এ কে এম শামসুদ্দিন

যেসব আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা কম, সেই সব আসনে ভোটারদের ভোট নিয়ে আগ্রহও থাকে কম। ফলে সব মিলিয়ে অন্তত শতাধিক আসনে ভোটকেন্দ্রে ভোটার আনাই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আগামীকাল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। অনেক অনিশ্চয়তা ও নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচন প্রস্তুতির উত্তাপ এরই মধ্যে চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। এবারের নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দলগুলো নিজেদের সাধ্যমতো প্রচারের কার্যক্রম শেষও করেছে। তবে প্রচার কার্যক্রমকে কেন্দ্র করে সরকারদলীয় নেতা-কর্মীরা পরস্পরের প্রতি যে ঘৃণা, বিদ্বেষ, আক্রমণ-প্রতি আক্রমণের ঘটনা ঘটিয়েছেন, দেশের সাধারণ মানুষ দর্শকের মতো তা উপভোগ করেছে। এবারের ব্যতিক্রমী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও তাদের মহাজোটের দলগুলোই শুধু অংশগ্রহণ করছে। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা নিজেই মনোনয়নবঞ্চিতদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে দাঁড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এমনকি আওয়ামী লীগ থেকেই স্বতন্ত্র প্রার্থী কে হবেন, সেটিও ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। ফলে ভোটের মাঠ শুরুতেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। দলীয় ও স্বতন্ত্র উভয়েই ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী হওয়ায় শক্তিমত্তায় কেউ কারও চেয়ে কম নন এবং একে অপরের রাজনৈতিক ও চারিত্রিক দুর্বলতা সম্পর্কে ভালোভাবে অবগত আছেন। এখন একে অপরকে ঘায়েল করার জন্য সেগুলোই অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছেন। ডিজিটাল আইনের ভয়ে এত দিন দেশের মানুষ ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের অপকর্ম, দুর্নীতি ও রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের যে কথা সাহস করে বলতে পারেনি, সে কথাই এখন বিনা খরচায় ক্ষমতাসীন দলের লোকের মুখেই তা শুনতে পাচ্ছে। তাঁদের এরূপ নির্বাচনী বাহাসে দলীয় অনেক গোপন রাজনৈতিক তথ্যও জনসমক্ষে চলে এসেছে।
সম্প্রতি গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের একটি বক্তব্য ঢাকার প্রায় সব পত্রিকার শিরোনাম হয়েছে। তিনি গাজীপুর-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম রাসেলের এক নির্বাচনী সভায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের উদ্দেশে কিছু বক্তব্য দেন। তিনি বলেছেন, ‘এইবার বুইঝা-শুইনাই নামছি চোর কেমনে আটকাইতে হয়। ২০১৪ ও ২০১৮-তে কামডা আমরাই কইরা দিছিলাম। এইবার হ্যারা কী করতে চাইতেছে, সব জানি। ৭ তারিখে প্রমাণ কইরা দিমু। এহন সমান সমান। এহন আর পুলিশও থাকব না। এহন আসেন, একটা ভোট চুরি কইরা দেহেন। এইডা ২০১৪ ও ২০১৮ না। এইডা ২০২৪ সাল।’
চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার বড়হাতিয়া ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রিটন বড়ুয়া আরও এককাঠি সরেস। তিনি চট্টগ্রাম-১৫ আসনের নৌকার প্রার্থী আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভীকে উদ্দেশ করে বলেছেন, ‘আপনাকে একটা কথা বলতে চাই, ২০১৪ সালের নির্বাচনে আমরা ভোট ডাকাতি করেছি। সোজা কথা। আমরা এমনে আসি নাই। ২০১৮ সালেও আমরা ভোট ডাকাতি করেছি।’ রিটন বড়ুয়া দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল মোতালেবের পক্ষে ভোট প্রচারণায় এই বক্তব্য দেন। এখানে গাজীপুরের জাহাঙ্গীর ও সাতকানিয়ার রিটন বড়ুয়ার বক্তব্যের মাধ্যমে বেশ কিছু সত্য তথ্য বেরিয়ে এসেছে। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে প্রহসনমূলক নির্বাচন নিয়ে দেশে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছিল, আওয়ামী লীগ বরাবরই তা অস্বীকার করে এসেছে।
ওদিকে মেহেরপুর-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক দুই মেয়াদের সংসদ সদস্য প্রফেসর আব্দুল মান্নান যেন কথার ‘বোমা’ ফাটিয়েছেন। মেহেরপুরের সদর উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. অলোক কুমার দাসের সঙ্গে তিনি মোবাইল ফোনে নৌকার প্রার্থী প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনকে ভোট দেওয়ার ব্যাপারে হুমকি দিয়ে কিছু কথা বলেন, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। তিনি ডা. অলোককে ধমক দিয়ে বলেন, ‘ভোটে আমি এমপি হই বা না হই, তোমার মেহেরপুরের বাসা আমি উঠিয়ে দেব। তুমি সাবধান হয়ে যাও। আজ এতটুকুই শুধু বললাম। মনে রেখো, আমি শেখ হাসিনার প্রার্থী, আমি ভারতের প্রার্থী, এটি তোমাকে মনে রাখতে হবে। আমি এখানে হারার জন্য আসিনি।’ এই ঘটনার পর নির্বাচন কমিশন অবশ্য নিয়ম রক্ষার জন্য উভয়কে কারণ দর্শানোর নোটিশ বা শোকজ করেছিল। তাঁদের উভয়ে নোটিশের জবাব দিলেও তারপর কী হয়েছে, জানা যায়নি। আমরা কেউ জানতে পারিনি প্রফেসর মান্নান শেখ হাসিনার মনোনীত স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েও কী করে ভারতের প্রার্থী হলেন! প্রশ্ন হচ্ছে, এখানে তিনি ভারতকে টেনে আনলেন কেন? ডা. অলোকের ধর্মীয় পরিচয় মাথায় রেখে প্রফেসর মান্নান তার খুঁটির শক্তি জাহির করতেই কি ভারতকে টেনে এনেছেন?
ওদিকে আওয়ামী লীগের শরিক ও মনোনীত বিরোধী দল জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা খুব ভালো অবস্থানে আছেন বলা যাবে না। শরিক দলের জন্য ছেড়ে দেওয়া ৬টি আসনের ৫টিতেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগের নেতারা দাঁড়িয়েছেন বলে তাঁদের অবস্থান বেশ নড়বড়ে হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ এই ৬টি আসন ছেড়ে দিলেও দলটির স্থানীয় নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিধায় জোটের নেতারা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছেন। সে হিসেবে নৌকা প্রতীক নিয়ে ভোটের লড়াইয়ে নামা রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনুরা নিজেদের নির্বাচনী এলাকায় খুব একটা সুখকর অবস্থানে নেই। জানা গেছে, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রতিই স্থানীয় আওয়ামী লীগের বেশি সমর্থন। ফলে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের সরিয়ে দিলেও কোথাও ওয়ার্কার্স পার্টি বনাম আওয়ামী লীগ, কোথাও জাসদ বনাম আওয়ামী লীগ এবং কোথাও জেপি বনাম আওয়ামী লীগকে লড়াইয়ে অবতীর্ণ হতে হচ্ছে।
জাতীয় পার্টি সম্ভবত সবচেয়ে বড় আঘাত পেয়েছে আওয়ামী লীগের কাছ থেকে। প্রচার-প্রচারণা শেষে দেখা যাচ্ছে ভাগাভাগির সমঝোতায় যে ২৬টি আসনের প্রতিশ্রুতি পেয়েছিল, এর ৫০ শতাংশ, অর্থাৎ ১৩টি আসনও হয়তো পাবে না তারা। ওদিকে নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার হিড়িকও পড়েছে। জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা মনে করছেন, তাঁরা আওয়ামী লীগ কর্তৃক প্রতারিত হয়েছেন। আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য করতে যে করেই হোক জাতীয় পার্টির অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে চেয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করেন, ভারত প্রথমেই আসল কাজটি করে দিয়েছিল। তাঁদের মতে, ভারত নির্বাচনী কার্যক্রম শুরুর অনেক আগেই জি এম কাদেরকে দিল্লিতে ডেকে নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণের কথা বলে দিয়েছিল। সম্প্রতি জাতীয় পার্টির উচ্চপর্যায়ের কিছু নেতার বক্তব্য থেকে অনুমান করা যায়, আওয়ামী লীগ আরও নিশ্চিত হতে জাতীয় পার্টির নির্বাচনী খরচের সিংহভাগ দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। সেই অনুযায়ী পার্টির নীতিনির্ধারকেরা নির্বাচনের খরচ বাবদ ৩০ ও ২০ লাখ টাকা দেওয়া হবে—এ কথা বলে নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য তাঁদের প্রার্থীদের রাজি করিয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ থেকে প্রতিশ্রুত সেই অর্থ না পাওয়ায় জাতীয় পার্টি প্রার্থীদের প্রয়োজনীয় অর্থ দিতে পারেনি। ফলে পরাজয় নিশ্চিত জেনে নিজের পকেটের পয়সা খরচ করে নির্বাচন করার উৎসাহ হারিয়ে তাঁরা একে একে নির্বাচনের মাঠ থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন। তাতে অবশ্য আওয়ামী লীগের কোনো ক্ষতি নেই। তারা যা চেয়েছিল তা পেয়েছে। তাদের উদ্দেশ্যই ছিল জাতীয় পার্টিকে নির্বাচনে আনা এবং উল্লেখযোগ্যসংখ্যক প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল করা। আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করছেন, তাঁদের পরিকল্পনার সঠিক বাস্তবায়নই ঘটেছে।
আগামীকালের নির্বাচন দেশে-বিদেশে গ্রহণযোগ্য করানো এখন আওয়ামী লীগের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও ভোটকেন্দ্রে অধিক ভোটার উপস্থিতির মাধ্যমে একটি সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের চেষ্টা আওয়ামী লীগের বরাবরই ছিল। সেই উদ্দেশ্য সামনে রেখে তারা বেশ কিছু পদক্ষেপও নিয়েছে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরাও সক্রিয়। ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় পুলিশের কর্মকর্তারা ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের সঙ্গে মিটিং করে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আনতে অনুরোধ জানানোর পাশাপাশি সব ধরনের নিরাপত্তার নিশ্চয়তাও দিয়েছেন। এটি একটি নজিরবিহীন ঘটনা। ইতিপূর্বে কোনো জাতীয় নির্বাচনেই ভোটকেন্দ্রে ভোটার সমাগমের জন্য পুলিশ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের এভাবে অনুরোধ করেছেন কি না, জানা নেই। ওদিকে নির্বাচন বর্জনকারী বিএনপির সমর্থকেরা ভোট দিতে না গেলে বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধাভোগীর তালিকা থেকে তাঁদের নাম কেটে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতারা। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সংসদ সদস্যের এমন একটি হুমকির ভিডিও ক্লিপ নেট দুনিয়ায় ভেসে বেড়াচ্ছে। ভোটকেন্দ্রে অধিকসংখ্যক ভোটার উপস্থিত করানোই এখন আওয়ামী লীগের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এক মাঠ জরিপে দেখা গেছে, ৩০০ আসনের মধ্যে অন্তত ৭৫টিতে কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থী নেই। এসব আসনের দু-চারটি ছাড়া বাকিগুলোতে অন্যান্য দলের প্রার্থীরাও আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের সঙ্গে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলতে পারছেন না। যেসব আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা কম, সেই সব আসনে ভোটারদের ভোট নিয়ে আগ্রহও থাকে কম। ফলে সব মিলিয়ে অন্তত শতাধিক আসনে ভোটকেন্দ্রে ভোটার আনাই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এ নির্বাচন দেশের গণতন্ত্রের জন্য কতটুকু মঙ্গল বয়ে আনবে, সে প্রশ্ন তো রয়েই গেছে। এই নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ যে উদাহরণ রেখে যাচ্ছে, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ গণতন্ত্রের জন্য তা ক্ষতচিহ্ন হয়ে থাকবে। প্রশ্ন হচ্ছে, এই প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন করে আওয়ামী লীগের লাভ কী হলো? একটানা ১৫ বছর ক্ষমতা ভোগের সঙ্গে আরও ৫ বছর না হয় যোগ হলো। শেখ হাসিনা আবার প্রধানমন্ত্রী হবেন এবং তাঁর বাছাই করা কিছু নেতা হয়তো মন্ত্রী হবেন। নতুন কিছু মুখ তাঁদের সঙ্গে যোগ হবে, তা বলাই যায়। কিন্তু দল হিসেবে আওয়ামী লীগের যে ক্ষতি হয়ে গেল তা পূরণ করতে ভবিষ্যতে হয়তো অনেক কাঠখড় পোড়াতে হতে পারে। নিজ দল থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী দাঁড় করিয়ে দিয়ে আওয়ামী লীগ ঘরের ঝগড়া এখন প্রকাশ্যে-জনসমক্ষে নিয়ে এল। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একে অপরকে গালাগাল, চরিত্রহনন, অপকর্ম ও দুর্নীতির যে চিত্র তুলে ধরা হয়েছে, সাধারণ জনগণের মধ্যে এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে সন্দেহ নেই। এই নির্বাচনের লাভ-ক্ষতির হিসাবে সবচেয়ে ক্ষতি যাদের হবে তারা হলো, এ দেশের সাধারণ জনগণ এবং তার চেয়েও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে এ দেশ, বাংলাদেশ।
লেখক: অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ও কলাম লেখক

যেসব আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা কম, সেই সব আসনে ভোটারদের ভোট নিয়ে আগ্রহও থাকে কম। ফলে সব মিলিয়ে অন্তত শতাধিক আসনে ভোটকেন্দ্রে ভোটার আনাই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আগামীকাল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। অনেক অনিশ্চয়তা ও নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচন প্রস্তুতির উত্তাপ এরই মধ্যে চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। এবারের নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দলগুলো নিজেদের সাধ্যমতো প্রচারের কার্যক্রম শেষও করেছে। তবে প্রচার কার্যক্রমকে কেন্দ্র করে সরকারদলীয় নেতা-কর্মীরা পরস্পরের প্রতি যে ঘৃণা, বিদ্বেষ, আক্রমণ-প্রতি আক্রমণের ঘটনা ঘটিয়েছেন, দেশের সাধারণ মানুষ দর্শকের মতো তা উপভোগ করেছে। এবারের ব্যতিক্রমী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও তাদের মহাজোটের দলগুলোই শুধু অংশগ্রহণ করছে। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা নিজেই মনোনয়নবঞ্চিতদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে দাঁড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এমনকি আওয়ামী লীগ থেকেই স্বতন্ত্র প্রার্থী কে হবেন, সেটিও ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। ফলে ভোটের মাঠ শুরুতেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। দলীয় ও স্বতন্ত্র উভয়েই ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী হওয়ায় শক্তিমত্তায় কেউ কারও চেয়ে কম নন এবং একে অপরের রাজনৈতিক ও চারিত্রিক দুর্বলতা সম্পর্কে ভালোভাবে অবগত আছেন। এখন একে অপরকে ঘায়েল করার জন্য সেগুলোই অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছেন। ডিজিটাল আইনের ভয়ে এত দিন দেশের মানুষ ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের অপকর্ম, দুর্নীতি ও রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের যে কথা সাহস করে বলতে পারেনি, সে কথাই এখন বিনা খরচায় ক্ষমতাসীন দলের লোকের মুখেই তা শুনতে পাচ্ছে। তাঁদের এরূপ নির্বাচনী বাহাসে দলীয় অনেক গোপন রাজনৈতিক তথ্যও জনসমক্ষে চলে এসেছে।
সম্প্রতি গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের একটি বক্তব্য ঢাকার প্রায় সব পত্রিকার শিরোনাম হয়েছে। তিনি গাজীপুর-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম রাসেলের এক নির্বাচনী সভায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের উদ্দেশে কিছু বক্তব্য দেন। তিনি বলেছেন, ‘এইবার বুইঝা-শুইনাই নামছি চোর কেমনে আটকাইতে হয়। ২০১৪ ও ২০১৮-তে কামডা আমরাই কইরা দিছিলাম। এইবার হ্যারা কী করতে চাইতেছে, সব জানি। ৭ তারিখে প্রমাণ কইরা দিমু। এহন সমান সমান। এহন আর পুলিশও থাকব না। এহন আসেন, একটা ভোট চুরি কইরা দেহেন। এইডা ২০১৪ ও ২০১৮ না। এইডা ২০২৪ সাল।’
চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার বড়হাতিয়া ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রিটন বড়ুয়া আরও এককাঠি সরেস। তিনি চট্টগ্রাম-১৫ আসনের নৌকার প্রার্থী আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভীকে উদ্দেশ করে বলেছেন, ‘আপনাকে একটা কথা বলতে চাই, ২০১৪ সালের নির্বাচনে আমরা ভোট ডাকাতি করেছি। সোজা কথা। আমরা এমনে আসি নাই। ২০১৮ সালেও আমরা ভোট ডাকাতি করেছি।’ রিটন বড়ুয়া দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল মোতালেবের পক্ষে ভোট প্রচারণায় এই বক্তব্য দেন। এখানে গাজীপুরের জাহাঙ্গীর ও সাতকানিয়ার রিটন বড়ুয়ার বক্তব্যের মাধ্যমে বেশ কিছু সত্য তথ্য বেরিয়ে এসেছে। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে প্রহসনমূলক নির্বাচন নিয়ে দেশে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছিল, আওয়ামী লীগ বরাবরই তা অস্বীকার করে এসেছে।
ওদিকে মেহেরপুর-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক দুই মেয়াদের সংসদ সদস্য প্রফেসর আব্দুল মান্নান যেন কথার ‘বোমা’ ফাটিয়েছেন। মেহেরপুরের সদর উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. অলোক কুমার দাসের সঙ্গে তিনি মোবাইল ফোনে নৌকার প্রার্থী প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনকে ভোট দেওয়ার ব্যাপারে হুমকি দিয়ে কিছু কথা বলেন, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। তিনি ডা. অলোককে ধমক দিয়ে বলেন, ‘ভোটে আমি এমপি হই বা না হই, তোমার মেহেরপুরের বাসা আমি উঠিয়ে দেব। তুমি সাবধান হয়ে যাও। আজ এতটুকুই শুধু বললাম। মনে রেখো, আমি শেখ হাসিনার প্রার্থী, আমি ভারতের প্রার্থী, এটি তোমাকে মনে রাখতে হবে। আমি এখানে হারার জন্য আসিনি।’ এই ঘটনার পর নির্বাচন কমিশন অবশ্য নিয়ম রক্ষার জন্য উভয়কে কারণ দর্শানোর নোটিশ বা শোকজ করেছিল। তাঁদের উভয়ে নোটিশের জবাব দিলেও তারপর কী হয়েছে, জানা যায়নি। আমরা কেউ জানতে পারিনি প্রফেসর মান্নান শেখ হাসিনার মনোনীত স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েও কী করে ভারতের প্রার্থী হলেন! প্রশ্ন হচ্ছে, এখানে তিনি ভারতকে টেনে আনলেন কেন? ডা. অলোকের ধর্মীয় পরিচয় মাথায় রেখে প্রফেসর মান্নান তার খুঁটির শক্তি জাহির করতেই কি ভারতকে টেনে এনেছেন?
ওদিকে আওয়ামী লীগের শরিক ও মনোনীত বিরোধী দল জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা খুব ভালো অবস্থানে আছেন বলা যাবে না। শরিক দলের জন্য ছেড়ে দেওয়া ৬টি আসনের ৫টিতেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগের নেতারা দাঁড়িয়েছেন বলে তাঁদের অবস্থান বেশ নড়বড়ে হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ এই ৬টি আসন ছেড়ে দিলেও দলটির স্থানীয় নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিধায় জোটের নেতারা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছেন। সে হিসেবে নৌকা প্রতীক নিয়ে ভোটের লড়াইয়ে নামা রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনুরা নিজেদের নির্বাচনী এলাকায় খুব একটা সুখকর অবস্থানে নেই। জানা গেছে, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রতিই স্থানীয় আওয়ামী লীগের বেশি সমর্থন। ফলে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের সরিয়ে দিলেও কোথাও ওয়ার্কার্স পার্টি বনাম আওয়ামী লীগ, কোথাও জাসদ বনাম আওয়ামী লীগ এবং কোথাও জেপি বনাম আওয়ামী লীগকে লড়াইয়ে অবতীর্ণ হতে হচ্ছে।
জাতীয় পার্টি সম্ভবত সবচেয়ে বড় আঘাত পেয়েছে আওয়ামী লীগের কাছ থেকে। প্রচার-প্রচারণা শেষে দেখা যাচ্ছে ভাগাভাগির সমঝোতায় যে ২৬টি আসনের প্রতিশ্রুতি পেয়েছিল, এর ৫০ শতাংশ, অর্থাৎ ১৩টি আসনও হয়তো পাবে না তারা। ওদিকে নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার হিড়িকও পড়েছে। জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা মনে করছেন, তাঁরা আওয়ামী লীগ কর্তৃক প্রতারিত হয়েছেন। আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য করতে যে করেই হোক জাতীয় পার্টির অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে চেয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করেন, ভারত প্রথমেই আসল কাজটি করে দিয়েছিল। তাঁদের মতে, ভারত নির্বাচনী কার্যক্রম শুরুর অনেক আগেই জি এম কাদেরকে দিল্লিতে ডেকে নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণের কথা বলে দিয়েছিল। সম্প্রতি জাতীয় পার্টির উচ্চপর্যায়ের কিছু নেতার বক্তব্য থেকে অনুমান করা যায়, আওয়ামী লীগ আরও নিশ্চিত হতে জাতীয় পার্টির নির্বাচনী খরচের সিংহভাগ দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। সেই অনুযায়ী পার্টির নীতিনির্ধারকেরা নির্বাচনের খরচ বাবদ ৩০ ও ২০ লাখ টাকা দেওয়া হবে—এ কথা বলে নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য তাঁদের প্রার্থীদের রাজি করিয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ থেকে প্রতিশ্রুত সেই অর্থ না পাওয়ায় জাতীয় পার্টি প্রার্থীদের প্রয়োজনীয় অর্থ দিতে পারেনি। ফলে পরাজয় নিশ্চিত জেনে নিজের পকেটের পয়সা খরচ করে নির্বাচন করার উৎসাহ হারিয়ে তাঁরা একে একে নির্বাচনের মাঠ থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন। তাতে অবশ্য আওয়ামী লীগের কোনো ক্ষতি নেই। তারা যা চেয়েছিল তা পেয়েছে। তাদের উদ্দেশ্যই ছিল জাতীয় পার্টিকে নির্বাচনে আনা এবং উল্লেখযোগ্যসংখ্যক প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল করা। আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করছেন, তাঁদের পরিকল্পনার সঠিক বাস্তবায়নই ঘটেছে।
আগামীকালের নির্বাচন দেশে-বিদেশে গ্রহণযোগ্য করানো এখন আওয়ামী লীগের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও ভোটকেন্দ্রে অধিক ভোটার উপস্থিতির মাধ্যমে একটি সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের চেষ্টা আওয়ামী লীগের বরাবরই ছিল। সেই উদ্দেশ্য সামনে রেখে তারা বেশ কিছু পদক্ষেপও নিয়েছে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরাও সক্রিয়। ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় পুলিশের কর্মকর্তারা ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের সঙ্গে মিটিং করে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আনতে অনুরোধ জানানোর পাশাপাশি সব ধরনের নিরাপত্তার নিশ্চয়তাও দিয়েছেন। এটি একটি নজিরবিহীন ঘটনা। ইতিপূর্বে কোনো জাতীয় নির্বাচনেই ভোটকেন্দ্রে ভোটার সমাগমের জন্য পুলিশ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের এভাবে অনুরোধ করেছেন কি না, জানা নেই। ওদিকে নির্বাচন বর্জনকারী বিএনপির সমর্থকেরা ভোট দিতে না গেলে বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধাভোগীর তালিকা থেকে তাঁদের নাম কেটে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতারা। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সংসদ সদস্যের এমন একটি হুমকির ভিডিও ক্লিপ নেট দুনিয়ায় ভেসে বেড়াচ্ছে। ভোটকেন্দ্রে অধিকসংখ্যক ভোটার উপস্থিত করানোই এখন আওয়ামী লীগের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এক মাঠ জরিপে দেখা গেছে, ৩০০ আসনের মধ্যে অন্তত ৭৫টিতে কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থী নেই। এসব আসনের দু-চারটি ছাড়া বাকিগুলোতে অন্যান্য দলের প্রার্থীরাও আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের সঙ্গে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলতে পারছেন না। যেসব আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা কম, সেই সব আসনে ভোটারদের ভোট নিয়ে আগ্রহও থাকে কম। ফলে সব মিলিয়ে অন্তত শতাধিক আসনে ভোটকেন্দ্রে ভোটার আনাই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এ নির্বাচন দেশের গণতন্ত্রের জন্য কতটুকু মঙ্গল বয়ে আনবে, সে প্রশ্ন তো রয়েই গেছে। এই নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ যে উদাহরণ রেখে যাচ্ছে, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ গণতন্ত্রের জন্য তা ক্ষতচিহ্ন হয়ে থাকবে। প্রশ্ন হচ্ছে, এই প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন করে আওয়ামী লীগের লাভ কী হলো? একটানা ১৫ বছর ক্ষমতা ভোগের সঙ্গে আরও ৫ বছর না হয় যোগ হলো। শেখ হাসিনা আবার প্রধানমন্ত্রী হবেন এবং তাঁর বাছাই করা কিছু নেতা হয়তো মন্ত্রী হবেন। নতুন কিছু মুখ তাঁদের সঙ্গে যোগ হবে, তা বলাই যায়। কিন্তু দল হিসেবে আওয়ামী লীগের যে ক্ষতি হয়ে গেল তা পূরণ করতে ভবিষ্যতে হয়তো অনেক কাঠখড় পোড়াতে হতে পারে। নিজ দল থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী দাঁড় করিয়ে দিয়ে আওয়ামী লীগ ঘরের ঝগড়া এখন প্রকাশ্যে-জনসমক্ষে নিয়ে এল। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একে অপরকে গালাগাল, চরিত্রহনন, অপকর্ম ও দুর্নীতির যে চিত্র তুলে ধরা হয়েছে, সাধারণ জনগণের মধ্যে এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে সন্দেহ নেই। এই নির্বাচনের লাভ-ক্ষতির হিসাবে সবচেয়ে ক্ষতি যাদের হবে তারা হলো, এ দেশের সাধারণ জনগণ এবং তার চেয়েও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে এ দেশ, বাংলাদেশ।
লেখক: অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ও কলাম লেখক

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

আগামীকাল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। অনেক অনিশ্চয়তা ও নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচন প্রস্তুতির উত্তাপ এরই মধ্যে চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। এবারের নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দলগুলো নিজেদের সাধ্যমতো প্রচারের কার্যক্রম শেষও করেছে। তবে প্রচার কার্যক্রমকে কেন্দ্র করে সরকারদলীয় নেতা-ক
০৬ জানুয়ারি ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

আগামীকাল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। অনেক অনিশ্চয়তা ও নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচন প্রস্তুতির উত্তাপ এরই মধ্যে চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। এবারের নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দলগুলো নিজেদের সাধ্যমতো প্রচারের কার্যক্রম শেষও করেছে। তবে প্রচার কার্যক্রমকে কেন্দ্র করে সরকারদলীয় নেতা-ক
০৬ জানুয়ারি ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

আগামীকাল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। অনেক অনিশ্চয়তা ও নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচন প্রস্তুতির উত্তাপ এরই মধ্যে চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। এবারের নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দলগুলো নিজেদের সাধ্যমতো প্রচারের কার্যক্রম শেষও করেছে। তবে প্রচার কার্যক্রমকে কেন্দ্র করে সরকারদলীয় নেতা-ক
০৬ জানুয়ারি ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আগামীকাল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। অনেক অনিশ্চয়তা ও নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচন প্রস্তুতির উত্তাপ এরই মধ্যে চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। এবারের নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দলগুলো নিজেদের সাধ্যমতো প্রচারের কার্যক্রম শেষও করেছে। তবে প্রচার কার্যক্রমকে কেন্দ্র করে সরকারদলীয় নেতা-ক
০৬ জানুয়ারি ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫