Ajker Patrika

শিক্ষার্থীদের খাবার কেড়ে নিলেন ছাত্রলীগের নেতারা

রাবি প্রতিনিধি
আপডেট : ২৭ মার্চ ২০২২, ১২: ৪৬
শিক্ষার্থীদের খাবার কেড়ে নিলেন ছাত্রলীগের নেতারা

মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দকৃত বিশেষ খাবারের শতাধিক প্যাকেট কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের নেতাদের বিরুদ্ধে। গতকাল শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ড. শামসুজ্জোহা হলে এ ঘটনা ঘটে। ফলে হলটির অনেক আবাসিক শিক্ষার্থীই স্বাধীনতা দিবসের এই বিশেষ খাবার থেকে বঞ্চিত হন।

অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন জোহা হলের ছাত্রলীগ সভাপতি চিরন্তন চন্দ ও তাঁর অনুসারী ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ফারসি বিভাগের শিক্ষার্থী বাঁধন ও ওয়াহিদ। এ ছাড়া হলের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মোমিন ইসলাম, তাঁর অনুসারী তুষার, মিনাল ও আলামিন প্রমুখও এ ঘটনায় অভিযুক্ত। তাঁদের সঙ্গে অন্যান্য হলের বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মীও ছিলেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে বিশ্ববিদ্যায়ের হল কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে নেতৃত্ব পাওয়ার দুদিনের মাথায় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এমন কর্মকাণ্ড ঘটালেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও আবাসিক শিক্ষার্থী সূত্রে জানা যায়, মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭টি হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য এক বেলা বিশেষ খাবারের বরাদ্দ করে কর্তৃপক্ষ। এ জন্য প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ৩০ টাকার বিনিময়ে টোকেন সংগ্রহ করতে হয়। গতকাল শনিবার দুপুর ১২টা থেকে হলের ডাইনিংয়ে কর্মচারীরা টোকেন জমা নিয়ে খাবার পরিবেশন শুরু করেন। কিছুক্ষণ পর ছাত্রলীগের চিরন্তন চন্দ ও মো. মোমিনসহ অন্তত ২০ জন বিনা টোকেনে খাবার নিতে যান। কর্তৃপক্ষের নিষেধ সত্ত্বেও দলীয় প্রভাব খাটিয়ে খাবার নিয়ে যান তাঁরা। প্রত্যেকেই ৫-৭টি করে প্যাকেট নিয়ে যান বলে প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা বলেন। এতে হলটির অন্তত এক শ শিক্ষার্থী খাবার থেকে বঞ্চিত হন।

হল সূত্রে আরও জানা যায়, জোহা হলে ৪৩০ আবাসিক শিক্ষার্থী থাকেন। আবাসিক শিক্ষার্থী, হলের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য মোট ৪৮০ প্যাকেট খাবার প্রস্তুত করা হয়। কিন্তু ছাত্রলীগের নেতাদের এমন কর্মকাণ্ডে খাবারের ঘাটতি তৈরি হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে খাবার না পাওয়া কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘তিন দিন আগে আমি বিশেষ খাবারের টোকেন কিনে নিয়েছিলাম। কিন্তু বেলা একটার একটু আগে গিয়ে খাবার পাইনি। পরে প্রাধ্যক্ষ স্যার বাইরে থেকে খাবার নিয়ে এসে আমাদের দিয়েছেন।’

এ বিষয়ে জানতে ছাত্রলীগের হলের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মোমিন ইসলামকে মোবাইলে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে হলের ছাত্রলীগের সভাপতি চিরন্তন চন্দ বলেন, ‘হলের প্রাধ্যক্ষ স্যার ছাত্রলীগের সবার খাবার এক সঙ্গে দেবে বলে আমরা সেখানে যাই। তবে আমি ডাইনিংয়ে খুব অল্প সময় থাকার পর চলে আসি। আমাদের আসার পর হলে অনেকে নাম ভাঙিয়ে খাবার নিতে পারেন। সে বিষয়ে বলতে পারছি না। আমরা কোনো বেশি খাবারের প্যাকেট নিইনি।’

হল প্রাধ্যক্ষ একরামুল ইসলাম বলেন, ‘সকাল থেকেই আমরা খাবারের প্যাকেটসহ আনুষজ্ঞিক কাজ করছিলাম। খাবার বিতরণ শুরু করলে ছাত্রলীগের প্রায় ২০ জন এসে টোকেন ছাড়াই অনেক খাবারের প্যাকেট নিয়ে যান। আমরা বারবার বলার পরও তাঁরা কোনো কথা শোনেননি। পরবর্তী সময়ে শিক্ষার্থীদের খাবার দিতে বাইরে থেকে খাবার নিয়ে আসি।’ তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানিয়েছি, তারা এখন যে ব্যবস্থা গ্রহণ করে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, জোহা হলের বিষয়ে প্রভোস্ট স্যারের সঙ্গে কথা হয়েছে। বিষয়টির সমাধান হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সমাবেশে দলীয় স্লোগান ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনে বাধা দেওয়া প্রসঙ্গে এনসিপির বিবৃতি

তোরা যারা রাজাকার, সময় থাকতে বাংলা ছাড়: বাকের মজুমদার

কঠোর হচ্ছে যুক্তরাজ্যের অভিবাসন নীতি, স্থায়ী বসবাসের আবেদনে অপেক্ষা ১০ বছর

চাকরিতে কোটা: সমতলের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য আসছে সমান সুযোগ

রাজপথের চাপে কোনো বিচার করা সম্ভব নয়: চিফ প্রসিকিউটর

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত