Ajker Patrika

এই ট্রফি দেশের মানুষের: সাবিনা

সাহিদ রহমান অরিন, ঢাকা
আপডেট : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৮: ৫১
এই ট্রফি দেশের  মানুষের: সাবিনা

দলকে এক সুতোয় গাঁথা, সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া, গোলবন্যা বইয়ে দলের জয়ে বিশেষ অবদান রাখা—সাবিনা খাতুন আক্ষরিক অর্থেই দেখিয়ে দিয়েছেন ‘যে রাঁধে, সে ফুটবল মাঠও কাঁপায়’। আসলে বাংলাদেশ নারী দলের অধিনায়কের ভূমিকা সীমাহীন!

২০০৭ সালে ভিশন এশিয়া প্রোগ্রামের আওতাধীন একটি টুর্নামেন্ট দিয়ে ফুটবলের সঙ্গে পরিচয় হয় বাংলাদেশের নারীদের। এরপর স্কুল ফুটবল, জেলা পর্যায়ের টুর্নামেন্টে সাফল্য পাওয়াদের নিয়ে জাতীয় দল গঠন। ১৫ বছরের মধ্যে সেই দলটাই আজ সাফের চ্যাম্পিয়ন।

দেশকে দক্ষিণ এশিয়ার সেরা বানানোর এ বন্ধুর পথের প্রায় প্রতিটি ধাপের সাক্ষী সাবিনা। ২০১৫ সালে অংম্রাচিং মারমা দায়িত্ব ছাড়লে অধিনায়কের বাহুবন্ধনী ওঠে তাঁর হাতে। তখন থেকেই কোচ গোলাম রব্বানী ছোটনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র তিনি।

দেশের ফুটবল ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোল, ক্লাব ফুটবলে শীর্ষ গোলদাতা, প্রথম বাংলাদেশি নারী ফুটবলার হিসেবে একাধিক বিদেশি লিগে (মালদ্বীপ ও ভারতে) খেলার সুযোগ—সব রেকর্ডই লুটিয়ে পড়েছে সাবিনার পায়ে। তাঁর ব্যক্তিগত নৈপুণ্যে দলও হয়েছে সাফল্যমণ্ডিত। ২০১০ সালে দক্ষিণ এশিয়ান (এসএ) গেমসে ব্রোঞ্জ জয়ী দলের গর্বিত সদস্য তিনি। ৬ বছর পর তাঁর নেতৃত্বেই সাফে রানার্সআপ হয় বাংলাদেশ। কিন্তু দলকে সাফল্যের চূড়ায় তোলা হচ্ছিল না কিছুতেই। 

২০১৬ সালে শিলিগুড়ির ফাইনালে ভারতের কাছে হেরে শিরোপার খুব কাছ থেকে ফিরে আসা। ২০১৯ সালের সেমিফাইনালে সেই ভারতের কাছেই আরেক দফা নাকাল হওয়া। ওই ব্যর্থতাগুলোই বোধ হয় তাতিয়ে দিয়েছিল সাবিনাকে। কাঠমাণ্ডুর দশরথে যেন তাই ‘একাই এক শ’ হওয়ার অভিযানে নেমেছিলেন এই ফরোয়ার্ড।

প্রথমবার নারী সাফ জিতে বাংলাদেশ পেয়েছে ক্রীড়াঙ্গনে এই দশকের সেরা সাফল্য। ৮ গোল করে সাবিনা জিতে নিয়েছেন সর্বোচ্চ গোলদাতা (গোল্ডেন বুট) ও টুর্নামেন্ট-সেরার খেতাব। আসরে বাংলাদেশ গোল করেছে ২৩টি; যার এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি করেছেন সাবিনা একাই! দলের শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চে নেওয়ার পথে দুই-দুইবার পেয়েছেন হ্যাটট্রিকের দেখা। গতকালে ফাইনালে নেপালের জাল খুঁজে নিতে না পারলেও একটি গোলে অবদান রেখেছেন তিনি।

সব মিলিয়ে এবারের টুর্নামেন্টকে নির্দ্বিধায় ‘সাবিনার সাফ’ বলাই যায়। তবে গৌরবোজ্জ্বল সাফল্যের ভাগীদার হয়েও আত্মতুষ্টিতে ভুগছেন না তিনি। শিরোপা নিয়ে দেশে ফেরার অপেক্ষায় থাকা অধিনায়ক ম্যাচ শেষে তীব্র উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন দেশবাসীর জন্য, ‘দীর্ঘ ১২-১৩ বছরের অপেক্ষা শেষ হয়েছে। দেশবাসীর দোয়া ছিল। সবাই ট্রফি ঘরে নিয়ে আসতে বলেছিল। এই ট্রফি দেশের মানুষের।’

ব্যক্তিগত অর্জন নিয়ে সাবিনা বলেছেন, ‘আমি সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার ও আসরের সবচেয়ে মূল্যবান খেলোয়াড়ের পুরস্কারও জিতেছি। শিরোপা জেতার সঙ্গে এটা অনেক বড় অর্জন। এটাই আমার জীবনের সেরা দিন।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ না করার প্রস্তাব

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

‘ঘুষের জন্য’ ৯১টি ফাইল আটকে রাখেন মাউশির ডিডি: দুদক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত