Ajker Patrika

চাঁদার ভাগ নিয়ে দ্বন্দ্বে শরীফ চৌধুরী খুন

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
আপডেট : ১০ এপ্রিল ২০২২, ১৪: ৩৮
চাঁদার ভাগ নিয়ে দ্বন্দ্বে শরীফ চৌধুরী খুন

ময়মনসিংহ নগরীর চরপাড়া এলাকায় ছুরিকাঘাতে শরীফ চৌধুরী ওরফে শান্ত খুনের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। নগরীর চরপাড়া এলাকার ফুটপাতে অস্থায়ী দোকান থেকে তোলা সাপ্তাহিক চাঁদার টাকা ভাগাভাগির দ্বন্দ্বে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে বলে আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানিয়েছে পিবিআই।

গ্রেপ্তার তিনজন হলেন মহানগরীর মো. শান্ত ইসলাম (২০), সদর উপজেলার পরানগঞ্জ ভাটিপাড়া এলাকার মো. আরিফুজ্জামান আরিফ (২২) ও তারাকান্দা উপজেলার মো. রাকিবুল হাসান তপু (২৫)। গতকাল শনিবার দুপুরে জেলা পিবিআই কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস এ তথ্য জানান।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার ভোরে নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লার ভিন্ন ভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস বলেন, নিহত শরীফ চৌধুরী শান্ত এবং হত্যাকাণ্ডে জড়িত সবাই একে অপরের বন্ধু ছিলেন। তাঁরা নগরীর চরপাড়া এলাকায় একসঙ্গে ফুটপাতে অস্থায়ী দোকান থেকে সাপ্তাহিক চাঁদা তুলতেন।’

গৌতম কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘সম্প্রতি নিহত শরীফ আলাদা গ্রুপ করে চাঁদার টাকা তুলতে শুরু করেন। পরে গ্রেপ্তার তিনজন শরীফকে অনেক বুঝিয়ে তাঁদের গ্রুপে আসতে বলেন এবং চাঁদার টাকা ভাগাভাগি করে নিতে বলেন। এতে শরীফ অস্বীকৃতি জানান। এই ক্ষোভ থেকে গ্রেপ্তার তিনজনসহ মোট পাঁচজন তাঁকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।’

গৌতম কুমার বিশ্বাস জানান, পরিকল্পনামতে গত বুধবার রাত ১২টার দিকে মণ্ডল প্লাজা, চরপাড়া চৌধুরী ক্লিনিকের গলিতে ওত পেতে বসে থাকেন তাঁরা। এ সময় শরীফ আসতেই তাঁকে উপর্যুপরি ১৮ বার বুকে ও পিঠে ছুরিকাঘাত করে ফেলে রেখে যান। পরে শরীফের মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছে কি না দেখার জন্য আবার ঘটনাস্থলে আসেন। এ সময় তাঁকে মৃত পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান।’

স্থানীয় বাসিন্দারা শরীফকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। গ্রেপ্তার আসামিরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনায় সরাসরি সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন। পরে আসামি আরিফুজ্জামান আরিফের তথ্য অনুযায়ী পরানগঞ্জের ভাটিপাড়ায় তাঁর নিজ বাড়ির পেছনে খড়ের পুঞ্জির ভেতর থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দুটি চাকু আলামত হিসেবে উদ্ধার করা হয়।

এদিকে নিহত শরীফের বাবা শহিদ চৌধুরী বলেন, ‘আমার ছেলে ও গ্রেপ্তার হওয়া তিনজনই যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল। তবে তাদের দলীয় কোনো পদ ছিল না। অল্প কিছুদিনের মাঝেই আমার ছেলের যুবলীগের পদ পাওয়ার কথা ছিল।’ ওই পদ নিয়ে দ্বন্দ্বেই তাঁর ছেলেকে খুন করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

এ বিষয়ে মহানগর যুবলীগের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রাসেল পাঠান বলেন, ‘শরীফ চৌধুরী নামে কেউ যুবলীগের সঙ্গে জড়িত ছিল না। তা ছাড়া আমি ওই ছেলেকে চিনি না।’

এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার রাতে নিহত শরীফের বাবা শহিদ চৌধুরী কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন। তাঁদের বাড়ি গৌরীপুর উপজেলার টাঙ্গুয়ায়। তবে বাবার ক্লিনিক ব্যবসার সুবাদে নগরীর চরপাড়া এলাকায় পরিবারের সঙ্গে থাকতেন শরীফ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত