Ajker Patrika

বাস টার্মিনালে সীমাহীন দুর্ভোগ

খান রফিক, বরিশাল
আপডেট : ২৮ জুলাই ২০২২, ১৩: ২৯
বাস টার্মিনালে সীমাহীন দুর্ভোগ

একটু বৃষ্টিতেই কাদা-পানিতে একাকার হয়ে যায় নগরের নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল ও রূপাতলী বাস টার্মিনাল। জায়গা সংকুলান না হওয়ায় এখানকার অধিকাংশ বাস সড়কে পার্ক করায় যানজট লেগেই থাকছে। ফলে যাত্রীসহ পরিবহনসংশ্লিষ্টরা দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

নগরের রূপাতলী বাস টার্মিনালে গত মঙ্গলবার ঘুরে দেখা গেছে, কাদা-পানিতে ভেতরের অংশ একাকার হয়ে গেছে। এর মধ্যেই বাস থামছে। আশপাশে যাত্রীছাউনির অবস্থাও বেহাল। টার্মিনালের বাইরের সড়কে ১৫-২০টি বাস থাকায় সেখানে যানজট লেগেই আছে।

বাকেরগঞ্জে একটি কলেজে চাকরিজীবী সজল মাহমুদ সামির জানান, তিনি বাসে ঝালকাঠি থেকে বরিশালের রূপাতলী বাস টার্মিনালে নামেন। কিন্তু টার্মিনাল ছিল কাদা-পানিতে একাকার। সব যাত্রী কাদা-পানিতে দুর্ভোগে পড়েন। পাশের পাবলিক টয়লেটের পানি ছড়িয়ে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।

জুবায়ের হোসেন নামের এক যাত্রী ভান্ডারিয়া থেকে এসেছেন। তিনি বলেন, টার্মিনালে পানি থাকায় রাস্তার ওপরেই নামিয়ে দেওয়া হয়েছে।

কথা হয় ঝালকাঠি-বরিশাল রুটের এক বাসের হেল্পার সুমন হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, রূপাতলী বাস টার্মিনালের এমন অব্যবস্থাপনা দীর্ঘদিনের। কেবল যাত্রী নয়, স্টাফরাও এতে দুর্ভোগে পড়ছেন।

রূপাতলী বাস মালিক সমিতির সভাপতি কাওসার হোসেন শিপন আজকের পত্রিকাকে বলেন, এ বাস টার্মিনালে ২০০-এর বেশি বাস ১৮টি রুটে চলাচল করে। টার্মিনালের যে অবস্থা, তা বর্ষার সময় টাকা খরচ করে সংস্কার করা উচিত হবে না। এখানে ৩ একর জমি আছে। তাঁদের পরিকল্পনা আছে, আবদুর রব সেরনিয়াবাত সেতু সংলগ্ন এলাকায় ৭ একর জমিতে টার্মিনাল স্থানান্তর করবেন। তবে সেটা সময়ের ব্যাপার। তিনি স্বীকার করেন, টার্মিনালে স্থান সংকুলান না হওয়ায় বাসগুলো সড়কের ওপরে রাখতে হয়।

তবে স্থানীয় ২৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর জাকির হোসেন জানান, ড্রেন না থাকায় বাস টার্মিনালে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। এ বাস টার্মিনাল ঘিরে কয়েক হাজার শ্রমিক, মালিক, ব্যবসায়ী জড়িত। তাই এখানে ড্রেনের উন্নয়ন ও টার্মিনাল সংস্কারকাজ শিগগিরই শুরু করা হবে। তবে বাসস্ট্যান্ড স্থানান্তরের কোনো তথ্য তাঁর কাছে নেই।

এদিকে গতকাল বুধবার সকালে বরিশাল নগরের নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেল, অধিকাংশ বাস মহাসড়কের ওপর দাঁড়িয়ে থাকছে। টার্মিনালের ভেতরে গিয়ে দেখা গেল, সেখানে কাদায় থকথকে। নানা অব্যবস্থাপনার মধ্যে বাসে উঠছেন যাত্রীরা। কথা হয় সেখানকার শ্রমিক আবুল হোসেন, লাবু মিয়া, ফিরোজ হোসেনসহ কয়েকজনের সঙ্গে। তাঁরা জানান, বাসস্ট্যান্ডে জায়গা নেই, সড়কের ওপর বাস রাখতে হয়। যা আছে তারও অবস্থা খারাপ। যাত্রীদের মতো তাঁদেরও কষ্ট হয়। ওই এলাকার বাসিন্দা সুজন চৌধুরী জানান, নথুল্লাবাদ বাসস্ট্যান্ড পেরোতে তাঁদের আধা ঘণ্টা সময় লাগে। বাসগুলো সড়কে ফেলে রাখার কারণে যানজটের এ দুর্ভোগ দেখার কেউ নেই।

বরিশাল জেলা নথুল্লাবাদ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ফরিদ হোসেন আজকের পত্রিকাকে জানান, তাঁদের এখানে বাসের স্থান সংকুলান হয় না। পদ্মা সেতু হওয়ার পর গাড়িও বাড়ছে। যে কারণে নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল সরিয়ে কাশিপুরে নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। তিনি বলেন, সড়কের আশপাশের অবৈধ স্থাপনা এবং ছোট যান চলাচল বন্ধ না করলে নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল এবং কেন্দ্রীয় মহাসড়কে যানজট লেগেই থাকবে।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের পরিদর্শক বিদ্যুৎ মিত্র বলেন, নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালের যানজট নিয়ন্ত্রণ করা এখন কঠিন হয়ে পড়েছে। আশপাশের বাজার-মার্কেট, তাঁর ওপর ছোট যান এবং বাস সড়কের ওপরেই পড়ে থাকছে। যে কারণে পদ্মা সেতু চালুর পর এ সরু মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বাড়ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

‘ঘুষের জন্য’ ৯১টি ফাইল আটকে রাখেন মাউশির ডিডি: দুদক

রাখাইনে মানবিক করিডর কি প্রক্সি যুদ্ধের ফাঁদ হবে, ভারত-চীন কীভাবে দেখবে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত