Ajker Patrika

শীত-কুয়াশায় গরিবের দুর্দিন

শিপুল ইসলাম, তারাগঞ্জ
আপডেট : ০৪ জানুয়ারি ২০২২, ১১: ১১
শীত-কুয়াশায় গরিবের দুর্দিন

হাড় কাঁপানো কনকনে শীতে কাবু হয়ে পড়েছেন তারাগঞ্জের দুস্থ ও হতদরিদ্র মানুষ। হিমেল হাওয়া, কুয়াশা আর শীতের তীব্রতার কারণে ঘরের বাইরে কেউ তেমন বের হচ্ছেন না। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষ।

গতকাল সোমবার কথা হয় রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কের পাশে গড়ে ওঠা বালাপাড়া গ্রামের গৃহবধূ রংমালার সঙ্গে। রংমালা বলেন, ‘বাবা, ঠান্ডার কামড় সহ্য হওচে না। শরীরটা বরফ হয়া জানটা বাইর হবার নাগছে। শীত আসলে হামার গরিবের কষ্টের শেষ থাকে না। বড় লোকের মতো তো হামরা মোটা গরম কাপড় কিনার পাই না। কোঁকড়া নাগি দিন কাটাওছি।’

যমুনেশ্বরী নদীঘেঁষা বরাতি দাসপাড়া গ্রাম। এ গ্রামের সবাই দিনমজুর। কেউ নদীতে মাছ ধরেন, কেউ রিকশা চালান, কেউ অন্যের জমিতে কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন।

গতকাল সোমবার সকালে দাসপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, পাতলা একটি শাড়ি পরে রান্নার কাজ করছিলেন জোসনা বালা। তিনি বলেন, ‘ঠান্ডা বাতাসে শরীর হিয়াল হয়া যাওছে। করার কিছু নাই। গরিব তাই এক কাপড়ে আছি। যতক্ষণ চুলাটা জ্বলোছে, ততক্ষণ শরীরটা ভালো আছে। চুলার আচোত গরম ধরাওছি। দিনে রাইতে যেভাবে বৃষ্টির মতোন কুয়াশা পড়োছে। ঠিকমতো ঘুমাবারও পাওছি না। আনা শীতের কাপড়ের ব্যবস্থা করি দেন।’

ফাতেমা বেগমের এ কুলে কেউ নেই। এ বাড়ি ও বাড়ি ভিক্ষা করে চলেন। থাকেন মাটিয়ালপাড়া সেচ ক্যানেলের ধারে। শীতের তীব্রতায় তাঁর কষ্ট কয়েকগুণ বেড়েছে। ফাতেমা বেগম বলেন, ‘জাড়ের (শীত) তকনে কোনঠে যাবার পাওছু না। বাইরোত বেরাইলে শরীর বরফ হয়া যাওছে। পেটোত খাবার নাই, গাওত গরম কাপড় নাই। এই জারত (শীত) মনে হয় আর বাঁচিম না।’

ওই দিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ঘন কুয়াশা আর কনকনে শীতে কাবু হয়ে পড়েছেন দুস্থ ও হতদরিদ্র মানুষ। দুপুর পর্যন্ত কুয়াশায় ঢেকে থাকে চারদিক। শীতবস্ত্রের অভাবে অনেকে কষ্টে দিনাতিপাত করছেন। বেড়েছে জ্বর, সর্দি ও কাশির প্রকোপ।

জমেরঘাট গ্রামের খোকা মিয়া বলেন, ‘ঠান্ডা গাওত কাটি বইসোছে। ঘরোত একটা কম্বলও নাই। রাইতোত খুব কষ্ট হয়। নদী থাকি হু-হু করি ঠান্ডা বাতাস আইসে। এই ঠান্ডা শুরু হইলে হামার গরিবের কামাই কমে, কষ্ট বাড়ে।’

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নীল রতন দেব বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে শীতের তীব্রতা বাড়ায় সর্দি-জ্বর ও কাশিতে আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে বেশি আসছেন।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘দরিদ্র শীতার্তদের জন্য বরাদ্দ পাওয়া সাড়ে ৩ হাজার কম্বল বিতরণের কাজ চলছে। আরও বরাদ্দ চেয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ফেল করায় বকা খেয়ে বাড়ি ছাড়ে বাংলাদেশি কিশোরী, ভারতে ৩ মাসে ২০০ লোকের ধর্ষণ

খালার সঙ্গে শত্রুতা মুহাম্মদ ইউনূসের, আমি ‘কোল্যাটারাল ড্যামেজ’: টিউলিপ সিদ্দিক

‘কাল দেখা হইবে, ভালো থাকিস’—ছেলেকে বলেছিলেন গণপিটুনিতে নিহত প্রদীপ

দেখো, ওর থেকে আরও ৫ লাখ নিতে পারো কি না—মেসেঞ্জার কলে এনসিপি নেতা নিজাম

রাহুল ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধী আটক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত