Ajker Patrika

বাঁধের আশায় ৭ লাখ মানুষ

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৩ জানুয়ারি ২০২২, ১৩: ৫৩
বাঁধের আশায় ৭ লাখ মানুষ

লক্ষ্মীপুরে সাড়ে ৩১ কিলোমিটার মেঘনার বাঁধ নির্মাণের জন্য ৩ হাজার ৯০ কোটি টাকার প্রকল্প পাস হয়েছে। কিন্তু প্রকল্প পাসের পর সাড়ে ছয় মাসেও বাঁধ নির্মাণকাজ শুরু হয়নি। লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও কমলনগর উপজেলার প্রায় ৭ লাখ মানুষ বাঁধের অপেক্ষায় দিন গুনছেন। এলাকাবাসী কাজটি সেনাবাহিনীর মাধ্যমে বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন।

গত ১ জুন সরকার মেঘনা নদীর তীর সংরক্ষণের জন্য সাড়ে ৩ হাজার ৯০ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনীতি পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, জেলায় ৯৬ কিলোমিটার বন্যা প্রতিরোধ বেড়িবাঁধ রয়েছে। মেঘনার থাবায় প্রায় ৩৭ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ বিলীন হয়ে গেছে। এ ছাড়া প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমি সম্পন্ন নদীগর্ভে বিলীন হয়। শত বছরের পুরোনো চরকালকিনি, মাতব্বরহাটসহ অন্তত ৩০টি হাট-বাজার, ২৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুরোপুরি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়।

২০১৬ সাল থেকে ২০২১ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ৫ বছরে দুই উপজেলায় প্রায় ৬০ হাজার মানুষ বসতভিটা হারিয়ে গৃহহীন হয়েছেন। গত বর্ষায় রামগতি ও কমলনগর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নতুন করে ভাঙন দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে ভাঙনের কবলে পড়েছে কমলনগর উপজেলার সাহেবেরহাট, পাটওয়ারীরহাট, চরফলকন, নাছিরগঞ্জ বাজার, মাতব্বরহাট, লুধুয়া ও রামগতি উপজেলার বাংলাবাজার, জনতবা বাজার, আসলপাড়া, গাবতলী ও বড়খেরীসহ ২০টি এলাকার প্রায় ১৫ কিলোমিটার এলাকা।

লরেন্সের বাসিন্দা মো. নোমান সিদ্দিকী, নবীগঞ্জের সিরাজুল ইসলাম ও হুমায়ুন কবির জানান, কমলনগর উপজেলার নাছিরগঞ্জ বাজার গত দুই মাস আগেও নদীর দূরত্ব ছিল প্রায় আধা কিলোমিটার। কিন্তু দুই মাসের ব্যবধানে মেঘনার ভাঙনে এ নাছিরগঞ্জ বাজার নদীগর্ভে চলে যাওয়ার পথে। একই অবস্থায় দুই উপজেলার অন্তত ২০টি এলাকা।

সরকার বাঁধ নির্মাণের প্রকল্প পাস করেছে। কিন্তু এখনো বাঁধের কাজ শুরু হয়নি। কবে শুরু হবে, তাও নিশ্চিত নয়। যদি এখন বাঁধের কাজ শুরু করা না হ, আগামী বর্ষায় এ দুই উপজেলার বেশির ভাগ এলাকা নদীগর্ভে চলে যাবে। দ্রুত বাঁধের কাজ শুরু করার দাবি জানান তাঁরা।

দীর্ঘদিন ধরে নদী বাঁধের দাবিতে আন্দোলনে থাকা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কমলনগর-রামগতি বাঁচাও মঞ্চের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার পালোয়ান ও রামগতি উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক মেজবাহ উদ্দিন হেলাল এখনো কাজ শুরু না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেন।

কমলনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মেজবাহ উদ্দিন ও রামগতি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শরাফ উদ্দিন আজাদ সোহেল জানান, দীর্ঘ তিন যুগের সংকট সমাধান হয়েছে। এটি সরকারের বড় একটি সাফল্য। যা অতীতে কোনো সরকার করেনি।

লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফারুক আহমেদ জানান, ৩১ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে ১০ কিলোমিটার বাঁধের দরপত্র গ্রহণ করা হবে ৬ জানুয়ারি। ১৪ কিলোমিটার বাঁধের মূল্যায়নের কাজ চলছে। এরপর বাকি ৬ কিলোমিটার বাঁধের মূল্যায়ন করে দরপত্র আহ্বান করা হবে। আশা করি, জানুয়ারির শেষদিকে কাজ শুরু করা সম্ভব হবে।

জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. আনোয়ার হোছাইন আকন্দ বলেন, মেঘনার ভাঙন প্রতিরোধে সরকারের যে প্রতিশ্রুতি ছিল, তা এখন বাস্তবায়নের অপেক্ষায়। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে এ এলাকার মানুষের জীবনমান উন্নয়নের পাশাপাশি পাল্টে যাবে অর্থনীতির চাকাও।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

পিটুনিতে নিহত সেই শামীম মোল্লাকে বহিষ্কার করল জাবি প্রশাসন, সমালোচনার ঝড়

চিন্ময় দাসের জামিন স্থগিতের আবেদন, শুনানি রোববার

মধুপুরে বিদ্যালয়ে ঢুকে শিক্ষককে জুতাপেটা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত