Ajker Patrika

তীব্র গরমে এক বছরে নষ্ট ২৫ কোটি কর্মদিবস, বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঢাকা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রার কারণে এক ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকি ও অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়ছে বাংলাদেশ। বিশ্বব্যাংকের নতুন এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুধু গত বছরই চরম গরমের কারণে দেশের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রায় শূন্য দশমিক ৪ শতাংশের সমান।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালে গরমজনিত শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার কারণে প্রায় ২৫০ মিলিয়ন বা ২৫ কোটি কর্মদিবস নষ্ট হয়েছে। এ বাস্তবতা ঢাকার রিকশাচালক মো. ইসলাম হোসেন ভালোভাবেই জানেন। ৪২ বছর বয়সী ইসলাম হোসেন বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘ঢাকায় গাছ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। আমি সারাক্ষণ ঘামতে থাকি। ঘামে ভেজা জামা গায়েই শুকায়, আবার ঘাম হয়। অনেক সময় চর্মরোগ, কাশি আর সর্দি-জ্বরে ভুগি।’

১৯৮০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বেড়েছে ১ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে ‘ফিলস লাইকের’ বা যা অনুভব করা হয়, সেই তাপমাত্রা বেড়েছে ৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত মঙ্গলবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, তীব্র উষ্ণতার কারণে দেশে ডায়রিয়া, কাশি, অবসাদ, হতাশা ও মানসিক উদ্বেগের মতো রোগের প্রকোপ বেড়েছে। এ গবেষণায় ১৬ হাজার মানুষের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়।

বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর জ্যঁ পেসমে বলেন, ‘তাপমাত্রা বাড়ায় বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ও উৎপাদনশীলতা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এতে দেশের সমৃদ্ধিও হুমকির মুখে।’

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গরমে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাজধানী ঢাকা। শহরটি বিশ্বের সবচেয়ে তাপ–চাপে থাকা শহরগুলোর একটি। জাতীয় গড়ের তুলনায় ঢাকার হিট ইনডেক্স বা তাপমাত্রার অনুভূতি বেড়েছে ৬৫ শতাংশ দ্রুত।

প্রতিবেদনের সহ-লেখক ইফফাত মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, তাপের প্রভাবে স্বাস্থ্য খারাপ হওয়ার পাশাপাশি উৎপাদনশীলতায় বড় ক্ষতি হচ্ছে। অন্য অনেক দেশের মতো বাংলাদেশও মানবসম্পদ ও উৎপাদনশীলতা হারানোর বড় ঝুঁকিতে।’

বিশ্বব্যাংক বলছে, এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় জরুরি ও সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে তাপপ্রবাহের জন্য প্রস্তুতি বাড়ানো এবং শহরে সবুজায়ন নিশ্চিত করা। জ্যঁ পেসমে বলেন, ‘ভালো খবর হলো, এটা সম্ভব।’

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল কাসেম বলেন, তাপপ্রবাহের চাপ কমাতে গাছ লাগানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে পরিবেশবাদী সংগঠন ওয়াটারকিপার অ্যালায়েন্সের শরীফ জামিল মনে করেন, একদিকে নতুন গাছ লাগানো হলেও অন্যদিকে বিদ্যমান গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘শুধু যদি এখনই তারা সবুজ এলাকা আর জলাভূমি রক্ষা করা শুরু করে, তাহলে আমরা কিছুটা স্বস্তি পেতে পারি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত