ইশতিয়াক হাসান

গত ২০ ডিসেম্বর নীলফামারীতে একটি চিতা বাঘকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে গ্রামবাসী। গত বছর একই জেলায় বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা পড়ে অপর একটি চিতা বাঘ। উত্তরাঞ্চলের পঞ্চগড়সহ বিভিন্ন জেলায় এর আগেও চিতা বাঘকে পিটিয়ে মারার ঘটনা ঘটেছে। এই চিতা বাঘেরা আসছে কোথা থেকে এবং এদের কীভাবে এমন মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করা যায়, তার উত্তর খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে লেখাটিতে।
২০ ডিসেম্বর। দুপুরের দিকে হঠাৎ এক প্রতিনিধির পাঠানো নিউজে চোখ আটকে গেল। চিতা বাঘের আক্রমণে কয়েকজন আহত হওয়ার খবর। প্রথম দেখাতেই ধরে নিয়েছিলাম মেছো বিড়ালকে ভুল করে চিতা বাঘ লেখা হয়েছে। কারণ বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মানুষ চিতা বাঘকে মেছো বিড়ালের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলে। তার পরই নিউজটির পড়তে গিয়ে দেখলাম ঘটনাস্থল নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলা। তখনই সন্দেহটা দানা বাঁধল। তাড়াতাড়ি প্রতিনিধি কী ছবি পাঠিয়েছেন দেখায় মন দিলাম। আরে, এ তো চিতা বাঘই। আরও পরিষ্কারভাবে বললে ছবিগুলো মৃত চিতা বাঘের। এবার নিউজটি পড়ে জানলাম, বন বিভাগের লোকেরা পৌঁছার আগেই চিতা বাঘটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে গ্রামবাসী। মনটা কেঁদে উঠল, আহহা! আবার নীলফামারী! আবার চিতা বাঘের মৃত্যু!
উত্তরাঞ্চলে কেন বারবার প্রাণ দিতে হয় চিতা বাঘদের
২০ ডিসেম্বরের ঘটনার বর্ণনায় পরে আসছি। আগে নীলফামারীর প্রসঙ্গে কেন নড়েচড়ে বসেছিলাম সেটা পরিষ্কার করা দরকার। গত বছর অর্থাৎ ২০২২ সালের ঘটনা। নীলফামারী সদর উপজেলার চওড়া বড়গাছা ইউনিয়নের কাঞ্চনপাড়া গ্রাম। সেখানকার এক মুরগির খামারে ৩ হাজারের বেশি মুরগি আছে। বনবিড়াল ও শিয়ালের কবল থেকে মুরগি বাঁচাতে খামারমালিক পুরো খামারটি জিআই তার দিয়ে ঘিরে বৈদ্যুতিক সংযোগ দেন। তবে সেখানে এক বৃহস্পতিবার রাতে (১৭ মার্চ ২০২২) ঘটল অস্বাভাবিক এক কাণ্ড। রাত তখন পৌনে ৩টা। খামারের পেছনে বন্যপ্রাণীর আওয়াজ পাওয়া গেল। দেরি না করে সুইচ টিপে বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়া হলো। এর কিছুক্ষণ পরই একটি জন্তু বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে পড়ার শব্দ। তবে আওয়াজটা বলে দিচ্ছিল বন বিড়াল বা শিয়াল নয়, অনেক বড় কোনো জন্তু আটকা পড়েছে ফাঁদে। আতঙ্কিত হয়ে বাড়ির মানুষ টর্চলাইট জ্বেলে চমকে ওঠেন। একটি চিতা বাঘ বিদ্যুতায়িত তারের স্পর্শে মরে পড়ে আছে।
বাঘ মারা পড়েছে—এটা তো বড় আনন্দের খবর; অন্তত আমাদের কাছে, তাই না! সকালে মৃত বাঘটির গলায় দড়ি পেঁচিয়ে বাইরে আনা হতেই একে দেখতে জড়ো হলো আশপাশের বিভিন্ন গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। তখন কেউ কেউ ওই খামারের পেছনের ভুট্টাখেতে ওপর অপর একটি চিতা বাঘ অদৃশ্য হওয়ার কথা বললেও নিশ্চিত প্রমাণ মেলেনি। পত্রিকা মারফত এবং পঞ্চগড়ের বন্যপ্রাণীপ্রেমী ও আলোকচিত্রী ফিরোজ আল সাবাহর সঙ্গে কথা বলে নীলফামারীর চিতা বাঘ সম্পর্কে মোটামুটি এসব তথ্য সংগ্রহ করতে পেরেছিলাম।
তবে দ্বিতীয় কোনো চিতা বাঘ সেদিন থেকে সেখানে থাকলে তার ভাগ্যটা ভালোই বলতে হয়। না হলে মানুষের পিটুনিতে ওটাকে হয়তো পৃথিবীর মায়া কাটাতে হতো। তবে ২০ ডিসেম্বরের দুর্ভাগা চিতা বাঘটি মারা গেছে মানুষের পিটুনিতেই।
এ সুযোগে একটা তথ্য জানিয়ে রাখি, ‘ডিটেকটিং দ্য স্পটস: আ রিভিও অন ল্যাপার্ড অকারেন্সেস ইন বাংলাদেশ’ নামের একটি গবেষণাপত্রে থেকে জানা যায়, ২০০৯ সাল থেকে শুধু উত্তরের, মানে রংপুর বিভাগের জেলাগুলোতে মানুষের পিটুনিতে মারা পড়েছে ছয়টি চিতা বাঘ। এর সঙ্গে ২০২২ ও ২০২৩ সালের ঘটনা দুটি যোগ করলে চিতা বাঘের অস্বাভাবিক মৃত্যুর সংখ্যা গিয়ে ঠেকেছে আটে। কী আশ্চর্য বিষয়, ঠিক না! এমন অদ্ভুত সুন্দর একটি প্রাণীর বেঁচে থাকার কোনো অধিকারই নেই!
দুর্ভাগা চিতা বাঘ
এবার তাহলে গত ২০ ডিসেম্বরের ঘটনাটির দিকে নজর দেই। বিভিন্ন পত্রিকার সংবাদ থেকে ও খোঁজখবর নিয়ে যদ্দুর জানা যায়, এদিন অর্থাৎ বুধবার বেলা ১১টার দিকে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার রংপুর-দিনাজপুর তিস্তা ক্যানেল ব্রিজসংলগ্ন গাছে একটি চিতা বাঘ দেখতে পান কৃষকেরা। জায়গাটি পড়েছে মাগুরা ইউনিয়নের আকালীবেচাপাড়া গ্রামের সীমানায়। ওই লোকগুলো চিৎকার দিলে এলাকার লোকজন বাঘ দেখার জন্য ভিড় জমায়। গাছটির দিকেও ঢিলও ছোড়ে অনেকে। সবকিছু মিলিয়ে সম্ভবত ঘাবড়ে যায় প্রাণীটি। গাছ থেকে নেমে পালাতে যায়। এ সময় প্রাণীটির সামনে পড়া গ্রামের কয়েক জন এর আক্রমণে আহত হয়। তারপর যা হওয়ার তাই হলো। স্থানীয় লোকজন বাঘটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলল। শুধু তাই নয়, ওটাকে গাছের মধ্যে ঝুলিয়ে দিল। আর এই মৃতদেহ দেখতে ভেঙে পড়ল আশপাশের কয়েক গ্রামের মানুষ।
পরে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে নালার মধ্যে চিতা বাঘটির বাঁচার জন্য দৌড়াদৌড়ি করা এবং একে মারার দৃশ্য দেখে মনটা খারাপ হয়ে যায়। যেভাবে বহু মানুষ মিলে তাড়া করে এত সুন্দর একটি প্রাণীকে মেরে ফেলল, তা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। প্রাণীটির নিস্তেজ হয়ে যাওয়ার পরও চলছিল আঘাত।
সত্যি কী এমন মৃত্যু প্রাপ্য চিতা বাঘেদের?
এখন মুরগির খামারের মুরগি চুরি নিঃসন্দেহ গৃহস্থের ক্ষতির কারণ। তেমনি মানুষ আক্রান্ত হওয়া তার চেয়েও অনেক বড় ব্যাপার। কিন্তু তাই বলে এমন মৃত্যু কি চিতা বাঘেদের প্রাপ্য? এমন একটি সুন্দর প্রাণীকে মারার পর গাছে ঝুলিয়ে রাখা কতটা মানবিক? ঘটনা হলো, একটা সময় আমাদের উত্তরাঞ্চলে অনেক চিতা বাঘই ছিল। তখন মানুষের বসতি কম ছিল, অনেক গ্রামীণ বন ছিল। কিন্তু আমরা মানুষই তো ওই বন ধ্বংস করে দিয়েছি। তাই এখানে চিতা বাঘ হয়ে গেছে এক অপরিচিত প্রাণী। এদিকে চিতা বাঘগুলো যখন এই এলাকায় আসে, তখন থাকার মতো জায়গা বা খাওয়ার মতো পর্যাপ্ত বন্যপ্রাণী না থাকায় এরা লোকালয়ে চলে আসে। এদিকে আমাদের মধ্যেও যে বন্যপ্রাণী দেখলে, এমনকি এরা কোনো ক্ষতি করলে তাদের মেরে ফেলার একটা প্রবণতা আছে তাতে সন্দেহ নেই। মানুষ এদের বিরক্ত না করলে অনেক সংঘাতই মনে হয় এড়ানো যেত।
এল কীভাবে?
কিন্তু ঘটনা হলো, নীলফামারীতে চিতা বাঘ এল কীভাবে? এটা সত্যি—একসময় পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী, দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম এলাকায় চিতা বাঘের দেখা মিলত বিস্তর। কিন্তু এই এলাকায় এখন বড় বন নেই। গ্রামীণ বনও কমে গেছে। তাই এদিকটায় চিতা বাঘের বসতির খবরও শোনা যায়নি। তবে কথা হলো, আমাদের উত্তরের এই জেলাগুলোর ওপাশেই ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার ও ডুয়ার্স এলাকা। চিতা বাঘের আড্ডাখানা। এখানকার চিতা বাঘেরা কোচবিহারে ও ডুয়ার্সের সবুজ চা-বাগানে ঘুরে বেড়ায় মনের আনন্দে। আর ওগুলোর মধ্যে যেগুলো একটু দুর্ভাগা, সেগুলোই হয়তো আমাদের পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম এলাকায় চলে আসে। তারপর কোনো গৃহস্থের মুরগির খামারে হানা দেওয়ার অপরাধে কিংবা নিজেদের হলুদে-কালোয় মেশানো সুন্দর চেহারাটা প্রকাশ পেয়ে যাওয়ার কারণে মারা পড়ে গ্রামবাসীর পিটুনিতে। অথচ আমাদের বরং প্রকৃতির আশ্চর্য সুন্দর এই প্রাণীগুলো এখনো এদিকটায় পা দেওয়ায় খুশি হওয়ার কথা।
এই অঞ্চলের পঞ্চগড়েই জীবিত চিতা বাঘের দুর্লভ একটি ছবি তুলছিলেন বন্যপ্রাণীপ্রেমী ও আলোকচিত্রী ফিরোজ আল সাবাহ। সেটা ২০১৮ সালে। একটা ঝোপে আশ্রয় নিয়েছিল বাঘটা। চারপাশ থেকে ঘিরে ফেলেছিল উৎসুক জনতা। মরিয়া চিতা বাঘটা হুংকার দিচ্ছিল, লেজ নাচাচ্ছিল। মনে হচ্ছিল, যেকোনো মুহূর্তে ঝোপ থেকে লাফ দেবে। এর মধ্যেই কাছে গিয়ে কয়েকটা ছবি তোলেন সাবাহ। অবশ্য উত্তেজিত জনতার রোষ থেকে আশ্চর্য সুন্দর সেই বাঘকে বাঁচানো যায়নি।
ফিরোজ আল সাবাহ এ ছাড়া তিনবার চিতা বাঘের আনাগোনার খবর পান বলে জানান। ২০১৫ সালে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার ভজনপুরের ডাহুক নদীর তীরে চিতা বাঘ দেখা গেছে খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে পায়ের ছাপ পেয়েছেন। ২০২০ সালে ভজনপুর ১০ মাইল এলাকায় চিতা বাঘ দেখা যাওয়ার খবর পান। কিন্তু সেখানে গিয়ে আর দেখা পাননি। ২০২২ সালে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায়ও চিতা বাঘের আস্তানা গাড়ার সংবাদ পেয়েছিলেন।
এবার একটু অন্যদিকে দৃষ্টি দিচ্ছি। ভারত থেকে আসছে এই চিতা বাঘ, ঠিক আছে। তবে এখানে একটি প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। ২০২২ সালের ঘটনাটা যেখানে ঘটেছে, সেখান থেকে ভারতের সীমান্ত অনেক দূরে। তেমনি গত ২০ ডিসেম্বরের ঘটনাস্থল কিশোরগঞ্জের ওই গ্রাম থেকেও সীমান্ত মোটামুটি কিলোমিটার চল্লিশেক দূরে বলে জেনেছি। চিতা বাঘের পক্ষে বড় দূরত্ব পেরোনো কঠিন কিছু নয়। তবে কথা হলো, এত লম্বা একটা এলাকা লোকবসতির মধ্যে পেরোল কীভাবে? আর এগুলো কি দেখা যাওয়ার দু-এক দিন আগেই সীমান্ত পেরিয়ে আসে? তারপর এত দূর চলে আসে? নাকি উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে চিতা বাঘের স্থায়ী কোনো বসতি না থাকলেও দীর্ঘ সময় কাটানোর মতো জায়গা আছে!
বর্তমানে শিক্ষাকালীন ছুটিতে থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুনতাসির আকাশের সঙ্গে কথা হয় এ বিষয়ে। তিনি বলেন, ‘পঞ্চগড় থেকে শুরু করে কুড়িগ্রাম পর্যন্ত সীমান্তের ওই পাশে ভারতে প্রচুর চা-বাগান আছে। এসব চা-বাগান ও আশপাশের জঙ্গলে প্রচুর চিতাবাঘ আছে। ওই দিক থেকে বাংলাদেশের অংশে সহজে চিতা বাঘ চলে আসতে পারে। তবে আমার ধারণা, এসব চিতা বাঘ এক-দুই দিনের জন্য আসে না। বরং বাংলাদেশের এই অংশে এদের নিয়মিত বিচরণ আছে। কখনো কখনো দীর্ঘ সময় এদের এই এলাকায় বাস করাও বিচিত্র নয়। এখানে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ভুট্টা ও আখখেত। এসব জায়গায় চিতা বাঘ অনায়াসে লুকিয়ে থাকতে পারে। ছোটখাটো প্রাণী শিকার করেও এরা বেঁচে থাকতে পারে। অর্থাৎ, মোটামুটি দীর্ঘ সময় থাকার জায়গা হিসেবেই উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন নির্জন এলাকা ব্যবহার করার সম্ভাবনা চিতা বাঘদের। এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো এসব চিতা বাঘ রক্ষা করা।’
এদিকে ফিরোজ আল সাবাহও উত্তরের কোনো জেলায় চিতা বাঘের মোটামুটি দীর্ঘ সময় আস্তানা গাড়ার সম্ভাবনার সঙ্গে একমত। তিনি বলেন, এপাশে এলে চিতা বাঘের থাকার জায়গা চর এলাকাগুলো। এই চর এলাকাগুলো ভুট্টা ও আখখেতে ভর্তি থাকে। অনেক চরে মানুষের আনাগোনা নেই। এসব এলাকায় বনবিড়াল, বুনো খরগোশ, শিয়ালের মতো প্রাণীও আছে। এ বছর ও ২০২২ সালে চিতা বাঘের মৃত্যুর ঘটনা দুটো যে জায়গাগুলোয় ঘটেছে, সেগুলো সীমান্ত থেকে অনেক দূরে। পরপর দুই বছর দুটি চিতা বাঘ মারা যাওয়ায় ধারণা করছি, চর এলাকায় এদের দীর্ঘ সময় কাটানোর মতো আবাসস্থল আছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মনিরুল খান অবশ্য মনে করেন, ভারতের অংশের বন থেকে আসা চিতা বাঘদের দীর্ঘদিন লুকিয়ে থাকার মতো পরিবেশ কিংবা পরিস্থিতি নেই এদিকে। কারণ বড় একটি প্রাণী থাকলে একে দেখা না গেলেও ছাগল-কুকুর মারা পড়ত। ভারতের অংশের সংরক্ষিত এলাকাগুলোর গ্রাস ল্যান্ডে অনেক সময় আগুন দেওয়া হয়। তখন এরা এদিকে হয়তো আসে। তবে পঞ্চগড়ে চা-বাগান তৈরি হওয়ায় এখানে ডুয়ার্সের দিক থেকে আসা চিতা বাঘদের বেশি সময় আশ্রয় নেওয়ার মতো জায়গা আছে বলে মনে করেন মনিরুল খান।
আমাদের কী করা উচিত
এখন আমাদের তাহলে কী করা উচিত? কীভাবে আমরা এদের রক্ষা করব? ভারতের অনেক জায়গাতেই মানুষ-চিতা বাঘ পাশাপাশি অবস্থানের নজির আছে। ভারতের রাজস্থানের বেরা, মহারাষ্ট্রের মুম্বাই, পশ্চিমবঙ্গের ডুয়ার্স প্রভৃতি এলাকায় মানুষের আশপাশেই প্রচুর চিতাবাঘ বাস করে। তাহলে আমাদের দেশেই কেন চিতা বাঘ দেখলেই মেরে ফেলতে হবে? তাহলে আমাদের কী করা উচিত?
মুনতাসির আকাশের মতে, সুন্দরবন অঞ্চলে যেমন টাইগার রেসপন্স টিম কিংবা গারো পাহাড় অঞ্চলে এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিম কাজ করে, এখানে তেমনি ল্যাপার্ড রেসপন্স টিম গঠন করা যেতে পারে, যারা সাধারণ মানুষকে চিতা বাঘ দেখলেই মেরে না ফেলার ব্যাপারে সচেতন করবেন। তেমনি লোকালয়ে চিতা বাঘ দেখা গেলে এদের সেখান থেকে নিরাপদে সরিয়ে দিতে কাজ করবে।
মনিরুল খান বলেন, এরা সাধারণত আক্রান্ত হলেই মানুষকে আক্রমণ করে। মিডিয়ায় সাধারণত আসে মানুষকে আক্রমণ করায় এদের পিটিয়ে মারা হয় এমন খবর। মানুষকে সচেতন করাই একমাত্র উপায়। চিতা বাঘ দেখা গেলেই যেন বন বিভাগকে জানানো হয়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।
বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চলের বন সংরক্ষক ইমরান আহমেদ বলেন, ‘প্রাণীটা আমাদের দেশের নয়। বাইরে থেকে (সীমান্ত পেরিয়ে) আসে। নীলগাইয়ের মতো প্রাণী এলে মানুষ সাধারণত আতঙ্কিত হয় না। কখনো অবশ্য খাওয়ার জন্য শিকার করে ফেলে। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। চিতা বাঘের নামের সঙ্গে বাঘ থাকায় মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। মানুষ যখন এদের ঘিরে বড় জমায়েত করে কিংবা একে আক্রমণ করে, তখন এরাও নিজেকে বাঁচানোর তাগিদে পাল্টা আক্রমণ করে। যেকোনো প্রাণী এটাই করে। তখন মানুষ আরও ক্রুদ্ধ হয়ে এদের পিটিয়ে মেরে ফেলে। ওই এলাকায় সচেতনতা বাড়ানোই এই সমস্যার একমাত্র সমাধান দেখছি। ইদানীং এ ধরনের চিতা বাঘ মারা পড়ার কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে, আমরা উচ্চ পর্যায়ে মিটিং করে একটা সিদ্ধান্ত নেব। খুব সম্ভব আমাদের অ্যাওয়ারনেস বা সচেতনতা বৃদ্ধির যেসব প্রোগ্রাম আছে, তার আওতাভুক্ত করা হবে এটিকে।’
আশা রাখতে চাই
বাংলাদেশের বনে যে চিতা বাঘের মতো এত আশ্চর্য সুন্দর একটি প্রাণী আছে, এটি শিশুরা তো বটেই, অনেক প্রাপ্তবয়স্ক মানুষই জানেন না। তবে গবেষকদের গবেষণায় পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন বনে চিতা বাঘের স্থায়ী বসতি যে এখনো আছে, তা নিশ্চিত হওয়া গেছে। তেমনি সিলেট বিভাগের কোনো কোনো অরণ্যেও এদের দেখা যাওয়ার কথা শোনা যায় কখনো কখনো। এদিকে রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলায়, বিশেষ করে সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতেও এদের আনাগোনার খবর মিলছে নিয়মিত বিরতিতেই। এখানে এলে এদের করুণ পরিণতির শিকার হওয়ার পরও আশার কথা, পূর্বপুরুষের পুরোনো আস্তানাকে এখনো একেবারে ভুলে যায়নি নয়া জমানার চিতা বাঘেরা। এখন জরুরি মানুষের সঙ্গে এদের সংঘাতটা এড়ানো। আর যখন বাংলাদেশের ভূখণ্ডে এদের বিচরণ থাকে, তখন দরকার মানুষের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ একটি অবস্থান নিশ্চিত করা।

গত ২০ ডিসেম্বর নীলফামারীতে একটি চিতা বাঘকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে গ্রামবাসী। গত বছর একই জেলায় বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা পড়ে অপর একটি চিতা বাঘ। উত্তরাঞ্চলের পঞ্চগড়সহ বিভিন্ন জেলায় এর আগেও চিতা বাঘকে পিটিয়ে মারার ঘটনা ঘটেছে। এই চিতা বাঘেরা আসছে কোথা থেকে এবং এদের কীভাবে এমন মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করা যায়, তার উত্তর খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে লেখাটিতে।
২০ ডিসেম্বর। দুপুরের দিকে হঠাৎ এক প্রতিনিধির পাঠানো নিউজে চোখ আটকে গেল। চিতা বাঘের আক্রমণে কয়েকজন আহত হওয়ার খবর। প্রথম দেখাতেই ধরে নিয়েছিলাম মেছো বিড়ালকে ভুল করে চিতা বাঘ লেখা হয়েছে। কারণ বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মানুষ চিতা বাঘকে মেছো বিড়ালের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলে। তার পরই নিউজটির পড়তে গিয়ে দেখলাম ঘটনাস্থল নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলা। তখনই সন্দেহটা দানা বাঁধল। তাড়াতাড়ি প্রতিনিধি কী ছবি পাঠিয়েছেন দেখায় মন দিলাম। আরে, এ তো চিতা বাঘই। আরও পরিষ্কারভাবে বললে ছবিগুলো মৃত চিতা বাঘের। এবার নিউজটি পড়ে জানলাম, বন বিভাগের লোকেরা পৌঁছার আগেই চিতা বাঘটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে গ্রামবাসী। মনটা কেঁদে উঠল, আহহা! আবার নীলফামারী! আবার চিতা বাঘের মৃত্যু!
উত্তরাঞ্চলে কেন বারবার প্রাণ দিতে হয় চিতা বাঘদের
২০ ডিসেম্বরের ঘটনার বর্ণনায় পরে আসছি। আগে নীলফামারীর প্রসঙ্গে কেন নড়েচড়ে বসেছিলাম সেটা পরিষ্কার করা দরকার। গত বছর অর্থাৎ ২০২২ সালের ঘটনা। নীলফামারী সদর উপজেলার চওড়া বড়গাছা ইউনিয়নের কাঞ্চনপাড়া গ্রাম। সেখানকার এক মুরগির খামারে ৩ হাজারের বেশি মুরগি আছে। বনবিড়াল ও শিয়ালের কবল থেকে মুরগি বাঁচাতে খামারমালিক পুরো খামারটি জিআই তার দিয়ে ঘিরে বৈদ্যুতিক সংযোগ দেন। তবে সেখানে এক বৃহস্পতিবার রাতে (১৭ মার্চ ২০২২) ঘটল অস্বাভাবিক এক কাণ্ড। রাত তখন পৌনে ৩টা। খামারের পেছনে বন্যপ্রাণীর আওয়াজ পাওয়া গেল। দেরি না করে সুইচ টিপে বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়া হলো। এর কিছুক্ষণ পরই একটি জন্তু বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে পড়ার শব্দ। তবে আওয়াজটা বলে দিচ্ছিল বন বিড়াল বা শিয়াল নয়, অনেক বড় কোনো জন্তু আটকা পড়েছে ফাঁদে। আতঙ্কিত হয়ে বাড়ির মানুষ টর্চলাইট জ্বেলে চমকে ওঠেন। একটি চিতা বাঘ বিদ্যুতায়িত তারের স্পর্শে মরে পড়ে আছে।
বাঘ মারা পড়েছে—এটা তো বড় আনন্দের খবর; অন্তত আমাদের কাছে, তাই না! সকালে মৃত বাঘটির গলায় দড়ি পেঁচিয়ে বাইরে আনা হতেই একে দেখতে জড়ো হলো আশপাশের বিভিন্ন গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। তখন কেউ কেউ ওই খামারের পেছনের ভুট্টাখেতে ওপর অপর একটি চিতা বাঘ অদৃশ্য হওয়ার কথা বললেও নিশ্চিত প্রমাণ মেলেনি। পত্রিকা মারফত এবং পঞ্চগড়ের বন্যপ্রাণীপ্রেমী ও আলোকচিত্রী ফিরোজ আল সাবাহর সঙ্গে কথা বলে নীলফামারীর চিতা বাঘ সম্পর্কে মোটামুটি এসব তথ্য সংগ্রহ করতে পেরেছিলাম।
তবে দ্বিতীয় কোনো চিতা বাঘ সেদিন থেকে সেখানে থাকলে তার ভাগ্যটা ভালোই বলতে হয়। না হলে মানুষের পিটুনিতে ওটাকে হয়তো পৃথিবীর মায়া কাটাতে হতো। তবে ২০ ডিসেম্বরের দুর্ভাগা চিতা বাঘটি মারা গেছে মানুষের পিটুনিতেই।
এ সুযোগে একটা তথ্য জানিয়ে রাখি, ‘ডিটেকটিং দ্য স্পটস: আ রিভিও অন ল্যাপার্ড অকারেন্সেস ইন বাংলাদেশ’ নামের একটি গবেষণাপত্রে থেকে জানা যায়, ২০০৯ সাল থেকে শুধু উত্তরের, মানে রংপুর বিভাগের জেলাগুলোতে মানুষের পিটুনিতে মারা পড়েছে ছয়টি চিতা বাঘ। এর সঙ্গে ২০২২ ও ২০২৩ সালের ঘটনা দুটি যোগ করলে চিতা বাঘের অস্বাভাবিক মৃত্যুর সংখ্যা গিয়ে ঠেকেছে আটে। কী আশ্চর্য বিষয়, ঠিক না! এমন অদ্ভুত সুন্দর একটি প্রাণীর বেঁচে থাকার কোনো অধিকারই নেই!
দুর্ভাগা চিতা বাঘ
এবার তাহলে গত ২০ ডিসেম্বরের ঘটনাটির দিকে নজর দেই। বিভিন্ন পত্রিকার সংবাদ থেকে ও খোঁজখবর নিয়ে যদ্দুর জানা যায়, এদিন অর্থাৎ বুধবার বেলা ১১টার দিকে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার রংপুর-দিনাজপুর তিস্তা ক্যানেল ব্রিজসংলগ্ন গাছে একটি চিতা বাঘ দেখতে পান কৃষকেরা। জায়গাটি পড়েছে মাগুরা ইউনিয়নের আকালীবেচাপাড়া গ্রামের সীমানায়। ওই লোকগুলো চিৎকার দিলে এলাকার লোকজন বাঘ দেখার জন্য ভিড় জমায়। গাছটির দিকেও ঢিলও ছোড়ে অনেকে। সবকিছু মিলিয়ে সম্ভবত ঘাবড়ে যায় প্রাণীটি। গাছ থেকে নেমে পালাতে যায়। এ সময় প্রাণীটির সামনে পড়া গ্রামের কয়েক জন এর আক্রমণে আহত হয়। তারপর যা হওয়ার তাই হলো। স্থানীয় লোকজন বাঘটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলল। শুধু তাই নয়, ওটাকে গাছের মধ্যে ঝুলিয়ে দিল। আর এই মৃতদেহ দেখতে ভেঙে পড়ল আশপাশের কয়েক গ্রামের মানুষ।
পরে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে নালার মধ্যে চিতা বাঘটির বাঁচার জন্য দৌড়াদৌড়ি করা এবং একে মারার দৃশ্য দেখে মনটা খারাপ হয়ে যায়। যেভাবে বহু মানুষ মিলে তাড়া করে এত সুন্দর একটি প্রাণীকে মেরে ফেলল, তা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। প্রাণীটির নিস্তেজ হয়ে যাওয়ার পরও চলছিল আঘাত।
সত্যি কী এমন মৃত্যু প্রাপ্য চিতা বাঘেদের?
এখন মুরগির খামারের মুরগি চুরি নিঃসন্দেহ গৃহস্থের ক্ষতির কারণ। তেমনি মানুষ আক্রান্ত হওয়া তার চেয়েও অনেক বড় ব্যাপার। কিন্তু তাই বলে এমন মৃত্যু কি চিতা বাঘেদের প্রাপ্য? এমন একটি সুন্দর প্রাণীকে মারার পর গাছে ঝুলিয়ে রাখা কতটা মানবিক? ঘটনা হলো, একটা সময় আমাদের উত্তরাঞ্চলে অনেক চিতা বাঘই ছিল। তখন মানুষের বসতি কম ছিল, অনেক গ্রামীণ বন ছিল। কিন্তু আমরা মানুষই তো ওই বন ধ্বংস করে দিয়েছি। তাই এখানে চিতা বাঘ হয়ে গেছে এক অপরিচিত প্রাণী। এদিকে চিতা বাঘগুলো যখন এই এলাকায় আসে, তখন থাকার মতো জায়গা বা খাওয়ার মতো পর্যাপ্ত বন্যপ্রাণী না থাকায় এরা লোকালয়ে চলে আসে। এদিকে আমাদের মধ্যেও যে বন্যপ্রাণী দেখলে, এমনকি এরা কোনো ক্ষতি করলে তাদের মেরে ফেলার একটা প্রবণতা আছে তাতে সন্দেহ নেই। মানুষ এদের বিরক্ত না করলে অনেক সংঘাতই মনে হয় এড়ানো যেত।
এল কীভাবে?
কিন্তু ঘটনা হলো, নীলফামারীতে চিতা বাঘ এল কীভাবে? এটা সত্যি—একসময় পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী, দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম এলাকায় চিতা বাঘের দেখা মিলত বিস্তর। কিন্তু এই এলাকায় এখন বড় বন নেই। গ্রামীণ বনও কমে গেছে। তাই এদিকটায় চিতা বাঘের বসতির খবরও শোনা যায়নি। তবে কথা হলো, আমাদের উত্তরের এই জেলাগুলোর ওপাশেই ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার ও ডুয়ার্স এলাকা। চিতা বাঘের আড্ডাখানা। এখানকার চিতা বাঘেরা কোচবিহারে ও ডুয়ার্সের সবুজ চা-বাগানে ঘুরে বেড়ায় মনের আনন্দে। আর ওগুলোর মধ্যে যেগুলো একটু দুর্ভাগা, সেগুলোই হয়তো আমাদের পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম এলাকায় চলে আসে। তারপর কোনো গৃহস্থের মুরগির খামারে হানা দেওয়ার অপরাধে কিংবা নিজেদের হলুদে-কালোয় মেশানো সুন্দর চেহারাটা প্রকাশ পেয়ে যাওয়ার কারণে মারা পড়ে গ্রামবাসীর পিটুনিতে। অথচ আমাদের বরং প্রকৃতির আশ্চর্য সুন্দর এই প্রাণীগুলো এখনো এদিকটায় পা দেওয়ায় খুশি হওয়ার কথা।
এই অঞ্চলের পঞ্চগড়েই জীবিত চিতা বাঘের দুর্লভ একটি ছবি তুলছিলেন বন্যপ্রাণীপ্রেমী ও আলোকচিত্রী ফিরোজ আল সাবাহ। সেটা ২০১৮ সালে। একটা ঝোপে আশ্রয় নিয়েছিল বাঘটা। চারপাশ থেকে ঘিরে ফেলেছিল উৎসুক জনতা। মরিয়া চিতা বাঘটা হুংকার দিচ্ছিল, লেজ নাচাচ্ছিল। মনে হচ্ছিল, যেকোনো মুহূর্তে ঝোপ থেকে লাফ দেবে। এর মধ্যেই কাছে গিয়ে কয়েকটা ছবি তোলেন সাবাহ। অবশ্য উত্তেজিত জনতার রোষ থেকে আশ্চর্য সুন্দর সেই বাঘকে বাঁচানো যায়নি।
ফিরোজ আল সাবাহ এ ছাড়া তিনবার চিতা বাঘের আনাগোনার খবর পান বলে জানান। ২০১৫ সালে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার ভজনপুরের ডাহুক নদীর তীরে চিতা বাঘ দেখা গেছে খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে পায়ের ছাপ পেয়েছেন। ২০২০ সালে ভজনপুর ১০ মাইল এলাকায় চিতা বাঘ দেখা যাওয়ার খবর পান। কিন্তু সেখানে গিয়ে আর দেখা পাননি। ২০২২ সালে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায়ও চিতা বাঘের আস্তানা গাড়ার সংবাদ পেয়েছিলেন।
এবার একটু অন্যদিকে দৃষ্টি দিচ্ছি। ভারত থেকে আসছে এই চিতা বাঘ, ঠিক আছে। তবে এখানে একটি প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। ২০২২ সালের ঘটনাটা যেখানে ঘটেছে, সেখান থেকে ভারতের সীমান্ত অনেক দূরে। তেমনি গত ২০ ডিসেম্বরের ঘটনাস্থল কিশোরগঞ্জের ওই গ্রাম থেকেও সীমান্ত মোটামুটি কিলোমিটার চল্লিশেক দূরে বলে জেনেছি। চিতা বাঘের পক্ষে বড় দূরত্ব পেরোনো কঠিন কিছু নয়। তবে কথা হলো, এত লম্বা একটা এলাকা লোকবসতির মধ্যে পেরোল কীভাবে? আর এগুলো কি দেখা যাওয়ার দু-এক দিন আগেই সীমান্ত পেরিয়ে আসে? তারপর এত দূর চলে আসে? নাকি উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে চিতা বাঘের স্থায়ী কোনো বসতি না থাকলেও দীর্ঘ সময় কাটানোর মতো জায়গা আছে!
বর্তমানে শিক্ষাকালীন ছুটিতে থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুনতাসির আকাশের সঙ্গে কথা হয় এ বিষয়ে। তিনি বলেন, ‘পঞ্চগড় থেকে শুরু করে কুড়িগ্রাম পর্যন্ত সীমান্তের ওই পাশে ভারতে প্রচুর চা-বাগান আছে। এসব চা-বাগান ও আশপাশের জঙ্গলে প্রচুর চিতাবাঘ আছে। ওই দিক থেকে বাংলাদেশের অংশে সহজে চিতা বাঘ চলে আসতে পারে। তবে আমার ধারণা, এসব চিতা বাঘ এক-দুই দিনের জন্য আসে না। বরং বাংলাদেশের এই অংশে এদের নিয়মিত বিচরণ আছে। কখনো কখনো দীর্ঘ সময় এদের এই এলাকায় বাস করাও বিচিত্র নয়। এখানে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ভুট্টা ও আখখেত। এসব জায়গায় চিতা বাঘ অনায়াসে লুকিয়ে থাকতে পারে। ছোটখাটো প্রাণী শিকার করেও এরা বেঁচে থাকতে পারে। অর্থাৎ, মোটামুটি দীর্ঘ সময় থাকার জায়গা হিসেবেই উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন নির্জন এলাকা ব্যবহার করার সম্ভাবনা চিতা বাঘদের। এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো এসব চিতা বাঘ রক্ষা করা।’
এদিকে ফিরোজ আল সাবাহও উত্তরের কোনো জেলায় চিতা বাঘের মোটামুটি দীর্ঘ সময় আস্তানা গাড়ার সম্ভাবনার সঙ্গে একমত। তিনি বলেন, এপাশে এলে চিতা বাঘের থাকার জায়গা চর এলাকাগুলো। এই চর এলাকাগুলো ভুট্টা ও আখখেতে ভর্তি থাকে। অনেক চরে মানুষের আনাগোনা নেই। এসব এলাকায় বনবিড়াল, বুনো খরগোশ, শিয়ালের মতো প্রাণীও আছে। এ বছর ও ২০২২ সালে চিতা বাঘের মৃত্যুর ঘটনা দুটো যে জায়গাগুলোয় ঘটেছে, সেগুলো সীমান্ত থেকে অনেক দূরে। পরপর দুই বছর দুটি চিতা বাঘ মারা যাওয়ায় ধারণা করছি, চর এলাকায় এদের দীর্ঘ সময় কাটানোর মতো আবাসস্থল আছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মনিরুল খান অবশ্য মনে করেন, ভারতের অংশের বন থেকে আসা চিতা বাঘদের দীর্ঘদিন লুকিয়ে থাকার মতো পরিবেশ কিংবা পরিস্থিতি নেই এদিকে। কারণ বড় একটি প্রাণী থাকলে একে দেখা না গেলেও ছাগল-কুকুর মারা পড়ত। ভারতের অংশের সংরক্ষিত এলাকাগুলোর গ্রাস ল্যান্ডে অনেক সময় আগুন দেওয়া হয়। তখন এরা এদিকে হয়তো আসে। তবে পঞ্চগড়ে চা-বাগান তৈরি হওয়ায় এখানে ডুয়ার্সের দিক থেকে আসা চিতা বাঘদের বেশি সময় আশ্রয় নেওয়ার মতো জায়গা আছে বলে মনে করেন মনিরুল খান।
আমাদের কী করা উচিত
এখন আমাদের তাহলে কী করা উচিত? কীভাবে আমরা এদের রক্ষা করব? ভারতের অনেক জায়গাতেই মানুষ-চিতা বাঘ পাশাপাশি অবস্থানের নজির আছে। ভারতের রাজস্থানের বেরা, মহারাষ্ট্রের মুম্বাই, পশ্চিমবঙ্গের ডুয়ার্স প্রভৃতি এলাকায় মানুষের আশপাশেই প্রচুর চিতাবাঘ বাস করে। তাহলে আমাদের দেশেই কেন চিতা বাঘ দেখলেই মেরে ফেলতে হবে? তাহলে আমাদের কী করা উচিত?
মুনতাসির আকাশের মতে, সুন্দরবন অঞ্চলে যেমন টাইগার রেসপন্স টিম কিংবা গারো পাহাড় অঞ্চলে এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিম কাজ করে, এখানে তেমনি ল্যাপার্ড রেসপন্স টিম গঠন করা যেতে পারে, যারা সাধারণ মানুষকে চিতা বাঘ দেখলেই মেরে না ফেলার ব্যাপারে সচেতন করবেন। তেমনি লোকালয়ে চিতা বাঘ দেখা গেলে এদের সেখান থেকে নিরাপদে সরিয়ে দিতে কাজ করবে।
মনিরুল খান বলেন, এরা সাধারণত আক্রান্ত হলেই মানুষকে আক্রমণ করে। মিডিয়ায় সাধারণত আসে মানুষকে আক্রমণ করায় এদের পিটিয়ে মারা হয় এমন খবর। মানুষকে সচেতন করাই একমাত্র উপায়। চিতা বাঘ দেখা গেলেই যেন বন বিভাগকে জানানো হয়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।
বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চলের বন সংরক্ষক ইমরান আহমেদ বলেন, ‘প্রাণীটা আমাদের দেশের নয়। বাইরে থেকে (সীমান্ত পেরিয়ে) আসে। নীলগাইয়ের মতো প্রাণী এলে মানুষ সাধারণত আতঙ্কিত হয় না। কখনো অবশ্য খাওয়ার জন্য শিকার করে ফেলে। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। চিতা বাঘের নামের সঙ্গে বাঘ থাকায় মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। মানুষ যখন এদের ঘিরে বড় জমায়েত করে কিংবা একে আক্রমণ করে, তখন এরাও নিজেকে বাঁচানোর তাগিদে পাল্টা আক্রমণ করে। যেকোনো প্রাণী এটাই করে। তখন মানুষ আরও ক্রুদ্ধ হয়ে এদের পিটিয়ে মেরে ফেলে। ওই এলাকায় সচেতনতা বাড়ানোই এই সমস্যার একমাত্র সমাধান দেখছি। ইদানীং এ ধরনের চিতা বাঘ মারা পড়ার কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে, আমরা উচ্চ পর্যায়ে মিটিং করে একটা সিদ্ধান্ত নেব। খুব সম্ভব আমাদের অ্যাওয়ারনেস বা সচেতনতা বৃদ্ধির যেসব প্রোগ্রাম আছে, তার আওতাভুক্ত করা হবে এটিকে।’
আশা রাখতে চাই
বাংলাদেশের বনে যে চিতা বাঘের মতো এত আশ্চর্য সুন্দর একটি প্রাণী আছে, এটি শিশুরা তো বটেই, অনেক প্রাপ্তবয়স্ক মানুষই জানেন না। তবে গবেষকদের গবেষণায় পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন বনে চিতা বাঘের স্থায়ী বসতি যে এখনো আছে, তা নিশ্চিত হওয়া গেছে। তেমনি সিলেট বিভাগের কোনো কোনো অরণ্যেও এদের দেখা যাওয়ার কথা শোনা যায় কখনো কখনো। এদিকে রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলায়, বিশেষ করে সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতেও এদের আনাগোনার খবর মিলছে নিয়মিত বিরতিতেই। এখানে এলে এদের করুণ পরিণতির শিকার হওয়ার পরও আশার কথা, পূর্বপুরুষের পুরোনো আস্তানাকে এখনো একেবারে ভুলে যায়নি নয়া জমানার চিতা বাঘেরা। এখন জরুরি মানুষের সঙ্গে এদের সংঘাতটা এড়ানো। আর যখন বাংলাদেশের ভূখণ্ডে এদের বিচরণ থাকে, তখন দরকার মানুষের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ একটি অবস্থান নিশ্চিত করা।

বাংলাদেশের জলবায়ু তহবিলের বরাদ্দে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটির সর্বশেষ গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতীয় জলবায়ু তহবিল বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্টের (বিসিসিটি) বরাদ্দের ৫৪ শতাংশেই দুর্নীতি হয়েছে। ২০১০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সময়
১৩ ঘণ্টা আগে
পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন মিয়ানমার উপকূলের কাছে একটি লঘুচাপ বিরাজ করছে। এটি উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে মিয়ানমার-বাংলাদেশ উপকূল বরাবর অগ্রসর হতে পারে। এর প্রভাবে উত্তরপূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি হচ্ছে।
১৫ ঘণ্টা আগে
শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান প্রধান শহরগুলোর অবস্থা বিপর্যস্ত। বিশ্বের দূষিত শহর তালিকার শীর্ষ দশে প্রায় দেখা যাচ্ছে শহরগুলোকে। এর মধ্যে আজ মঙ্গলবার পাকিস্তানের লাহোরের অবস্থা দুর্যোগপূর্ণ।
১৯ ঘণ্টা আগে
চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ময়মনসিংহ, ঢাকা, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যান্য অঞ্চলে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
২০ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বাংলাদেশের জলবায়ু তহবিলের বরাদ্দে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটির সর্বশেষ গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতীয় জলবায়ু তহবিল বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্টের (বিসিসিটি) বরাদ্দের ৫৪ শতাংশেই দুর্নীতি হয়েছে। ২০১০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সময়ে বাস্তবায়িত ৮৯১টি প্রকল্পে অনিয়মের আনুমানিক পরিমাণ বলা হয়েছে ২৪৮ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ২ হাজার ১১০ কোটি টাকা)।
আজ মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) টিআইবির ধানমন্ডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ‘বাংলাদেশে জলবায়ু অর্থায়নে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন টিআইবির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো মো. মাহফুজুল হক এবং রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট মো. সহিদুল ইসলাম। এ সময় সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান ও আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলামও ছিলেন।
প্রতিবেদনে ২০০৪ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বাস্তবায়িত ১২টি তহবিলের আওতায় ৯৪২টি প্রকল্পের তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় প্রণীত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ঘাটতি রয়েছে। অর্থের চাহিদার বিপরীতে সামঞ্জস্যপূর্ণ বরাদ্দ দেওয়া হয়নি এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অভাব প্রকট।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সবচেয়ে বিপদাপন্ন অঞ্চলে বরাদ্দের অগ্রাধিকার কম এবং অনেক প্রকল্প বাস্তবে জলবায়ু অভিযোজনের সঙ্গে সম্পর্কহীন। উদাহরণ হিসেবে বলা হয়, জলবায়ু তহবিলের অর্থে সাফারি পার্ক ও ইকোপার্ক নির্মাণের মতো প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে, যেখানে নিম্নমানের কাজ, অর্থ আত্মসাৎ ও সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে নিয়মবহির্ভূত অর্থ আদায়ের ঘটনা ঘটেছে।
জাতীয় তহবিলের প্রকল্প বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রতা এবং ব্যর্থতার প্রকটতাও গবেষণায় উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৮৯১টি প্রকল্পের মধ্যে ৫৪৯টির (৬১ দশমিক ৬ শতাংশ) মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। গড়ে প্রকল্পের মেয়াদ ৬৪৮ দিন থেকে বেড়ে ১ হাজার ৫১৫ দিনে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ ১৩৩ শতাংশের বেশি সময় লেগেছে। কোনো কোনো প্রকল্পে চার বছরের পরিবর্তে ১৪ বছর পর্যন্ত সময় লেগেছে।
টিআইবির অভিযোগ, জলবায়ু অর্থায়নে প্রয়োজনীয় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির অভাব রয়েছে। ২০১৫ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে বাংলাদেশের জলবায়ু অভিযোজনের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে মাত্র ৮৬ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলার, যা প্রয়োজনীয় অর্থের মাত্র শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ।
সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রতিবছর জলবায়ু ক্ষতিপূরণ হিসাবে ১০ থেকে ১২ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। কিন্তু ২০০৩ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আমরা পেয়েছি মাত্র ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার, যা অত্যন্ত নগণ্য।’
গবেষণা প্রতিবেদনে কিছু সুপারিশ করেছে টিআইবি। সেগুলো হলো—
১. বিসিসিএসএপি ২০০৯ এবং জলবায়ু পরিবর্তন-সংক্রান্ত জাতীয় পরিকল্পনাসমূহ হালনাগাদ করে যুগোপযোগী করতে হবে। জাতীয় পরিকল্পনাসমূহ বাস্তবায়নে ট্রাস্ট ফান্ড এবং উন্নয়ন প্রকল্পের আওতার জলবায়ু-সংশ্লিষ্ট অর্থ বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে হবে।
২. জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট আইন, ২০১০ সংশোধন করতে হবে। আইনে ট্রাস্টের জনবল নিয়োগ ও পদোন্নতির বিষয়ক ধারা সংযোজন করতে হবে। বিষয়ভিত্তিক জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তিদের সমন্বয়ে একটি স্বাধীন ট্রাস্টি বোর্ড গঠনের বিধান যুক্ত করতে হবে। ট্রাস্ট থেকে কমপক্ষে একজন বিষয়ভিত্তিক জ্ঞানসম্পন্ন কর্মকর্তাকে প্রকল্প প্রস্তাব মূল্যায়ন-সংক্রান্ত কারিগরি কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি ফলাফল অর্জনে সক্ষম বা ট্রান্সফর্মেটিভ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য তহবিলের আওতায় অর্থ বরাদ্দের সীমা বৃদ্ধি করতে হবে। জবাবদিহি নিশ্চিত এবং অনিয়ম-দুর্নীতি প্রতিরোধে দেশে প্রচলিত আইন, যেগুলো ট্রাস্টের জন্য প্রযোজ্য, তা সুনির্দিষ্ট করে ট্রাস্ট আইনে উল্লেখ করতে হবে। আর্থিক ও কারিগরি ব্যবস্থাপক হিসেবে বিসিসিটির কর্মকর্তাদের প্রকল্প প্রস্তাব মূল্যায়ন, প্রকল্প বাস্তবায়নের চুক্তি ও শর্তাবলি নির্ধারণ, প্রকল্প অনুমোদন, প্রকল্প বাস্তবায়নের অগ্রগতি ও অর্থ ছাড়, মাঠপর্যায়ে প্রকল্প তদারকি, প্রকল্প পরিবীক্ষণ এবং নথি ব্যবস্থাপনা-সংক্রান্ত বিষয়ে দায়িত্ব স্পষ্টভাবে নির্ধারণ করতে হবে। দুর্নীতি ও স্বার্থের দ্বন্দ্ব প্রতিরোধ, অংশীজনের অংশগ্রহণ, তহবিল ও প্রকল্প-সংশ্লিষ্ট তথ্য উন্মুক্তকরণ, পরিবেশ ও সামাজিক মূল্যায়ন এবং নিয়মিত নিরীক্ষা-সংক্রান্ত বিষয় নতুন আইনে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
৩. রাজস্ব বাজেটের বাইরে বিসিসিটিকে উদ্ভাবনীমূলক কার্যক্রম, যেমন—আন্তর্জাতিক জলবায়ু তহবিল, কার্বন ট্রেডিং, ক্লিন ডেভেলপমেন্ট মেকানিজমসহ বেসরকারি অর্থায়ন উৎস থেকে তহবিল সংগ্রহে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
৪. থিমভিত্তিক, বিপদাপন্নতা ও ঝুঁকির ভৌগোলিক বিন্যাসভিত্তিক এবং বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানভিত্তিক অগ্রাধিকার নির্ধারণ করে বিসিসিটি প্রকল্প বাস্তবায়নে একটি সমন্বিত পথ নকশা প্রস্তুত করতে হবে। পথ নকশায় মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি কার্যক্রমকে অন্তর্ভুক্ত করে সেই অনুযায়ী অর্থ বরাদ্দ, প্রকল্প অনুমোদন ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
৫. বিসিসিটির আওতায় স্বল্পমেয়াদি এবং টাকার অঙ্ক ক্ষুদ্র প্রকল্প বাস্তবায়ন পরিহার করতে হবে। প্রান্তিক, দুর্গম ও ঝুঁকিপূর্ণ জেলা, উপজেলা এবং স্থান যেখানে সাধারণ উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে জলবায়ু ঝুঁকি কার্যকরভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব নয় এমন স্থানে বিসিসিটি থেকে মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প বাস্তবায়নকে প্রাধান্য দিতে হবে।
৬. বাংলাদেশে বাস্তবায়িত জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক জলবায়ু তহবিলের প্রকল্প নিয়মিত তদারকি ও নিরীক্ষা করার জন্য একটি পৃথক স্বাধীন তদারকি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
৭. স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করে প্রকল্প অনুমোদন এবং বাস্তবায়নসহ ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর কাছে জলবায়ু তহবিল কার্যকরভাবে পৌঁছানো নিশ্চিতে বিপদাপন্নতার সূচক এবং ভৌগোলিক বা স্থানিক ঝুঁকিকে প্রাধান্য দিতে হবে।
৮. জাতীয় পর্যায়ে একটি প্রতিষ্ঠানকে জলবায়ু-সংক্রান্ত বিষয় সমন্বয়ের জন্য ফোকাল পয়েন্ট নির্ধারণ করতে হবে। সেই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিকল্পনাসহ অংশীজন সমন্বয় ও আন্তপ্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগ নিশ্চিত করতে হবে।
৯. তহবিলসমূহের প্রকল্প বাস্তবায়নে বিবিধ অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। বিশেষ করে, অবকাঠামো ও সৌর সড়কবাতি-সংশ্লিষ্ট প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়নে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের স্বাধীন তদন্ত করতে হবে।

বাংলাদেশের জলবায়ু তহবিলের বরাদ্দে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটির সর্বশেষ গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতীয় জলবায়ু তহবিল বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্টের (বিসিসিটি) বরাদ্দের ৫৪ শতাংশেই দুর্নীতি হয়েছে। ২০১০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সময়ে বাস্তবায়িত ৮৯১টি প্রকল্পে অনিয়মের আনুমানিক পরিমাণ বলা হয়েছে ২৪৮ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ২ হাজার ১১০ কোটি টাকা)।
আজ মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) টিআইবির ধানমন্ডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ‘বাংলাদেশে জলবায়ু অর্থায়নে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন টিআইবির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো মো. মাহফুজুল হক এবং রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট মো. সহিদুল ইসলাম। এ সময় সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান ও আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলামও ছিলেন।
প্রতিবেদনে ২০০৪ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বাস্তবায়িত ১২টি তহবিলের আওতায় ৯৪২টি প্রকল্পের তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় প্রণীত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ঘাটতি রয়েছে। অর্থের চাহিদার বিপরীতে সামঞ্জস্যপূর্ণ বরাদ্দ দেওয়া হয়নি এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অভাব প্রকট।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সবচেয়ে বিপদাপন্ন অঞ্চলে বরাদ্দের অগ্রাধিকার কম এবং অনেক প্রকল্প বাস্তবে জলবায়ু অভিযোজনের সঙ্গে সম্পর্কহীন। উদাহরণ হিসেবে বলা হয়, জলবায়ু তহবিলের অর্থে সাফারি পার্ক ও ইকোপার্ক নির্মাণের মতো প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে, যেখানে নিম্নমানের কাজ, অর্থ আত্মসাৎ ও সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে নিয়মবহির্ভূত অর্থ আদায়ের ঘটনা ঘটেছে।
জাতীয় তহবিলের প্রকল্প বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রতা এবং ব্যর্থতার প্রকটতাও গবেষণায় উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৮৯১টি প্রকল্পের মধ্যে ৫৪৯টির (৬১ দশমিক ৬ শতাংশ) মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। গড়ে প্রকল্পের মেয়াদ ৬৪৮ দিন থেকে বেড়ে ১ হাজার ৫১৫ দিনে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ ১৩৩ শতাংশের বেশি সময় লেগেছে। কোনো কোনো প্রকল্পে চার বছরের পরিবর্তে ১৪ বছর পর্যন্ত সময় লেগেছে।
টিআইবির অভিযোগ, জলবায়ু অর্থায়নে প্রয়োজনীয় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির অভাব রয়েছে। ২০১৫ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে বাংলাদেশের জলবায়ু অভিযোজনের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে মাত্র ৮৬ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলার, যা প্রয়োজনীয় অর্থের মাত্র শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ।
সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রতিবছর জলবায়ু ক্ষতিপূরণ হিসাবে ১০ থেকে ১২ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। কিন্তু ২০০৩ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আমরা পেয়েছি মাত্র ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার, যা অত্যন্ত নগণ্য।’
গবেষণা প্রতিবেদনে কিছু সুপারিশ করেছে টিআইবি। সেগুলো হলো—
১. বিসিসিএসএপি ২০০৯ এবং জলবায়ু পরিবর্তন-সংক্রান্ত জাতীয় পরিকল্পনাসমূহ হালনাগাদ করে যুগোপযোগী করতে হবে। জাতীয় পরিকল্পনাসমূহ বাস্তবায়নে ট্রাস্ট ফান্ড এবং উন্নয়ন প্রকল্পের আওতার জলবায়ু-সংশ্লিষ্ট অর্থ বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে হবে।
২. জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট আইন, ২০১০ সংশোধন করতে হবে। আইনে ট্রাস্টের জনবল নিয়োগ ও পদোন্নতির বিষয়ক ধারা সংযোজন করতে হবে। বিষয়ভিত্তিক জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তিদের সমন্বয়ে একটি স্বাধীন ট্রাস্টি বোর্ড গঠনের বিধান যুক্ত করতে হবে। ট্রাস্ট থেকে কমপক্ষে একজন বিষয়ভিত্তিক জ্ঞানসম্পন্ন কর্মকর্তাকে প্রকল্প প্রস্তাব মূল্যায়ন-সংক্রান্ত কারিগরি কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি ফলাফল অর্জনে সক্ষম বা ট্রান্সফর্মেটিভ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য তহবিলের আওতায় অর্থ বরাদ্দের সীমা বৃদ্ধি করতে হবে। জবাবদিহি নিশ্চিত এবং অনিয়ম-দুর্নীতি প্রতিরোধে দেশে প্রচলিত আইন, যেগুলো ট্রাস্টের জন্য প্রযোজ্য, তা সুনির্দিষ্ট করে ট্রাস্ট আইনে উল্লেখ করতে হবে। আর্থিক ও কারিগরি ব্যবস্থাপক হিসেবে বিসিসিটির কর্মকর্তাদের প্রকল্প প্রস্তাব মূল্যায়ন, প্রকল্প বাস্তবায়নের চুক্তি ও শর্তাবলি নির্ধারণ, প্রকল্প অনুমোদন, প্রকল্প বাস্তবায়নের অগ্রগতি ও অর্থ ছাড়, মাঠপর্যায়ে প্রকল্প তদারকি, প্রকল্প পরিবীক্ষণ এবং নথি ব্যবস্থাপনা-সংক্রান্ত বিষয়ে দায়িত্ব স্পষ্টভাবে নির্ধারণ করতে হবে। দুর্নীতি ও স্বার্থের দ্বন্দ্ব প্রতিরোধ, অংশীজনের অংশগ্রহণ, তহবিল ও প্রকল্প-সংশ্লিষ্ট তথ্য উন্মুক্তকরণ, পরিবেশ ও সামাজিক মূল্যায়ন এবং নিয়মিত নিরীক্ষা-সংক্রান্ত বিষয় নতুন আইনে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
৩. রাজস্ব বাজেটের বাইরে বিসিসিটিকে উদ্ভাবনীমূলক কার্যক্রম, যেমন—আন্তর্জাতিক জলবায়ু তহবিল, কার্বন ট্রেডিং, ক্লিন ডেভেলপমেন্ট মেকানিজমসহ বেসরকারি অর্থায়ন উৎস থেকে তহবিল সংগ্রহে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
৪. থিমভিত্তিক, বিপদাপন্নতা ও ঝুঁকির ভৌগোলিক বিন্যাসভিত্তিক এবং বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানভিত্তিক অগ্রাধিকার নির্ধারণ করে বিসিসিটি প্রকল্প বাস্তবায়নে একটি সমন্বিত পথ নকশা প্রস্তুত করতে হবে। পথ নকশায় মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি কার্যক্রমকে অন্তর্ভুক্ত করে সেই অনুযায়ী অর্থ বরাদ্দ, প্রকল্প অনুমোদন ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
৫. বিসিসিটির আওতায় স্বল্পমেয়াদি এবং টাকার অঙ্ক ক্ষুদ্র প্রকল্প বাস্তবায়ন পরিহার করতে হবে। প্রান্তিক, দুর্গম ও ঝুঁকিপূর্ণ জেলা, উপজেলা এবং স্থান যেখানে সাধারণ উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে জলবায়ু ঝুঁকি কার্যকরভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব নয় এমন স্থানে বিসিসিটি থেকে মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প বাস্তবায়নকে প্রাধান্য দিতে হবে।
৬. বাংলাদেশে বাস্তবায়িত জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক জলবায়ু তহবিলের প্রকল্প নিয়মিত তদারকি ও নিরীক্ষা করার জন্য একটি পৃথক স্বাধীন তদারকি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
৭. স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করে প্রকল্প অনুমোদন এবং বাস্তবায়নসহ ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর কাছে জলবায়ু তহবিল কার্যকরভাবে পৌঁছানো নিশ্চিতে বিপদাপন্নতার সূচক এবং ভৌগোলিক বা স্থানিক ঝুঁকিকে প্রাধান্য দিতে হবে।
৮. জাতীয় পর্যায়ে একটি প্রতিষ্ঠানকে জলবায়ু-সংক্রান্ত বিষয় সমন্বয়ের জন্য ফোকাল পয়েন্ট নির্ধারণ করতে হবে। সেই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিকল্পনাসহ অংশীজন সমন্বয় ও আন্তপ্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগ নিশ্চিত করতে হবে।
৯. তহবিলসমূহের প্রকল্প বাস্তবায়নে বিবিধ অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। বিশেষ করে, অবকাঠামো ও সৌর সড়কবাতি-সংশ্লিষ্ট প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়নে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের স্বাধীন তদন্ত করতে হবে।

গত ২০ ডিসেম্বর নীলফামারীতে একটি চিতা বাঘকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে গ্রামবাসী। গত বছর একই জেলায় বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা পড়ে অপর একটি চিতা বাঘ। উত্তরাঞ্চলের পঞ্চগড়সহ বিভিন্ন জেলায় এর আগেও চিতা বাঘকে পিটিয়ে মারার ঘটনা ঘটেছে। এই চিতা বাঘেরা আসছে কোথা থেকে এবং এদের কীভাবে এমন মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করা যায় তার উ
২৪ ডিসেম্বর ২০২৩
পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন মিয়ানমার উপকূলের কাছে একটি লঘুচাপ বিরাজ করছে। এটি উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে মিয়ানমার-বাংলাদেশ উপকূল বরাবর অগ্রসর হতে পারে। এর প্রভাবে উত্তরপূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি হচ্ছে।
১৫ ঘণ্টা আগে
শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান প্রধান শহরগুলোর অবস্থা বিপর্যস্ত। বিশ্বের দূষিত শহর তালিকার শীর্ষ দশে প্রায় দেখা যাচ্ছে শহরগুলোকে। এর মধ্যে আজ মঙ্গলবার পাকিস্তানের লাহোরের অবস্থা দুর্যোগপূর্ণ।
১৯ ঘণ্টা আগে
চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ময়মনসিংহ, ঢাকা, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যান্য অঞ্চলে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
২০ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ঘূর্ণিঝড় মোন্থার প্রভাব কাটতে না কাটতেই বঙ্গোপসাগরে আবারও লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার আবহাওয়া অধিদপ্তরের সতর্কবার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ খো. হাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত সতর্কবার্তায় বলা হয়, পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন মিয়ানমার উপকূলের কাছে একটি লঘুচাপ বিরাজ করছে। এটি উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে মিয়ানমার-বাংলাদেশ উপকূল বরাবর অগ্রসর হতে পারে। এর প্রভাবে উত্তরপূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি হচ্ছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, উত্তরপূর্ব বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন এলাকার ওপর দিয়ে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
এ জন্য চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
সতর্কবার্তায় উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
তবে চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চল ছাড়া লঘুচাপটির প্রভাব দেশের অন্যান্য অঞ্চলে পড়বে না বলে মনে করছেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা।
আজ মঙ্গলবার সকালে আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেসা আজকের পত্রিকাকে বলেন, বঙ্গোপসাগরে এই লঘুচাপটির নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা খুব। এর প্রভাবে চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও আজ বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া সিলেট বিভাগেও আগামীকাল বুধবার বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় মোন্থার প্রভাব কাটতে না কাটতেই বঙ্গোপসাগরে আবারও লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার আবহাওয়া অধিদপ্তরের সতর্কবার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ খো. হাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত সতর্কবার্তায় বলা হয়, পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন মিয়ানমার উপকূলের কাছে একটি লঘুচাপ বিরাজ করছে। এটি উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে মিয়ানমার-বাংলাদেশ উপকূল বরাবর অগ্রসর হতে পারে। এর প্রভাবে উত্তরপূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি হচ্ছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, উত্তরপূর্ব বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন এলাকার ওপর দিয়ে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
এ জন্য চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
সতর্কবার্তায় উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
তবে চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চল ছাড়া লঘুচাপটির প্রভাব দেশের অন্যান্য অঞ্চলে পড়বে না বলে মনে করছেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা।
আজ মঙ্গলবার সকালে আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেসা আজকের পত্রিকাকে বলেন, বঙ্গোপসাগরে এই লঘুচাপটির নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা খুব। এর প্রভাবে চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও আজ বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া সিলেট বিভাগেও আগামীকাল বুধবার বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

গত ২০ ডিসেম্বর নীলফামারীতে একটি চিতা বাঘকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে গ্রামবাসী। গত বছর একই জেলায় বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা পড়ে অপর একটি চিতা বাঘ। উত্তরাঞ্চলের পঞ্চগড়সহ বিভিন্ন জেলায় এর আগেও চিতা বাঘকে পিটিয়ে মারার ঘটনা ঘটেছে। এই চিতা বাঘেরা আসছে কোথা থেকে এবং এদের কীভাবে এমন মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করা যায় তার উ
২৪ ডিসেম্বর ২০২৩
বাংলাদেশের জলবায়ু তহবিলের বরাদ্দে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটির সর্বশেষ গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতীয় জলবায়ু তহবিল বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্টের (বিসিসিটি) বরাদ্দের ৫৪ শতাংশেই দুর্নীতি হয়েছে। ২০১০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সময়
১৩ ঘণ্টা আগে
শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান প্রধান শহরগুলোর অবস্থা বিপর্যস্ত। বিশ্বের দূষিত শহর তালিকার শীর্ষ দশে প্রায় দেখা যাচ্ছে শহরগুলোকে। এর মধ্যে আজ মঙ্গলবার পাকিস্তানের লাহোরের অবস্থা দুর্যোগপূর্ণ।
১৯ ঘণ্টা আগে
চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ময়মনসিংহ, ঢাকা, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যান্য অঞ্চলে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
২০ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান প্রধান শহরগুলোর অবস্থা বিপর্যস্ত। বিশ্বের দূষিত শহর তালিকার শীর্ষ দশে প্রায় দেখা যাচ্ছে শহরগুলোকে। এর মধ্যে আজ মঙ্গলবার পাকিস্তানের লাহোরের অবস্থা দুর্যোগপূর্ণ। অন্যদিকে ঢাকার বাতাসেও দূষণের মাত্রা গতকালের তুলনায় বেড়েছে।
বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের আজ সকাল ৮টা ৫০ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী ঢাকার বায়ুমান ১০৫, যা গতকাল ছিল ৮০। বায়ুদূষণের শীর্ষ শহরগুলোর তালিকায় আজ ১০ম স্থানে আছে ঢাকা, গতকাল ছিল ২২তম স্থানে।
বায়ুদূষণের শীর্ষে থাকা পাকিস্তানের লাহোর শহরটির বায়ুমান আজ ৩৫৯, যা দুর্যোগপূর্ণ বাতাসের নির্দেশক।
শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো— ভারতের কলকাতা ও দিল্লি, উগান্ডার কাম্পালা ও পাকিস্তানের করাচি। শহরগুলোর বায়ুমান যথাক্রমে ২৪৮, ২৩১, ১৫৯ ও ১৫৬।
বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশি মাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১-১৫০ এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।
বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতি বছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।
দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।
পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান প্রধান শহরগুলোর অবস্থা বিপর্যস্ত। বিশ্বের দূষিত শহর তালিকার শীর্ষ দশে প্রায় দেখা যাচ্ছে শহরগুলোকে। এর মধ্যে আজ মঙ্গলবার পাকিস্তানের লাহোরের অবস্থা দুর্যোগপূর্ণ। অন্যদিকে ঢাকার বাতাসেও দূষণের মাত্রা গতকালের তুলনায় বেড়েছে।
বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের আজ সকাল ৮টা ৫০ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী ঢাকার বায়ুমান ১০৫, যা গতকাল ছিল ৮০। বায়ুদূষণের শীর্ষ শহরগুলোর তালিকায় আজ ১০ম স্থানে আছে ঢাকা, গতকাল ছিল ২২তম স্থানে।
বায়ুদূষণের শীর্ষে থাকা পাকিস্তানের লাহোর শহরটির বায়ুমান আজ ৩৫৯, যা দুর্যোগপূর্ণ বাতাসের নির্দেশক।
শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো— ভারতের কলকাতা ও দিল্লি, উগান্ডার কাম্পালা ও পাকিস্তানের করাচি। শহরগুলোর বায়ুমান যথাক্রমে ২৪৮, ২৩১, ১৫৯ ও ১৫৬।
বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশি মাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১-১৫০ এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।
বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতি বছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।
দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।
পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

গত ২০ ডিসেম্বর নীলফামারীতে একটি চিতা বাঘকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে গ্রামবাসী। গত বছর একই জেলায় বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা পড়ে অপর একটি চিতা বাঘ। উত্তরাঞ্চলের পঞ্চগড়সহ বিভিন্ন জেলায় এর আগেও চিতা বাঘকে পিটিয়ে মারার ঘটনা ঘটেছে। এই চিতা বাঘেরা আসছে কোথা থেকে এবং এদের কীভাবে এমন মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করা যায় তার উ
২৪ ডিসেম্বর ২০২৩
বাংলাদেশের জলবায়ু তহবিলের বরাদ্দে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটির সর্বশেষ গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতীয় জলবায়ু তহবিল বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্টের (বিসিসিটি) বরাদ্দের ৫৪ শতাংশেই দুর্নীতি হয়েছে। ২০১০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সময়
১৩ ঘণ্টা আগে
পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন মিয়ানমার উপকূলের কাছে একটি লঘুচাপ বিরাজ করছে। এটি উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে মিয়ানমার-বাংলাদেশ উপকূল বরাবর অগ্রসর হতে পারে। এর প্রভাবে উত্তরপূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি হচ্ছে।
১৫ ঘণ্টা আগে
চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ময়মনসিংহ, ঢাকা, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যান্য অঞ্চলে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
২০ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বঙ্গোপসাগরে আবারও সৃষ্টি হয়েছে লঘুচাপ। লঘুচাপটি বর্তমানে পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন মিয়ানমার উপকূলীয় এলাকায় রয়েছে। এটি উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম বরাবর মিয়ানমার-বাংলাদেশ উপকূলের দিকে অগ্রসর হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
তবে চট্টগ্রাম ও সিলেট ছাড়া লঘুচাপটির প্রভাব দেশের অন্যান্য অঞ্চলে পড়বে না বলে মনে করছেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা।
আজ মঙ্গলবার সকালে আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেসা আজকের পত্রিকাকে বলেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটির নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে এর কারণে চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও আজ বৃষ্টি হতে পারে। সিলেট বিভাগেও আগামীকাল বুধবার বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর আজ সকাল ৭টার পূর্বাভাসে জানিয়েছে, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের আকাশ দুপুর পর্যন্ত আংশিক মেঘলা থাকবে। তবে আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
আজ সকাল ৬টায় ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৮৪ শতাংশ। আজকে ঢাকায় সূর্যাস্ত ৫টা ১৮ মিনিটে। আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ৭ মিনিটে।
সারা দেশের আজকের পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ময়মনসিংহ, ঢাকা, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যান্য অঞ্চলে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।
তবে শীতের দেখা মিলতে আরও বেশ কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেসা বলেন, ডিসেম্বর মাসের আগে সারা দেশে শীত না পড়ার সম্ভাবনা কম। এর আগে অবশ্য নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি উত্তরাঞ্চলে হালকা শীত পড়তে পারে।

বঙ্গোপসাগরে আবারও সৃষ্টি হয়েছে লঘুচাপ। লঘুচাপটি বর্তমানে পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন মিয়ানমার উপকূলীয় এলাকায় রয়েছে। এটি উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম বরাবর মিয়ানমার-বাংলাদেশ উপকূলের দিকে অগ্রসর হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
তবে চট্টগ্রাম ও সিলেট ছাড়া লঘুচাপটির প্রভাব দেশের অন্যান্য অঞ্চলে পড়বে না বলে মনে করছেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা।
আজ মঙ্গলবার সকালে আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেসা আজকের পত্রিকাকে বলেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটির নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে এর কারণে চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও আজ বৃষ্টি হতে পারে। সিলেট বিভাগেও আগামীকাল বুধবার বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর আজ সকাল ৭টার পূর্বাভাসে জানিয়েছে, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের আকাশ দুপুর পর্যন্ত আংশিক মেঘলা থাকবে। তবে আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
আজ সকাল ৬টায় ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৮৪ শতাংশ। আজকে ঢাকায় সূর্যাস্ত ৫টা ১৮ মিনিটে। আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ৭ মিনিটে।
সারা দেশের আজকের পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ময়মনসিংহ, ঢাকা, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যান্য অঞ্চলে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।
তবে শীতের দেখা মিলতে আরও বেশ কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেসা বলেন, ডিসেম্বর মাসের আগে সারা দেশে শীত না পড়ার সম্ভাবনা কম। এর আগে অবশ্য নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি উত্তরাঞ্চলে হালকা শীত পড়তে পারে।

গত ২০ ডিসেম্বর নীলফামারীতে একটি চিতা বাঘকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে গ্রামবাসী। গত বছর একই জেলায় বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা পড়ে অপর একটি চিতা বাঘ। উত্তরাঞ্চলের পঞ্চগড়সহ বিভিন্ন জেলায় এর আগেও চিতা বাঘকে পিটিয়ে মারার ঘটনা ঘটেছে। এই চিতা বাঘেরা আসছে কোথা থেকে এবং এদের কীভাবে এমন মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করা যায় তার উ
২৪ ডিসেম্বর ২০২৩
বাংলাদেশের জলবায়ু তহবিলের বরাদ্দে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটির সর্বশেষ গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতীয় জলবায়ু তহবিল বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্টের (বিসিসিটি) বরাদ্দের ৫৪ শতাংশেই দুর্নীতি হয়েছে। ২০১০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সময়
১৩ ঘণ্টা আগে
পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন মিয়ানমার উপকূলের কাছে একটি লঘুচাপ বিরাজ করছে। এটি উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে মিয়ানমার-বাংলাদেশ উপকূল বরাবর অগ্রসর হতে পারে। এর প্রভাবে উত্তরপূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি হচ্ছে।
১৫ ঘণ্টা আগে
শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান প্রধান শহরগুলোর অবস্থা বিপর্যস্ত। বিশ্বের দূষিত শহর তালিকার শীর্ষ দশে প্রায় দেখা যাচ্ছে শহরগুলোকে। এর মধ্যে আজ মঙ্গলবার পাকিস্তানের লাহোরের অবস্থা দুর্যোগপূর্ণ।
১৯ ঘণ্টা আগে