Ajker Patrika

নদীতে মাছ মিলছে না বিপাকে জেলেরা

জয়নুল আবেদীন, সাঘাটা (গাইবান্ধা)
আপডেট : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৪: ৫৭
নদীতে মাছ মিলছে না বিপাকে জেলেরা

গাইবান্ধার সাঘাটার মাঝিপাড়া গ্রামের জ্যোসনা চন্দ্র দাস। চার দশক ধরে যমুনা নদীতে মুঠো জাল দিয়ে মাছ ধরে বাজারে বিক্রি করেন। এ দিয়ে তাঁর পাঁচ সদস্যের পরিবারের জীবিকা নির্বাহ করেন; কিন্তু কয়েক বছর ধরে নদীতে আর তেমন মাছ মিলছে না। সারা দিন নদী ও খাল-বিলে জাল ফেলেও ২০০-৩০০ টাকার মাছও ধরা না পাড়ায় অর্থকষ্টে পড়েন তিনি। তাঁর মতো একই অবস্থা মাঝিপাড়ার বলরাম, নিপেন, কার্তিকসহ অর্ধশত জেলে পরিবারের।

জানা যায়, বংশপরম্পরায় এসব প্রাকৃতিক উৎস নদী ও খাল-বিল থেকে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন উপজেলার প্রায় দুই হাজার জেলে। বর্তমানে মৎস্যজীবী পরিবারের সংখ্যা শ তিনেকের বেশি হবে না। কারণ নদী বা খাল-বিলের ওপর নির্ভর করে এখন সংসার চালানো কঠিন। তাই এই পেশা ছেড়ে জেলেরা ভিন্ন পেশায় সম্পৃক্ত হতে বাধ্য হচ্ছেন।

একই কথা জানান সাঘাটা মৎস্যজীবী সমিতির সদস্য মোংলা চন্দ্র দাস। তিনি বলেন, মুক্ত জলাশয় এখন আর মুক্ত নেই, স্থানীয় প্রভাবশালীরা খাল-বিল দখল করে মাছ নিধন করছেন। যার ফলে মুক্ত জলাশয়ে মাছ ধরা পেশার সঙ্গে সম্পৃক্তরা চরম কষ্টে দিনাতিপাত করছেন।

উপজেলার ঝাড়া বর্ষা গ্রামের বিপুল চন্দ্র দাস জানান, নদীতে মাছ ধরে আর সংসার চলে না। স্থানীয় লোকজন বিভিন্ন ধরনের জাল কিনে নদীতে মাছ ধরছে। ক্রমান্বয়ে কমে যাচ্ছে মাছের পরিমাণ। এ কারণে একটি এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে মাছ ব্যবসায় সম্পৃক্ত হয়েছেন। এতে সংসারের অভাব-অনটন কিছুটা কমেছে বলে জানান তিনি।

সাঘাটা উপজেলা ভূমিহীন সমিতির সভাপতি দেলোয়ার হোসেন জানান, নদীর নাব্য সংকটে মাছের আবাসস্থল আর নেই। আর এর প্রভাব পড়েছে মৎস্যজীবী জেলে পরিবারগুলোতে। এসব পরিবারের অনেকেই ভিন্ন পেশায় সম্পৃক্ত হচ্ছেন বলে জানান তিনি।

তিনি আরও জানান, ক্ষতিগ্রস্ত এসব পরিবারের জীবন-জীবিকার উন্নয়নে সরকারকে বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

সাঘাটা ইউপি চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন সুইট জানান, এসব পরিবারের লোকজনের কোনো আর্থিক সামর্থ্য, সঞ্চয় ও ভিন্ন কর্মদক্ষতা না থাকায় কষ্টেসৃষ্টে জীবনযাপন করছেন।

তিনি মনে করেন, সময়ের বিবর্তনে এসব পরিবারের জীবন-জীবিকার উন্নয়নে সরকারের বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। এ জন্য তিনি জেলে পরিবারের শিশুদের শিক্ষা ও যুবকদের কারিগরি দক্ষতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ নিয়ে আয় উপার্জনমূলক কর্মের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়া উচিত বলে অভিমত ব্যক্ত করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত