Ajker Patrika

চাল বন্ধ, বিপাকে গরিবেরা

আনোয়ার হোসেন, মনিরামপুর (যশোর) 
চাল বন্ধ, বিপাকে গরিবেরা

অনলাইন তালিকা প্রস্তুত না হওয়ায় যশোরের মনিরামপুরে গত সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসের চাল পাননি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির তালিকাভুক্ত প্রায় সাড়ে ছয় হাজার কার্ডধারী। চলতি মাসেও তাঁদের চাল পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। অভিযোগ রয়েছে, ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও উপজেলা খাদ্য দপ্তরের সমন্বয়হীনতার কারণে দুস্থ এসব ব্যক্তি চাল পাননি।

তবে এ ব্যাপারে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ইন্দ্রজিৎ সাহার দাবি, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের বিরোধের কারণে সঠিক সময়ে তালিকা প্রস্তুতে সমস্যা হয়েছে।

উপজেলা খাদ্য দপ্তরের তথ্যমতে, উপজেলার ১৭ ইউনিয়নে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ২৩ হাজার ৪১৯ জন উপকারভোগী রয়েছেন। খাদ্য অধিদপ্তরের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভুয়া, মৃত, সচ্ছল ও প্রবাসী কার্ডধারীদের নাম বাদ দিয়ে নতুন নাম যুক্ত করতে গত এপ্রিলে একটি নির্দেশনা আসে। এরপর সভা করে চেয়ারম্যানদের তালিকা সংশোধনের জন্য বলা হয়। সভায় মোট তালিকার ১০ শতাংশ সংশোধনের জন্য বলা হলেও কোনো কোনো ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অর্ধেক নাম বাদ দিয়ে নতুন নাম ঢুকিয়ে তালিকা জমা দিয়েছেন, যা উপজেলা কমিটির অনুমোদন পায়নি।

জানা গেছে, কয়েকজন নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রকৃত দুস্থদের নাম বাদ দিয়ে নিজের অনুসারীদের নাম তালিকাভুক্ত করেছেন। কিছু ইউপিতে আবার সদস্যদের বাদ রেখে চেয়ারম্যান নিজের মতো অনুসারীদের নাম তালিকাভুক্ত করেছেন। এসব নিয়ে চেয়ারম্যান ও সদস্যদের মধ্যে বিরোধ দেখা দিয়েছে। ফলে তালিকা প্রস্তুতে দেরি হয়েছে।

মামুদকাটি গ্রামের খলিলুর রহমান বলেন, ‘আমি নৈশপ্রহরীর কাজ করি। আমার কার্ড রয়েছে। গত দুই মাস আমি চাল পাইনি। পরিবেশক বলেছেন, তালিকায় আমার নাম নেই।’ খেদাপাড়া ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম জিন্নাহ বলেন, ‘কিছু কার্ড বাদ পড়েছে। তা সংশোধন করে গত সপ্তাহে উপজেলায় জমা দিয়েছি। খলিলুর রহমান আঙুলের ছাপ দিতে পরিষদে আসেননি। এ জন্য তাঁর নাম বাদ পড়তে পারে। তিনি যোগ্য হলে তাঁকে অন্যভাবে সহায়তা করা হবে।’

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির উপজেলা কমিটির সদস্যসচিব উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ইন্দ্রজিৎ সাহা বলেন, ‘ভাতাভোগীদের যে তালিকা আছে, তা উদ্যোক্তাদের দিয়ে যাচাই করে চেয়ারম্যানরা আমাদের কাছে জমা দেওয়ার কথা। কিন্তু অনেক চেয়ারম্যান নিয়মনীতি না মেনে ইচ্ছেমতো তালিকা সংশোধন করে জমা দিয়েছেন, যা সভায় অনুমোদন পায়নি। পরে আবার তাঁদের কাছে সংশোধনী তালিকা চাওয়া হয়েছে। সে তালিকা সময়মতো না পাওয়ায় অনেকে চাল পাননি।’ ইন্দ্রজিৎ সাহা আরও বলেন, ‘আমরা সেপ্টেম্বরে ১৬ হাজার ১৯ জনকে এবং অক্টোবর ১৬ হাজার ৯৪৯ জনকে চাল দিয়েছি। নানা কারণে ৬ হাজার ৪৭০টি কার্ড বাতিল করা হয়েছে। এ কার্ডের পরিবর্তে নতুন নাম দেওয়ার জন্য চেয়ারম্যানদের বলা হয়েছে।’

ইন্দ্রজিৎ সাহা আরও বলেন, ‘গতকাল দুপুর পর্যন্ত ছয়টি ইউনিয়নের সংশোধিত তালিকা পেয়েছি। বাকিদের তাগিদ দেওয়া হচ্ছে। আগামী ১৫ তারিখের মধ্যে শতভাগ কার্ডধারীকে চাল দিতে পারব বলে আশা করছি।’

এদিকে তালিকা সংশোধনের জটিলতায় উপজেলার কাশিমনগর ইউনিয়নে এক হাজার উপকারভোগীর কেউ সেপ্টেম্বর মাসের চাল পাননি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তোমাদের যে কিছু করিনি, তা-ই ভাগ্য—ডাকাতির সময় দুই কিশোরীকে সাবেক সেনা কর্মকর্তা

বিকেলে চাঁদাবাজি নিয়ে লাইভ, রাতে সাংবাদিককে কুপিয়ে হত্যা

সাধুর বেশে এসে সাবেক স্ত্রীকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা

স্টার্টআপ থেকে স্মার্ট সিটি: যেভাবে দক্ষিণ কোরিয়ার বিনিয়োগ টানছে বাংলাদেশ

বরিশাল-১: স্বপন-কুদ্দুসের দ্বন্দ্বে নির্বাচনের আগে দলে অস্থিরতা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত