Ajker Patrika

নিত্যপণ্যের দামে নাভিশ্বাস

মধুপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ মার্চ ২০২২, ১৭: ৫৭
নিত্যপণ্যের দামে নাভিশ্বাস

নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়ার এক রকম প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেছে। ফলে নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষের নাভিশ্বাস দেখা দিয়েছে। তেল থেকে শুরু করে সবজির দাম নিম্ন আয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। এতে ক্ষোভ দেখা গেছে তাঁদের মাঝে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমিয়ে সাধারণ মানুষের জীবনধারণ স্বাভাবিক করার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

গতকাল শুক্রবার মধুপুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি ঢ্যাঁড়স ১০০ থেকে ১০৫ টাকা, করলা ১১০, এক কেজির বেশি মধ্যম আকারের মিষ্টি কুমড়ার দাম ১০০ থেকে ১২০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। সয়াবিন তেলের দাম ২০০ টাকা। শজনে বিক্রি হচ্ছে দোকানভেদে ২০০ থেকে ২০৫ টাকায়। ডিমের হালি ৩০ টাকা থেকে বেড়ে ৩৪ টাকা হয়েছে। হাটে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকা কেজি দরে। সোনালি মুরগি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। দেশি মুরগির কেজি ৪৩০ টাকা।

মধুপুর হাটের সবজি ব্যবসায়ী আব্দুল হালিম বলেন, ‘পাইকারি বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদের বিক্রি ও লাভ দুটোই কমে গেছে। ১৯০ টাকা কেজি দরে শজনে কিনে বিক্রি করছি ২০০ টাকায়। ঢ্যাঁড়স ও করলা কিনেছি ৯০ টাকা কেজি। আপনিই বলুন বিক্রি করব কত টাকায়? আমাদের শ্রমমূল্য আছে। ভিটি (দোকানের স্থান) ভাড়া আছে। বাজারের খাজনা আছে। বিদ্যুৎ বিল, জেনারেটরের বিল আছে। এসব খরচ অন্তর্ভুক্ত করেই আমাদের দাম নির্ধারণ করতে হয়।’

টেকিপাড়া গ্রামের মোনসের আলী একজন ইটভাটাশ্রমিক। তিনি বলেন, ‘গরিবের অইছে মরণ। গত মঙ্গলবার হাটে পেঁয়াজ কিনছি ৩০ টাকা কেজি। আর আজ (শুক্রবার) ৫৫ টাকা দরে কিনতে হচ্ছে। সয়াবিন তেল মাত্র ২৫০ গ্রাম কিনলাম ৫০ টাকায়। চিনি ৮৫ টাকা কেজি। মোটা মসুরের ডাইল তাও ১০০ টাকার ওপরে। আমার রোজগারই কত? সংসারের খরচই মিটামু কিবায়?’

ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন বলেন, বাজারে দেশি মাছ পাওয়াই দুষ্কর। চাষের মাছের দামও অন্য সময়ের চেয়ে অনেক বেশি। ইলিশের নাম নিলেই ১ হাজার ৪০০ টাকা কেজি। বড় সাইজের কিনলে ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৩০০ টাকা।

পুরুষের পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের চড়া দামে উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেছেন নারীরাও। গৃহবধূ রুবিনা হাতে থাকা লাউ দেখিয়ে বলেন, ‘হাফ সেঞ্চুরি অতিক্রম করেছে। অনেক দামদর করে ৬৫ টাকা দিয়ে লাউটি কিনতে পারলাম। মাছের বাজারে পাঙাশ বা তেলাপিয়া কেনা ছাড়া আমাদের কোনো গতি নাই। তাও ১৬০ টাকা কেজি।’

এ সময় আক্ষেপ করে রুবিনা আরও বলেন, ‘মাংসের দাম হইছে কেজিতে ৬৫০ টাকা। যামু কই? খামু কী? চারটা ডাঙ্গা (ডাঁটা) ৩০ টাকা। ৩০ টাকার নিচে কোনো শাক নাই।’

বেসরকারি চাকরিজীবী ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘আমরা সামান্য বেতনে চাকরি করি। আমাদের আয়ের সঙ্গে ব্যয়, সাধের সঙ্গে সাধ্য কোনোটারই সমন্বয় নেই। এ অবস্থা উত্তরণে কারও কোনো নজর নেই। বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম ক্রেতাসাধারণের সাধ্যের মধ্যে আনতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পদক্ষেপ নেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।’

মধুপুর শিল্প ও বণিক সমিতির প্রধান ও সাবেক সাংসদ খন্দকার আনোয়ারুল হক বলেন, ‘নিয়ন্ত্রণ না থাকায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যগুলো জনগণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। সরকার এ ব্যাপারে সম্পূর্ণ উদাসীন। এই সুযোগে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে জনগণের কষ্টার্জিত অর্থ তাদের পকেটে নিয়ে নিচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জোবাইদার নিরাপত্তার নামে প্রতিবেশীদের বিরক্ত না করার নির্দেশ তারেক রহমানের

হেফাজতসহ ধর্ম ব্যবসায়ীরা নারীবিদ্বেষী প্রচারণা চালাচ্ছে: ৬৮ মানবাধিকার সংগঠন

মানিকগঞ্জে সালিসে বিএনপি নেতার নির্দেশে পাঁচ ভাইকে জুতাপেটা

রাখাইনে মানবিক করিডর: জান্তার আপত্তিতে সরকারে দ্বিধা

ভারতের ব্ল্যাকআউট মহড়া, সীমান্তে আটার মজুত বাড়াচ্ছে পাকিস্তান, যুদ্ধ কি লেগে যাচ্ছে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত