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘কাগজের সংকটের অজুহাতে মুদ্রণ ব্যবসায়ীরা বিনা মূল্যের পাঠ্যবই নিম্নমানের কাগজে ছাপছে, যা অনেকটা ওপেন সিক্রেট। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। আর কাগজসহ সব ধরনের উপকরণের দাম বাড়ায় সৃজনশীল বইয়ের প্রকাশনাও ব্যাহত হবে। সংকটের চিত্র পুরোপুরি ফুটে উঠবে আগামী বইমেলায়।’
অসাধু চক্রের কারসাজি
উৎপাদকদের দাবি, ডলার সংকটে এলসি (ঋণপত্র) খুলতে না পারায় বিদেশ থেকে কাগজ ও কাঁচামাল আমদানি করা যাচ্ছে না। এতে একদিকে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে, অন্যদিকে বিদেশি কাগজ আমদানিও বন্ধ। আর এতেই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে কাগজের দাম। যদিও আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের দাম যে পরিমাণ বেড়েছে, সে তুলনায় অনেক বেশি বেড়েছে দেশে কাগজের দাম।
ব্যবসায়ী আহমদুল্লাহ স্বপন বলেন, ‘দেশে উৎপাদিত কাগজের দাম এখন দ্বিগুণের কাছাকাছি। তিন মাসের ব্যবধানে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সংকটের পাশাপাশি অবশ্যই অসাধু মিলমালিকদের সিন্ডিকেটও দায়ী।’ একই অভিযোগ প্রকাশকদেরও। সৃজনশীল প্রকাশক ঐক্য গত ২১ নভেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে, প্রতিনিয়ত নানা ছলচাতুরী করে কাগজের দাম বাড়ানো হচ্ছে।
বর্তমানে নিউজপ্রিন্টের বাজার প্রতিযোগিতাহীন। বেসরকারি কাগজকল মালিকেরা মিলে দাম নির্ধারণ করেন ইচ্ছেমতো। ফলে কাগজ ব্যবহারকারীদের কাছে কোনো বিকল্প থাকে না। একসময় দেশের অধিকাংশ নিউজপ্রিন্ট উৎপাদন ও সরবরাহ হতো খুলনা নিউজপ্রিন্ট মিল থেকে। ২০০২ সালে সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দেওয়া হয় ক্রমাগত লোকসানের অজুহাত দেখিয়ে। অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ীসহ অনেকের অভিযোগ, মিলটি বন্ধ করার পেছনেও বেসরকারি মিলমালিকদের কারসাজি ছিল।
আগামী প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ওসমান গণি বলেন, প্রতিবছরই বইমেলার দুই মাস আগে কাগজের দাম কৃত্রিমভাবে বাড়ানো হয়। কিন্তু এবারের অবস্থা আরও ভয়াবহ।
কাগজের বাজারে আগুন
আরামবাগের পারফেক্ট পেপার হাউসের কর্ণধার মো. মইনুল ইসলাম বলেন, সব ধরনের কাগজের দাম ঊর্ধ্বমুখী। দেশে কাগজ তৈরির কাঁচামাল নেই। আবার ডলার সংকটে বিদেশ থেকে কাগজ আমদানিও করা যাচ্ছে না।
নয়াবাজারের নাদিয়া পেপার হাউসের কর্ণধার আহমদুল্লাহ স্বপন বলেন, দেশে উৎপাদিত কাগজের দাম এখন দ্বিগুণের কাছাকাছি। তিন মাসের ব্যবধানে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তিনি জানান, প্রতি রিম ৫৫ জিএসএম হোয়াইট প্রিন্ট বা সাদা কাগজের দাম এক বছর আগে ছিল ১ হাজার ২০০ টাকা। এখন ২ হাজার ২৫০ টাকা। ধাপে ধাপে বেড়েছে এর দাম। আর ৮০ জিএসএম সাদা কাগজের দাম এক বছর আগে ছিল ১ হাজার ৮০০ টাকা, এখন ৩ হাজার ২০০ টাকা।
আরও একাধিক ব্যবসায়ী জানান, প্রতি রিম নিউজপ্রিন্টের দাম মানভেদে ৯৫০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা। বর্তমানে যে মানের নিউজপ্রিন্টের দাম ১ হাজার ৩০০ টাকা, এক বছর আগে সেটি ছিল ৬০০ টাকা। কয়েক মাস আগেও মানভেদে দাম ছিল ৭০০ থেকে ১ হাজার টাকা। দামের একই অবস্থা ডুপ্লেক্স বোর্ড, আর্ট পেপার, কালি, প্লেটেরও।
জানা যায়, দেশে চার ধরনের কাগজ উৎপাদন ও আমদানি করা হয়। এগুলো হলো লেখার কাগজ, ছাপার কাগজ, নিউজপ্রিন্ট এবং প্যাকেজিং জাতীয় কাগজ। এর মধ্যে ১৫ শতাংশ লেখার কাগজ, ৩৫ শতাংশ ছাপার কাগজ, ৪০ শতাংশ নিউজপ্রিন্ট এবং ১০ শতাংশ প্যাকেজিংয়ের কাগজ।
কাগজ, কালি, ও অন্যান্য উপকরণের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে ছাপাখানা ব্যবসায়ও। কারণ, দাম বাড়ায় মুদ্রণ ব্যবসায়ীরা এখন সব ধরনের ছাপা কমিয়ে দিয়েছেন।
আরামবাগের শাপলা প্রিন্টার্সের মালিক মমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আগের মতো কাজ নেই। অর্ডার নেমে এসেছে অর্ধেকেরও কমে। আগে সাতজন কর্মচারী থাকলেও এখন একজন কর্মচারী দিয়ে নিজেই কাজ চালাচ্ছি। সাধারণত এই মৌসুমে আমাদের কথা বলারও সময় থাকে না। অথচ এখন আমরা প্রায়ই অলস সময় পার করি।’
বাড়বে বইয়ের দাম
কয়েকজন প্রকাশক জানান, কাগজসহ উপকরণের চড়া দামের কারণে বইয়ের দাম বাড়বে প্রায় ৫০ শতাংশ। সংকটের কারণে এবার সৃজনশীল বইয়ের সংখ্যা কমবে। দেশে সৃজনশীল বই সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় অমর একুশে বইমেলায়। মূল্যবৃদ্ধি ও সংখ্যা কমায় ক্ষতিগ্রস্ত হবে সৃজনশীল বইয়ের পাঠকেরা। এ ছাড়া অন্যান্য বইয়ের দাম বাড়ানোরও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
ওসমান গণির মতে, নানা কারণে এবার সবকিছুরই দাম ঊর্ধ্বমুখী। এতে স্বাভাবিকভাবেই বইয়ের দাম বাড়বে, বলা যায় দ্বিগুণ হবে।
উপকরণের দাম বাড়ায় বই ছাপার সংখ্যাও কমবে। তিনি বলেন, ‘সার্বিক পরিস্থিতির কারণে গতবারের চার ভাগের এক ভাগ বই ছাপবে প্রকাশকেরা। এ সংকট থেকে উত্তরণের জন্য সরকারের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। না হলে পাঠক, লেখক, প্রকাশক ও সরকার সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
অন্যপ্রকাশের প্রধান নির্বাহী মাজহারুল ইসলাম বলেন, বৈশ্বিক অস্থিরতার কারণে সবকিছুরই দাম বেড়েছে। প্রকাশনাশিল্পের প্রধান কাঁচামাল কাগজ, কালির দামও প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এতে স্বাভাবিকভাবেই বইয়ের দাম বাড়বে। এতে পাঠক আরও কমার শঙ্কা রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রকাশক জানান, আগে ২৫৬ পাতার ৫০০ কপি বই ছাপাতে খরচ হতো ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা। এখন ৬০ হাজার টাকার নিচে সম্ভব নয়।
বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহসভাপতি শ্যামল পাল বলেন, ‘কাগজ-কালি সবকিছুর দাম বেড়েছে। আমরা সমিতি থেকে প্রতি ফর্মা বইয়ের দাম ২৭ শতাংশ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ ছাড়া আমাদের সামনে আর কোনো উপায় নেই।’
এক পাঠ্যবই যেন একাধিক বছর ব্যবহার করা যায়
লেখক, কম্পিউটার বিজ্ঞানী ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের বেলায় কাগজের মান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমেরিকার পাঠ্যপুস্তক দেখেছি, সেগুলোর ছাপার মান ও কাগজ খুবই উন্নত। দেশে প্রতিবছর বিপুলসংখ্যক পাঠ্যবই ছাপা হয়। আমাদের মতো দেশের জন্য তা উপযুক্ত নয়। এতে বিপুল অর্থ ও কাগজ প্রয়োজন। আমার মনে হয়, এক পাঠ্যবই যেন একাধিক বছর ব্যবহার করা যায়, তার ব্যবস্থা করা উচিত। এতে অর্থ ও পরিবেশ দুটোর জন্যই ভালো। কারণ, কাগজ তৈরিতে প্রচুর মণ্ড প্রয়োজন হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘কাগজ সংকটে সৃজনশীল পাঠ্যবই ছাপা কমবে, এটা জাতির জন্য ভালো খবর নয়। আমার মতে, পাঠক যাতে কম মূল্যে ভালো মানের বই হাতে পায় সে বিষয়ে সরকারের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।’

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

একদিকে ডলার সংকটে আমদানি নিয়ন্ত্রণ, অন্যদিকে কাঁচামাল সংকটে স্থানীয়ভাবে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় বাজারে কাগজের সরবরাহে টান পড়েছে। এতে কাগজের দাম বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। সেই সঙ্গে বেড়েছে প্রকাশনাশিল্পের অন্যান্য উপকরণের দামও। এমনিতেই স্মরণকালের সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতিতে সংসারের খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে নিম্ন
০১ জানুয়ারি ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

একদিকে ডলার সংকটে আমদানি নিয়ন্ত্রণ, অন্যদিকে কাঁচামাল সংকটে স্থানীয়ভাবে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় বাজারে কাগজের সরবরাহে টান পড়েছে। এতে কাগজের দাম বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। সেই সঙ্গে বেড়েছে প্রকাশনাশিল্পের অন্যান্য উপকরণের দামও। এমনিতেই স্মরণকালের সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতিতে সংসারের খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে নিম্ন
০১ জানুয়ারি ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

একদিকে ডলার সংকটে আমদানি নিয়ন্ত্রণ, অন্যদিকে কাঁচামাল সংকটে স্থানীয়ভাবে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় বাজারে কাগজের সরবরাহে টান পড়েছে। এতে কাগজের দাম বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। সেই সঙ্গে বেড়েছে প্রকাশনাশিল্পের অন্যান্য উপকরণের দামও। এমনিতেই স্মরণকালের সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতিতে সংসারের খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে নিম্ন
০১ জানুয়ারি ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

একদিকে ডলার সংকটে আমদানি নিয়ন্ত্রণ, অন্যদিকে কাঁচামাল সংকটে স্থানীয়ভাবে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় বাজারে কাগজের সরবরাহে টান পড়েছে। এতে কাগজের দাম বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। সেই সঙ্গে বেড়েছে প্রকাশনাশিল্পের অন্যান্য উপকরণের দামও। এমনিতেই স্মরণকালের সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতিতে সংসারের খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে নিম্ন
০১ জানুয়ারি ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫