Ajker Patrika

বাজারের চেয়ে ‘কম দাম’ গুদামে ধান দিতে অনীহা

গনেশ দাস, বগুড়া
বাজারের চেয়ে ‘কম দাম’ গুদামে ধান দিতে অনীহা

সরকারি দর আর বাজারদরের মধ্যে ১৮০ টাকা থেকে ২৩০ টাকা মণপ্রতি ফারাক থাকায় ধান পাচ্ছে না খাদ্য বিভাগ। চালের ক্ষেত্রেও কেজিপ্রতি ৪ থেকে ৮ টাকা বাজারে বেশি হওয়ায় চাল দিতেও আগ্রহ নেই মিলমালিকদের। এ কারণে সরকারের ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান ভেস্তে যাচ্ছে।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১৭ নভেম্বর থেকে বগুড়া জেলার ১২ উপজেলায় ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়। গত ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত মাত্র এক হাজার টন ধান ও ৩ হাজার ৫৩৫ টন চাল সংগ্রহ করা হয়েছে। অথচ আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ১০ হাজার ২২২ টন ধান এবং ২৬ হাজার ৯২১ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। এবার কৃষকের কাছ থেকে ২৮ টাকা কেজি দরে ধান এবং চুক্তিবদ্ধ চালকলমালিকদের কাছ থেকে ৪২ টাকা কেজি দরে চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।

খাদ্য বিভাগের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ বগুড়ার শেরপুরের লিটন সেমি অটো চালকলের পরিচালক নজরুল ইসলাম লিটন বলেন, ‘আমাদের প্রতিষ্ঠান খাদ্য বিভাগের সঙ্গে ১০০ টন চাল দেওয়ার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। কিন্তু খাদ্য বিভাগের দর ৪২ টাকা কেজি অনুয়ায়ী চাল সরবরাহ করতে গেলে আমাদের লোকসান হবে কেজিতে অন্তত ৩ থেকে ৪ টাকা। ১০০ টন চাল সরবরাহ করে লোকসান দাঁড়াবে তিন থেকে চার লাখ টাকা। এ কারণে আমরা এখন পর্যন্ত চাল সরবরাহ করতে পারিনি। লাইসেন্স রক্ষায় হয়তোবা লোকসান দিয়ে হলেও কিছু চাল খাদ্য বিভাগকে সরবরাহ করতে হবে।’

শেরপুরের চাল বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান মজুমদার প্রোডাক্টসের ক্রয় কর্মকর্তা মনোরঞ্জন বলেন, ‘ধানের বাজার চড়া। এ কারণে আমাদের প্রতিষ্ঠান খাদ্য বিভাগের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়নি। এক সপ্তাহ পর ধানের দাম আরও বাড়তে থাকবে। তাই ৪২ টাকা কেজি দরে চাল খাদ্যগুদাম সরবরাহ করা সম্ভব না।’

গতকাল সোমবার বগুড়ার বিভিন্ন হাটবাজার ঘুরে দেখা গেছে, মোটা ধান ১ হাজার ৩০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৩৫০ টাকা মণ দরে এবং মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৬ টাকা থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে।

নন্দীগ্রামের কৃষক ফজলুর রহমান বলেন, ডিসেম্বর মাসে ব্যবসায়ীদের ব্যাংক ক্লোজিংয়ের কারণে বড় ব্যবসায়ীরা কেউ ধান কিনছেন না।এ কারণে ধানের দাম কিছুটা কম। এক সপ্তাহ পর থেকে ধানের দাম বাড়তে থাকবে। জানুয়ারি মাসে খাদ্য বিভাগ ২৮ টাকা কেজি দরে ধান পাবে না।

বগুড়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক (অতিরিক্ত দায়িত্বে) মনিরুল ইসলাম বলেন, ধানের দাম যেভাবে বাড়ছে তাতে কৃষক ২৮ টাকা কেজি দরে খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি করবে না। চালের বিষয়ে তিনি বলেন, খাদ্য বিভাগ জেলার ৬৫ ভাগ মিলমালিকের সঙ্গে চুক্তি করেছে। তারা চুক্তি অনুযায়ী চাল সরবরাহ করবে। তাতে চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা ৬৫ ভাগ সফল হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত