Ajker Patrika

আইনের চেয়েও সার্চ কমিটিতে সায় জাপার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২১, ০৯: ৪০
আইনের চেয়েও সার্চ  কমিটিতে সায় জাপার

পরবর্তী নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের প্রথম দিনে অংশ নিল জাতীয় পার্টি (জাপা)। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে গতকাল সোমবার বঙ্গভবনে দেড় ঘণ্টাব্যাপী আলোচনায় নির্বাচন কমিশন আইন প্রণয়নের বিষয়টি গুরুত্ব পেলেও জাপার সায় রয়েছে সার্চ কমিটিতেই। সে জন্য পাঁচজনের নামের তালিকাও রাষ্ট্রপতির কাছে দিয়েছেন জাপা চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদের।

সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের জিএম কাদের বলেন, ইসি আইন প্রণয়নসহ তিনটি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে রাষ্ট্রপতির কাছে। যদি আইন প্রণয়ন কোনোভাবেই না হয়, সে ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের দিয়ে সার্চ কমিটি গঠন করার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। তিনি বলেন, ‘আমরা রাষ্ট্রপতিকে বলেছি, যদি অধ্যাদেশের মাধ্যমে না করতে পারেন, তাহলে যেটি সার্চ কমিটি গঠনের মাধ্যমে করা হয়, সেটিও আপনারা করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে সার্চ কমিটি গঠনের জন্য কিছু যোগ্য ও নিরপেক্ষ ব্যক্তির নামের তালিকা আমরা দিয়েছি।’

জি এম কাদের বলেন, ‘রাষ্ট্রপতিকে বলেছি, একজন যোগ্য এবং সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করতে। কীভাবে করা হবে সেটা নির্বাচন কমিশন আইনে সুষ্ঠুভাবে ব্যাখ্যা থাকতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা এটাও বলেছি নির্বাচন কমিশন গঠন করলেই হবে না, নির্বাচন কমিশনকে কর্তৃত্ব দিতে হবে। সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদে পরিষ্কার বলা আছে যে, নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালনে সহায়তা করা সকল নির্বাহী কর্তৃপক্ষের কর্তব্য হবে। এই বিষয়টি সংবিধানে থাকলেও বাস্তবে আমরা এর বাস্তবায়ন দেখছি না। এ জন্য আমরা মনে করি সংবিধানের এই বিধানকে একটি আইনের আওতায় আনা উচিত।’

তবে এই আইন প্রণয়নে যে সময় দরকার সেটা নেই। সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে কীভাবে আইন প্রণয়ন করা যায় সে ব্যাপারে কোনো সহযোগিতা প্রয়োজন হলে জাপা তা দেবে। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে হওয়া আলোচনায় সে বিষয়টিও স্থান পেয়েছে। তবে আইন প্রণয়নের বিকল্প হিসেবে জাপা অধ্যাদেশ জারির প্রস্তাব দিয়েছে। যা পরবর্তী সংসদ অধিবেশনে এটি অনুমোদন করা যেতে পারে।

ইসি গঠন নিয়ে রাষ্ট্রপতির সংলাপ বিষয়ে বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বলেন, ‘গত ৫০ বছর যারা দেশ শাসন করলেন তারা দেশের সংবিধান লঙ্ঘন করে দেশ শাসন করার কারণে এখন পর্যন্ত একটা আইনগত ভিত্তির ওপরে নির্বাচন কমিশন দাঁড় করাতে পারেনি। সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন সাংবিধানিক নিয়মের বাইরে। পরবর্তীতে এই আইন হবে এমন আশ্বাসে আমরা গতবারও সংলাপে গিয়েছিলাম। কিন্তু সেই অভিজ্ঞতাটা ভালো ছিল না। এই সংলাপও কার্যকর কিছু হবে না। এতে অতীতের পুনরাবৃত্তি ঘটবে।’

চলমান সংলাপ প্রসঙ্গে এক বিবৃতিতে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) বলেছে, নির্দলীয়, সৎ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনের ক্ষেত্রে জনগণের প্রত্যাশাকে গুরুত্ব দিয়ে আইন প্রণয়ন করতে হবে। নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের লক্ষ্যে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে রাষ্ট্রপতির সংলাপ গুরুত্বপূর্ণ, তবে যথেষ্ট নয়। সংলাপ করে সার্চ কমিটির মাধ্যমে ইসি গঠন পদ্ধতিতে ইতিপূর্বে কাঙ্ক্ষিত ইতিবাচক ফল আসেনি। তাই নির্দলীয়, সৎ ও গ্রহণযোগ্য ইসি নিয়োগে অবিলম্বে আইন প্রণয়ন করতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত