Ajker Patrika

পাটের ফলন ও দামে হতাশা

লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি
পাটের ফলন ও দামে হতাশা

নাটোরের লালপুরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি পরিমাণ পাট চাষ করা হয়েছে। তবে ফলন ও দাম কম হওয়ায় কৃষকেরা হতাশায় পড়েছেন। লাভের আশায় অধিক খরচে পাট চাষ করে কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় দিশেহারা তাঁরা।

উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্র জানা গেছে, গত কয়েক বছর লাভবান হওয়ায় পাটের আবাদে ঝুঁকেছেন কৃষকেরা। চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৫ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও চাষ হয়েছে ৭ হাজার ৪২০ হেক্টরে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ হাজার ৯২০ হেক্টর বেশি। হেক্টরপ্রতি ২ দশমিক ৪ মেট্রিক টন হারে ১৭ হাজার ৮০৮ মেট্রিক টন পাটের আঁশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

উপজেলার ভূঁইয়াপাড়া খলিশাডাঙ্গা নদী, মোহরকয়া কয়লারডহর পদ্মার পাড়, নছিরার বিল, সালামপুর, বোয়ালিয়াপাড়া বিল, নাওদাঁড়া, ময়না, নান্দ, ধানাইদহ, চাঁনপুরসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকেরা জমিতে পাট কাটা, জাগ দেওয়া, পাট থেকে আঁশ ছাড়ানো, পাট শুকাতে ব্যস্ত সময় 
পার করছেন।

পাটচাষি শফিকুল ইসলাম বলেন, এক বিঘা জমি তৈরিতে তিনবার চাষ করেছেন তিনি। এর জন্য বীজ, সার ও কীটনাশক, নিড়ানি-পরিচর্যা, কাটা ও পাট জাগ দিতে পুকুর ভাড়া, আঁশ ছাড়ানো, পরিবহনে মোট ১৯ হাজার ৫০০ টাকা খরচ হয়েছে। এ ছাড়া জমির ইজারা নিতে ৫ হাজার টাকা অতিরিক্ত খরচ হয়েছে।

শ্রমিক নজিমুদ্দিন জানান, প্রতিদিন ৪০০ টাকা মজুরিতে ভোর থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত কাজ করেন। এতে সংসার চালানো দায় হয়ে পড়েছে।

জিনিসপত্রের দাম বাড়লেও তাঁদের মজুরি বাড়েনি। আবার কৃষকদের লোকসান দেখে তাঁদেরও কিছু বলতে পারছেন না তাঁরা।

স্থানীয় কৃষক ফজলুর রহমান বলেন, বর্ষা মৌসুমে পর্যাপ্ত পানি না হওয়ায় খাল-বিলে পানির অভাবে পাট জাগ দিতে বিপাকে পড়েন তাঁরা। এ বছর পাটের উৎপাদন খরচ বিঘাপ্রতি হয়েছে ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা। ফলন হয়েছে ৭ থেকে ৮ মণ। বিক্রি হচ্ছে প্রায় ১৬ হাজার থেকে ২১ হাজার টাকায়। চাষিদের বিঘাপ্রতি লোকসান গুনতে হচ্ছে ৪ থেকে ৬ হাজার টাকা। আর যাঁরা জমি লিজ নিয়ে পাট চাষ করেছেন, তাঁদের বিঘাপ্রতি ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা বেশি লোকসান গুনতে হচ্ছে।

স্থানীয় পাট ব্যবসায়ী মজিবর রহমান বলেন, এ বছর এলাকায় ভালো মানের পাটের উৎপাদন খুবই কম হয়েছে। তাই মিলে চাহিদা কম থাকায় দাম কম পাওয়া যাচ্ছে। প্রতি মণ পাট মান অনুপাতে ২ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৬০০ টাকায় কিনছেন।

গোপালপুর পৌরসভার সাবেক কমিশনার ও কৃষক সেলিম রেজা বলেন, কৃষকেরা পাট চাষ করে বিপদে পড়েছেন। ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় সোনালি আঁশে আগ্রহ হারাচ্ছেন। সেই সঙ্গে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে শ্রমিকদের জীবনযাপনে নাভিশ্বাস উঠেছে। এ ক্ষেত্রে পাটের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত ও শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধিতে ভর্তুকির দাবি জানান।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, এ বছর অধিক খরা আর অনাবৃষ্টিতে পাটের উৎপাদন খরচ তুলনামূলক বেশি পড়েছে। পুকুর-ডোবা-নালায় পানি সংকটে যত্রতত্র পাট জাগ দেওয়ায় গুণগত মান ও রং ভালো না হওয়ায় কৃষকেরা দাম পাচ্ছেন না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

স্ত্রীকে নিয়ে টানাটানি করা সেই দুই পুরুষের জামিন, কারাফটকে উত্তেজনা

উত্তর দিক থেকে সিগন্যাল নেই—শাপলা প্রতীক না পাওয়ার কারণ জানালেন হাসনাত

জোর করে বৃদ্ধের চুল কেটে দেওয়া বেআইনি ও সুস্পষ্ট মানবাধিকার লঙ্ঘন— ভাইরাল ভিডিও নিয়ে আসক

চাল রপ্তানিতে নতুন শর্ত দিল ভারত, বাংলাদেশে কতটা প্রভাব পড়বে

মামুনুরের খোঁজ মেলেনি ৫ দিনেও, ক্লু নেই সিসিটিভি ফুটেজে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত