Ajker Patrika

আলু নিয়ে বিপাকে কৃষক

নওগাঁ প্রতিনিধি
আপডেট : ২৭ অক্টোবর ২০২১, ১৬: ০৮
আলু নিয়ে বিপাকে কৃষক

নওগাঁয় আলুর ক্রমাগত দরপতনে বিপাকে পড়েছেন কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। তাঁদের দাবি, বর্তমান বাজার দরে বিক্রি করে মোট খরচের অর্ধেকও উঠছে না। ফলে এখনো হিমাগারে পড়ে আছে সংরক্ষণ করা সিংহভাগ আলু। এ অবস্থায় তাঁরা সরকারকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

সরেজমিনে বেশ কয়েকটি হিমাগারে দেখা গেছে, মৌসুম শেষের দিকে হলেও এখনো রয়ে গেছে প্রায় ৬০ ভাগ আলু। দেখা মিলছে না ক্রেতাদের। আলু বিক্রি করতে না পেরে হিমাগারের সামনে বসে কৃষকেরা হাহাকার করছেন। দরপতনে হতাশ হয়েছেন ব্যবসায়ীরাও।

চাষিরা বলছেন, উৎপাদন ও সংরক্ষণ খরচের পর এখন বড় লোকসানে তাঁরা। বর্তমান দরে আলু বিক্রি করে খরচের অর্ধেকও আসছে না। অথচ গত বছরের এই সময়ে হিমাগারে সংরক্ষণকৃত আলু বিক্রি নিয়ে তাঁদের ব্যস্ত সময় পার করতে হয়েছে।

ব্যবসায়ীরা জানান, ভালো দামের আশায় মৌসুমের শুরুতে আলু বিক্রি না করে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা হিমাগারে আলু মজুত করেন। কিন্তু এখন ভালো দাম না পেয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন সবাই। পুঁজি হারিয়ে অনেক ব্যবসায়ী নিঃস্ব হচ্ছেন বলে দাবি তাঁদের।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উৎপাদন ও হিমাগারের ব্যয় মিলিয়ে প্রকার ভেদে প্রতি বস্তা (৬০ কেজি) আলুতে খরচ পড়েছে ১ হাজার ৫০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা পর্যন্ত। কিন্তু বর্তমান বাজারে প্রতি বস্তা আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৭৫০ টাকায়। ফলে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের বস্তা প্রতি লোকসান গুনতে হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৭০০ টাকা পর্যন্ত। 
আলুচাষি আফরাফুল মণ্ডল বলেন, ‘এ বছর আলুর দাম খুবই কম। চাষের খরচও উঠছে না। যে আলু গত বছর ৫০ টাকা কেচি বিক্রি করেছি, সেই আলু বর্তমানে ১২ টাকা বিক্রি হচ্ছে। হিমাগারের ভাড়া দিয়ে আমরা নিঃস্ব হয়ে গেছি। দাম কমের কারণে অনেকে আলু হিমাগার থেকে তুলতেই আসছেন না।’

আলু ব্যবসায়ী আতাউর রহমান বলেন, ‘একদম পথে বসে গেছি। ২৪ টাকা কেজি আলু কিনে হিমাগারে রেখেছিলাম। এখন বিক্রি করছি ৮ থেকে ১০ টাকা কেজি। গত বছর আলুর দাম বেশি থাকায় সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণ করেছিল। কিন্তু এবার লোকসান ঠেকাতে সরকারের কোনো নজরদারি নেই।’

আরেক আলু ব্যবসায়ী রশিদুল ইসলাম জানান, বেশি লাভের আশায় সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে আলু কিনে হিমাগারে সংরক্ষণ করেছিলেন। বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে চাপে থাকার কারণে এখন দাম কম হওয়ায় সত্ত্বেও আলু বিক্রি করছেন। এ কারণে বড় ধরনের লোকসানে পড়েছেন তিনি। তাঁর দাবি, সরকারিভাবে হিমাগার থেকে আলু কিনে রপ্তানির উদ্যোগ নিলে নিঃস্ব হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পাবেন তাঁরা।

হিমাগার সংশ্লিষ্টরা জানান, কয়েক দিন পরেই আলু সংরক্ষণের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। অথচ হিমাগারে সংরক্ষিত আলু উত্তোলনে আগ্রহ নেই কৃষক ও ব্যবসায়ীদের। 
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শামছুল ওয়াদুদ বলেন, বেশি দামের আশায় কৃষকেরা আলু বিক্রি না করে হিমাগারে মজুত করেছেন। সবাই যখন একসঙ্গে হিমাগার থেকে আলু বের করে বিক্রি করতে যাচ্ছেন, তখন বাজারে দাম কমে গেছে। এ ছাড়া শুরুর দিকে দাম ঠিকই ছিল। মজুত করার কারণে দাম কমে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আলু চাষে কৃষকেরা যেন আগ্রহ না হারায় সে জন্য কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২০৫০ সাল নাগাদ ইনফ্লুয়েন্সারদের চেহারা কেমন হবে, ধারণা দিলেন গবেষকেরা

প্রিজন ভ্যান থামিয়ে ছাগল-কাণ্ডের মতিউরকে অনৈতিক সুবিধা, ১১ পুলিশ সদস্য বরখাস্ত

দেশে প্রথমবারের মতো চালু হলো ভয়েস ওভার ওয়াই-ফাই, সুবিধা কী

মেডিকেল কলেজ: মানের ঘাটতিতে হবে বন্ধ

জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে যাচ্ছেন না মোদি, কী বার্তা দিচ্ছে দিল্লি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত