Ajker Patrika

আবদার না মানায় ক্ষিপ্ত ইউপি চেয়ারম্যানের কাণ্ড

আবদার না মানায় ক্ষিপ্ত ইউপি চেয়ারম্যানের কাণ্ড

যশোরের মনিরামপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাসহ তাঁর তিন সহকারীকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে মশ্মিমনগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় শিক্ষা কর্মকর্তা সেহেলী ফেরদৌসসহ লাঞ্ছিত ব্যক্তিরা বিচার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

এদিকে এ ঘটনায় শুনানির সময় গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ইউএনওর দপ্তরে তাঁর সামনে আবারও ইউপি চেয়ারম্যান চড়াও হন বলে অভিযোগ করেছেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। তবে চেয়ারম্যান আবুল হোসেনের দাবি, শিক্ষা কর্মকর্তা ভরা মজলিশে তাঁকে অপমানজনক কথা বলায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়েছেন। 
শিক্ষা কর্মকর্তা সেহেলী ফেরদৌস বলেন, ‘দুই মাস ধরে মশ্মিমনগরের তালসারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কমিটি গঠন নিয়ে সমস্যা চলছিল। কমিটি গঠনের বিষয়ে একটি পক্ষ গত রোববার ইউএনও বরাবর অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি সমাধানের জন্য ইউএনও আমাকে ওই বিদ্যালয়ে যেতে বলেন।’

সেহেলী ফেরদৌস বলেন, ‘স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেনের ব্যবহার খারাপ হওয়ায় প্রথমে আমি সেখানে যেতে রাজি হইনি। তবু ইউএনওর কথা রাখতে গত সোমবার সকালে তিন সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা (এটিও) জহির উদ্দিন, নাজমুল হাসান ও রফিকুল ইসলামকে নিয়ে সেখানে যাই।’ 
শিক্ষা কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পরেশ চন্দ্র রায়ের দপ্তরে স্থানীয় লোকজন নিয়ে আলোচনায় বসি। নীতিমালায় রয়েছে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিকটতম মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে প্রধান শিক্ষকের দেওয়া একজন প্রতিনিধি নিতে হবে। এই প্রতিনিধি নির্বাচন নিয়ে মূলত দুই মাস ধরে কমিটি গঠনে সমস্যা হয়ে আসছে।’

সেহেলী ফেরদৌস আরও বলেন, ‘নীতিমালা অনুযায়ী আমরা পারখাজুর কাঁঠালতলা বালিকা বিদ্যালয় থেকে একজন শিক্ষক প্রতিনিধি নিতে চাই। সভায় উপস্থিত থাকা মশ্মিমনগর ইউপির চেয়ারম্যান আবুল হোসেন তাতে বাধা দেন। চেয়ারম্যানের দাবি, ওই বিদ্যালয় থেকে তাঁর ভাইপো শিক্ষক নূরুজ্জামানকে নিতে হবে। তিনি তাঁকে কমিটির সভাপতি বানাবেন। ওই মাধ্যমিক বিদ্যালয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে তুলনামূলক দূরে।’

শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, ‘চেয়ারম্যানের কথায় রাজি না হওয়ায় তিনি আমাকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন, যা আমি মুখে আনতে পারব না। আমার তিন সহকারীকে লাঞ্ছিত করেন। একপর্যায়ে কমিটি গঠনের স্বাক্ষরিত রেজল্যুশন ছিঁড়ে ফেলেন। এ সময় আমি ইউএনওকে ফোনে বিষয়টি জানালে তিনি ইউএনকে নিয়েও আপত্তিকর কথা বলেন। এ অবস্থায় আমরা সেখান থেকে চলে আসি।’

শিক্ষা কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আমরা এসেই বিষয়টি লিখিত আকারে ইউএনওকে জানিয়েছি। আজ (মঙ্গলবার) দুপুরে তিনি তাঁর দপ্তরে চেয়ারম্যানসহ আমাদের ডাকেন। ইউএনওর সামনে আবারও আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন চেয়ারম্যান।’

তবে এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন বলেন, ‘এ কমিটি গঠন নিয়ে পাঁচবার এক সদস্যের নাম রদবদল করেছেন সংশ্লিষ্ট শিক্ষা কর্মকর্তা সেহেলী ফেরদৌস। তিনি নীতিমালার বাইরে পারখাজুরা নিম্ন মাধ্যমিকের এক শিক্ষককে কমিটিতে নেওয়ার জন্য সাড়ে ১২ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছেন। সেটা বাস্তবায়ন করতে না দেওয়ায় ভরা মজলিশে তিনি আমাকে “নাটের গুরু” বলেছেন। এরপর আমি ক্ষিপ্ত হয়েছি। একজন জনপ্রতিনিধিকে তিনি এভাবে অপমানসূচক কথা বলতে পারেন না।’

মনিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কবির হোসেন এ বিষয়ে বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর শিক্ষা কর্মকর্তাকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র উপস্থাপন করতে বলেছি। এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কী লিখেছিলেন মাহফুজ আলম, ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে ডিলিট করলেন কেন

এবার ‘পাকিস্তানপন্থার’ বিরুদ্ধে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলেন আসিফ মাহমুদ

সমাবেশে দলীয় স্লোগান ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনে বাধা দেওয়া প্রসঙ্গে এনসিপির বিবৃতি

বাহাত্তরের সংবিধান, জুলাই সনদ, প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতির ক্ষমতা নিয়ে আইন উপদেষ্টার গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য

রাতে গ্রেপ্তারের পর দুপুরে মুক্ত, পরে আবার গ্রেপ্তার তামান্না

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত