শামীম হোসেন, ঢাকা
আমাদের ছোট গ্রাম মায়ের সমান/আলো দিয়ে বায়ু দিয়ে বাঁচাইয়াছে প্রাণ/মাঠ ভরা ধান তার জল ভরা দিঘি/চাঁদের কিরণ লেগে করে ঝিকিমিকি। শৈশবে বাড়ির বারান্দা কিংবা উঠানে বসে সব ভাই-বোন মিলে কবি বন্দে আলী মিয়ার এই কবিতা পড়তাম। বাবা পাশে বসে মুগ্ধ হয়ে শুনতেন। কখনো কখনো বিদ্রোহী কবি ‘দুখু মিয়া’র জীবনকাহিনি পড়তাম। পড়তে বসলেই বাবা বলতেন, ‘দুখু মিয়া’র কাহিনিটা আবার পড় তো, শুনি।
শুধু বাবা নন, গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়ির বড়রা শিশু-কিশোর পড়ুয়াদের পাশে বসে থাকতেন পড়ার সময়। কেউ পড়া বন্ধ করলেই ধমক দিতেন। কখনো কখনো বাড়ির পাশ দিয়ে ফেরিওয়ালা গেলে তাঁকে ডেকে বাতাসা, গজা, মুড়ির মোয়া কিংবা আইসক্রিম কিনে দিতেন। শৈশবে আমাদের গ্রামের প্রতিদিনের চিত্র প্রায় একই রকম ছিল।
নওগাঁ শহরের মন্দিরের মোড় থেকে উত্তর দিকে কিছু দূর গেলেই পড়বে একটি বিল। বিলের মাঝখান দিয়ে চলে গেছে পিচঢালা আঁকাবাঁকা সড়ক। সেই সড়ক ধরে কিছু দূর গেলে ছায়াঢাকা একটি গ্রাম। শহর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরের এই গ্রামের নাম শাহজাদপুর। আমার জন্মস্থান। আমার প্রাণপ্রিয় গ্রাম। মায়ের মতো আপন।
আমাদের গ্রামে এখন আর বন্যা হয় না। শৈশবে দেখেছি বর্ষাকালে গ্রামের চারপাশে পানি। কলাগাছের ভেলা বানিয়ে আমরা সেই পানিতে ভাসাতাম। বর্ষার শেষদিকে বন্যার পানি নামা শুরু হলে মাছ ধরতাম। গ্রামের ছেলে-বুড়ো সবাই সেই মাছ ধরা উৎসবে যোগ দিতাম। গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে সেই মাছের ভাগ চলে যেত।
বর্ষায় কাজ থাকত না গ্রামের মানুষের। সারা দিন টিপটিপ বৃষ্টির কারণে বাড়িতে আটকে থাকতাম সবাই। তখন গ্রামে বাড়িতে বাড়িতে ছাতা ছিল না। মাথাল মাথায় দিয়ে পা টিপে টিপে এ বাড়ি থেকে ও বাড়ি যেতাম। তারপর সারা দিন দহলিজে বসে গ্রাম্য খেলাধুলা চলত। কখনো কখনো মা-চাচিরা পেঁয়াজ-মরিচ দিয়ে মেখে চাল ভাজা কিংবা মুড়ি এনে দিতেন। তা খেয়েই সারা দিন কাটিয়ে দেওয়া যেত। বয়স্করা পাশে বসে হুঁকো টানতেন। সেই হুঁকোর শব্দে অনেক সময় শিশুরা ভয় পেয়ে যেত।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত আমার গ্রাম। গ্রামের একপাশে কয়েকটি হিন্দুবাড়ি আছে। সে বাড়ির সদস্যরা পালাপার্বণ কিংবা বিয়েতে আমাদের কাউকে কাউকে দাওয়াত দেন। তেমনি আমরাও তাঁদের রেখে কোনো উৎসব করি না।
এখন আকাশ সংস্কৃতি গ্রাস করেছে আমাদের সম্প্রীতির মেলবন্ধনকে। কারও যেন অবসর নেই অন্যকে নিয়ে ভাবার। এখন দহলিজে আড্ডা বসে না। দিনভর গ্রামীণ খেলা হয় না। তার বদলে সবাই মোবাইল ফোনে মুখ গুঁজে বসে থাকে। চায়ের দোকানে দেয় আড্ডা। রাজনীতি প্রতিটি ঘরে ঢুকে গেছে। এখন গ্রাম আর শহরের মধ্যে তফাত খুঁজে পাওয়া ভার।
আমাদের গ্রামের মাঠে প্রচুর ফসল উৎপাদন হয়। ধান, পাট ও বিভিন্ন ধরনের সবজিতে ভরে থাকে মাঠ। একসময় দুয়েকটা ছাড়া সব বাড়ি ছিল মাটির। এমনকি মাটির দোতলা বাড়িও ছিল। এখন সে স্থান দখল করেছে ইটের দালান। পুরো গ্রামে মাটির বাড়ি নেই বললেই চলে।
সেই কবে গ্রাম ছেড়েছি। এই ইটের দেয়ালঘেরা শহরে জীবনের প্রয়োজনে থাকলেও মন পড়ে থাকে গ্রামে। সবসময় নাড়ির টান অনুভব করি। আমার ভালোবাসা আমার গ্রাম। ভালো থাকুক আমার গ্রাম, ভালো থাকুক আমার গ্রামের মানুষ, আমার আপনজনেরা।
আমাদের ছোট গ্রাম মায়ের সমান/আলো দিয়ে বায়ু দিয়ে বাঁচাইয়াছে প্রাণ/মাঠ ভরা ধান তার জল ভরা দিঘি/চাঁদের কিরণ লেগে করে ঝিকিমিকি। শৈশবে বাড়ির বারান্দা কিংবা উঠানে বসে সব ভাই-বোন মিলে কবি বন্দে আলী মিয়ার এই কবিতা পড়তাম। বাবা পাশে বসে মুগ্ধ হয়ে শুনতেন। কখনো কখনো বিদ্রোহী কবি ‘দুখু মিয়া’র জীবনকাহিনি পড়তাম। পড়তে বসলেই বাবা বলতেন, ‘দুখু মিয়া’র কাহিনিটা আবার পড় তো, শুনি।
শুধু বাবা নন, গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়ির বড়রা শিশু-কিশোর পড়ুয়াদের পাশে বসে থাকতেন পড়ার সময়। কেউ পড়া বন্ধ করলেই ধমক দিতেন। কখনো কখনো বাড়ির পাশ দিয়ে ফেরিওয়ালা গেলে তাঁকে ডেকে বাতাসা, গজা, মুড়ির মোয়া কিংবা আইসক্রিম কিনে দিতেন। শৈশবে আমাদের গ্রামের প্রতিদিনের চিত্র প্রায় একই রকম ছিল।
নওগাঁ শহরের মন্দিরের মোড় থেকে উত্তর দিকে কিছু দূর গেলেই পড়বে একটি বিল। বিলের মাঝখান দিয়ে চলে গেছে পিচঢালা আঁকাবাঁকা সড়ক। সেই সড়ক ধরে কিছু দূর গেলে ছায়াঢাকা একটি গ্রাম। শহর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরের এই গ্রামের নাম শাহজাদপুর। আমার জন্মস্থান। আমার প্রাণপ্রিয় গ্রাম। মায়ের মতো আপন।
আমাদের গ্রামে এখন আর বন্যা হয় না। শৈশবে দেখেছি বর্ষাকালে গ্রামের চারপাশে পানি। কলাগাছের ভেলা বানিয়ে আমরা সেই পানিতে ভাসাতাম। বর্ষার শেষদিকে বন্যার পানি নামা শুরু হলে মাছ ধরতাম। গ্রামের ছেলে-বুড়ো সবাই সেই মাছ ধরা উৎসবে যোগ দিতাম। গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে সেই মাছের ভাগ চলে যেত।
বর্ষায় কাজ থাকত না গ্রামের মানুষের। সারা দিন টিপটিপ বৃষ্টির কারণে বাড়িতে আটকে থাকতাম সবাই। তখন গ্রামে বাড়িতে বাড়িতে ছাতা ছিল না। মাথাল মাথায় দিয়ে পা টিপে টিপে এ বাড়ি থেকে ও বাড়ি যেতাম। তারপর সারা দিন দহলিজে বসে গ্রাম্য খেলাধুলা চলত। কখনো কখনো মা-চাচিরা পেঁয়াজ-মরিচ দিয়ে মেখে চাল ভাজা কিংবা মুড়ি এনে দিতেন। তা খেয়েই সারা দিন কাটিয়ে দেওয়া যেত। বয়স্করা পাশে বসে হুঁকো টানতেন। সেই হুঁকোর শব্দে অনেক সময় শিশুরা ভয় পেয়ে যেত।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত আমার গ্রাম। গ্রামের একপাশে কয়েকটি হিন্দুবাড়ি আছে। সে বাড়ির সদস্যরা পালাপার্বণ কিংবা বিয়েতে আমাদের কাউকে কাউকে দাওয়াত দেন। তেমনি আমরাও তাঁদের রেখে কোনো উৎসব করি না।
এখন আকাশ সংস্কৃতি গ্রাস করেছে আমাদের সম্প্রীতির মেলবন্ধনকে। কারও যেন অবসর নেই অন্যকে নিয়ে ভাবার। এখন দহলিজে আড্ডা বসে না। দিনভর গ্রামীণ খেলা হয় না। তার বদলে সবাই মোবাইল ফোনে মুখ গুঁজে বসে থাকে। চায়ের দোকানে দেয় আড্ডা। রাজনীতি প্রতিটি ঘরে ঢুকে গেছে। এখন গ্রাম আর শহরের মধ্যে তফাত খুঁজে পাওয়া ভার।
আমাদের গ্রামের মাঠে প্রচুর ফসল উৎপাদন হয়। ধান, পাট ও বিভিন্ন ধরনের সবজিতে ভরে থাকে মাঠ। একসময় দুয়েকটা ছাড়া সব বাড়ি ছিল মাটির। এমনকি মাটির দোতলা বাড়িও ছিল। এখন সে স্থান দখল করেছে ইটের দালান। পুরো গ্রামে মাটির বাড়ি নেই বললেই চলে।
সেই কবে গ্রাম ছেড়েছি। এই ইটের দেয়ালঘেরা শহরে জীবনের প্রয়োজনে থাকলেও মন পড়ে থাকে গ্রামে। সবসময় নাড়ির টান অনুভব করি। আমার ভালোবাসা আমার গ্রাম। ভালো থাকুক আমার গ্রাম, ভালো থাকুক আমার গ্রামের মানুষ, আমার আপনজনেরা।
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১১ দিন আগেভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫পাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
০৮ মে ২০২৫