Ajker Patrika

নদী দখল করে স্থাপনা

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৪: ৪৯
নদী দখল করে স্থাপনা

লক্ষ্মীপুরে বেদখল হয়ে যাচ্ছে সদর উপজেলার রহমতখালী নদী। এ অবস্থা জেলার রামগঞ্জ উপজেলার বীরেন্দ্র খালের। জাতীয় নদ-নদী রক্ষা কমিশনের নির্দেশে অবৈধ দখলদারদের তালিকা তৈরি করা হলেও বাদ পড়ে গেছে অধিকাংশ দখলদারের নাম। এমনকি কিছু অংশের দখলদারের তালিকাই করা হয়নি।

দেখা গেছে, জেলা শহর থেকে চন্দ্রগঞ্জ পর্যন্ত রহমতখালী নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে দুই পাড়ে গড়ে উঠেছে অবৈধ স্থাপনা। এতে একসময়ের ঐতিহ্যবাহী নদীটি সংকুচিত হয়ে অস্তিত্ব হারাতে বসেছে। বাজারকেন্দ্রিক ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে দূষিত হচ্ছে নদীর পানি।

বিভিন্ন নথি অনুযায়ী, রহমতখালী নদীটি ফেনী জেলা থেকে উৎপত্তি হয়ে নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরের ওপর দিয়ে মেঘনা নদীতে মিলেছে। প্রায় ৮৫ মাইল দীর্ঘ এ নদীর প্রস্থ ১৪১ গজ ও গভীরতা ৩৫ হাত। কাগজ-কলমে এই হিসাব থাকলেও বাস্তবে তার মিল পাওয়া কঠিন।

জেলার সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ, মান্দারী, জকসিন বাজার ও পৌর এলাকার ঝুমুর সিনেমা হলসংলগ্ন, মাদাম, বাজার ব্রিজসংলগ্ন এলাকায় নদীর দুই পাড়ে, গোশতহাটা-সংলগ্ন মসজিদের পাশে নদী পাড়ে স্থায়ী-অস্থায়ী ইমারত বা দোকানঘর নির্মাণ করা হয়েছে। এ কয়েকটি স্থানে পুরোনো স্থাপনার পাশাপাশি নতুন করে স্থাপনা তৈরি হচ্ছে।

প্রশাসনের উদ্যোগ না থাকায় দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন দখলদারেরা। বিশেষ করে ঝুমুর সিনেমা হলসংলগ্ন ময়দা কারখানার পেছনের বিস্তীর্ণ অংশ ও বাজার ব্রিজের পূর্ব পাশে হায়দার শপিং কমপ্লেক্সের পেছনে খালের দুই পাড় দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। মান্দারী বাজারের ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া রহমতখালী সরু নালায় পরিণত হয়েছে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি জাতীয় নদ-নদী রক্ষা কমিশনের নির্দেশনায় অবৈধ দখলদারদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এ তালিকায় রহমতখালী নদীর দখলদার হিসেবে শুধু জেলা শহরের মাদাম থেকে বাজার ব্রিজ অংশ পর্যন্ত ৭৬ নম্বর মজুপুর মৌজার ২১৩ দাগ, ৬৩ বাঞ্ছানগর মৌজার ৮৪০১ ও ১৬৬২২ দাগে মাত্র ছয়জনের নাম রয়েছে। শহর অংশেই অনেক দখলদারের নাম তালিকার বাইরে রয়ে গেছে। শহরের বাইরে জকসিন, মান্দারী ও চন্দ্রগঞ্জ অংশের তালিকা তৈরি করা হয়নি।

এদিকে রামগঞ্জের বীরেন্দ্র খালের ৯৬ জন অবৈধ দখলদারের তালিকা প্রণয়ন করেছে উপজেলা প্রশাসন। রামগঞ্জ মধ্যবাজার ব্রিজ থেকে মডেল মসজিদ পর্যন্ত ৬৫ নম্বর আঙ্গরপাড়া ও ৬৭ নম্বর কাজিরখিল মৌজার অংশে খালের ওপর অবৈধভাবে স্থাপনা তৈরি করে রেখেছেন দখলদারেরা।

খালপাড়ের বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন থেকে বীরেন্দ্র খাল দখল করে ইমারত নির্মাণ করে ব্যবসা ও বসবাস করে আসছেন দখলদারেরা। ফলে প্রবহমান এ খালটি মরা খালে পরিণত হয়েছে। এতে বর্ষায় জলাবদ্ধতা ও শুষ্ক মৌসুমে কৃষিকাজে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

লক্ষ্মীপুর পৌর মেয়র মোজাম্মেল হায়দার মাসুম ভূঁইয়া বলেন, কয়েক দিন থেকে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার জলাবদ্ধতা নিরসনে নদীটি পরিষ্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পরিষ্কার করলেও দখলের কারণে আবার ময়লা জমে যায়। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে অভিযান চালিয়ে রহমতখালী নদীর পৌরসভা অংশ অবৈধ দখল মুক্ত করা হবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফারুক আহমেদ বলেন, ‘রামগঞ্জের বীরেন্দ্র খাল এবং সদর উপজেলার রহমতখালী নদীর শুধু বাজার অংশে অবৈধ দখলদারদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষে ভূমি অফিস ও আমাদের সার্ভেয়ার যৌথভাবে জরিপের মাধ্যমে তালিকা তৈরি করেছে। জেলা-উপজেলা প্রশাসন এবং পৌর কর্তৃপক্ষের সমন্বয়ে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে। খালের যেসব স্থানে অবৈধ দখলদারদের তালিকা তৈরি করা হয়নি, সেগুলো সরেজমিন দেখে তালিকা করা হবে।’

নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, এর আগে ২০১৯ সালে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের উদ্যোগ নেয় প্রশাসন। কিন্তু করোনার কারণে সেটা থমকে ছিল। এবার খালের দুই পাড়ে সৌন্দর্য বর্ধন করে জনসাধারণের হাঁটার রাস্তা তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

অপারেশন সিন্দুর ঘিরে আলোচিত কে এই কর্নেল সোফিয়া কুরেশি

কাশ্মীরে বিধ্বস্ত বিমানের অংশবিশেষ ফরাসি কোম্পানির তৈরি, হতে পারে রাফাল

সীমান্তে সাদা পতাকা উড়িয়ে আত্মসমর্পণের ইঙ্গিত দিয়েছে ভারত: পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী

নিজ কার্যালয়ে র‍্যাব কর্মকর্তার গুলিবিদ্ধ লাশ, পাশে চিরকুট

আকাশ প্রতিরক্ষায় কে এগিয়ে, পাকিস্তান কি ভারতের আক্রমণ ঠেকাতে সক্ষম

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত