Ajker Patrika

ইছামতীপাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে আবার অভিযান শুরু

পাবনা প্রতিনিধি
আপডেট : ২৭ এপ্রিল ২০২২, ১৬: ১৩
ইছামতীপাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে আবার অভিযান শুরু

পাবনার ইছামতীপাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম দুই ধাপে শুরু হলেও মামলার জটিলতায় আটকে যায়। দীর্ঘ দুই মাস পরে উচ্চ আদালতের নির্দেশে তৃতীয় ধাপে মধ্য শহর দিয়ে প্রবাহিত ইছামতী নদীপাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে জেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও পাবনা পৌরসভার নেতৃত্বে এই কার্যক্রম চলে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এদিন সকাল থেকে পৌর এলাকার শালগাড়িয়া মহল্লা ও গাংকুলা এলাকা থেকে নদীপাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করা হয়। পৌর এলাকার মধ্যে প্রথম পর্যায়ে এক কিলোমিটার এলাকার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। বর্তমানে তিন কিলোমিটার এলাকার উচ্ছেদ কার্যক্রম চলবে। এই কার্যক্রমে নদীর দুই পাড়ে পাঁচ শতাধিক অবৈধ স্থাপনা রয়েছে।

উচ্ছেদ অভিযানের নেতৃত্ব দেন পাবনা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. রফিকুল হাসান, পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. শাহীন রেজা, পাবনা পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

জানা গেছে, ২০২১ সাল থেকে ইছামতী নদী উদ্ধার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে নদীপাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু হয়। প্রথম দিকে শহরের লাইব্রেরি বাজার বড় ব্রিজ থেকে দক্ষিণ মুখে অবৈধ উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হয়ে নদীর এক কিলোমিটার খননকাজ চলছে। একই সঙ্গে পদ্মা নদী থেকে চলে আসা নদীর উৎসমুখে আরও ২ কিলোমিটার সংযোগ খাল খনন করা হয়েছে। এরপরে দ্বিতীয় ধাপে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে হাইকোর্টের নির্দেশে আবারও উত্তর মুখে উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করা হয়। এর মধ্যে বৈধ বসতি দাবি করাদের উচ্চ আদালতে করা মামলার নিষ্পত্তি না হওয়ায় সেই সব স্থাপনা বাদ রেখে উচ্ছেদ কার্যক্রম চালায় প্রশাসন।

এদিকে উচ্চ আদালতের ৪৩টি মামলার নিষ্পত্তি শেষে হাইকোর্টের নির্দেশে তৃতীয় ধাপে আবারও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে নিম্ন আদালতে চলমান ৬টি মামলা থাকায় শুধু সেই সব স্থাপনা রেখে বাকি সব অবৈধ স্থাপনা আগামী এক মাসের মধ্যে নদীর সীমানা দখলমুক্ত করা হবে বলে জানান উচ্ছেদ সংশ্লিষ্টরা।

উচ্ছেদ কার্যক্রম নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা শাহীন আলম বলেন, ‘উচ্ছেদ কার্যক্রম করার আগে আইনগতভাবে আমাদের কোনো নোটিশ করা হয়নি। এই রমজানের আগে এ ধরনের বসতি উচ্ছেদ করা আইনসম্মত নয়। আমরা আইনগত ও সরকারের কাছে সঠিক বিচার প্রত্যাশা করেছিলাম। সরকারের উন্নয়নমূলক কাজে আমরা বাধা দিচ্ছি না। তবে শত বছরের পৈতৃকভাবে কেনা জমি আজ অবৈধ হয়ে গেছে। সরকার কেন আমাদের কাছ থেকে খাজনা খারিজ নিয়েছে। জমি রেজিস্ট্রি করেছে, পৌর কর নিয়েছে, পৌরসভা অনুমোদন দিয়েছেন বাড়ি তৈরি করার। আজ আমরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত।’

পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী শাহীন রেজা বলেন, নদীর দুই পাড়ে প্রায় সাড়ে ৩০০ তালিকাভুক্ত অবৈধ দখলদার রয়েছে। সিএস নকশা অনুযায়ী পূর্বনির্ধারিত নদীর সীমানা অনুসারে সব ধরনের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। তবে পৌর এলাকার ভেতরে ও বাইরে সব মিলিয়ে নদীর দৈর্ঘ্য প্রায় ৯ কিলোমিটার। এর মধ্যে পৌর এলাকায় রয়েছে সাড়ে ৪ কিলোমিটার নদী। এদিকে নদীর এক পাশে সাড়ে তিন কিলোমিটার এলাকার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে নদী খননের কাজ চলছে। তবে উচ্ছেদ না হওয়া নদীতীরবর্তী ২৩৫টি স্থাপনা বৈধ দাবি করা দখলদারদের করা উচ্চ আদালতের মামলার শুনানি শেষে ২২ এপ্রিল মামলা নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। এরই সঙ্গে ইছামতী নদী খননকাজে আর কোনো বাধা থাকছে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত