Ajker Patrika

কৃষকের চোখের পানির সঙ্গে একাকার বৃষ্টির পানি

সিরাজদিখান (মুন্সিগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৮ ডিসেম্বর ২০২১, ১০: ১৪
কৃষকের চোখের পানির সঙ্গে একাকার বৃষ্টির পানি

দেশে আলু উৎপাদনের অঞ্চল হিসেবে খ্যাত মুন্সিগঞ্জ জেলা। এ জেলার ৬টি উপজেলার মধ্যে সিরাজদিখান উপজেলায় সবচেয়ে বেশি আলু উৎপাদন হয়ে থাকে। গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে উপজেলায় প্রায় ১০ হাজারের মতো কৃষকের চোখের পানি ও বৃষ্টির পানি যেন একাকার হয়ে গেছে।

৩ দিনের বৃষ্টিতে উপজেলার আলু ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। রোপণকৃত জমি বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যাওয়ার সঙ্গে তলিয়ে গেছে তাঁদের স্বপ্ন। লগ্নি এবং সুদে টাকা এনে অনেকে আলু ফসল রোপণ করেছেন। তাঁদের এ ক্ষতি পোষাতে সরকারের প্রতি সহায়তা চান ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর উপজেলায় আলু চাষে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে ৭ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে বীজ আলু রোপণ করা হয়েছিল। সেখানে বৃষ্টির পানি জমে ৪ হাজার ৮০০ হেক্টর জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

কেয়াইন ইউনিয়নের আলুচাষি জাকির হোসেন বাবু, মালখানগর ইউনিয়নের আওলাদ হোসেন, কোলা ইউনিয়নের রাশেদ ও মধ্যপাড়া ইউনিয়নের আলী আকবর জানান, গত এক সপ্তাহের মধ্যে যাঁরা আলুবীজ রোপণ করেছেন, তাঁরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতির আশঙ্কায় রয়েছেন। অনেকে পুঁজি শেষ করে লাভের আশায় চাষাবাদ করে এখন দিশেহারা হয়েছেন। আবার অনেকে এক কানি (১৪০ শতাংশ) থেকে ১০ কানি পর্যন্ত জমিতে বীজ আলু রোপণ শেষ করেছেন। অনেকে কিছু জমি রোপণ করতে করতে বৃষ্টি আসায় কাজ বন্ধ করেছেন।

কৃষকেরা আরও জানান, অপরিকল্পিত জমি ভরাট ও রাস্তাঘাট তৈরি এবং খাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় অনেক এলাকায় পানি সরানো যাচ্ছে না। তাঁদের যে ক্ষতি হয়েছে, তা তাঁরা পুষিয়ে নিতে পারছেন না। তা ছাড়া, নতুন করে জমি আবাদ করা এখন সময়ের ব্যাপার। বৃষ্টি না থাকলেও জমি উপযুক্ত করতে কমপক্ষে ২ সপ্তাহ সময় লাগবে। এখন বীজ সংকট দেখা দিচ্ছে এবং বীজ বিক্রেতারা বীজের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন, এমন অভিযোগও রয়েছে অনেকের।

উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মো. মোশারফ হোসেন বলেন, ‘এ মুহূর্তে ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা সম্ভব নয়। দু-এক দিনের মধ্যে পানি সরে গেলে তা বলা যাবে। আমরা একটা তালিকা তৈরিতে কাজ করছি। কৃষকদের কীভাবে সহযোগিতা করবে, তা নীতিনির্ধারকেরা সিদ্ধান্ত নেবেন। আমরা সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রোজিনা আক্তার বলেন, নিম্নচাপ এবং অসময়ে বৃষ্টির কারণে সিরাজদিখানে আলুচাষিদের ক্ষতি হয়েছে। যেসব জমিতে আলুর গাছ বা লতাপাতা গজিয়েছে, সেই জমিতে ক্ষতি হওয়ার পরিমাণ কম। তা ছাড়া, তাৎক্ষণিক সমাধানের জন্য আমাদের কৃষি অফিসের অনেক লোক কাজ করছেন।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফয়েজুল ইসলাম বলেন, ‘কৃষকদের সহযোগিতার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত