ইশতিয়াক হাসান

গত ২০ ডিসেম্বর নীলফামারীতে একটি চিতা বাঘকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে গ্রামবাসী। গত বছর একই জেলায় বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা পড়ে অপর একটি চিতা বাঘ। উত্তরাঞ্চলের পঞ্চগড়সহ বিভিন্ন জেলায় এর আগেও চিতা বাঘকে পিটিয়ে মারার ঘটনা ঘটেছে। এই চিতা বাঘেরা আসছে কোথা থেকে এবং এদের কীভাবে এমন মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করা যায়, তার উত্তর খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে লেখাটিতে।
২০ ডিসেম্বর। দুপুরের দিকে হঠাৎ এক প্রতিনিধির পাঠানো নিউজে চোখ আটকে গেল। চিতা বাঘের আক্রমণে কয়েকজন আহত হওয়ার খবর। প্রথম দেখাতেই ধরে নিয়েছিলাম মেছো বিড়ালকে ভুল করে চিতা বাঘ লেখা হয়েছে। কারণ বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মানুষ চিতা বাঘকে মেছো বিড়ালের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলে। তার পরই নিউজটির পড়তে গিয়ে দেখলাম ঘটনাস্থল নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলা। তখনই সন্দেহটা দানা বাঁধল। তাড়াতাড়ি প্রতিনিধি কী ছবি পাঠিয়েছেন দেখায় মন দিলাম। আরে, এ তো চিতা বাঘই। আরও পরিষ্কারভাবে বললে ছবিগুলো মৃত চিতা বাঘের। এবার নিউজটি পড়ে জানলাম, বন বিভাগের লোকেরা পৌঁছার আগেই চিতা বাঘটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে গ্রামবাসী। মনটা কেঁদে উঠল, আহহা! আবার নীলফামারী! আবার চিতা বাঘের মৃত্যু!
উত্তরাঞ্চলে কেন বারবার প্রাণ দিতে হয় চিতা বাঘদের
২০ ডিসেম্বরের ঘটনার বর্ণনায় পরে আসছি। আগে নীলফামারীর প্রসঙ্গে কেন নড়েচড়ে বসেছিলাম সেটা পরিষ্কার করা দরকার। গত বছর অর্থাৎ ২০২২ সালের ঘটনা। নীলফামারী সদর উপজেলার চওড়া বড়গাছা ইউনিয়নের কাঞ্চনপাড়া গ্রাম। সেখানকার এক মুরগির খামারে ৩ হাজারের বেশি মুরগি আছে। বনবিড়াল ও শিয়ালের কবল থেকে মুরগি বাঁচাতে খামারমালিক পুরো খামারটি জিআই তার দিয়ে ঘিরে বৈদ্যুতিক সংযোগ দেন। তবে সেখানে এক বৃহস্পতিবার রাতে (১৭ মার্চ ২০২২) ঘটল অস্বাভাবিক এক কাণ্ড। রাত তখন পৌনে ৩টা। খামারের পেছনে বন্যপ্রাণীর আওয়াজ পাওয়া গেল। দেরি না করে সুইচ টিপে বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়া হলো। এর কিছুক্ষণ পরই একটি জন্তু বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে পড়ার শব্দ। তবে আওয়াজটা বলে দিচ্ছিল বন বিড়াল বা শিয়াল নয়, অনেক বড় কোনো জন্তু আটকা পড়েছে ফাঁদে। আতঙ্কিত হয়ে বাড়ির মানুষ টর্চলাইট জ্বেলে চমকে ওঠেন। একটি চিতা বাঘ বিদ্যুতায়িত তারের স্পর্শে মরে পড়ে আছে।
বাঘ মারা পড়েছে—এটা তো বড় আনন্দের খবর; অন্তত আমাদের কাছে, তাই না! সকালে মৃত বাঘটির গলায় দড়ি পেঁচিয়ে বাইরে আনা হতেই একে দেখতে জড়ো হলো আশপাশের বিভিন্ন গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। তখন কেউ কেউ ওই খামারের পেছনের ভুট্টাখেতে ওপর অপর একটি চিতা বাঘ অদৃশ্য হওয়ার কথা বললেও নিশ্চিত প্রমাণ মেলেনি। পত্রিকা মারফত এবং পঞ্চগড়ের বন্যপ্রাণীপ্রেমী ও আলোকচিত্রী ফিরোজ আল সাবাহর সঙ্গে কথা বলে নীলফামারীর চিতা বাঘ সম্পর্কে মোটামুটি এসব তথ্য সংগ্রহ করতে পেরেছিলাম।
তবে দ্বিতীয় কোনো চিতা বাঘ সেদিন থেকে সেখানে থাকলে তার ভাগ্যটা ভালোই বলতে হয়। না হলে মানুষের পিটুনিতে ওটাকে হয়তো পৃথিবীর মায়া কাটাতে হতো। তবে ২০ ডিসেম্বরের দুর্ভাগা চিতা বাঘটি মারা গেছে মানুষের পিটুনিতেই।
এ সুযোগে একটা তথ্য জানিয়ে রাখি, ‘ডিটেকটিং দ্য স্পটস: আ রিভিও অন ল্যাপার্ড অকারেন্সেস ইন বাংলাদেশ’ নামের একটি গবেষণাপত্রে থেকে জানা যায়, ২০০৯ সাল থেকে শুধু উত্তরের, মানে রংপুর বিভাগের জেলাগুলোতে মানুষের পিটুনিতে মারা পড়েছে ছয়টি চিতা বাঘ। এর সঙ্গে ২০২২ ও ২০২৩ সালের ঘটনা দুটি যোগ করলে চিতা বাঘের অস্বাভাবিক মৃত্যুর সংখ্যা গিয়ে ঠেকেছে আটে। কী আশ্চর্য বিষয়, ঠিক না! এমন অদ্ভুত সুন্দর একটি প্রাণীর বেঁচে থাকার কোনো অধিকারই নেই!
দুর্ভাগা চিতা বাঘ
এবার তাহলে গত ২০ ডিসেম্বরের ঘটনাটির দিকে নজর দেই। বিভিন্ন পত্রিকার সংবাদ থেকে ও খোঁজখবর নিয়ে যদ্দুর জানা যায়, এদিন অর্থাৎ বুধবার বেলা ১১টার দিকে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার রংপুর-দিনাজপুর তিস্তা ক্যানেল ব্রিজসংলগ্ন গাছে একটি চিতা বাঘ দেখতে পান কৃষকেরা। জায়গাটি পড়েছে মাগুরা ইউনিয়নের আকালীবেচাপাড়া গ্রামের সীমানায়। ওই লোকগুলো চিৎকার দিলে এলাকার লোকজন বাঘ দেখার জন্য ভিড় জমায়। গাছটির দিকেও ঢিলও ছোড়ে অনেকে। সবকিছু মিলিয়ে সম্ভবত ঘাবড়ে যায় প্রাণীটি। গাছ থেকে নেমে পালাতে যায়। এ সময় প্রাণীটির সামনে পড়া গ্রামের কয়েক জন এর আক্রমণে আহত হয়। তারপর যা হওয়ার তাই হলো। স্থানীয় লোকজন বাঘটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলল। শুধু তাই নয়, ওটাকে গাছের মধ্যে ঝুলিয়ে দিল। আর এই মৃতদেহ দেখতে ভেঙে পড়ল আশপাশের কয়েক গ্রামের মানুষ।
পরে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে নালার মধ্যে চিতা বাঘটির বাঁচার জন্য দৌড়াদৌড়ি করা এবং একে মারার দৃশ্য দেখে মনটা খারাপ হয়ে যায়। যেভাবে বহু মানুষ মিলে তাড়া করে এত সুন্দর একটি প্রাণীকে মেরে ফেলল, তা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। প্রাণীটির নিস্তেজ হয়ে যাওয়ার পরও চলছিল আঘাত।
সত্যি কী এমন মৃত্যু প্রাপ্য চিতা বাঘেদের?
এখন মুরগির খামারের মুরগি চুরি নিঃসন্দেহ গৃহস্থের ক্ষতির কারণ। তেমনি মানুষ আক্রান্ত হওয়া তার চেয়েও অনেক বড় ব্যাপার। কিন্তু তাই বলে এমন মৃত্যু কি চিতা বাঘেদের প্রাপ্য? এমন একটি সুন্দর প্রাণীকে মারার পর গাছে ঝুলিয়ে রাখা কতটা মানবিক? ঘটনা হলো, একটা সময় আমাদের উত্তরাঞ্চলে অনেক চিতা বাঘই ছিল। তখন মানুষের বসতি কম ছিল, অনেক গ্রামীণ বন ছিল। কিন্তু আমরা মানুষই তো ওই বন ধ্বংস করে দিয়েছি। তাই এখানে চিতা বাঘ হয়ে গেছে এক অপরিচিত প্রাণী। এদিকে চিতা বাঘগুলো যখন এই এলাকায় আসে, তখন থাকার মতো জায়গা বা খাওয়ার মতো পর্যাপ্ত বন্যপ্রাণী না থাকায় এরা লোকালয়ে চলে আসে। এদিকে আমাদের মধ্যেও যে বন্যপ্রাণী দেখলে, এমনকি এরা কোনো ক্ষতি করলে তাদের মেরে ফেলার একটা প্রবণতা আছে তাতে সন্দেহ নেই। মানুষ এদের বিরক্ত না করলে অনেক সংঘাতই মনে হয় এড়ানো যেত।
এল কীভাবে?
কিন্তু ঘটনা হলো, নীলফামারীতে চিতা বাঘ এল কীভাবে? এটা সত্যি—একসময় পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী, দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম এলাকায় চিতা বাঘের দেখা মিলত বিস্তর। কিন্তু এই এলাকায় এখন বড় বন নেই। গ্রামীণ বনও কমে গেছে। তাই এদিকটায় চিতা বাঘের বসতির খবরও শোনা যায়নি। তবে কথা হলো, আমাদের উত্তরের এই জেলাগুলোর ওপাশেই ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার ও ডুয়ার্স এলাকা। চিতা বাঘের আড্ডাখানা। এখানকার চিতা বাঘেরা কোচবিহারে ও ডুয়ার্সের সবুজ চা-বাগানে ঘুরে বেড়ায় মনের আনন্দে। আর ওগুলোর মধ্যে যেগুলো একটু দুর্ভাগা, সেগুলোই হয়তো আমাদের পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম এলাকায় চলে আসে। তারপর কোনো গৃহস্থের মুরগির খামারে হানা দেওয়ার অপরাধে কিংবা নিজেদের হলুদে-কালোয় মেশানো সুন্দর চেহারাটা প্রকাশ পেয়ে যাওয়ার কারণে মারা পড়ে গ্রামবাসীর পিটুনিতে। অথচ আমাদের বরং প্রকৃতির আশ্চর্য সুন্দর এই প্রাণীগুলো এখনো এদিকটায় পা দেওয়ায় খুশি হওয়ার কথা।
এই অঞ্চলের পঞ্চগড়েই জীবিত চিতা বাঘের দুর্লভ একটি ছবি তুলছিলেন বন্যপ্রাণীপ্রেমী ও আলোকচিত্রী ফিরোজ আল সাবাহ। সেটা ২০১৮ সালে। একটা ঝোপে আশ্রয় নিয়েছিল বাঘটা। চারপাশ থেকে ঘিরে ফেলেছিল উৎসুক জনতা। মরিয়া চিতা বাঘটা হুংকার দিচ্ছিল, লেজ নাচাচ্ছিল। মনে হচ্ছিল, যেকোনো মুহূর্তে ঝোপ থেকে লাফ দেবে। এর মধ্যেই কাছে গিয়ে কয়েকটা ছবি তোলেন সাবাহ। অবশ্য উত্তেজিত জনতার রোষ থেকে আশ্চর্য সুন্দর সেই বাঘকে বাঁচানো যায়নি।
ফিরোজ আল সাবাহ এ ছাড়া তিনবার চিতা বাঘের আনাগোনার খবর পান বলে জানান। ২০১৫ সালে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার ভজনপুরের ডাহুক নদীর তীরে চিতা বাঘ দেখা গেছে খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে পায়ের ছাপ পেয়েছেন। ২০২০ সালে ভজনপুর ১০ মাইল এলাকায় চিতা বাঘ দেখা যাওয়ার খবর পান। কিন্তু সেখানে গিয়ে আর দেখা পাননি। ২০২২ সালে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায়ও চিতা বাঘের আস্তানা গাড়ার সংবাদ পেয়েছিলেন।
এবার একটু অন্যদিকে দৃষ্টি দিচ্ছি। ভারত থেকে আসছে এই চিতা বাঘ, ঠিক আছে। তবে এখানে একটি প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। ২০২২ সালের ঘটনাটা যেখানে ঘটেছে, সেখান থেকে ভারতের সীমান্ত অনেক দূরে। তেমনি গত ২০ ডিসেম্বরের ঘটনাস্থল কিশোরগঞ্জের ওই গ্রাম থেকেও সীমান্ত মোটামুটি কিলোমিটার চল্লিশেক দূরে বলে জেনেছি। চিতা বাঘের পক্ষে বড় দূরত্ব পেরোনো কঠিন কিছু নয়। তবে কথা হলো, এত লম্বা একটা এলাকা লোকবসতির মধ্যে পেরোল কীভাবে? আর এগুলো কি দেখা যাওয়ার দু-এক দিন আগেই সীমান্ত পেরিয়ে আসে? তারপর এত দূর চলে আসে? নাকি উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে চিতা বাঘের স্থায়ী কোনো বসতি না থাকলেও দীর্ঘ সময় কাটানোর মতো জায়গা আছে!
বর্তমানে শিক্ষাকালীন ছুটিতে থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুনতাসির আকাশের সঙ্গে কথা হয় এ বিষয়ে। তিনি বলেন, ‘পঞ্চগড় থেকে শুরু করে কুড়িগ্রাম পর্যন্ত সীমান্তের ওই পাশে ভারতে প্রচুর চা-বাগান আছে। এসব চা-বাগান ও আশপাশের জঙ্গলে প্রচুর চিতাবাঘ আছে। ওই দিক থেকে বাংলাদেশের অংশে সহজে চিতা বাঘ চলে আসতে পারে। তবে আমার ধারণা, এসব চিতা বাঘ এক-দুই দিনের জন্য আসে না। বরং বাংলাদেশের এই অংশে এদের নিয়মিত বিচরণ আছে। কখনো কখনো দীর্ঘ সময় এদের এই এলাকায় বাস করাও বিচিত্র নয়। এখানে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ভুট্টা ও আখখেত। এসব জায়গায় চিতা বাঘ অনায়াসে লুকিয়ে থাকতে পারে। ছোটখাটো প্রাণী শিকার করেও এরা বেঁচে থাকতে পারে। অর্থাৎ, মোটামুটি দীর্ঘ সময় থাকার জায়গা হিসেবেই উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন নির্জন এলাকা ব্যবহার করার সম্ভাবনা চিতা বাঘদের। এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো এসব চিতা বাঘ রক্ষা করা।’
এদিকে ফিরোজ আল সাবাহও উত্তরের কোনো জেলায় চিতা বাঘের মোটামুটি দীর্ঘ সময় আস্তানা গাড়ার সম্ভাবনার সঙ্গে একমত। তিনি বলেন, এপাশে এলে চিতা বাঘের থাকার জায়গা চর এলাকাগুলো। এই চর এলাকাগুলো ভুট্টা ও আখখেতে ভর্তি থাকে। অনেক চরে মানুষের আনাগোনা নেই। এসব এলাকায় বনবিড়াল, বুনো খরগোশ, শিয়ালের মতো প্রাণীও আছে। এ বছর ও ২০২২ সালে চিতা বাঘের মৃত্যুর ঘটনা দুটো যে জায়গাগুলোয় ঘটেছে, সেগুলো সীমান্ত থেকে অনেক দূরে। পরপর দুই বছর দুটি চিতা বাঘ মারা যাওয়ায় ধারণা করছি, চর এলাকায় এদের দীর্ঘ সময় কাটানোর মতো আবাসস্থল আছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মনিরুল খান অবশ্য মনে করেন, ভারতের অংশের বন থেকে আসা চিতা বাঘদের দীর্ঘদিন লুকিয়ে থাকার মতো পরিবেশ কিংবা পরিস্থিতি নেই এদিকে। কারণ বড় একটি প্রাণী থাকলে একে দেখা না গেলেও ছাগল-কুকুর মারা পড়ত। ভারতের অংশের সংরক্ষিত এলাকাগুলোর গ্রাস ল্যান্ডে অনেক সময় আগুন দেওয়া হয়। তখন এরা এদিকে হয়তো আসে। তবে পঞ্চগড়ে চা-বাগান তৈরি হওয়ায় এখানে ডুয়ার্সের দিক থেকে আসা চিতা বাঘদের বেশি সময় আশ্রয় নেওয়ার মতো জায়গা আছে বলে মনে করেন মনিরুল খান।
আমাদের কী করা উচিত
এখন আমাদের তাহলে কী করা উচিত? কীভাবে আমরা এদের রক্ষা করব? ভারতের অনেক জায়গাতেই মানুষ-চিতা বাঘ পাশাপাশি অবস্থানের নজির আছে। ভারতের রাজস্থানের বেরা, মহারাষ্ট্রের মুম্বাই, পশ্চিমবঙ্গের ডুয়ার্স প্রভৃতি এলাকায় মানুষের আশপাশেই প্রচুর চিতাবাঘ বাস করে। তাহলে আমাদের দেশেই কেন চিতা বাঘ দেখলেই মেরে ফেলতে হবে? তাহলে আমাদের কী করা উচিত?
মুনতাসির আকাশের মতে, সুন্দরবন অঞ্চলে যেমন টাইগার রেসপন্স টিম কিংবা গারো পাহাড় অঞ্চলে এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিম কাজ করে, এখানে তেমনি ল্যাপার্ড রেসপন্স টিম গঠন করা যেতে পারে, যারা সাধারণ মানুষকে চিতা বাঘ দেখলেই মেরে না ফেলার ব্যাপারে সচেতন করবেন। তেমনি লোকালয়ে চিতা বাঘ দেখা গেলে এদের সেখান থেকে নিরাপদে সরিয়ে দিতে কাজ করবে।
মনিরুল খান বলেন, এরা সাধারণত আক্রান্ত হলেই মানুষকে আক্রমণ করে। মিডিয়ায় সাধারণত আসে মানুষকে আক্রমণ করায় এদের পিটিয়ে মারা হয় এমন খবর। মানুষকে সচেতন করাই একমাত্র উপায়। চিতা বাঘ দেখা গেলেই যেন বন বিভাগকে জানানো হয়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।
বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চলের বন সংরক্ষক ইমরান আহমেদ বলেন, ‘প্রাণীটা আমাদের দেশের নয়। বাইরে থেকে (সীমান্ত পেরিয়ে) আসে। নীলগাইয়ের মতো প্রাণী এলে মানুষ সাধারণত আতঙ্কিত হয় না। কখনো অবশ্য খাওয়ার জন্য শিকার করে ফেলে। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। চিতা বাঘের নামের সঙ্গে বাঘ থাকায় মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। মানুষ যখন এদের ঘিরে বড় জমায়েত করে কিংবা একে আক্রমণ করে, তখন এরাও নিজেকে বাঁচানোর তাগিদে পাল্টা আক্রমণ করে। যেকোনো প্রাণী এটাই করে। তখন মানুষ আরও ক্রুদ্ধ হয়ে এদের পিটিয়ে মেরে ফেলে। ওই এলাকায় সচেতনতা বাড়ানোই এই সমস্যার একমাত্র সমাধান দেখছি। ইদানীং এ ধরনের চিতা বাঘ মারা পড়ার কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে, আমরা উচ্চ পর্যায়ে মিটিং করে একটা সিদ্ধান্ত নেব। খুব সম্ভব আমাদের অ্যাওয়ারনেস বা সচেতনতা বৃদ্ধির যেসব প্রোগ্রাম আছে, তার আওতাভুক্ত করা হবে এটিকে।’
আশা রাখতে চাই
বাংলাদেশের বনে যে চিতা বাঘের মতো এত আশ্চর্য সুন্দর একটি প্রাণী আছে, এটি শিশুরা তো বটেই, অনেক প্রাপ্তবয়স্ক মানুষই জানেন না। তবে গবেষকদের গবেষণায় পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন বনে চিতা বাঘের স্থায়ী বসতি যে এখনো আছে, তা নিশ্চিত হওয়া গেছে। তেমনি সিলেট বিভাগের কোনো কোনো অরণ্যেও এদের দেখা যাওয়ার কথা শোনা যায় কখনো কখনো। এদিকে রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলায়, বিশেষ করে সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতেও এদের আনাগোনার খবর মিলছে নিয়মিত বিরতিতেই। এখানে এলে এদের করুণ পরিণতির শিকার হওয়ার পরও আশার কথা, পূর্বপুরুষের পুরোনো আস্তানাকে এখনো একেবারে ভুলে যায়নি নয়া জমানার চিতা বাঘেরা। এখন জরুরি মানুষের সঙ্গে এদের সংঘাতটা এড়ানো। আর যখন বাংলাদেশের ভূখণ্ডে এদের বিচরণ থাকে, তখন দরকার মানুষের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ একটি অবস্থান নিশ্চিত করা।

গত ২০ ডিসেম্বর নীলফামারীতে একটি চিতা বাঘকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে গ্রামবাসী। গত বছর একই জেলায় বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা পড়ে অপর একটি চিতা বাঘ। উত্তরাঞ্চলের পঞ্চগড়সহ বিভিন্ন জেলায় এর আগেও চিতা বাঘকে পিটিয়ে মারার ঘটনা ঘটেছে। এই চিতা বাঘেরা আসছে কোথা থেকে এবং এদের কীভাবে এমন মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করা যায়, তার উত্তর খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে লেখাটিতে।
২০ ডিসেম্বর। দুপুরের দিকে হঠাৎ এক প্রতিনিধির পাঠানো নিউজে চোখ আটকে গেল। চিতা বাঘের আক্রমণে কয়েকজন আহত হওয়ার খবর। প্রথম দেখাতেই ধরে নিয়েছিলাম মেছো বিড়ালকে ভুল করে চিতা বাঘ লেখা হয়েছে। কারণ বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মানুষ চিতা বাঘকে মেছো বিড়ালের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলে। তার পরই নিউজটির পড়তে গিয়ে দেখলাম ঘটনাস্থল নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলা। তখনই সন্দেহটা দানা বাঁধল। তাড়াতাড়ি প্রতিনিধি কী ছবি পাঠিয়েছেন দেখায় মন দিলাম। আরে, এ তো চিতা বাঘই। আরও পরিষ্কারভাবে বললে ছবিগুলো মৃত চিতা বাঘের। এবার নিউজটি পড়ে জানলাম, বন বিভাগের লোকেরা পৌঁছার আগেই চিতা বাঘটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে গ্রামবাসী। মনটা কেঁদে উঠল, আহহা! আবার নীলফামারী! আবার চিতা বাঘের মৃত্যু!
উত্তরাঞ্চলে কেন বারবার প্রাণ দিতে হয় চিতা বাঘদের
২০ ডিসেম্বরের ঘটনার বর্ণনায় পরে আসছি। আগে নীলফামারীর প্রসঙ্গে কেন নড়েচড়ে বসেছিলাম সেটা পরিষ্কার করা দরকার। গত বছর অর্থাৎ ২০২২ সালের ঘটনা। নীলফামারী সদর উপজেলার চওড়া বড়গাছা ইউনিয়নের কাঞ্চনপাড়া গ্রাম। সেখানকার এক মুরগির খামারে ৩ হাজারের বেশি মুরগি আছে। বনবিড়াল ও শিয়ালের কবল থেকে মুরগি বাঁচাতে খামারমালিক পুরো খামারটি জিআই তার দিয়ে ঘিরে বৈদ্যুতিক সংযোগ দেন। তবে সেখানে এক বৃহস্পতিবার রাতে (১৭ মার্চ ২০২২) ঘটল অস্বাভাবিক এক কাণ্ড। রাত তখন পৌনে ৩টা। খামারের পেছনে বন্যপ্রাণীর আওয়াজ পাওয়া গেল। দেরি না করে সুইচ টিপে বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়া হলো। এর কিছুক্ষণ পরই একটি জন্তু বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে পড়ার শব্দ। তবে আওয়াজটা বলে দিচ্ছিল বন বিড়াল বা শিয়াল নয়, অনেক বড় কোনো জন্তু আটকা পড়েছে ফাঁদে। আতঙ্কিত হয়ে বাড়ির মানুষ টর্চলাইট জ্বেলে চমকে ওঠেন। একটি চিতা বাঘ বিদ্যুতায়িত তারের স্পর্শে মরে পড়ে আছে।
বাঘ মারা পড়েছে—এটা তো বড় আনন্দের খবর; অন্তত আমাদের কাছে, তাই না! সকালে মৃত বাঘটির গলায় দড়ি পেঁচিয়ে বাইরে আনা হতেই একে দেখতে জড়ো হলো আশপাশের বিভিন্ন গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। তখন কেউ কেউ ওই খামারের পেছনের ভুট্টাখেতে ওপর অপর একটি চিতা বাঘ অদৃশ্য হওয়ার কথা বললেও নিশ্চিত প্রমাণ মেলেনি। পত্রিকা মারফত এবং পঞ্চগড়ের বন্যপ্রাণীপ্রেমী ও আলোকচিত্রী ফিরোজ আল সাবাহর সঙ্গে কথা বলে নীলফামারীর চিতা বাঘ সম্পর্কে মোটামুটি এসব তথ্য সংগ্রহ করতে পেরেছিলাম।
তবে দ্বিতীয় কোনো চিতা বাঘ সেদিন থেকে সেখানে থাকলে তার ভাগ্যটা ভালোই বলতে হয়। না হলে মানুষের পিটুনিতে ওটাকে হয়তো পৃথিবীর মায়া কাটাতে হতো। তবে ২০ ডিসেম্বরের দুর্ভাগা চিতা বাঘটি মারা গেছে মানুষের পিটুনিতেই।
এ সুযোগে একটা তথ্য জানিয়ে রাখি, ‘ডিটেকটিং দ্য স্পটস: আ রিভিও অন ল্যাপার্ড অকারেন্সেস ইন বাংলাদেশ’ নামের একটি গবেষণাপত্রে থেকে জানা যায়, ২০০৯ সাল থেকে শুধু উত্তরের, মানে রংপুর বিভাগের জেলাগুলোতে মানুষের পিটুনিতে মারা পড়েছে ছয়টি চিতা বাঘ। এর সঙ্গে ২০২২ ও ২০২৩ সালের ঘটনা দুটি যোগ করলে চিতা বাঘের অস্বাভাবিক মৃত্যুর সংখ্যা গিয়ে ঠেকেছে আটে। কী আশ্চর্য বিষয়, ঠিক না! এমন অদ্ভুত সুন্দর একটি প্রাণীর বেঁচে থাকার কোনো অধিকারই নেই!
দুর্ভাগা চিতা বাঘ
এবার তাহলে গত ২০ ডিসেম্বরের ঘটনাটির দিকে নজর দেই। বিভিন্ন পত্রিকার সংবাদ থেকে ও খোঁজখবর নিয়ে যদ্দুর জানা যায়, এদিন অর্থাৎ বুধবার বেলা ১১টার দিকে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার রংপুর-দিনাজপুর তিস্তা ক্যানেল ব্রিজসংলগ্ন গাছে একটি চিতা বাঘ দেখতে পান কৃষকেরা। জায়গাটি পড়েছে মাগুরা ইউনিয়নের আকালীবেচাপাড়া গ্রামের সীমানায়। ওই লোকগুলো চিৎকার দিলে এলাকার লোকজন বাঘ দেখার জন্য ভিড় জমায়। গাছটির দিকেও ঢিলও ছোড়ে অনেকে। সবকিছু মিলিয়ে সম্ভবত ঘাবড়ে যায় প্রাণীটি। গাছ থেকে নেমে পালাতে যায়। এ সময় প্রাণীটির সামনে পড়া গ্রামের কয়েক জন এর আক্রমণে আহত হয়। তারপর যা হওয়ার তাই হলো। স্থানীয় লোকজন বাঘটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলল। শুধু তাই নয়, ওটাকে গাছের মধ্যে ঝুলিয়ে দিল। আর এই মৃতদেহ দেখতে ভেঙে পড়ল আশপাশের কয়েক গ্রামের মানুষ।
পরে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে নালার মধ্যে চিতা বাঘটির বাঁচার জন্য দৌড়াদৌড়ি করা এবং একে মারার দৃশ্য দেখে মনটা খারাপ হয়ে যায়। যেভাবে বহু মানুষ মিলে তাড়া করে এত সুন্দর একটি প্রাণীকে মেরে ফেলল, তা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। প্রাণীটির নিস্তেজ হয়ে যাওয়ার পরও চলছিল আঘাত।
সত্যি কী এমন মৃত্যু প্রাপ্য চিতা বাঘেদের?
এখন মুরগির খামারের মুরগি চুরি নিঃসন্দেহ গৃহস্থের ক্ষতির কারণ। তেমনি মানুষ আক্রান্ত হওয়া তার চেয়েও অনেক বড় ব্যাপার। কিন্তু তাই বলে এমন মৃত্যু কি চিতা বাঘেদের প্রাপ্য? এমন একটি সুন্দর প্রাণীকে মারার পর গাছে ঝুলিয়ে রাখা কতটা মানবিক? ঘটনা হলো, একটা সময় আমাদের উত্তরাঞ্চলে অনেক চিতা বাঘই ছিল। তখন মানুষের বসতি কম ছিল, অনেক গ্রামীণ বন ছিল। কিন্তু আমরা মানুষই তো ওই বন ধ্বংস করে দিয়েছি। তাই এখানে চিতা বাঘ হয়ে গেছে এক অপরিচিত প্রাণী। এদিকে চিতা বাঘগুলো যখন এই এলাকায় আসে, তখন থাকার মতো জায়গা বা খাওয়ার মতো পর্যাপ্ত বন্যপ্রাণী না থাকায় এরা লোকালয়ে চলে আসে। এদিকে আমাদের মধ্যেও যে বন্যপ্রাণী দেখলে, এমনকি এরা কোনো ক্ষতি করলে তাদের মেরে ফেলার একটা প্রবণতা আছে তাতে সন্দেহ নেই। মানুষ এদের বিরক্ত না করলে অনেক সংঘাতই মনে হয় এড়ানো যেত।
এল কীভাবে?
কিন্তু ঘটনা হলো, নীলফামারীতে চিতা বাঘ এল কীভাবে? এটা সত্যি—একসময় পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী, দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম এলাকায় চিতা বাঘের দেখা মিলত বিস্তর। কিন্তু এই এলাকায় এখন বড় বন নেই। গ্রামীণ বনও কমে গেছে। তাই এদিকটায় চিতা বাঘের বসতির খবরও শোনা যায়নি। তবে কথা হলো, আমাদের উত্তরের এই জেলাগুলোর ওপাশেই ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার ও ডুয়ার্স এলাকা। চিতা বাঘের আড্ডাখানা। এখানকার চিতা বাঘেরা কোচবিহারে ও ডুয়ার্সের সবুজ চা-বাগানে ঘুরে বেড়ায় মনের আনন্দে। আর ওগুলোর মধ্যে যেগুলো একটু দুর্ভাগা, সেগুলোই হয়তো আমাদের পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম এলাকায় চলে আসে। তারপর কোনো গৃহস্থের মুরগির খামারে হানা দেওয়ার অপরাধে কিংবা নিজেদের হলুদে-কালোয় মেশানো সুন্দর চেহারাটা প্রকাশ পেয়ে যাওয়ার কারণে মারা পড়ে গ্রামবাসীর পিটুনিতে। অথচ আমাদের বরং প্রকৃতির আশ্চর্য সুন্দর এই প্রাণীগুলো এখনো এদিকটায় পা দেওয়ায় খুশি হওয়ার কথা।
এই অঞ্চলের পঞ্চগড়েই জীবিত চিতা বাঘের দুর্লভ একটি ছবি তুলছিলেন বন্যপ্রাণীপ্রেমী ও আলোকচিত্রী ফিরোজ আল সাবাহ। সেটা ২০১৮ সালে। একটা ঝোপে আশ্রয় নিয়েছিল বাঘটা। চারপাশ থেকে ঘিরে ফেলেছিল উৎসুক জনতা। মরিয়া চিতা বাঘটা হুংকার দিচ্ছিল, লেজ নাচাচ্ছিল। মনে হচ্ছিল, যেকোনো মুহূর্তে ঝোপ থেকে লাফ দেবে। এর মধ্যেই কাছে গিয়ে কয়েকটা ছবি তোলেন সাবাহ। অবশ্য উত্তেজিত জনতার রোষ থেকে আশ্চর্য সুন্দর সেই বাঘকে বাঁচানো যায়নি।
ফিরোজ আল সাবাহ এ ছাড়া তিনবার চিতা বাঘের আনাগোনার খবর পান বলে জানান। ২০১৫ সালে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার ভজনপুরের ডাহুক নদীর তীরে চিতা বাঘ দেখা গেছে খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে পায়ের ছাপ পেয়েছেন। ২০২০ সালে ভজনপুর ১০ মাইল এলাকায় চিতা বাঘ দেখা যাওয়ার খবর পান। কিন্তু সেখানে গিয়ে আর দেখা পাননি। ২০২২ সালে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায়ও চিতা বাঘের আস্তানা গাড়ার সংবাদ পেয়েছিলেন।
এবার একটু অন্যদিকে দৃষ্টি দিচ্ছি। ভারত থেকে আসছে এই চিতা বাঘ, ঠিক আছে। তবে এখানে একটি প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। ২০২২ সালের ঘটনাটা যেখানে ঘটেছে, সেখান থেকে ভারতের সীমান্ত অনেক দূরে। তেমনি গত ২০ ডিসেম্বরের ঘটনাস্থল কিশোরগঞ্জের ওই গ্রাম থেকেও সীমান্ত মোটামুটি কিলোমিটার চল্লিশেক দূরে বলে জেনেছি। চিতা বাঘের পক্ষে বড় দূরত্ব পেরোনো কঠিন কিছু নয়। তবে কথা হলো, এত লম্বা একটা এলাকা লোকবসতির মধ্যে পেরোল কীভাবে? আর এগুলো কি দেখা যাওয়ার দু-এক দিন আগেই সীমান্ত পেরিয়ে আসে? তারপর এত দূর চলে আসে? নাকি উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে চিতা বাঘের স্থায়ী কোনো বসতি না থাকলেও দীর্ঘ সময় কাটানোর মতো জায়গা আছে!
বর্তমানে শিক্ষাকালীন ছুটিতে থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুনতাসির আকাশের সঙ্গে কথা হয় এ বিষয়ে। তিনি বলেন, ‘পঞ্চগড় থেকে শুরু করে কুড়িগ্রাম পর্যন্ত সীমান্তের ওই পাশে ভারতে প্রচুর চা-বাগান আছে। এসব চা-বাগান ও আশপাশের জঙ্গলে প্রচুর চিতাবাঘ আছে। ওই দিক থেকে বাংলাদেশের অংশে সহজে চিতা বাঘ চলে আসতে পারে। তবে আমার ধারণা, এসব চিতা বাঘ এক-দুই দিনের জন্য আসে না। বরং বাংলাদেশের এই অংশে এদের নিয়মিত বিচরণ আছে। কখনো কখনো দীর্ঘ সময় এদের এই এলাকায় বাস করাও বিচিত্র নয়। এখানে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ভুট্টা ও আখখেত। এসব জায়গায় চিতা বাঘ অনায়াসে লুকিয়ে থাকতে পারে। ছোটখাটো প্রাণী শিকার করেও এরা বেঁচে থাকতে পারে। অর্থাৎ, মোটামুটি দীর্ঘ সময় থাকার জায়গা হিসেবেই উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন নির্জন এলাকা ব্যবহার করার সম্ভাবনা চিতা বাঘদের। এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো এসব চিতা বাঘ রক্ষা করা।’
এদিকে ফিরোজ আল সাবাহও উত্তরের কোনো জেলায় চিতা বাঘের মোটামুটি দীর্ঘ সময় আস্তানা গাড়ার সম্ভাবনার সঙ্গে একমত। তিনি বলেন, এপাশে এলে চিতা বাঘের থাকার জায়গা চর এলাকাগুলো। এই চর এলাকাগুলো ভুট্টা ও আখখেতে ভর্তি থাকে। অনেক চরে মানুষের আনাগোনা নেই। এসব এলাকায় বনবিড়াল, বুনো খরগোশ, শিয়ালের মতো প্রাণীও আছে। এ বছর ও ২০২২ সালে চিতা বাঘের মৃত্যুর ঘটনা দুটো যে জায়গাগুলোয় ঘটেছে, সেগুলো সীমান্ত থেকে অনেক দূরে। পরপর দুই বছর দুটি চিতা বাঘ মারা যাওয়ায় ধারণা করছি, চর এলাকায় এদের দীর্ঘ সময় কাটানোর মতো আবাসস্থল আছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মনিরুল খান অবশ্য মনে করেন, ভারতের অংশের বন থেকে আসা চিতা বাঘদের দীর্ঘদিন লুকিয়ে থাকার মতো পরিবেশ কিংবা পরিস্থিতি নেই এদিকে। কারণ বড় একটি প্রাণী থাকলে একে দেখা না গেলেও ছাগল-কুকুর মারা পড়ত। ভারতের অংশের সংরক্ষিত এলাকাগুলোর গ্রাস ল্যান্ডে অনেক সময় আগুন দেওয়া হয়। তখন এরা এদিকে হয়তো আসে। তবে পঞ্চগড়ে চা-বাগান তৈরি হওয়ায় এখানে ডুয়ার্সের দিক থেকে আসা চিতা বাঘদের বেশি সময় আশ্রয় নেওয়ার মতো জায়গা আছে বলে মনে করেন মনিরুল খান।
আমাদের কী করা উচিত
এখন আমাদের তাহলে কী করা উচিত? কীভাবে আমরা এদের রক্ষা করব? ভারতের অনেক জায়গাতেই মানুষ-চিতা বাঘ পাশাপাশি অবস্থানের নজির আছে। ভারতের রাজস্থানের বেরা, মহারাষ্ট্রের মুম্বাই, পশ্চিমবঙ্গের ডুয়ার্স প্রভৃতি এলাকায় মানুষের আশপাশেই প্রচুর চিতাবাঘ বাস করে। তাহলে আমাদের দেশেই কেন চিতা বাঘ দেখলেই মেরে ফেলতে হবে? তাহলে আমাদের কী করা উচিত?
মুনতাসির আকাশের মতে, সুন্দরবন অঞ্চলে যেমন টাইগার রেসপন্স টিম কিংবা গারো পাহাড় অঞ্চলে এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিম কাজ করে, এখানে তেমনি ল্যাপার্ড রেসপন্স টিম গঠন করা যেতে পারে, যারা সাধারণ মানুষকে চিতা বাঘ দেখলেই মেরে না ফেলার ব্যাপারে সচেতন করবেন। তেমনি লোকালয়ে চিতা বাঘ দেখা গেলে এদের সেখান থেকে নিরাপদে সরিয়ে দিতে কাজ করবে।
মনিরুল খান বলেন, এরা সাধারণত আক্রান্ত হলেই মানুষকে আক্রমণ করে। মিডিয়ায় সাধারণত আসে মানুষকে আক্রমণ করায় এদের পিটিয়ে মারা হয় এমন খবর। মানুষকে সচেতন করাই একমাত্র উপায়। চিতা বাঘ দেখা গেলেই যেন বন বিভাগকে জানানো হয়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।
বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চলের বন সংরক্ষক ইমরান আহমেদ বলেন, ‘প্রাণীটা আমাদের দেশের নয়। বাইরে থেকে (সীমান্ত পেরিয়ে) আসে। নীলগাইয়ের মতো প্রাণী এলে মানুষ সাধারণত আতঙ্কিত হয় না। কখনো অবশ্য খাওয়ার জন্য শিকার করে ফেলে। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। চিতা বাঘের নামের সঙ্গে বাঘ থাকায় মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। মানুষ যখন এদের ঘিরে বড় জমায়েত করে কিংবা একে আক্রমণ করে, তখন এরাও নিজেকে বাঁচানোর তাগিদে পাল্টা আক্রমণ করে। যেকোনো প্রাণী এটাই করে। তখন মানুষ আরও ক্রুদ্ধ হয়ে এদের পিটিয়ে মেরে ফেলে। ওই এলাকায় সচেতনতা বাড়ানোই এই সমস্যার একমাত্র সমাধান দেখছি। ইদানীং এ ধরনের চিতা বাঘ মারা পড়ার কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে, আমরা উচ্চ পর্যায়ে মিটিং করে একটা সিদ্ধান্ত নেব। খুব সম্ভব আমাদের অ্যাওয়ারনেস বা সচেতনতা বৃদ্ধির যেসব প্রোগ্রাম আছে, তার আওতাভুক্ত করা হবে এটিকে।’
আশা রাখতে চাই
বাংলাদেশের বনে যে চিতা বাঘের মতো এত আশ্চর্য সুন্দর একটি প্রাণী আছে, এটি শিশুরা তো বটেই, অনেক প্রাপ্তবয়স্ক মানুষই জানেন না। তবে গবেষকদের গবেষণায় পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন বনে চিতা বাঘের স্থায়ী বসতি যে এখনো আছে, তা নিশ্চিত হওয়া গেছে। তেমনি সিলেট বিভাগের কোনো কোনো অরণ্যেও এদের দেখা যাওয়ার কথা শোনা যায় কখনো কখনো। এদিকে রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলায়, বিশেষ করে সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতেও এদের আনাগোনার খবর মিলছে নিয়মিত বিরতিতেই। এখানে এলে এদের করুণ পরিণতির শিকার হওয়ার পরও আশার কথা, পূর্বপুরুষের পুরোনো আস্তানাকে এখনো একেবারে ভুলে যায়নি নয়া জমানার চিতা বাঘেরা। এখন জরুরি মানুষের সঙ্গে এদের সংঘাতটা এড়ানো। আর যখন বাংলাদেশের ভূখণ্ডে এদের বিচরণ থাকে, তখন দরকার মানুষের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ একটি অবস্থান নিশ্চিত করা।

ধরিত্রী রক্ষায় আমরা’—ধরা এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ২১টি সংগঠনের উদ্যোগে ১৩ ও ১৪ ডিসেম্বর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় মিলনায়তন, শেরেবাংলা নগর, ঢাকায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলন ৩য় ‘জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ ২০২৫’ (Climate Justice Assembly 2025)।
১ দিন আগে
জাপানের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে আঘাত হেনেছে রিখটার স্কেলে ৬ দশমিক ৭ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প। জাপান আবহাওয়া সংস্থার বরাতে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজ শুক্রবার স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ৪৪ মিনিট (গ্রিনিচ মান সময় ২টা ৪৪ মিনিট) নাগাদ এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
২ দিন আগে
বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের দূষিত শহর তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে আজ শুক্রবার ঢাকার অবস্থান ১০ম। অন্যদিকে গতকালের মতো আজও শীর্ষস্থানে দিল্লি। আজ সকাল ৯টা ৩০ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী ঢাকার বায়ুমান আজ ১৬৭, যা সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর বাতাসের নির্দেশক।
২ দিন আগে
আজ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক এবং আকাশ পরিষ্কার থাকতে পারে। সকাল ৬টায় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮৫ শতাংশ। দুপুর পর্যন্ত এই অঞ্চলের ওপর দিয়ে উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে।
২ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ধরিত্রী রক্ষায় আমরা’—ধরা এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ২১টি সংগঠনের উদ্যোগে আগামী ১৩ ও ১৪ ডিসেম্বর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় মিলনায়তন, শেরেবাংলা নগর, ঢাকায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলন ৩য় ‘জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ ২০২৫’ (Climate Justice Assembly 2025)।
বাংলাদেশসহ আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক মোট ১৪টি দেশের প্রায় ১ হাজার ৫০০ বিশিষ্ট পরিবেশবিদ, গবেষক, নীতিনির্ধারক ও সামাজিক আন্দোলনের নেতাদের উপস্থিতিতে এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ এই জলবায়ু অধিকারভিত্তিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
সম্মেলনের আগে আজ শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) ‘জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ ২০২৫’-এর আহ্বায়ক কমিটির আয়োজনে জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে একটি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সমাবেশের ঘোষণা দেন অ্যাসেম্বলি কমিটির সদস্যসচিব শরীফ জামিল।
‘জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ ২০২৫’-এর লক্ষ্য, প্রস্তুতি, অংশগ্রহণকারী দেশি-বিদেশি অতিথিসহ দুই দিনের সেশন পরিকল্পনা, র্যালি এবং অন্যান্য আয়োজন সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দুই দিনব্যাপী এই সমাবেশের প্রথম দিন ১৩ ডিসেম্বর সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে ক্লাইমেট র্যালিতে অংশগ্রহণ এবং র্যালি শেষে ক্লাইমেট জাস্টিজ এসেম্বলি ২০২৫ উদ্বোধন করবেন সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ। আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ও ধরার উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় এই উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি থাকবেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
দিনব্যাপী প্রোগ্রামে ৩টি প্লান্যারি সেশন থাকবে। বাংলাদেশে জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল থেকে আসা ভুক্তভোগীরা এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা বক্তব্য দেবেন।
দ্বিতীয় দিনে ১৪ ডিসেম্বর বিকেল ৪টায় সমাবেশের প্রথম দিনের আলোচনার সারসংক্ষেপ, সুপারিশ ও করণীয় নিয়ে উপস্থাপন করা হবে ‘ড্রাফট অ্যাসেম্বলি ডিক্লারেশন’।
শরীফ জামিল বলেন, ‘প্রান্তিক এবং অপ্রান্তিক সকল মানুষের সচেতনতার মধ্য দিয়েই রূপান্তরের বাস্তবতার ন্যায্যতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। সেই লক্ষ্যে এই জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ ২০২৫।’
ক্লাইমেট জাস্টিজ অ্যাসেম্বলি ২০২৫-এর আহ্বায়ক ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, ‘পরিবেশ ও জলবায়ু বিশ্বব্যাপী হুমকির মুখে, ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশও। এই ঝুঁকি মোকাবিলায় আমাদের পরিবেশকর্মীরা নিঃস্বার্থভাবে কাজ করছে; যা একটি মহৎ কাজ। কোনো কিছুর বিনিময়ে এ কাজের মূল্যায়ন সম্ভব নয়। কিন্তু এই ঝুঁকি মোকাবিলায় অর্থায়ন প্রয়োজন। আমার যে জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ করতে যাচ্ছি, তাতে অনেক সহযোগীর সহযোগিতা প্রয়োজন রয়েছে, তা-ও প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। সঠিক রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে জলবায়ু ন্যায্যতার ন্যায্য প্রতিফলন পাওয়া সম্ভব।
এ ছাড়া সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন কো-কনভেনর, ক্লাইমেট জাস্টিজ অ্যাসেম্বলি ২০২৫-এর কো-কনভেনর এম এস সিদ্দিকি, সিপিআরডির প্রধান নির্বাহী মো. শামসুদ্দোহা, সিলেট মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ জহিরুল হক, শেরেবাংলা নগর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মীর মোহাম্মদ আলী।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সেন্টার ফর রিনিউয়েবল এনার্জি সার্ভিস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাকিলা আজিজ এবং জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ ২০২৫ এর সমন্বয়ক এবং সহযোগী সমন্বয়কেরা।
জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ ২০২৫-এর আয়োজক ‘ধরিত্রী রক্ষায় আমরা’ (ধরা)। সহযোগী আয়োজক সিপিআরডি, কোস্ট ফাউন্ডেশন, সেন্টার ফর রিনিউয়েবল এনার্জি সার্ভিসেস, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, মিশনগ্রিন বাংলাদেশ, ব্রাইটার্স, ওএবি ফাউন্ডেশন, এশিয়ান পিপলস মুভমেন্ট অন ডেবট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, অলটারনেটিভ ল কালেকটিভ, আর্টিভিস্ট নেটওয়ার্ক, ফসিল ফুয়েল নন-প্রলিফারেশন ট্রিটি ইনিশিয়েটিভ, ফসিল ফ্রি জাপান, গ্রিন কাউন্সিল, জাপান সেন্টার ফর আ সাসটেইনেবল এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোসাইটি, এলডিসি ওয়াচ, মাইনস, মিনারেলস অ্যান্ড পিপল, নেটজভের্ক এনার্জিভেন্ডে, ফিলিপাইন মুভমেন্ট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস, পলিসি রিসার্স ইনস্টিটিউট ফর ইকুটেবল ডেভেলপমেন্ট, রিভারফক্স, সিডব্লিউটি।

ধরিত্রী রক্ষায় আমরা’—ধরা এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ২১টি সংগঠনের উদ্যোগে আগামী ১৩ ও ১৪ ডিসেম্বর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় মিলনায়তন, শেরেবাংলা নগর, ঢাকায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলন ৩য় ‘জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ ২০২৫’ (Climate Justice Assembly 2025)।
বাংলাদেশসহ আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক মোট ১৪টি দেশের প্রায় ১ হাজার ৫০০ বিশিষ্ট পরিবেশবিদ, গবেষক, নীতিনির্ধারক ও সামাজিক আন্দোলনের নেতাদের উপস্থিতিতে এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ এই জলবায়ু অধিকারভিত্তিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
সম্মেলনের আগে আজ শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) ‘জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ ২০২৫’-এর আহ্বায়ক কমিটির আয়োজনে জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে একটি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সমাবেশের ঘোষণা দেন অ্যাসেম্বলি কমিটির সদস্যসচিব শরীফ জামিল।
‘জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ ২০২৫’-এর লক্ষ্য, প্রস্তুতি, অংশগ্রহণকারী দেশি-বিদেশি অতিথিসহ দুই দিনের সেশন পরিকল্পনা, র্যালি এবং অন্যান্য আয়োজন সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দুই দিনব্যাপী এই সমাবেশের প্রথম দিন ১৩ ডিসেম্বর সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে ক্লাইমেট র্যালিতে অংশগ্রহণ এবং র্যালি শেষে ক্লাইমেট জাস্টিজ এসেম্বলি ২০২৫ উদ্বোধন করবেন সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ। আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ও ধরার উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় এই উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি থাকবেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
দিনব্যাপী প্রোগ্রামে ৩টি প্লান্যারি সেশন থাকবে। বাংলাদেশে জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল থেকে আসা ভুক্তভোগীরা এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা বক্তব্য দেবেন।
দ্বিতীয় দিনে ১৪ ডিসেম্বর বিকেল ৪টায় সমাবেশের প্রথম দিনের আলোচনার সারসংক্ষেপ, সুপারিশ ও করণীয় নিয়ে উপস্থাপন করা হবে ‘ড্রাফট অ্যাসেম্বলি ডিক্লারেশন’।
শরীফ জামিল বলেন, ‘প্রান্তিক এবং অপ্রান্তিক সকল মানুষের সচেতনতার মধ্য দিয়েই রূপান্তরের বাস্তবতার ন্যায্যতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। সেই লক্ষ্যে এই জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ ২০২৫।’
ক্লাইমেট জাস্টিজ অ্যাসেম্বলি ২০২৫-এর আহ্বায়ক ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, ‘পরিবেশ ও জলবায়ু বিশ্বব্যাপী হুমকির মুখে, ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশও। এই ঝুঁকি মোকাবিলায় আমাদের পরিবেশকর্মীরা নিঃস্বার্থভাবে কাজ করছে; যা একটি মহৎ কাজ। কোনো কিছুর বিনিময়ে এ কাজের মূল্যায়ন সম্ভব নয়। কিন্তু এই ঝুঁকি মোকাবিলায় অর্থায়ন প্রয়োজন। আমার যে জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ করতে যাচ্ছি, তাতে অনেক সহযোগীর সহযোগিতা প্রয়োজন রয়েছে, তা-ও প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। সঠিক রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে জলবায়ু ন্যায্যতার ন্যায্য প্রতিফলন পাওয়া সম্ভব।
এ ছাড়া সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন কো-কনভেনর, ক্লাইমেট জাস্টিজ অ্যাসেম্বলি ২০২৫-এর কো-কনভেনর এম এস সিদ্দিকি, সিপিআরডির প্রধান নির্বাহী মো. শামসুদ্দোহা, সিলেট মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ জহিরুল হক, শেরেবাংলা নগর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মীর মোহাম্মদ আলী।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সেন্টার ফর রিনিউয়েবল এনার্জি সার্ভিস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাকিলা আজিজ এবং জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ ২০২৫ এর সমন্বয়ক এবং সহযোগী সমন্বয়কেরা।
জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ ২০২৫-এর আয়োজক ‘ধরিত্রী রক্ষায় আমরা’ (ধরা)। সহযোগী আয়োজক সিপিআরডি, কোস্ট ফাউন্ডেশন, সেন্টার ফর রিনিউয়েবল এনার্জি সার্ভিসেস, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, মিশনগ্রিন বাংলাদেশ, ব্রাইটার্স, ওএবি ফাউন্ডেশন, এশিয়ান পিপলস মুভমেন্ট অন ডেবট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, অলটারনেটিভ ল কালেকটিভ, আর্টিভিস্ট নেটওয়ার্ক, ফসিল ফুয়েল নন-প্রলিফারেশন ট্রিটি ইনিশিয়েটিভ, ফসিল ফ্রি জাপান, গ্রিন কাউন্সিল, জাপান সেন্টার ফর আ সাসটেইনেবল এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোসাইটি, এলডিসি ওয়াচ, মাইনস, মিনারেলস অ্যান্ড পিপল, নেটজভের্ক এনার্জিভেন্ডে, ফিলিপাইন মুভমেন্ট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস, পলিসি রিসার্স ইনস্টিটিউট ফর ইকুটেবল ডেভেলপমেন্ট, রিভারফক্স, সিডব্লিউটি।

গত ২০ ডিসেম্বর নীলফামারীতে একটি চিতা বাঘকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে গ্রামবাসী। গত বছর একই জেলায় বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা পড়ে অপর একটি চিতা বাঘ। উত্তরাঞ্চলের পঞ্চগড়সহ বিভিন্ন জেলায় এর আগেও চিতা বাঘকে পিটিয়ে মারার ঘটনা ঘটেছে। এই চিতা বাঘেরা আসছে কোথা থেকে এবং এদের কীভাবে এমন মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করা যায় তার উ
২৪ ডিসেম্বর ২০২৩
জাপানের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে আঘাত হেনেছে রিখটার স্কেলে ৬ দশমিক ৭ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প। জাপান আবহাওয়া সংস্থার বরাতে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজ শুক্রবার স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ৪৪ মিনিট (গ্রিনিচ মান সময় ২টা ৪৪ মিনিট) নাগাদ এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
২ দিন আগে
বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের দূষিত শহর তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে আজ শুক্রবার ঢাকার অবস্থান ১০ম। অন্যদিকে গতকালের মতো আজও শীর্ষস্থানে দিল্লি। আজ সকাল ৯টা ৩০ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী ঢাকার বায়ুমান আজ ১৬৭, যা সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর বাতাসের নির্দেশক।
২ দিন আগে
আজ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক এবং আকাশ পরিষ্কার থাকতে পারে। সকাল ৬টায় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮৫ শতাংশ। দুপুর পর্যন্ত এই অঞ্চলের ওপর দিয়ে উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে।
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

জাপানের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে আঘাত হেনেছে রিখটার স্কেলে ৬ দশমিক ৭ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প। জাপান আবহাওয়া সংস্থার বরাতে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজ শুক্রবার স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ৪৪ মিনিট (গ্রিনিচ মান সময় ২টা ৪৪ মিনিট) নাগাদ এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে ২০ কিলোমিটার গভীরে। মূল কম্পনের পর বেশ কয়েকটি ছোট আফটারশকও অনুভূত হয়েছে।
ভূমিকম্পের পরিপ্রেক্ষিতে জাপানের পূর্বাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকাগুলোর জন্য সতর্কতা হিসেবে ‘সুনামি অ্যাডভাইজরি’ জারি করা হয়েছে। আবহাওয়া সংস্থা সতর্ক করে জানিয়েছে, ঢেউগুলো প্রায় এক মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে, তাই উপকূলবাসীকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
চলতি সপ্তাহের গোড়ার দিকে একই অঞ্চলে ৭ দশমিক ৫ মাত্রার আরেকটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল। এতে বহু বাসিন্দা আহত হয়েছেন। সর্বশেষ পরিস্থিতি ও ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে এখনো বিস্তারিত জানা যায়নি।

জাপানের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে আঘাত হেনেছে রিখটার স্কেলে ৬ দশমিক ৭ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প। জাপান আবহাওয়া সংস্থার বরাতে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজ শুক্রবার স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ৪৪ মিনিট (গ্রিনিচ মান সময় ২টা ৪৪ মিনিট) নাগাদ এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে ২০ কিলোমিটার গভীরে। মূল কম্পনের পর বেশ কয়েকটি ছোট আফটারশকও অনুভূত হয়েছে।
ভূমিকম্পের পরিপ্রেক্ষিতে জাপানের পূর্বাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকাগুলোর জন্য সতর্কতা হিসেবে ‘সুনামি অ্যাডভাইজরি’ জারি করা হয়েছে। আবহাওয়া সংস্থা সতর্ক করে জানিয়েছে, ঢেউগুলো প্রায় এক মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে, তাই উপকূলবাসীকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
চলতি সপ্তাহের গোড়ার দিকে একই অঞ্চলে ৭ দশমিক ৫ মাত্রার আরেকটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল। এতে বহু বাসিন্দা আহত হয়েছেন। সর্বশেষ পরিস্থিতি ও ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে এখনো বিস্তারিত জানা যায়নি।

গত ২০ ডিসেম্বর নীলফামারীতে একটি চিতা বাঘকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে গ্রামবাসী। গত বছর একই জেলায় বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা পড়ে অপর একটি চিতা বাঘ। উত্তরাঞ্চলের পঞ্চগড়সহ বিভিন্ন জেলায় এর আগেও চিতা বাঘকে পিটিয়ে মারার ঘটনা ঘটেছে। এই চিতা বাঘেরা আসছে কোথা থেকে এবং এদের কীভাবে এমন মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করা যায় তার উ
২৪ ডিসেম্বর ২০২৩
ধরিত্রী রক্ষায় আমরা’—ধরা এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ২১টি সংগঠনের উদ্যোগে ১৩ ও ১৪ ডিসেম্বর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় মিলনায়তন, শেরেবাংলা নগর, ঢাকায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলন ৩য় ‘জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ ২০২৫’ (Climate Justice Assembly 2025)।
১ দিন আগে
বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের দূষিত শহর তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে আজ শুক্রবার ঢাকার অবস্থান ১০ম। অন্যদিকে গতকালের মতো আজও শীর্ষস্থানে দিল্লি। আজ সকাল ৯টা ৩০ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী ঢাকার বায়ুমান আজ ১৬৭, যা সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর বাতাসের নির্দেশক।
২ দিন আগে
আজ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক এবং আকাশ পরিষ্কার থাকতে পারে। সকাল ৬টায় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮৫ শতাংশ। দুপুর পর্যন্ত এই অঞ্চলের ওপর দিয়ে উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে।
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের দূষিত শহর তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে আজ শুক্রবার ঢাকার অবস্থান ১০ম। অন্যদিকে গতকালের মতো আজও শীর্ষস্থানে দিল্লি।
আজ সকাল ৯টা ৩০ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী ঢাকার বায়ুমান আজ ১৬৭, যা সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর বাতাসের নির্দেশক। আর শীর্ষে থাকা দিল্লির বায়ুমান ৩৮৫, যা বিপজ্জনক বাতাসের নির্দেশক।
শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো— ভিয়েতনামের হ্যানয়, ভারতের কলকাতা, কুয়েতের কুয়েত সিটি ও পাকিস্তানের লাহোর। শহরগুলোর বায়ুমান যথাক্রমে ২৫৫, ২৪৬, ২১৭ ও ২১১।
বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশি মাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১-১৫০ এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।
বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতি বছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।
দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।
পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের দূষিত শহর তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে আজ শুক্রবার ঢাকার অবস্থান ১০ম। অন্যদিকে গতকালের মতো আজও শীর্ষস্থানে দিল্লি।
আজ সকাল ৯টা ৩০ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী ঢাকার বায়ুমান আজ ১৬৭, যা সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর বাতাসের নির্দেশক। আর শীর্ষে থাকা দিল্লির বায়ুমান ৩৮৫, যা বিপজ্জনক বাতাসের নির্দেশক।
শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো— ভিয়েতনামের হ্যানয়, ভারতের কলকাতা, কুয়েতের কুয়েত সিটি ও পাকিস্তানের লাহোর। শহরগুলোর বায়ুমান যথাক্রমে ২৫৫, ২৪৬, ২১৭ ও ২১১।
বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশি মাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১-১৫০ এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।
বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতি বছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।
দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।
পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

গত ২০ ডিসেম্বর নীলফামারীতে একটি চিতা বাঘকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে গ্রামবাসী। গত বছর একই জেলায় বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা পড়ে অপর একটি চিতা বাঘ। উত্তরাঞ্চলের পঞ্চগড়সহ বিভিন্ন জেলায় এর আগেও চিতা বাঘকে পিটিয়ে মারার ঘটনা ঘটেছে। এই চিতা বাঘেরা আসছে কোথা থেকে এবং এদের কীভাবে এমন মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করা যায় তার উ
২৪ ডিসেম্বর ২০২৩
ধরিত্রী রক্ষায় আমরা’—ধরা এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ২১টি সংগঠনের উদ্যোগে ১৩ ও ১৪ ডিসেম্বর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় মিলনায়তন, শেরেবাংলা নগর, ঢাকায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলন ৩য় ‘জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ ২০২৫’ (Climate Justice Assembly 2025)।
১ দিন আগে
জাপানের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে আঘাত হেনেছে রিখটার স্কেলে ৬ দশমিক ৭ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প। জাপান আবহাওয়া সংস্থার বরাতে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজ শুক্রবার স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ৪৪ মিনিট (গ্রিনিচ মান সময় ২টা ৪৪ মিনিট) নাগাদ এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
২ দিন আগে
আজ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক এবং আকাশ পরিষ্কার থাকতে পারে। সকাল ৬টায় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮৫ শতাংশ। দুপুর পর্যন্ত এই অঞ্চলের ওপর দিয়ে উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে।
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

রাজধানী ঢাকায় গত কয়েক দিন ধরেই তাপমাত্রা কমছিল। তবে আজ শুক্রবার শীত বেশ ভালোভাবেই জেঁকে বসেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ সকালে সেটি কমে হয়েছে ১৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আজ সকাল ৭টায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পূর্বাভাস থেকে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়, আজ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক এবং আকাশ পরিষ্কার থাকতে পারে। সকাল ৬টায় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮৫ শতাংশ। দুপুর পর্যন্ত এই অঞ্চলের ওপর দিয়ে উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা সাধারণত অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
আজ ঢাকায় সূর্যাস্তের সময় সন্ধ্যা ৫টা ১৩ মিনিটে, আগামীকাল সূর্যাস্ত ৬টা ৩৩ মিনিটে।

রাজধানী ঢাকায় গত কয়েক দিন ধরেই তাপমাত্রা কমছিল। তবে আজ শুক্রবার শীত বেশ ভালোভাবেই জেঁকে বসেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ সকালে সেটি কমে হয়েছে ১৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আজ সকাল ৭টায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পূর্বাভাস থেকে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়, আজ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক এবং আকাশ পরিষ্কার থাকতে পারে। সকাল ৬টায় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮৫ শতাংশ। দুপুর পর্যন্ত এই অঞ্চলের ওপর দিয়ে উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা সাধারণত অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
আজ ঢাকায় সূর্যাস্তের সময় সন্ধ্যা ৫টা ১৩ মিনিটে, আগামীকাল সূর্যাস্ত ৬টা ৩৩ মিনিটে।

গত ২০ ডিসেম্বর নীলফামারীতে একটি চিতা বাঘকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে গ্রামবাসী। গত বছর একই জেলায় বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা পড়ে অপর একটি চিতা বাঘ। উত্তরাঞ্চলের পঞ্চগড়সহ বিভিন্ন জেলায় এর আগেও চিতা বাঘকে পিটিয়ে মারার ঘটনা ঘটেছে। এই চিতা বাঘেরা আসছে কোথা থেকে এবং এদের কীভাবে এমন মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করা যায় তার উ
২৪ ডিসেম্বর ২০২৩
ধরিত্রী রক্ষায় আমরা’—ধরা এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ২১টি সংগঠনের উদ্যোগে ১৩ ও ১৪ ডিসেম্বর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় মিলনায়তন, শেরেবাংলা নগর, ঢাকায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলন ৩য় ‘জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ ২০২৫’ (Climate Justice Assembly 2025)।
১ দিন আগে
জাপানের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে আঘাত হেনেছে রিখটার স্কেলে ৬ দশমিক ৭ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প। জাপান আবহাওয়া সংস্থার বরাতে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজ শুক্রবার স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ৪৪ মিনিট (গ্রিনিচ মান সময় ২টা ৪৪ মিনিট) নাগাদ এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
২ দিন আগে
বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের দূষিত শহর তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে আজ শুক্রবার ঢাকার অবস্থান ১০ম। অন্যদিকে গতকালের মতো আজও শীর্ষস্থানে দিল্লি। আজ সকাল ৯টা ৩০ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী ঢাকার বায়ুমান আজ ১৬৭, যা সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর বাতাসের নির্দেশক।
২ দিন আগে