Ajker Patrika

মেলা বন্ধে বিপাকে ব্যবসায়ী

দৌলতপুর ও সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৬ এপ্রিল ২০২২, ১১: ৪৬
মেলা বন্ধে বিপাকে ব্যবসায়ী

মানিকগঞ্জের দৌলতপুর ও সাটুরিয়ায় বৈশাখী মেলা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। আয়োজকেরা বলছেন, শতবর্ষ ধরে চলে আসা মেলা হঠাৎ বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। আর প্রশাসন বলছে, অনুমতি না নিয়ে এসব মেলা আয়োজন করায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

দৌলতপুর: উপজেলার চকমিরপুর ইউনিয়নের শিববাড়ী এলাকায় প্রায় ২০০ বছর আগে থেকে চলে আসছে চড়ক মেলা। এটি মূলত সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উৎসব। চড়ক মেলায় বাঁশ, বেত, প্লাস্টিক, মাটি ও ধাতব তৈজসপত্র এবং খেলনাসহ বিভিন্ন ধরনের বিন্নি খই, দই, মিষ্টি ও ফল বেচাকেনা হয়। তবে গত বুধবার চৈত্রসংক্রান্তির দিন এ মেলা বন্ধ করে দেয় দৌলতপুর থানা-পুলিশ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার রাত থেকেই চৈত্রসংক্রান্তি মেলাকে কেন্দ্র করে উপজেলার আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মেলায় অংশগ্রহণকারী দোকানিরা আসতে থাকেন। তবে বুধবার হঠাৎ করেই মেলায় দোকান বসতে বাধা দেয় দৌলতপুর থানা-পুলিশ। এতে স্থানীয় দোকানিরা ও মেলায় আগত দর্শনার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

দৌলতপুর মন্দির কমিটির সভাপতি দিলীপ ফৌজদার এবং সাধারণ সম্পাদক নিরঞ্জন কর্মকার জানান, চৈত্রসংক্রান্তি শিব পূজার এই মেলায় আদৌ কোনো কমিটি ছিল না এবং এখনো নেই। শত শত বছর ধরে চলে আসা এই মেলায় কোনো দিনই থানা-পুলিশসহ প্রশাসনিক কোনো অনুমোদন নেওয়া লাগেনি।

মেলা বন্ধ করায় মিষ্টির দোকানি শেফালি ঘোষ নামের এক মহিলা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি মেলা উপলক্ষে ৪৫ মণ মিষ্টি বানিয়েছিলেন। তা বিক্রি হবে না চিন্তা করেই অসুস্থ হন বলে তাঁর স্বজনেরা দাবি করেছেন।

উপজেলার চকমিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শফিক বলেন, আশপাশের এলাকা থেকে বিভিন্ন দোকানি মেলাকে কেন্দ্র করে মিষ্টি-দইসহ বিভিন্ন পণ্য নিয়ে আসেন। কিন্তু এবার মেলার অনুমতি নেয়নি বলে থানা-পুলিশ থেকে ঐতিহ্যবাহী এ মেলা বন্ধ করা হয়েছে।

মেলা বন্ধ করা প্রসঙ্গে দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাকারিয়া হোসেন বলেন, ‘মেলার কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি। এ ছাড়া এ মেলা পরিচালনার কোনো কমিটিও নেই। এই মেলা বসার জায়গা নিয়েও একটা সমস্যা আছে। মেলা চললে হয়তো সংঘর্ষ বাধতে পারে, তাই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।’

দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইমরুল হাসান বলেন, ‘মেলাটি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অনেক পুরোনো একটা মেলা। এ মেলা বন্ধ করার কারণ আমি খুঁজে পাইনি। আমি যতটুকু জানি, মেলা চললে কোনো সমস্যা হতো না।’

সাটুরিয়া: উপজেলার বালিয়াটি জমিদার বাড়ির সামনে আড়াই শ বছরের পুরোনো বৈশাখী মেলা বন্ধ করে দেওয়া হয়। গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে এ মেলা শুরু হওয়ার কথা ছিল। গতকালই তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

ব্যবসায়ীরা জানান, বৃহস্পতিবার পয়লা বৈশাখের দিনেই সাটুরিয়ার হাটবার হওয়ায় স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ীদের অনুরোধে বালিয়াটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মীর সোহেল আহমেদ চৌধুরী বাজারে ঢোল দিয়ে শুক্রবার মেলার আয়োজন করেন। কিন্তু শুক্রবার সকালে পুলিশ এসে মেলা বন্ধ করে দেন।

উপজেলার ভাটারা গ্রামের ননী বণিক বলেন, ‘করোনার সময় আমরা কোনো মেলা করতে পারিনি। আশা করছিলাম বালিয়াটি বৈশাখী মেলা করব। ব্যাংক থেকে ও সুদ করে প্রায় ২ লাখ টাকা নিয়ে সাজ ও বিন্নি তৈরি করেছিলাম। কিন্তু পুলিশ মেলা বন্ধ করে দিল। এখন এসব সাজ, বিন্নি কোথায় বিক্রি করব?’

সাটুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, মেলায় কোনো কমিটি নেই। এ ছাড়া প্রশাসনের কাছ থেকে মেলা করার অনুমতি নেই। তাই শুক্রবার সকাল থেকে পুলিশ বসিয়ে মেলা যাতে না বসতে পারে, সে ব্যবস্থা করা হয়েছে।

সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আরা বলেন, জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে মেলার কোনো অনুমতি না থাকায় মেলা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত